♥♥আসসালামু আলাইকুম♥♥

সবাই কেমন আছেন?আশা করি সবাই ভালো আছেন।আর আপনাদের দোয়ায় আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।

পোস্টের বিষয়ঃ

কালকে কেয়ামতের আলামত এর প্রথম পার্ট নিয়ে আলোচনা করেছি।আজকে দ্বিতীয় পার্ট নিয়ে আলোচনা করব

আজকে ১৫ টি পার্ট নিয়ে আলোচনা করব।


১৩) গান বাজনা এবং গায়িকার সংখ্যা বেড়ে যাবেঃ
১৪) মদ্যপান হালাল মনে করবেঃ
১৫) মসজিদ নিয়ে লোকেরা গর্ব করবেঃ
১৬) দালান-কোঠা নির্মাণে প্রতিযোগিতা করবেঃ
১৭) দাসী তার মনিবকে জন্ম দিবেঃ
১৮) মারামারি ও হত্যাকান্ড বৃদ্ধি পাবেঃ
১৯) সময় দ্রুত চলে যাবেঃ
২০) মুসলমানেরা শির্কে লিপ্ত হবেঃ
২১) ঘন ঘন বাজার হবেঃ
২২) আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা হবেঃ
২৩) লোকেরা কালো রং দিয়ে চুল-দাড়ি রঙ্গাবেঃ
২৪) কৃপণতা বৃদ্ধি পাবেঃ
২৫) ব্যবসা-বাণিজ্য ছড়িয়ে পড়বেঃ
২৬) ভূমিকম্প বৃদ্ধি পাবেঃ
২৭) ভূমি ধস ও চেহারা বিকৃতির শাস্তি দেখা দিবেঃ


১৩) গান বাজনা এবং গায়িকার সংখ্যা বেড়ে যাবেঃ
আখেরী যামানার লোকেরা গান-বাজনা হালাল মনে করে ব্যাপকভাবে তাতে আসক্ত হয়ে পড়বে। বর্তমানে ব্যাপক আকারে এই আলামতটি দেখা দিয়েছে। মুসলমানদের ঘরে ঘরে টিভি, ডিস এন্টিনা, ইন্টারনেটসহ নানা ধরণের প্রযুক্তি ঢুকে পড়েছে। ২৪ঘন্টা এগুলোতে গান-বাজনা, উলঙ্গ, অর্ধালঙ্গ নারী পুরুষের ফাহেশা ছবি এবং ফিল্ম প্রদর্শিত হচ্ছে। এগুলো মুসলমানের সন্তানদের ঈমান আকীদা ও চরিত্র ভেঙ্গে চুরমার করে দিচ্ছে। যারা একাজে মত্ত হবে তাদেরকে তিন ধরণের শাস্তি দেয়া হবে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আখেরী যামানায় কোন কোন জাতিকে মাটির নিচে দাবিয়ে দেয়া হবে, কোন জাতিকে উপরে উঠিয়ে নিক্ষেপ করে ধ্বংস করা হবে। আবার কারো চেহারা পরিবর্তন করে শুকর ও বানরে পরিণত করা হবে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে জিজ্ঞেস করা হলো কখন এরূপ করা হবে? তিনি বললেনঃ যখন গান-বাজনা এবং গায়িকার সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।(ইবনে মাযাহ। ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন, সহীহুল জামে আস্ সাগীর হাদীছ নং-২১৬)
এই পাপে লিপ্ত হওয়ার কারণে অতীতের কোন কোন জাতিকে এভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। বর্তমানেও আমরা প্রায়ই ভূমি ধসে ব্যাপক ধ্বংসের খবর প্রচার মাধ্যমে শুনতে পাচ্ছি। তবে চেহারা পরিবর্তনের ঘটনা সম্ভবত এখনও ঘটেনি। আমরা হিসেবে বিশ্বাস করি আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা বলেছেন তা কিয়ামতের আগে অবশ্যই ঘটবে। দ্বীন-ধর্ম ছেড়ে দিয়ে যে সমস্ত মুসলমান গান-বাজনা ও গায়ক-গায়িকা নিয়ে ব্যস্ত থাকবে তাদের উপরে চেহারা বিকৃত করার শাস্তি অবশ্যই আসবে।

