বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে চুরি যাওয়া অর্থ ধাপে ধাপে ফেরত দিচ্ছেন ফিলিপাইনের ক্যাসিনো ব্যবসায়ী কিম অং। প্রথম ধাপে সাড়ে ৪ মিলিয়ন ডলার ফেরত দেয়ার পর দ্বিতীয় ধাপে আরো ৮ লাখ ২৯ হাজার ডলার ফেরৎ দিয়েছেন এ ব্যবসায়ী। কিন্তু ফেরত দেয়া সেই বান্ডিলে ছিল জাল নোট।
সোমবার কিম অংয়ের আইনজীবী ভিক্টর ফার্নান্দেজ দেশটির অ্যান্টি মানি লন্ডারিং কাউন্সিলের (এএমএলসি) নির্বাহী পরিচালক জুলিয়া আবাদের কাছে এ টাকা হস্তান্তর করেন।
এএমএলসি কর্মকর্তারা জানান, বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় এ মুদ্রা নিয়ে কিমের আইনজীবী এএমএলসি কার্যালয়ে আসেন। দুই ঘণ্টা ধরে ১ হাজার ও ৫০০ পেসোর নোটে বিপুল অংকের এ টাকা গুণতে হয়। এসময় ৫০০ পেসোর নোট জাল পাওয়ায় বিপত্তিও দেখা দেয়। পরে কিমের আইনজীবী নকল ৫০০ পেসোর নোট পরিবর্তন করে দেন।
কিমের আইনজীবী ভিক্টর ফার্নান্দেজ জানান, চীনা নাগরিক গাও শুহুয়া ইস্টার্ন হাওয়াই লেইজার কোম্পানি লিমিটেডে এ টাকা রেখে যান। বাংলাদেশ ব্যাংকের গোপন সুইফ কোড ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে গচ্ছিত রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে ১০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার তুলে নেয়ার অন্যতম হোতা চীনা এ নাগরিক গাও শুহুয়া। ফিলিপাইন সিনেট কমিটির শুনানিতে ক্যাসিনো ব্যবসায়ী কিম অং এ তথ্য জানিয়েছিলেন। টাকা চুরিতে নাম জানাজানি হওয়ার পর গা ঢাকা দেন চীনা এ নাগরিক।
ভিক্টর ফার্নান্দেজ জানান, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আত্মগোপনে থাকা চীনা নাগরিক গাও শুহুয়া যে সাড়ে ৯৭ লাখ ডলার কিম অংয়ের কাছ থেকে ঋণ হিসেবে নিয়েছিলেন সে টাকার আরো কিছু অংশ ফেরৎ দেয়া সম্ভব হবে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যাংক অব নিউ ইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের ১০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার তুলে নেয় দৃবৃত্তরা। এ অর্থের ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাঠানো হয় ফিলিপাইনের রিজাল কমাশিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের মাকাতি সিটির জুপিটার শাখায় ক্যাসিনো ব্যবসায়ী কিম অংয়ের অ্যাকাউন্টে।
রিজার্ভ লোপাটের বাকি ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যায় শ্রীলংকার সেচ্ছাসেবী সংগঠন শাকিলা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। তবে প্রাপক সংস্থার নামের বানানে ভুল থাকায় ওই টাকার পেমেন্ট আটকে দেয় ব্যাংক কর্মকর্তারা।
রিজার্ভ লোপাটের ইতিহাসে অন্যতম এ ঘটনা গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ম্যানিলাভিত্তিক ইংরেজি দৈনিক দ্য ইনকোয়েরারে প্রকাশের পর বিশ্বজুড়ে হৈচৈ পড়ে যায়।