সময়টা ১৯৬৯ সাল। চাঁদে অভিযানের আগে
অ্যাপোলো ১০ মহাকাশ যান নিয়ে গ্রহটির
প্রদক্ষিণ করছেন দুই নভোচারী। একটা সময়
দুজনেই হালকা একটি সুরের মতো আওয়াজ
শুনতে পেয়েছেন। কিন্তু এই চাঁদের বুকে
তারা শব্দ না করলে আওয়াজ আসবে কোথা
থেকে? তাই কিছুটা বিস্ময় নিয়ে একজন
আরেকজনকে প্রশ্ন করেন, ‘তুমি কি শিসের
মতো একটা শব্দ শুনতে পেয়েছো?’
জবাবে অপরজন বলেন, ‘হুমমম শব্দটা মনে
হচ্ছে বাইরের কোনো জগৎ থেকে এসেছে।’
প্রথম নভোচারী বলেন, ‘এটা কিসের শব্দ
হতে পারে? আমি খুব অবাক হচ্ছি।’
২০০৮ সালে দুই নভোচারীর এই কথোপকথন
প্রকাশ পায়। আর যে শব্দ শুনে এই আলোচনা
সেটিও সম্প্রতি জনসম্মুখে প্রকাশ করা
হয়েছে।
পৃথিবী থেকে বহু দূরে, কোনো
যোগাযোগব্যবস্থা ছাড়াই চাঁদের একপৃষ্ঠে
অবস্থান করে অন্য কোনো শব্দ শোনা
যাবে -এটা নভোচারীদের জন্য রীতিমতো
আরেকজনকে বলেন, ‘তুমি শুনতে পাচ্ছো?
শিসের মতো আওয়াজ। অনেকটা হুউউউ…..
এর মতো।’
আরেকজন বলেন, ‘এটা একটা অদ্ভুত সুর।’
সম্প্রতি টেলিভিশনে প্রচারিত ‘নাসা’স
আনএক্সপেকটেড ফাইলস’ নামে এক
অনুষ্ঠানে এসব কথা জানানো হয়।
সেখানেই বলা হয়, এই সুর বা আওয়াজের
বিষয়টি নাসাকে জানাবেন কি না তা,
নিয়ে বেশ দ্বিধাদ্বন্দ্বে ছিলেন
নভোচারীরা। কারণ তাঁরা আশঙ্কা
করছিলেন, বিষয়টি জানাজানি হয়ে গেলে
ভবিষ্যতে মহাকাশ ভ্রমণের জন্য তাঁদের
উপযুক্ত বিবেচনা করা নাও হতে পারে।
নভোচারী এল ওরডেন ওই টেলিভিশন
অনুষ্ঠানে বলেন, ‘যুক্তি বলছে ওই স্থানে
যদি কোনো শব্দ রেকর্ড হয়ে থাকে,
তাহলে নিশ্চয়ই সেখানে কিছু আছে।’
তিনি মনে করেন, যেহেতু ওই শব্দের উৎস
বা কোনো ব্যাখ্যা সেই সময় অ্যাপোলো
১০ এর মহাকাশচারীদের কাছে ছিল না সে
জন্যই তারা বিষয়টি সম্পর্কে কাউকে কিছু
জানাননি।
প্রথম চাঁদের বুকে নামা নভোযান
কলিন্সও শব্দটি সম্পর্কে মনে করতে
পারেন। ক্যারিং দ্য ফায়ার : অ্যান
অ্যাস্টোনটস জার্নি শীর্ষক বইতে তিনি
লিখেছেন, ‘আমার হেডফোনে একটা অদ্ভুত
ধরনের শব্দ শুনতে পাচ্ছি। অনেকটা উ-উ
ধরনের শব্দ।’
এই শব্দের একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন
রেডিও প্রকৌশলীরা। এটাকে তারা
রেডিও তরঙ্গের মধ্যকার গোলমাল বলে
মনে করছেন। তবে এর পেছনেও কোনো শক্ত
যুক্তি দাঁড় করাতে পারেননি তাঁরা। ফলে
এই শব্দ বা সুর এখনো রহস্যই রয়ে গেছেগেছে।
5 thoughts on "অজানা পৃথিবীর তথ্য সমগ্র ~ পর্ব ১২ | ( চাঁদে অদ্ভুত আওয়াজ যা গোপন ছিল চার দশক"