১৪) মদ্যপান হালাল মনে করবেঃ
إِنَّ مِنْ أَشْرَاطِ السَّاعَةِ أَنْ يُشْرَبَ الخَمْرُ
নিশ্চয় কিয়ামতের আলামতের মধ্য থেকে একটি আলামত হচ্ছে মদ্যপান ছড়িয়ে পড়বে।(বুখারী, অধ্যায়: কিতাুল ইলম)
মুসলমানদের মাঝে মদ্যপান ও মদের ব্যবসা ব্যাপকভাবে প্রচলিত রয়েছে। কেউ বা অন্য নাম দিয়ে কেউ বা হালাল মনে করে এতে লিপ্ত হচেছ। মুসলিম দেশগুলোতে প্রকাশ্যে মদ বিক্রি হচ্ছে। মুসলমানদের চরিত্র ও আদর্শ ধ্বংস কারার জন্যে সরকারী লাইসেন্স নিয়ে এক শ্রেণীর মুসলমান মদের ব্যবসায় লিপ্ত রয়েছে। মোটকথা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর বাণী নিশ্চিতরূপে বাস্তবায়িত হয়েছে।

১৫) মসজিদ নিয়ে লোকেরা গর্ব করবেঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَتَبَاهَى النَّاسُ فِي الْمَسَاجِدِ
æযত দিন লোকেরা মসজিদ নিয়ে গর্ব না করবে ততদিন কিয়ামত হবেনামুমিন।(মুসনাদে আহমাদ। ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন, সহীহুল জামে, হাদীছ নং ৭২৯৮)
ইমাম বুখারী (রঃ) আনাস (রাঃ) হতে বর্ণনা করে বলেনঃ লোকেরা মসজিদ নিয়ে গর্ব করবে, কিন্তু ইবাদতের মাধ্যমে তা আবাদ করবেনা।(বুখারী, অধ্যায়: কিতাবুস সালাত) উমার (রাঃ) মসজিদকে জাঁকজমক করতে নিষেধ করেছেন।(ফাতহুল বারী, ১/৫৩৯)
মোটকথা আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্যের মাধ্যমে মসজিদ আবাদ করতে হবে। তা বড় করে নির্মাণ করা ও চাকচিক্যময় করার মাধ্যমে নয়।

১৬) দালান-কোঠা নির্মাণে প্রতিযোগিতা করবেঃ
সহীহ মুসলিম শরীফে উমার (রাঃ) বর্ণিত হয়েছে, একবার জিবরীল ফেরেশতা মানুষের আকৃতি ধরে ধবধবে সাদা পোষাক পরিধান করে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর কাছে এসে ইসলাম, ঈমান এবং ইহসান সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন। তিনি প্রশ্নগুলোর উত্তর দিলেন। তারপর জিবরীল (আঃ) কিয়ামতের সময় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন। উত্তরে তিনি বললেনঃ প্রশ্নকৃত ব্যক্তি প্রশ্নকারী অপেক্ষা বেশী জ্ঞাত নন। অর্থাৎ এ ব্যাপারে আমি তোমার চেয়ে বেশী জানিনা। অতঃপর জিবরীল ফেরেশতা বললেনঃ তাহলে আমাকে কিয়ামতের কিছু আলামত সম্পর্কে বলে দিন। তিনি বললেনঃ æযখন তুমি দেখবে দাসী তার মনিবকে জন্ম দিচ্ছে এবং এক সময়ের বস্ত্রহীন, অভাবী এবং উট-ছাগলের রাখালরা বড় বড় দালান-কোঠা তৈরী করছে তখন তুমি মনে করবে যে, কিয়ামত নিকটবর্তী হয়ে গেছে।(সহীহ মুসলিম, অধ্যায়: কিতাবুল ঈমান)
এই হাদীছে বর্ণিত কিয়ামতের আলামতটি অতি সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়েছে এবং রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর বাণী বাস্তবে রূপ নিয়েছে। এক সময় যে সমস্ত মানুষের কাছে ধন-সম্পদ ছিলনা, পরণে ভাল পোষাক ছিলনা, অপরের বাড়ীতে রাখালী করে জীবন ধারণ করতো তাদের কাছে প্রচুর ধন-সম্পদ হওয়ার কারণে তারা বহুতল বিশিষ্ট ভবন নির্মাণে প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হয়েছে। এমনিভাবে কিয়ামতের পূর্বে মানুষের আসল অবস্থার পরিবর্তন হয়ে যাবে। যারা মর্যাদার হকদার নয় তাদেরকে সম্মান জনক পদে অধিষ্ঠিত করা হবে। আমানতদারকে বিশ্বাস করা হবেনা; বরং খেয়ানতকারীকে আমানতদার হিসেবে গ্রহণ করা হবে।

