আমার পছন্দের কিছু কাজের কথা আজকে আলোচনা করবো ।
আশা করি আপনারও ইচ্ছা করবে এই কাজ গুলা শেখার। কাজ গুলা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো ।
তাহলে শুরু করি । আমার প্রথম পছন্দের একটা স্কিল
সফটওয়্যার আর্কিটেকচারঃ
ভালো সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার এমনকি প্রোগ্রামার হতে হলে আপনাকে অনেক পরিশ্রমী ও ধৈর্যশীল হতে হবে। চাকরীকালীন এমন অনেকদিন গেছে যে আমাকে অনেক প্রেসার নিয়ে সারারাত অফিসে কাজ করতে হয়েছে। বা অনেক রাতে বাসায় ফিরতে হয়েছে। এটা ঠিক না বেঠিক সেটা নিয়ে তর্ক করার চেয়ে এটা আমাদের জীবনের বাস্তবতা জেনে নিয়েই আগাতে হবে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিরামহীনভাবে কোড করে যাওয়া, বা কোন একটা জিনিসের সমাধান নিয়ে কাজ করার ধৈর্য সবার থাকে না। অল্পতে মনঃসংযোগ হারালে হবে না। আল্লাহ্র রহমতে আমার ধৈর্য জিনিষটা আগে থেকেই ছিল, তাই এটা কিভাবে আপনি বাড়াবেন এই বিষয়ে আমি আপনাকে কোন সাজেশন দিতে পারছিনা। এই বিষয়ে অন্যদের সাহায্য নিতে পারেন। আর যদি প্রোগ্রামিং ও এই পেশাকে ভালবাসেন তাহলে ধৈর্য ধরা অনেক সহজ হবে। আমার সব সময় প্যাশন ছিল কম্পিউটার ও প্রোগ্রামিং। এই পেশার প্রেসার তাই আমার গায়ে লাগে না। আগ বারিয়ে আরও বেশি প্রেসার নিতেও খারাপ লাগে না। যদি কোডিং আপনার ভাল না লাগে, এটা আপনার জন্য কিনা চিন্তা করে দেখতে পারেন। শুধু চাকরি করতে হবে বলে যেটা ভাল লাগে না সেই বিষয়ে চাপাচাপি করলে ভাল করতে পারবেন না। নিজের কাজকে উপভোগ করতে পারতে হবে, তা না হলে প্রেসার না থাকলেও প্রেসারে পরে যাবেন।
আমি ক্যারিয়ারের ধাপগুলোকে যেভাবে দেখি তা হলঃ
- ভালো প্রোগ্রামার
- ভালো সফটওয়্যার ডেভেলপার
- ভালো সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
- ভালো সফটওয়্যার আর্কিটেক্ট
ভালো প্রোগ্রামার হওয়ার জন্য আপনি যা যা করতে পারেনঃ
- প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজের খুঁটিনাটি যতটা সম্ভব জানার চেষ্টা করতে পারেন। অনেকে শুধু একটু জটিল বলে পয়েন্টার, থ্রেডিং, ইভেন্ট ইত্যাদি টপিক এড়িয়ে যায়। একটা জিনিষের অর্ধেক যদি আপনি না জানেন সেই ফিচারগুলো জীবনে কখনো ব্যাবহার করা হবে না। আপনি দেখবেন আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে খুব কম প্রোগ্রামার প্রফেশনাল লাইফে পয়েন্টার, থ্রেডিং, ইভেন্ট ব্যবহার করে কোড লেখে। তারা সব সময় মনে করে যে তাদের কাজে এগুলো ব্যাবহার করার কোন স্কোপ ছিল না, আসলে এই টপিকগুলো এড়িয়ে যাওয়ার কারণে স্কোপ থাকার পরও তাদের চোখে এগুলো ধরা পরেনি। আপনি যেখান থেকে প্রোগ্রামিং শিখছেন, সেখানে সবগুলো ফিচার শিখতে পারছেন কিনা দেখতে হবে। যদি ইউনিভার্সিটি বা ট্রেনিং সেন্টারে সব কভার না করে, বাকিগুলো নিজের আগ্রহে শিখে নিতে হবে।
- কম্পিউটার ফান্ডামেন্টাল, ডিসক্রিট ম্যাথ, ডাটা স্ত্রাকচার, এলগরিদম ভালোভাবে শিখতে হবে। আমি মনে করি ভালো ইউনিভার্সিটিতে ক্লাসে এই সাবজেক্টগুলো যতটুকু পড়ানো হয়, শিক্ষার্থীরা যদি মনোযোগ দিয়ে সেটা শিখে তাহলে যথেষ্ট। অনেকে বলেন ইউনিভার্সিটিতে তেমন কিছু পড়ানো হয় না, স্যার ঠিকমত বুঝাতে পারেন না ইত্যাদি। কিন্তু আমি এটাও লক্ষ্য করেছি, শিক্ষার্থীরা নিজস্ব আগ্রহ থেকে ক্লাসে এই জিনিষগুলো শিখেন না। যারা কনটেস্ট করে, তারা যত আগ্রহ নিয়ে এই ক্লাস করে বা পরে এগুলো শিখে তেমন নিজস্ব আগ্রহ থাকলে আমি মনে করি ক্লাসে যা পড়ানো হয় তা যথেষ্ট। যদি স্যার বুঝাতে পারছে না মনে করেন, তাহলে ইন্টারনেটে এখন এসব বিষয়ে অনেক ভালো ভালো ভিডিও আছে, সেখান থেকে দেখে শিখে নিতে হবে আর অনেক প্র্যাকটিস করতে হবে। ক্লাসে যে বই পড়ানো হয় সাধারণত সেই সব বইয়ের পিছনে অনেক অনুশীলনী থাকে, সেসব নিজ আগ্রহে সমাধান করে স্যারকে দেখাতে পারেন। অথবা কয়েক বন্ধু মিলে একসাথে সমাধান করতে পারেন। যারা প্রোগ্রামিং এ ভাল ও সিরিয়াস এমন বন্ধু জোগাড় করুন। যারা প্রোগ্রামিং পছন্দ করে না তাদের সাথে অপ্রয়োজনীয় সময় নষ্ট করবেন না।
- প্রচুর প্র্যাকটিস করতে হবে। এটাতো সবাই বলে, কিন্তু কিভাবে প্র্যাকটিস করবেন। এলগরিদম প্রবলেম সল্ভ করতে পারেন, শুরুতে এটা খুবই কাজে দিবে। অন্তত ৩০০ প্রবলেম সল্ভ করুন। এর জন্য ২ নম্বর পয়েন্ট আগে শেষ করে আসতে হবে। ছোট ছোট সফটওয়্যার তৈরি করতে চাইলে যে আপনাকে এখনি ফ্রেমওয়ার্ক শিখতে হবে তা কিন্তু নয়। মানুষ অনেক সফটওয়্যার ব্যাবহার করে যেগুলো কনসোলে চলে। যেমন Hangman, TicTacToe, লুডু ইত্যাদি গেম তৈরি করতে পারেন। টেক্সট ফাইলে ডাটা রিড/রাইট করে আপনি আরও জটিল সফটওয়্যারও কনসোলে তৈরি করতে পারেন, যেমন পয়েন্ট অফ সেল, ইনভেন্টরি ম্যানেজমেন্ট। এমনকি এম এল এম সফটওয়্যারও তৈরি করতে দেখেছি।
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের বেতন কত?
এজাতীয় ক্ষেত্রে সব গ্র্যাজুয়েট সমান বেতনে চাকরী পায়না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আনুমানিক স্টার্টিং বেতন ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা।
ওয়েব ডেলেপমেন্টঃ
এক জরিপ থেকে দেখা যায়, শুধু আমেরিকাতেই প্রতি মাসে প্রায় ১৬ মিলিয়নের বেশি অর্থাৎ ১ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি ওয়েবসাইট তৈরি করা হয়ে থাকে! যার প্রায় ৭০ শতাংশেরও বেশি করা হয় প্রফেশনাল ওয়েব ডিজাইনার হায়ার করে এবং যার মার্কেট ভেল্যু ২০ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ প্রায় ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা! একটা সময় ছিল যখন ওয়েবসাইট ছিল শখের একটা বিষয়। কিন্তু এখন তা আর কোনো শখ বা বিলাসিতা নয়, বরং অবশ্য প্রয়োজনে পরিণত হয়েছে। মানুষ এখন প্রতিদিনই ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ওয়েবসাইট তৈরি করছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় দক্ষ ওয়েব ডেভেলপারের সংখ্যা নগণ্য। ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এ ছাড়া বিভিন্ন মার্কেট প্লেসে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে পারেন। এখানেই হতে পারে আপনার উপার্জনের সবচাইতে বড় সুযোগ। মার্কেট প্লেসগুলোয় সবচেয়ে বেশি চাহিদা ওয়েব ডেভেলপারের। পারিশ্রমিকও অন্য সব কাজের তুলনায় বেশি। যেখানে তুমুল হারে প্রতিদিন গ্রাফিক্স ডিজাইনার, ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের সংখ্যা বেড়ে চলেছে তার তুলনায় নতুন ওয়েব ডিজাইনারের সংখ্যা একেবারেই নগণ্য। প্রতিদিন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সেক্টরের মার্কেট সাইজ বিদ্যুৎ গতিতে বেড়ে চললেও সেই হারে বাড়ছে না ওয়েব ডেভেলপারের সংখ্যা। এর ফলে বিশাল চাহিদা তৈরি হয়েছে এই সেক্টরে!
