কেমন গেল প্রযুক্তি দুনিয়ার এই বছর, বিশেষ করে স্মার্টফোনের? বছরজুড়েই নানা ব্র্যান্ডের স্মার্টফোন নিয়ে মানুষের আগ্রহ কম ছিল না। আর নতুন স্মার্টফোন এলেই সেটা নিয়ে প্রকাশ হয়েছে নানা রিভিউ। ২০১৫ সাল জুড়ে আইফোন নিয়ে উন্মাদনা যেমন ছিল, তেমনি স্যামসাং ফ্ল্যাগশিপ নিয়েও ব্যবহারকারীদের আগ্রহ ছিল ব্যাপক। এ দুই টেক জায়ান্টের পর চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোও সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটিয়ে বাজারে স্মার্টফোন ছেড়েছে, সেগুলো আবার জনপ্রিয়তাও পেয়েছে। এ বছরই বিশ্বজুড়ে বেড়েছে চীনা স্মার্টফোনের জনপ্রিয়তা এবং বিক্রি।
এর বেশির ভাগই ফ্ল্যাগশিপ। এ বছর স্মার্টফোন প্রযুক্তি আরো আধুনিক হয়েছে। বড় ডিসপ্লের ফ্যাবলেটের চাহিদা ছিল সারা বছর। ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে এবং এ প্রযুক্তির উন্নয়ন ঘটেছে। ইন্টারনাল স্টোরেজ এবং ব্যাটারির ক্ষমতাও বেড়েছে। সব মিলিয়ে আরো সহজলভ্য হয়েছে ইন্টারনেট এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি।
১০. মটোরোলা মটো এক্স প্লে
এ বছরের আগস্টে বাজারে ছাড়া হয় স্মার্টফোনটি। দীর্ঘ ব্যাটারি লাইফের জন্য সেটটি জনপ্রিয়তা পায়। মটো এক্স প্লে স্মার্টফোনে রয়েছে ৩৬৩০ এমএএইচ-এর ব্যাটারি। তবে এর দুর্বল দিক হচ্ছে, এতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার নেই। ২১ মেগাপিক্সেলের রিয়ার ক্যামরা ও ৫ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা রয়েছে এতে। ২ জিবি র্যামের এই সেটটিতে ১৬ ও ৩২ জিবি ইন্টারনাল মেমোরির দুটি আলাদা ভার্সন রয়েছে।
৯. হুয়াওয়ে মেট এস
হুয়াওয়ের এ বছরের সবচেয়ে ভালো স্মার্টফোন বলা হচ্ছে ‘মেট এস’-কে। যেকোনো ফ্ল্যাগশিপের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সক্ষম এই ফ্ল্যাগশিপ। এতে রয়েছে ৫ দশমিক ৫ ইঞ্চি ডিসপ্লে (১৯২০ x ১০৮০ পিক্সেল)। ১৩ মেগাপিক্সেলের রিয়ার ও ৮ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা। ৩ জিবি র্যামের সঙ্গে ৩২, ৬৪ ও ১২৮ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজের তিনটি আলাদা ভার্সন রয়েছে। ব্যাটারি রয়েছে ২৭০০ এমএএইচ। এর দাম ৪৬৯ ইউরো।
৮. এলজি জি৪
এলজি জি৪-এ রয়েছে দুর্দান্ত ক্যামেরা। এতে রয়েছে ৫ দশমিক ৫ ইঞ্চির ডিসপ্লে। ফোন ও ট্যাবলেটের সংমিশ্রণে তৈরি এই স্মার্টফোনকে বলা হচ্ছে ফ্যাবলেট। এ বছরের এপ্রিলে বাজারে ছাড়া হয়েছিল সেটটি। এল জি৪-এ রয়েছে ১৬ মেগাপিক্সেলের রিয়ার ও ৮ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা। আছে ৩ জিবি র্যাম ও ৩২ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ। ব্যাটারি রয়েছে ৩০০০ এমএএইচ-এর। এর দাম ৪১৯ ইউরো।
৭. নেক্সাস ৫এক্স
৬. অ্যাপল আইফোন ৬এস প্লাস
অ্যাপল আইফোন ৬এস প্লাস স্মার্টফোনটিতে রয়েছে থ্রিডি টাচ ডিসপ্লে। ৫ দশমিক ৫ ইঞ্চি ফুল এইচডি ডিসপ্লে। এই সেটটিতে রয়েছে ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন। আরো আছে ফোরকে ভিডিও ক্যাপচার এবং লাইভ ফটোস। এতে রয়েছে ১২ মেগাপিক্সেলের রিয়ার ও ৫ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা। ২ জিবি র্যামের সঙ্গে আছে ১৬, ৬৪, ১২৮ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজের তিনটি আলাদা ভার্সন। এ বছরের সেপ্টেম্বরে বাজারে আসা হ্যান্ডসেটটির ব্যাটারি ২৭৫০ এমএএইচ। এর দাম ৬১৯ ইউরো।
৫. স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৬ এজ প্লাস
