ঢাকা: অনির্দিষ্টকালের নৌযান
শ্রমিক ধর্মঘটের মধ্যেই রাজধানীর
সদরঘাটের নৌ-টার্মিনাল থেকে
লঞ্চ ছাড়া শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ
অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল সংস্থার (লঞ্চ
মালিক সমিতি) প্রধান উপদেষ্টা
গোলাম কিবরিয়া টিপু
জানিয়েছেন, বিকেল সাড়ে ৪টা
থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। চাঁদপুর
ও মনপুরা নামের দুইটি লঞ্চ ছেড়ে
গেছে। পর্যায়ক্রমে ১৪টি লঞ্চ
ছেড়ে যাবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল)
দুপুরে লঞ্চ মালিক সমিতি’র
কার্যালয়ে সাংবাদিকদের
সামনে এই ঘোষণা দেন তিনি।
যাত্রীবাহী নৌযানের শ্রমিকদের
কোনো সমস্যা নেই বলেও দাবি
করেন।
বিআইডব্লিউটিএ’র সদরঘাট বন্দরের
যুগ্ম পরিচালক ( যান্ত্রিক) জয়নাল
আবেদিন বলেন, বিকেল ৩টার পর
থেকে ৪টি লঞ্চ সদরঘাট নৌবন্দরে
ভিড়তে শুরু করে। এ পর্যন্ত ১৪টি লঞ্চ
ছাড়ার প্রস্তুতি নিয়েছে মালিক
সমিতি। এসব লঞ্চ হাতিয়া, পেটুয়া,
বরিশাল, পটুয়াখালীরসহ
দক্ষিণাঞ্চলের উদ্দেশে ছেড়ে
যাচ্ছে। পরপর এসব লঞ্চ বিভিন্ন
গন্তব্যে ছেড়ে যাবে।
এছাড়া ধর্মঘটে বিআরডব্লিটিসি’র
সদরঘাট থেকে ছাড়বে দুটি স্টিমার।

প্রতিদিনের মত সন্ধ্যা ৬টায় একটি
স্টিমার ছেড়ে যায়। ধর্মঘটনের
কারণে এবং অধিক যাত্রী
চলাচলের সুবিধার্থে দুটি স্টিমার
ছেড়ে গেছে। এমবি মধূমতি ও পিএস
ল্যাপচা নামের জাহাজ দুটি
বরিশালের উদ্দেশ ছেড়ে যাবে
বলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-
পরিবহন করপোরেশন
(বিআইডাব্লিউটিসি) সহকারী মহা-
ব্যবস্থাপক শাহ বরকত উল্লাহ
জানিয়েছেন।
এদিকে কর্তৃপক্ষ বলছে, যাত্রীবাহী
লঞ্চের শ্রমিকদের কোনো সমস্যা
নেই। সমস্যায় আছে মালবাহী,
তেলবাহী কোস্টার ও কার্গো
শ্রমিকরা।
নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র
তথ্যকর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন,
বাংলাদেশ নৌযান পরিবহন শ্রমিক
ফেডারেশনের অনির্দিষ্টকালের
ধর্মঘটের বিষয় নিয়ে পল্টনস্থ
ফেডারেশনের কার্যালয়ে বিভিন্ন
নৌযান মালিকরা আলোচনায়
বসেছেন। আলোচনায় নৌধর্মঘট
বিষয়ে সমাধানের পথ তৈরি হতে
পারে বলে তিনি জানান। কিন্তু
বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত কোনো
সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, বেতন-ভাতা ১৫ দফা
দাবিতে গতকাল বুধবার দিবাগত
রাত থেকে অনির্দিষ্টকালের
ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে নৌযান
শ্রমিক ফেডারেশন।
যাত্রীবাহী, পণ্যবাহী, কোস্টার,
ট্যাংকার, বালুবাহী নৌযান,
ড্রেজার, শ্যালো ট্যাংকারসহ সব
ধরনের নৌযানের শ্রমিকরা এই
কর্মবিরতিতে অংশ নিয়েছে বলে
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক
ফেডারেশনের পক্ষ থেকে
জানানো হয়েছে।
নৌ-শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির
পাশাপাশি সরকারি কর্মচারীদের
মতো সুযোগ-সুবিধা দেয়া, নৌ-পথে
অবৈধ চাঁদাবাজি ও অবৈধ ইজারা
বন্ধ করা, প্রত্যেক শ্রমিককে
নিয়োগপত্র ও সার্ভিস বুক দেয়া,
নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক
নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কর্মস্থলে
আহত শ্রমিকের চিকিৎসা ব্যয় ও
চিকিৎসাকালে বেতনের দাবি
রয়েছে ১৫ দফায়।
এসব দাবিতে গত এক বছরে কয়েক দফা
ধর্মঘটের কর্মসূচি দিলেও সরকারের
আশ্বাসের পরে আন্দোলন স্থগিত
করে শ্রমিক সংগঠনগুলো।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত নৌযান
শ্রমিকদের এই কর্মবিরতি চলবে বলে
জানান ফেডারেশনের সভাপতি
শাহ আলম।

Leave a Reply