এই কাজ শিখতে কত সময় লাগতে পারে?
আপনার মেধা ও পরিশ্রমের ওপর নির্ভর করছে আপনার তৈরি হতে কত সময় লাগবে। আপনি কত দ্রুত গোটা ব্যাপারটা গ্রহণ করতে পারছেন। এ ছাড়া আপনি কতটা সময় ব্যয় করবেন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট শেখার জন্য তার ওপরও। তবে সাধারণত ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে যে কেউ মোটামুটি ভালো ওয়েব ডেভেলপার হতে পারে। আসল কথা হলো, আপনি কখনো এটা শিখে শেষ করতে পারবেন না। ছয় মাস ধারণা নেওয়ার পর আপনিই বুঝতে পারবেন আপনি আসলে কাজ নেওয়ার জন্য এই মুহূর্তে কতটা যোগ্য। আপনাকে অবশ্যই নতুন নতুন আপডেট সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এবং সেই অনুযায়ী নিজেকে আপডেট করে নিতে হবে। তা না হলে আপনি কখনই সফল হতে পারবেন না। সাময়িক সফল হলেও অচিরেই আপনি আপনার প্লেস হারাবেন। মনে রাখবেন শেখার কোনো শেষ নেই।
ওয়েব ডেভেলপারের আয়ঃ
দক্ষ ওয়েব ডেভেলপার অল্প সময়ের মধ্যে মাসে কয়েক লাখ টাকা সহজেই উপার্জন কার সম্ভব। Indeed.com-এর দেওয়া এক তথ্য অনুযায়ী, একজন ওয়েব ডিজাইনারের গড় বার্ষিক বেতন ৬০ হাজার ১৮২ মার্কিন ডলার; যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪ কোটি ৮ লাখ ১৪ হাজার ৫৬০ টাকা, প্রতি মাসে হিসাব করলে দাঁড়ায় ৪ লাখ টাকা (দক্ষতার জন্য কম বেশি হতে পারে। )
ওয়েব ডিজাইনঃ
আপনার কি করতে হবে?
প্রথমে ভালোভাবে কাজ শিখে ফেলুন এবং অবশ্যই মূল বিষয় গুলোর আগে বেসিক গুলো ভালো করে আয়ত্ত করে নিন সেগুলো আপনাকে শর্টকাট কাজ করতে সাহায্য করবে। আমরা সবাই বড় বড় বিষয়গুলোতেই বেশি ফোকাস করি কারণ আমরা চাই যতদ্রুত সম্ভব আউটপুট পেতে তাই ছোট ছোট বিষয়গুলো খেয়াল করি না কিন্তু সেই ছোট ছোট বিষয় গুলো আমাদের জানা থাকলে সেগুলোই আমাদের কাজ কমিয়ে দিতে পারে।
এরপর ভালোভাবে প্রজেক্ট করুন দেখুন যে কিভাবে সবকিছু একসাথে করে ভালো মানে একটা আউটপুট দেওয়া যায় এবং সেই একই কাজটাকেই কিছুদিন পর একটু একটু ডেভেলপ করুন ডিজাইন গুলো আরো উন্নত করার চেষ্টা করুন প্রথম যেদিন কমপ্লিট হবে সেদিন ঐকাজের একটা স্ক্রিনশট নিয়ে রাখুন এবং ৪-৫বার রি-ডিজাইন করে মিলিয়ে দেখুন আপনার মধ্যে কি পরিবর্তন এসেছে। আপনি অবাক হবে আমি নিশ্চিত।
কত টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব?
কাজ জেনে ঠিক মতো বুদ্ধি ব্যবহার করে কাজ করলে লক্ষ টাকা আয় করা সম্ভব। প্রমান তো আপনার সামনেই অনেক ফ্রিল্যান্সারই আছেন যারা লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছেন যেমন কষ্ট করছেন তেমন ফল পাচ্ছেন। আপনি যে কোন মার্কেটপ্লেসে সার্চ করে টপ রেটেড ফ্রিল্যান্সারের প্রোফাইল দেখতে পারেন আইডিয়া পেয়ে যাবেন। তারপরও আপনাকে কিছু আইডিয়া দিয়ে দেই যেমন: পিএইচডি টু এইচটিএমএল $50-$100(+/-) এর হতে পারে, একটা ছোট্ট ডিজাইন ফিক্স করে দেওয়ার জন্য $30-$40(+/-) হতে পারে, কাস্টমলি সম্পূর্ণ সাইট ডিজাইন করতে হলে হয়তো $400-$500 (+/-) হতে পারে ইত্যাদি।
12 thoughts on "দুর্দান্ত কিছু স্কিল, ফ্রিল্যান্সিং এর ক্ষেত্রে কাজে লাগবে ।"