এ বছরের অন্যতম আকাঙ্ক্ষিত সেট এটি। এই ফ্যাবলেটে রয়েছে ৫ দশমিক ৭ ইঞ্চির বড় ডিসপ্লে। এ বছরের আগস্টে বাজারে ছাড়া হয় সেটটি। এতে রয়েছে ১৬ মেগাপিক্সেলের রিয়ার ও ৫ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা। ৪ জিবি র্যামের সঙ্গে রয়েছে ৩২ ও ৬৪ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজের দুটি আলাদা ভার্সন। ব্যাটারি ৩০০০ এমএএইচ। এর দাম ৬২৯ ইউরো।
৪. ওয়ানপ্লাস ২
স্মার্টফোন নির্মাতা চীনা প্রতিষ্ঠান ওয়ানপ্লাসের তৈরি স্মার্টফোন ওয়ানপ্লাস ২। এটি চলবে অক্সিজেন অপারেটিং সিস্টেমে। এ ছাড়া রয়েছে অ্যানড্রয়েড অপারেটিংয়ে চালিত আরেকটি ভার্সন। ৩৩০০ এমএএইচ-এর ব্যাটারি দীর্ঘ সময় চার্জ ধরে রাখবে স্মার্টফোনটিতে। এতে রয়েছে ৫ দশমিক ৫ ইঞ্চি ডিসপ্লে। রিয়ার ক্যামেরা রয়েছে ১৩ মেগাপিক্সেলের এবং ফ্রন্ট ক্যামেরা ৫ মেগাপিক্সেলের। স্মার্টফোনটির দুটি ভার্সন রয়েছে। একটিতে রয়েছে ৩ জিবি র্যাম ও ১৬ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ। আরেকটিতে রয়েছে ৪ জিবি র্যাম ও ৬৪ জিবির ইন্টারনাল স্টোরেজ। এর দাম ২৩৯ ইউরো। দামের তুলনায় স্মার্টফোনটির স্পেসিফিকেশন বেশ ভালো।
৩. নেক্সাস ৬পি
নেক্সাস ৫এক্স মডেলের পরপরই বাজারে ছাড়া হয়েছিল নেক্সাস ৬পি স্মার্টফোনটি। এটি তৈরি করেছে চীনা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে। এই হ্যান্ডসেটটির ফুল মেটাল বডি একে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। এর ডিসপ্লে ৫ দশমিক ৭ ইঞ্চি। নেক্সাস ৬পিতে রয়েছে অত্যাধুনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার। আছে ইউএসবি টাইপ-সি পোর্ট, যা দ্রুতগতির ফাইল ট্রান্সফার ও চার্জিংয়ের সুবিধা দেবে। এ বছরের সেপ্টেম্বরে সেটটি বাজারে ছাড়া হয়। এতে রয়েছে ১২ মেগাপিক্সেলের রিয়ার ও ৮ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা। ৩ জিবি র্যাম এবং ৩২, ৬৪ ও ১২৮ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজের তিনটি আলাদা ভার্সন। রয়েছে ৩৪৫০ এমএএইচ-এর শক্তিশালী ব্যাটারি। এর অপারেটিং সিস্টেম অ্যানড্রয়েড ৬.০ মার্শম্যালো। নেক্সাস ৬পি হ্যান্ডসেটটির দাম ৪৪৯ ইউরো।
২. অ্যাপল আইফোন ৬এস
অ্যাপলের স্মার্টফোনগুলোর মধ্যে আইফোন ৬এস এগিয়ে আছে এর আকর্ষণীয় ডিজাইনের কারণে। এই সেটের মাধ্যমেই প্রেশার সেন্সিটিভিটি ডিসপ্লে নিয়ে আসে অ্যাপল। এতে রয়েছে ৪ দশমিক ৭ ইঞ্চির ডিসপ্লে। ১২ মেগাপিক্সেল রিয়ার ও ৫ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা। রিয়ার ক্যামেরা দিয়ে ফোরকে ভিডিও ধারণ করা যাবে। আছে ২ জিবি র্যাম এবং ১৬, ৬৪ ও ১২৮ জিবির আলাদা তিনটি স্টোরেজ ভার্সন। তবে ব্যাটারি ভোগাবে, সেটটির ব্যাটারি মাত্র ১৭১৫ এমএএইচ-এর। সেটটির দাম ৫৩৯ ইউরো।
স্মার্টফোনের বাজারে দিন দিন বাড়ছে প্রতিযোগিতা। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলে যাচ্ছে কোরিয়ান এই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৬ তুলনামূলক কম দামে পাওয়া গেলেও এস৬ এজ এগিয়ে আছে এর ডিজাইনের কারণে।
এস৬ এজ মডেলে রয়েছে ডুয়েল এজ ডিসপ্লে। সেটটির দুই পাশেই রয়েছে মেটাল ফ্রেম ও গরিলা গ্লাস। সামনে রয়েছে সুপার অ্যামোলেড ডিসপ্লে প্যানেল।
দুটি হ্যান্ডসেটেই রয়েছে ৫ দশমিক ১ ইঞ্চির ডিসপ্লে। দুটি সেটই অত্যন্ত দ্রুতগতির। দুটোতেই রয়েছে এক্সিনোস অক্টা-কোর চিপসেট এবং ৩ জিবি র্যাম। রয়েছে ওয়্যারলেস চার্জিং। ৩২, ৬৪ ও ১২৮ জিবির তিনটি আলাদা স্টোরেজ ভার্সন থাকলেও নেই আলাদা মাইক্রোএসডি কার্ডস্লট।
রিয়ার ক্যামেরা দুটো ফোনেরই ১৬ মেগাপিক্সেল ও ফ্রন্ট ক্যামেরা ৫ মেগাপিক্সেল। স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৬-এর দাম ৪৭৯ ইউরো এবং স্যামসাং গ্যালাক্সি ৬ এজের দাম ৫৪৯ ইউরো।
3 thoughts on "বছরের সেরা ১০ স্মার্টফোনের তথ্য"