১৭) দাসী তার মনিবকে জন্ম দিবেঃ
উপরের হাদীছে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জিবরীল ফেরেশতার প্রশ্নের উত্তরে বলেছেনঃ যখন তুমি দেখবে দাসী তার মনিবকে জন্ম দিচ্ছে তখন কিয়ামত নিকটবর্তী বলে মনে করবেমুমিন।

দাসী তার মনিবকে জন্ম দিবেমুমিন একথাটির ব্যাখ্যায় আলেমগণ কয়েকটি উক্তি করেছেনঃ (১) ইসলাম অচিরেই বিস্তার লাভ করবে। মুসলমানদের হাতে কাফের-মুশরেকদের স্ত্রী-সন্তান বন্দী হয়ে দাস-দাসীতে পরিণত হবে। কোন ব্যক্তি তার ভাগে প্রাপ্ত দাসীর সাথে সহবাস করার কারণে দাসী গর্ভবতী হয়ে সন্তান প্রসব করবে। উক্ত ব্যক্তি মৃত্যু বরণ করার পর দাসীর গর্ভের সন্তান দাসীর মালিক হবে। মৃত্যুর পর পিতার সম্পদ ছেলের সম্পদে পরিণত হয়। এমতাবস্থায় সন্তান তার মায়ের সাথে আপন দাসীর ন্যায় ব্যবহার করবে।
(২) আখেরী যামানায় সন্তানেরা পিতা-মাতার অবাধ্য হবে। দাসীকে যেমন তার মনিব প্রহার করে, গালি দেয়, কষ্ট দেয়, সন্তানও তার মায়ের সাথে অনুরূপ ব্যবহার করবে। ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী ফাতহুল বারীতে এমতটিকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। সে হিসেবে এই আলামতটি আমাদের সমাজে ব্যাপকভাবে বিদ্যমান। এমন কোন গ্রাম বা অঞ্চল পাওয়া যাবেনা যেখানে সন্তানেরা পিতা-মাতার সাথে অসৎ ব্যবহার করেনা।

১৮) মারামারি ও হত্যাকান্ড বৃদ্ধি পাবেঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَكْثُرَ الْهَرْجُ قَالُوا وَمَا الْهَرْجُ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ الْقَتْلُ الْقَتْلُ
হারজ বৃদ্ধি পাওয়ার পূর্বে কিয়ামত হবেনা। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! হারজ কি? উত্তরে তিনি বললেনঃ হত্যা, হত্যা।(বুখারী, অধ্যায়: কিতাবুল ফিতান) নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেনঃ ঐ আল্লাহর শপথ! যার হাতে আমার জীবন ততদিন দুনিয়া ধ্বংস হবেনা যতদিন না মানুষের কাছে এমন সময় আসবে যখন হত্যাকারী বুঝতে পারবেনা সে কেন হত্যাকান্ডে লিপ্ত হচ্ছে এবং নিহত ব্যক্তিও জানতে পারবেনা কেন তাকে হত্যা করা হচ্ছে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কে বলা হলো তাদের অবস্থা কেমন হবে? উত্তরে তিনি বললেনঃ হত্যাকারী এবং নিহত ব্যক্তি উভয়ই জাহান্নামে যাবে।(মুসলীম, অধ্যায়: কিতাবুল ফিতান)
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর বাণী সত্য প্রমাণিত হয়েছে। উছমান (রাঃ)এর হত্যার পর সাহাবীদের যুগে মুসলমানদের পরস্পরের মধ্যে যে সমস্ত যুদ্ধ হয়েছে তাতে অসংখ্য মানুষ নিহত হয়েছে। পরবর্তীতে বিভিন্ন ইসলামী অঞ্চলে অসংখ্য যুদ্ধ হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কারণ ছিল অস্পষ্ট। বর্তমানে ইসলামী দেশগুলোতে যে সমস্ত গৃহযুদ্ধ, মারামারি ও হত্যাকান্ড সংঘটিত হচ্ছে তাতেও উল্লেখযোগ্য কোন কারণ খুঁজে পাওয়া যাবেনা। সামান্য কারণে একজন অন্যজনকে হত্যা করছে। মনে হচ্ছে মানুষ যেন একেবারেই মূল্যহীন।

