বরিশাল: এসএসসি পরীক্ষায়
‘হিন্দুধর্ম’ বিষয়ে ফেল করার খবরে
অভিমান করে আত্মহত্যা করা সেই
মেধাবী ছাত্র সর্বজিত ঘোষ হৃদয়
জিপিএ-৫ পেয়েছে। বোর্ড
কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে ফলাফল
ঘোষণার দিন (১১ মে) সে
‘হিন্দুধর্মে’ ফেল করেছে প্রকাশ
করা হয়। কিন্তু উত্তরপত্র পুর্ন:মূল্যায়ন
করে শনিবার সন্ধ্যায় শিক্ষাবোর্ড
কর্তৃপক্ষের ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী
মেধাবী ছাত্র সর্বজিত ঘোষ হৃদয়
হিন্দুধর্মেও জিপিএ-৫ পেয়েছে।
এছাড়া বোর্ডে বেড়েছে
জিপিএ-৫ এবং পাশের হারও।
হৃদয়ের পাশের প্রাপ্ত খবরে মা
শিলা ঘোষ সজ্ঞাহীন হয়ে
পড়েছেন। সেই সঙ্গে ছেলেকে
হারিয়ে পাথর বাবাও কাঁদছেন
অনাবরত। তাদের আর্তনাদ শুনে
প্রতিবেশীরা বাসায় ছুটে
গেলেও কেউ শান্তনা দেয়ার
ভাষা খুঁজে পাচ্ছেন না। কারণ
হৃদয়ের মা-বাবার যৌক্তির প্রশ্নের
উত্তর দিতে পারছেন না কেউ।
এমনকি বরিশাল শিক্ষা বোর্ড
কর্তৃপক্ষও হৃদয়ের আত্মহুতির ব্যাপারে
কোনো প্রতিক্রিয়াও জানায়নি।
তবে দায় এড়াতে নানা কৌশল
অবলম্বন করেছে।
বিশেষ করে শিক্ষাবোর্ড
চেয়ারম্যান প্রফেসর মু. জিয়াউল
হকও সব দায় প্রধান পরীক্ষকের ওপর
চাপিয়ে দেয়ার অপকৌশল
নিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি
তার ফেসবুকে একটি পোষ্ট দিয়ে
পরিবেশ-পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত
করে তুলেছেন। সেই পোষ্টে বোর্ড
চেয়ারম্যান বলছেন, প্রযুক্তিগত
ত্রুটি, প্রধান পরীক্ষকের
অমনোযোগিতা এবং অদক্ষতার
কারণে এটি হয়েছে।
বিষয়টি তদন্তে একটি কমিটি গঠন
করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে
বিধি মোতাবেক শাস্তি গ্রহণ করা
হবে। অবশ্য ওই বিষয়টি তিনি
অনাকাঙ্খিত উল্লেখ করে ক্ষমা
প্রার্থনাও করেছেন। কিন্তু তার
সেই পোষ্টটি কিছুতেই মেনে
নিতে পারছেন না বরিশালের
ফেসবুক ব্যবহারকারী সচেতন মানুষ।
বিশেষ করে তাদের নানামুখি

প্রশ্নবানে জর্জরিত করে তুলেছেন
বোর্ড চেয়ারম্যানকে।
সেখানে নওরোজ কবির নামে এক
ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন, ‘পরীক্ষকের
ভুলের কারণে ফেল হওয়াতে যে
ছাত্রটি ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে
আত্মহত্যা করলো তার দায়ভার কে
নেবে? প্রধান পরীক্ষকের দায়িত্ব
যাকে দেয়া হল তার সে যোগ্যতা
আছে কিনা পূর্বেই সে বিষয়ে
নিশ্চিত হওয়া আবশ্যক ছিল।
তাছাড়া ধর্মের মতো একটা বিষয়ে
যখন অস্বাভাবিক ফেল দেখা যায়
তখন স্বভাবতই ওই শিক্ষকের মনে প্রশ্ন
আসা উচিত ছিল। এই সামান্য কমন
সেন্স যে শিক্ষকের নেই পরীক্ষক
হওয়ার কোনো যোগ্যতা তার
থাকতে পারে না।
এছাড়ও স্বপ্নীল রাজু নামে এক
ব্যক্তি বলেছেন, ‘স্যার বিষয়টি
অনাকাঙ্খিত বলে এড়িয়ে গেলে
হবে কি? আপনাদের ভুলে মেধাবী
ছাত্রের প্রাণ যাবে এটা
বরিশালবাসী কতটা মেনে নিতে
পারবে আমার জানা নেই। তবে এ
ধরনের বিষয়টি আমার মেনে নিতে
খুব কষ্ট হচ্ছে এবং হবেও।
এক্ষেত্রে হৃদয়ের বাবা শেখর
ঘোষের অভিব্যক্তি হচ্ছে, বোর্ড
কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে তার
ছেলে বলি হবে এটি মেনে নেয়া
যায় না। এবং তিনি মেনে
নিতেও পারবেন না। সঙ্গত কারণে
তিনি আইনের দারস্থ হওয়ার কথা
জানিয়েছেন।
সর্বজিত ঘোষ হৃদয় বরিশাল নগরীর
উদয়ন স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায়
অংশ নিয়েছিলেন। সে নগরীর
কাটপট্টি রোড এলাকার স্বর্ণ
ব্যবসায়ী শেখর ঘোষের ছেলে।
১১ মে সারা দেশে ঘোষিত
এসএসসির ফলাফলে সর্বজিত ঘোষ হৃদয়
ধর্ম বিষয় বাদে সবকটিতে জিপি
পেয়েছিলো বলে প্রকাশ করা হয়।
এতে সে অভিমান করে বাসার
পেছনে প্যারারা রোডে
নির্মাণাধীন একটি বহুতল ভবনের
ওপর থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা
করে।
শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানিয়েছে,
এসএসসি পরীক্ষা-২০১৬ এর হিন্দুধর্ম
(১১২) বিষয়ের সংশোধিত ফলাফল
নৈর্ব্যক্তিক খ সেটের
পরীক্ষার্থীদের ফলাফল বিপর্যয়
হয়েছিল। এ সেটের অনেক
পরীক্ষার্থী ১ম পর্যায়ে ফলাফল
প্রকাশের সময়ে পরীক্ষায় পাশ
করতে পারেনি। তার মধ্যে
খ্যাতনামা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের
মেধাবী শিক্ষার্থীরাও ছিল।

