সাত পাঁচ না ভেবেই শুরু করে দিলে পরে আপনার সব হোস্টিং ফাইল অন্য হোস্টে সরানোর
ঝামেলা পোহাতে হতে পারে ও ডোমেইন ট্রান্সফার করা লাগতে পারে। তাই আগে থেকেই সাবধানে এবং বুঝে শুনে শুরু করা ভালো।ডোমেইনঃ
ইন্টারনেটে অগণিত নামীদামী ডোমেইন বিক্রেতা আছেন, তাদের কাছে থেকে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ডোমেইন কিনবেন ? নাকি আপনার স্থানীয় বিক্রেতার কাছে থেকে কিনবেন ? ধরুন আপনার জনপ্রিয় ডোমেইন হ্যাক হয়ে গেল, সেই ডোমেইন ফেরত পেতে অনেক ঝামেলা হতে পারে, যদি সেই ডোমেইন ক্রেডিট কার্ড দিয়ে নিজে কিনে থাকেন। প্রথমেই ডোমেইন রেজিস্ট্রারের সাথে যোগাযোগ করা, তাকে সম্পূর্ণ ব্যাপারটা ইমেইলে জানানো, এর পরে নিজের আইডেন্টিটি প্রমাণের ব্যাপার আছে। ক্রেডিট কার্ড নিজের নামে না হয়ে পরিবারের কারো নামে কিংবা
বন্ধুবান্ধবের নামে হলেই কেলেঙ্কারি, তাদেরকে নিয়ে টানাটানি, তারা ভেরিফাই না করলে ডোমেইন ফেরত পাবেন না। এইসব ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকতে স্থানীয় বিক্রেতার কাছে থেকেই কেনা ভালো। তারাও তাদের ক্রেডিট
কার্ড দিয়েই কিনে, আপনি যেখান থেকে কিনবেন তারাও হয়তো সেখান থেকেই কিনে, কিন্তু তার পরেও তারা হচ্ছে রিসেলার এজেন্ট, কোম্পানীর সাথে আপনার চেয়ে তাদের আরও কাছের যোগাযোগ, তারা অনেক সহজেই আপনার ডমেইন আপনাকে ফেরত এনে দিতে পারবে। যেহেতু স্থানীয়, তাই তারা আপনাকে চিনবে, আইডেন্টিটি প্রমাণের প্রশ্ন আসবে না। তাই,
আমি বলব যে, ডোমেইন স্থানীয় বিক্রেতার কাছে থেকে কেনাই ভালো। তাছাড়াও, সব সময় টপ লেভেলের ডোমাইন ব্যবহার করার চেষ্টা করুন, যদিও দাম একটু বেশি পড়বে। তবে আপনি থাকবেন নিরাপদ। কম টাকার প্রমো ডোমেইন কিনা থেকে দূরে থাকুন।
হোস্টিং কিনাঃ
হোস্টিং কিনতে পারেন মাষ্টার কার্ড, পেপাল ইত্যাদি দিয়ে বা স্থানীয় বিক্রেতার কাছ থেকে। কিন্তু কি কি ফিচার আপনার প্রয়োজন ? তালিকায় অনেক কিছুই লেখা থাকে, সব কি আপনার দরকার ? তালিকায় লেখা প্রচুর
ফিচার দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়ে হোস্টিং না কিনাই ভালো। আবার এও ঠিক যে, তালিকায় লেখা অনেক ফিচার আপনার অসুবিধার সৃষ্টি করতে পারে ভবিষ্যতে। আসুন জেনে নিই ? আপনি কি একটি ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট বানাতে চান ? সেক্ষেত্রে তথাকথিত ‘আনলিমিটেড’ হোস্টিং আপনার
একেবারেই প্রয়োজন নেই। কম টাকায় পেয়ে গেলেও না। তাতে কিই বা হোস্টিং করবেন যাতে ‘আনলিমিটেড’ স্পেস লাগতে পারে ? কারন আপনি প্রচুর পরিমানে অডিও/ভিডিও আপলোড করতে পারবেন না। সার্ভারে
MP3 রেখে দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু সেইসব ডাউনলোডের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া কিন্তু বেআইনি। কপিরাইটের ঝামেলা আছে। আপনি গান বাজনার সাথে যুক্ত হলে আপনার নিজস্ব মিউজিক ফাইলগুলি রাখার
ক্ষেত্রেও আগে জিজ্ঞেস করে নেবেন, অনেক হোস্টিং বিক্রেতা তাদের terms & conditions’এ লিখেই দেন যে বহু পরিমানে মিডিয়া ফাইল লোড করে রাখা যাবেনা। ব্যক্তিগত কিছু ভিডিও নিশ্চয় রাখতে পারেন, তাও কতোখানি, সেটা জিজ্ঞেস করে নেবেন সাপোর্টে ইমেইল করে। আপনি কি বানিজ্যিক ওয়েবসাইট কিংবা ফোরাম কিংবা ব্লগিং ওয়েবসাইট বানাতে চান ? এক্ষেত্রেও আমি বলবো যে আনলিমিটেড হোস্টিংয়ের প্রয়োজন নেই, লিমিটেড শেয়ার হোস্টিং হলেই হবে। Bandwidth সেখানে বেশি জরুরী জিনিস, একটি হোস্টিং কোম্পানীর ওয়েবসাইটে পড়লাম যে “MySQL database Unlimited (200MB)” অবস্থা বুঝতে পারছেন ? একদিকে
লেখা আনলিমিটেড, কিন্তু ব্র্যাকেটে লেখা ২০০ মেগাবাইট। সাপোর্টে ইমেইল করে জানলাম যে এখানে Unlimited মানে অগনিত সংখ্যায় ডেটাবেস বানাতে পারলেও এক একটির সাইজ যেন 200MB পার না করে !
সুতরাং এইসব জেনে নেবেন। ফোরাম কিম্বা গ্রুপ ব্লগিং
Bandwidth বিষয়টিও মাথায় রাখবেন। অনেক কোম্পানীই
লেখে আনলিমিটেড, কিন্তু এখানে লেখার মধ্যে
সামান্য কারিগরির ব্যাপার আছে। তাই ভাল করে জেনে
নিন।
VPS কিনলেই যে খুব সুবিধা পেয়ে যাবেন তা নাও হতে
পারে। সেটা নির্ভর করবে সেই সার্ভারের RAM,
Processor (Single or Dual or Quad processor) ইত্যাদি অনেক
কিছুর উপরে। ভারী ধরনের ওয়েবসাইট বানাতে হলে বুঝে
শুনে ভালো কনফিগারেশানের ডেডিকেটেড সার্ভার
নিতে হবে। সেই সার্ভারের ইন্টারনেট গেটওয়ে কেমন,
কোন নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত, সার্ভারের
ডেটাসেন্টার কোন দেশে, তার পিং স্পিড কত, আপটাইম
কেমন সেইসব জেনে নেওয়াও জরুরী। একজন দায়িত্ববান
ওয়েব মাস্টার হতে গেলে এইসব জানা নিতান্তই জরুরী।
সাত পাঁচ না ভেবেই শুরু করে দিলে পরে আপনার সব
হোস্টিং ফাইল অন্য হোস্টে সরানোর ঝামেলা পোহাতে
শুরু করা ভালো। এতে নিজের টাকার সঠিক মূল্য পাবেন,
দায়িত্ববান ওয়েব মাস্টার হয়ে উঠতে পারবেন, সার্চ
ইঞ্জিনেও র্যাঙ্ক ধরে রাখতে সক্ষম হবেন। সবাইকে
ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় নিলাম ভাল থাকুন।
mob.synergize.co