মানুষ যখন অসুখী থাকে তখন বহু
বিষয় নিয়েই তার অসন্তুষ্টি
প্রকাশ করে। আর এটি মূলত কোনো
পরিস্থিতির কারণে নয় বরং
অভ্যাসের কারণেই হয়ে থাকে।
কয়েকটি অভ্যাস থেকেই তাদের
এ বিষয়টি বোঝা সম্ভব। এ
লেখায় তুলে ধরা হলো অসুখী
মানুষদের তেমন ১০টি অভ্যাস।
১. ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষা
বর্তমান অবস্থা নিয়ে কখনোই
সন্তুষ্ট হয় না অসুখী মানুষেরা।
তারা ধারণা করে ভবিষ্যতে
হয়ত কখনো পরিস্থিতি
পাল্টাবে। আর তখন সব দুঃখ ও
অসন্তুষ্টি দূর হয়ে যাবে। এ
কারণে তারা অনাগত সেই
ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে
থাকে। যদিও বাস্তবে তেমন দিন
আর আসে না। এ কারণে
বিশেষজ্ঞরা সর্বদা বর্তমানে
আপনার যা আছে তাই নিয়েই
সন্তুষ্ট হতে বলেন।
২. বহু জিনিসের পেছনে ছোটা
অত্যন্ত আর্থিক সঙ্কটের মধ্যে
যারা জীবনের প্রথম অংশ
কাটায় তারা পরবর্তীতে আয়
বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সুখও
কিছুটা বাড়াতে সক্ষম হয়। কিন্তু
এক পর্যায়ে তারা বহু বিলাসপণ্য
সংগ্রহ করা শুরু করে। এতে এক
পর্যায়ে আবার তারা আর্থিক
সঙ্কটের মুখোমুখি হয়ে পড়ে। আর
এ কারণে তাদের মনের শান্তি
ও সন্তুষ্টি আবার চলে যায়।
৩. বাড়িতে থাকা
অসুখী মানুষেরা সাধারণত অন্য
মানুষদের এড়িয়ে চলে। আর এ
কারণে তাদের সামাজিকতায়ও
ঘাটতি তৈরি হয়, যা আরও নানা
সমস্যা তৈরি করে। এর পেছনে
প্রধান কারণ হলো তাদের মুড।
মানসিক অবস্থা খারাপ থাকলে
সবার সঙ্গে মেশার ক্ষেত্রে
বিশেষজ্ঞরা এক্ষেত্রে
অসামাজিক না হতে বলেন।
৪. নিজেকে পরিস্থিতির শিকার মনে করা
অসুখী মানুষ সর্বদা নিজেকে
পরিস্থিতির শিকার বলে মনে
করে। তাদের হাতে নিজের এ
পরিস্থিতি সামলানোর কোনো
উপায় নেই এবং কিভাবে যে
তা হয়ে গেছে, এমন একটা
ধারণা থাকে। এ ধারণার
কারণে এরা নিজের
পরিস্থিতি পাল্টানোর জন্য
কোনো চেষ্টাও করে না। যদিও
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধারণা
ভুল। পরিস্থিতি যাই হোক না
কেন, তা পাল্টানোর জন্য
চেষ্টা করতে হবে নিজেকেই।
৫. হতাশা
অসুখী হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ
হতাশা। এটি মূলত মুড কিংবা
সাময়ীক মানসিক পরিস্থিতি নয়,
এটি তৈরি হয় আরও বড় আকারে।
হতাশার কারণে মানুষ নিজেই
নিজের মাঝে একটি দুঃখজনক
পরিস্থিতি তৈরি করে। এরপর
যে কোনো পরিস্থিতিতেই
মানুষ ভালো নয় বরং মন্দ বিষয়টি
আশা করে।
৬. অভিযোগ
এটি অসুখী মানুষের আরেকটি
নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য যে, তারা
কখনোই সন্তুষ্ট হয় না। নানা বিষয়
নিয়ে তারা ক্রমাগত অভিযোগ
করতে থাকে। যারা ক্রমাগত
অভিযোগ করতে অভ্যস্ত তারা
নিজেই এ পরিস্থিতি তৈরি
করে। অন্যরাও তাদের
অভিযোগের কারণে অতিষ্ট হয়ে
পড়ে।
৭. নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা
বাজে বিষয় সবার ক্ষেত্রেই
ঘটতে পারে। কিন্তু আপনি
বিষয়টিকে কেমন দৃষ্টিতে
দেখছেন তা গুরুত্বপূর্ণ। একটি
বাজে বিষয় যখন কোনো একজন
নেতিবাচক মানুষের ক্ষেত্রে
ঘটে তখন তারা সে দিনটিকেই
বাজে হিসেবে দেখে।
বাজে মনে করতে পারে এমনকি
জীবনটাকেও মূল্যহীন মনে করতে
পারে। যদিও ইতিবাচক মানুষ সে
বাজে বিষয়টিকে সেভাবে
পাত্তা না দিয়ে বরং তাকে
ভালো দৃষ্টিতে দেখতে চায়।
৮. সমস্যা লুকিয়ে রাখা
অনেক অসুখী মানুষ তাদের
গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা লুকিয়ে রেখে
প্রকাশ করতে চায় যে, সবকিছু
স্বাভাবিক আছে। যদিও
পরবর্তীতে এ সমস্যা যখন আরও
বেড়ে যায় তখন তা নিজে
থেকেই প্রকাশিত হয়ে পড়ে। আর
এতে তারা নিজেকে অবস্থার
শিকার হিসেবেই বর্ণনা করে।
৯. উন্নতি না হওয়া
অসুখী মানুষ প্রায়ই নিজের
উন্নতির জন্য কোনো চেষ্টা করে
না। এতে তাদের উন্নতির
সম্ভাবনা বন্ধ হয়ে যায়। তাদের
দেখা যায় আরাম করে
পরিস্থিতি পাল্টাবে এমন
আশায় দিন গুনতে। যদিও চেষ্টা
না করার কারণে পরিস্থিতিও
পাল্টায় না।
১০. অন্যের সঙ্গে তুলনা
অন্যের সঙ্গে তুলনা করার
পাশাপাশি অসুখী মানুষকে
সর্বদা হিংসা করতে দেখা
যায়। তারা অন্যের সঙ্গে
নিজের তুলনা করে এবং অন্যের
উন্নতিতে মনে দুঃখ পায়। এ
কারণে তাদের মানসিক
অবস্থাও ক্রমে খারাপ হয়ে যায়।
2 thoughts on "অসুখী মানুষের ১০ অভ্যাস, যা সবার জন্যই বর্জনীয় !"