নামাজ আদায় মুসলমানদের জন্য ফরজ।
যে কারণে নামাজে যাতে ভুল না হয়,
সেজন্য অধিকাংশ মুসলমান খুব যত্ন ও
সতর্কতার সাথে নামাজ আদায় করে
থাকেন। তবুও নামাজ আদায়কালে
অজ্ঞতার কারণে কিংবা অন্য যে
কোনো কারণেই হোক
অনেকেরই কিছু ভুল হয়ে যায়। যে
ভুলগুলো নামাজের মাঝে কখনো করা
উচিৎ নয়। এ ধরনের ভুল সম্পর্কে
আমাদের আজকের আলোচনা। নিচে
এই সম্পর্কে কিছু আলোচনা করা
হলো।
কাতারে স্থান নির্দিষ্ট করে রাখা : মুরব্বি,
বিত্তশালী কিংবা অন্য কোনো দোহাই
দিয়ে সামনের কাতারে স্থান নির্দিষ্ট
করে রাখা ঠিক নয়। অনেক সময় দেখা
যায় সামনের কাতারে জায়নামাজ বিছানো,
কিন্তু লোক নেই। জিজ্ঞেস করলে
জানা যায় ‘অমুক সাহেব জায়গা রেখে
গেছেন।’ এমনটি করা উচিত নয়। এ
ধরনের কাজে অন্যকে ঠকানো হয়।
অনেকে আবার দু’পা ফাঁক করে অনেক
জায়গা নিয়ে নামাজে দাঁড়ান। একটু চেপে
যদি আরেক মুসলমান ভাইকে দাঁড়ানোর
জায়গা দেয়া যায়, তবে সেটা নিশ্চয়ই
ভালো কাজ হবে। কারণ মসজিদ আল্লাহর
তাকবিরে তাহরিমা না পড়ে রুকুতে যাওয়া :
তাকবিরে তাহরিমা (আল্লাহ আকবার) না
বলে রুকুতে চলে যাওয়া প্রচলিত
সর্বনাশা এক ভুল। অর্থাৎ জামাতে নামাজ
আদায়কালে ইমাম যখন রুকুতে যান, তখন
অনেক রাকাত পাওয়ার জন্য তাড়াহুড়া করে
একটি তাকবির (আল্লাহু আকবার) বলতে
বলতে রুকুতে চলে যান- যা সঠিক পদ্ধতি
নয়। কারণ যে তাকবিরটি বলতে বলতে
মুসল্লি রুকুতে যাচ্ছে, সেটাকে রুকুর
তাকবির বলা যায়। তাহলে তার তাকবিরে
তাহরিমা তো আদায় হয়নি। অথচ তাকবিরে
তাহরিমা ফরজ। এক্ষেত্রে ইমামকে
রুকুতে পেতে হলে কয়েকটি কাজ
করা জরুরি। প্রথমে সোজা হয়ে
দাঁড়িয়ে কান পর্যন্ত হাত উঠিয়ে একবার
‘আল্লাহু আকবার’ উচ্চারণ করে হাত না
বেঁধে সোজা ছেড়ে দিবে। অতপর
আরেকটি তাকবির (আল্লাহু আকবার)
বলতে বলতে রুকুতে যাবে।
প্রকৃতঅর্থে, এখানে তাকবির দুটি।
প্রথমটি তাকবিরে তাহরিমা, যা নামাজের
প্রথম কাজ। এই তাকবির না বললে নামাজ
হবে না। আর দ্বিতীয়টি রুকুর তাকবির। এই
তাকবির বলা সুন্নাত। কেউ যদি রুকুতে
ইমামের সাথে শামিল হতে চায় তাহলে
তার জন্য নিয়ম মাফিক এই দুটি তাকবির আদায়
করা উচিত। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে
রুকুর তাকবির ছাড়া যেতে পারে, কিন্তু
স্থির দাঁড়ানো অবস্থায় তাকবিরে তাহরিমা
এ বিষয়ে অধিক তাড়াহুড়া বা অবহেলায়
নামাজ শুদ্ধ না হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
(ফতোয়া শামি: ১/৪৪২-৪৫২, আল বাহরুর
রায়েক: ২/২৭৬)
কাতার পূর্ণ না করে নতুন কাতার করা :
সামনের কাতারে দাঁড়ানোর জায়গা থাকা
সত্বেও সেখানে না দাঁড়িয়ে
অনেকেই নতুন কাতার শুরু করেন।
ফলে কাতারের ডান কিংবা বাম দিক অপূর্ণ
থেকে যায়। এভাবে কাতার অপূর্ণ রাখা
উচিত নয়। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে
ব্যক্তি কাতার মিলিত করে, আল্লাহ তার
সঙ্গে সম্পর্ক জুড়ে দেন। আর যে
ব্যক্তি কাতার বিচ্ছিন্ন করে আল্লাহ তার
সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন
করেন।’ (নাসায়ী)
6 thoughts on "নামাজে কখনো যে ভুলগুলো করবেন না"