উদ্ধারকারী কুকুরটির নাম গোনতা। তার পিঠে জিপিএস প্রযুক্তি সুবিধাসম্পন্ন ব্যাকপ্যাক ছিল বটে, তবে সে অনুসন্ধান চালাল নিজের প্রখর ঘ্রাণশক্তি দিয়ে। ধসে পড়া ভবনের ধ্বংসস্তূপে গিয়ে জীবিত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাল সে।

যদিও এটা ছিল একটি মহড়া, তবে ভূমিকম্প বা বিস্ফোরণে ভবন ধসে আটকে পড়া দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে উদ্ধারে ব্রিটানি স্প্যানিয়েল জাতের এই কুকুরটির সহজাত গুণের সঙ্গে প্রযুক্তির উৎকর্ষতাকে কাজে লাগানোর বিষয়টি পরখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

জাপানে ২০১১ সালের মার্চে ভূমিকম্প ও সুনামির সময় জীবিত মানুষকে খুঁজে বের করতে সহায়তা করে ১০ বছর বয়সী কুকুর গোনতা। অন্যান্য উদ্ধারকারী কুকুরের মতো তখন সে তার ঘ্রাণশক্তি ব্যবহার করে।

কিন্তু এখন দেশটির এক গবেষক বলছেন, দুর্যোগের পরিস্থিতিতে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জীবিত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার সম্ভাবনা বাড়াতে একটি ধারণা উদ্ভাবন করেছেন তিনি। ওই ধারণায় প্রকৃতিকে সমৃদ্ধ করতে প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে।

ধারণাটির উদ্ভাবক জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষক কাজুনোরি ওহনো। তাঁর উদ্ভাবিত ধারণার ওপর ভিত্তি করে গত মাসে দেশটির ফুজিমি শহরে একটি প্রশিক্ষণপর্ব হয়। প্রশিক্ষণ পর্বে গোনতার শরীরে স্থাপন করা হয় জিপিএস ও ক্যামেরা। জিপিএস ও ক্যামেরার মাধ্যমে ভেসে আসে লাইভ ভিডিও মানচিত্র।

ওহনো বলেন, উদ্ধার অভিযানের সময় হয়তো একটি কুকুর ধ্বংসস্তূপের ভেতরে প্রবেশ করল। কিন্তু সেখানে কী হচ্ছে, তা জানতে পারে না প্রশিক্ষক। এটা একটা বড় সমস্যা। কিন্তু কুকুরের শরীরে যদি প্রযুক্তি সংযুক্ত করা হয়, তা হলে এই সমস্যা দূর হতে পারে। এই পদ্ধতিতে প্রশিক্ষক ভিডিওতে দেখতে পাবেন কুকুরটি ধ্বংসস্তূপের মধ্যে কোথায় তল্লাশি করছে, ভেতরের দিকটা কেমন, জীবিত ব্যক্তি কোথায় আছেন ইত্যাদি।

প্রশিক্ষণে গোনতার পিঠে যে যন্ত্রটি স্থাপন করা হয়েছিল, তার ওজন মাত্র ১ দশমিক ৩ কিলোগ্রাম। যন্ত্রের একপাশে সংযুক্ত করা হয় ১০০ গ্রাম ওজনের একটি ছোট্ট ক্যামেরা।

মার্কিন সেনাবাহিনীর কুকুরের জন্যও একই ধরনের প্রযুক্তি আছে। কিন্তু ওহনোর ভাষ্য, তাঁর যন্ত্রটি অনন্য। এটি কুকুরের অবস্থানগত দিক থেকে একই সময়ে একাধিক ট্যাবলেটে লাইভ ভিডিও পাঠাতে পারে। তাঁর যন্ত্রটি অপেক্ষাকৃত হালকা। এটি মাঝারি আকারের কুকুরের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়।

নিজের উদ্ভাবন সম্পর্কে ওহনো বলেন, তিনি জানতেন রোবট কী পারে, আর কী পারে না। তাই তিনি এমন একটি নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কথা ভেবেছিলেন, যা কুকুর ও রোবটের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে একযোগে উদ্ধারকাজ চালাতে সহায়তা করতে পারে।

আমার ব্লগ সাইট HamWap.Com

Leave a Reply