এর কারণ হচ্ছে, প্রধান পরীক্ষক খ
সেটের যে উত্তরমালা তৈরি করে
দিয়েছিলেন তা গ সেটের। ফলে খ
সেটে যারা পরীক্ষা দিয়েছে
তাদের উত্তরের সাথে প্রধান
পরীক্ষকের ভুল উত্তরমালার সমন্বয়
হয়নি।
পরবর্তীতে ফলাফল বিপর্যয়ের
বিষয়টি জানতে নতুন পরীক্ষক
নিয়োগ দিয়ে নতুন উত্তরমালা
তৈরি করে ১০ হাজার ৪৯২
পরীক্ষার্থীর নৈর্ব্যক্তিক (সকল
সেট) পুনরায় পরীক্ষা করে। যার
মধ্যে ১ হাজার ১৪১ জন ফেল থেকে
পাশ করেছে।
জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭৯ জন। এ
পুনঃপরীক্ষণে ৫৮০৯ জনের ফলাফল
উন্নীত হয়েছে। সেখান থেকেও
নতুন ১৫ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
ফলাফলের শতকরা হারেরও পরিবর্তন
হবে জানিয়েছে শিক্ষা বোর্ড
কর্তৃপক্ষ।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষা বোর্ডের
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. শাহ
আলমগীর জানান, হিন্দুধর্ম বিষয়ে
পরীক্ষার্থী ছিল প্রায় সাড়ে ৯
হাজার। এর মধ্যে ‘খ’ সেটের প্রশ্নপত্র
পায় প্রায় ১১শ পরীক্ষার্থী। ১১শ
পরীক্ষার্থীর মধ্যে কয়েকশ
পরীক্ষার্থীর ফলাফলে বিপত্তি
ঘটে। নৈর্ব্যক্তিকের উত্তরপত্রের
ওএমআর শিট কম্পিউটারে দেখা হয়।
যান্ত্রিক ত্রুটিজনিত কারণে
এমনটা হয়েছে দাবি এই কর্মকর্তার।
শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর
মো. জিয়াউল হক জানান, দু’জন
প্রধান পরীক্ষকের অদক্ষতার কারণে
অনাকাঙ্খিত ঘটনার তৈরি
হয়েছিল। একটি তদন্ত কমিটি গঠন
করা হয়েছে। অভিযুক্তদের
বিধিমোতাবেক শাস্তির প্রদান
করা হবে।

সকল ধরনের টিপস ট্রিকস পেতে TrickMax.com ভিজিট করুন

13 thoughts on "বোর্ডের ভুল : ফেল করায় আত্মহত্যা, পরে জানা গেল জিপিএ-৫"

  1. uzzal ray Contributor says:
    যেই মাংগের বেটা স্যার ওর খাতা কাটছিল ওর ফাসি দেওয়া দরকার।।
    1. Kazi Abdul Wakil Contributor Post Creator says:
      Right
  2. Raihan 12 Contributor says:
    রানা ভাই টিউনার করেন প্লিজ। আর
    কতো দিন থাকবো এভাবে
    1. Rashed Khan Contributor says:
      কমেন্টে এভাবে টিউনার হওয়ার জন্য হাউমাও করলে কোনদিন টিউনার হতে পারবি না
  3. AL Mamun0 Contributor says:
    আমি টিওনার হতে চাই তিভাবে হবো plz?
  4. Sk Hadi Contributor says:
    এই সকল কারনে আমাদেে দেশে এই আবস্তা।
  5. suzon miha Contributor says:
    অই কানকির পুলা সারের কারনে এই অবস্তা হয়েছে
  6. Raju Author says:
    না এ হতে পারে না!
    দেশে মেধাবী ছাত্রের অভাব।
    হা হা হা এই বছরের মেধাবী ছাত্ররা সামান্য এটাওও জানে না যে “বিজয় দিবস” কবে।
    1. trickbdd Subscriber says:
      apne valo kore a b c d janen to?
  7. Blackhunter Contributor says:
    Fucking education system .bustard
  8. Khan Mukabber Contributor says:
    sala ki r komo
  9. trickbdd Subscriber says:
    gua Mara dik ga porikkhai fel korle ki attohotta korte hoy naki desh jati sikkhoker ki dos!

Leave a Reply