১৯) সময় দ্রুত চলে যাবেঃ
কিয়ামতের পূর্ব মুহূর্তে সময় দ্রুত চলে যাচ্ছে বলে মনে হবে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَتَقَارَبَ الزَّمَانُ فَتَكُونَ السَّنَةُ كَالشَّهْرِ وَيَكُونَ الشَّهْرُ كَالْجُمُعَةِ وَتَكُونَ الْجُمُعَةُ كَالْيَوْمِ وَيَكُونَ الْيَوْمُ كَالسَّاعَةِ
সময় ছোট হয়ে যাওয়ার পূর্বে কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবেনা। এক বছরকে একমাসের সমান মনে হবে। এক মাসকে এক সপ্তাহের সমান মনে হবে। এক সপ্তাহকে একদিনের মত মনে হবে এবং এক দিনকে এক ঘন্টার সমান মনে হবে।(মুসনাদে আহমাদ ও তিরমিযী। ইমমান আলবানী সহীহ বলছেন, সহীহুল জামে আস্ সাগীর হাদীছ নং-৭২৯৯)
আলেমগণ সময় খাট হয়ে যাওয়ার কয়েকটি অর্থ করেছেন। (১) সময় ছোট হয়ে যাওয়ার অর্থ হলো সময়ের বরকত কমে যাওয়া। আল্লামা ইবনে হাজার আসকালানী (রঃ) বলেনঃ আমাদের সময়ে এই আলামতটি প্রকাশিত হয়েছে। সময় দ্রুত চলে যাচ্ছে। অথচ আমাদের যুগের পূর্বে এরকম মনে হতোনা।(ফাতহুরবারী ১৩/১৬)।
(২) কেউ কেউ বলেছেনঃ ইমাম মাহদীর যুগে এটি সংঘটিত হবে। কেননা তখন মানুষের মাঝে চরম সুখ-শান্তি বিরাজ করবে। কারণ সুখ-শান্তি ও আনন্দের মুহূর্তে সময় দীর্ঘ হলেও খাট মনে হয়। আর দুঃখ-কষ্টের মুহূর্তে সময় অল্প হলেও তা অনেক j¤^v মনে হয়।
(৩) কেউ কেউ বলেছেনঃ কিয়ামতের পূর্বে প্রকৃতভাবেই সময় খাট হয়ে যাবে এবং তা দ্রুত চলে যাবে। সে হিসেবে এই আলামতটি এখনও আসেনি। তবে কিয়ামতের পূর্বে তা অবশ্যই আগমণ করবে এবং নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর বাণী বাস্তবে রূপ নিবে।

২০) মুসলমানেরা শির্কে লিপ্ত হবেঃ
অধিকাংশ মুসলিম দেশের মাজারগুলোর প্রতি দৃষ্টি দিলে সহজেই অনুধাবন করা যাবে যে, কিয়ামতের এই আলামতটি প্রকাশিত হয়েছে। উম্মাতে মুহাম্মাদীর বিরাট একটি অংশ আইয়্যামে জাহেলীয়াতের ন্যায় শির্কে লিপ্ত হয়েছে। কবর পাকা করে, বাঁধাই করে, কবরের উপর M¤^yR, ও মসজিদ নির্মাণ করে তাতে বিভিন্ন প্রকার শির্কের চর্চা হচ্ছে। কাবা ঘরের তাওয়াফের ন্যায় কবরের চারপার্শ্বে তাওয়াফ হচ্ছে, বরকতের আশায় কবরের দেয়াল Pz¤^b করা হচ্ছে, তাতে নযর-মানত পেশ করা হচ্ছে অলী-আওলীয়ার নামে পশু যবেহ করা হচ্ছে এবং কবরের পাশে ওরছ সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান হচ্ছে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى تَلْحَقَ قَبَائِلُ مِنْ أُمَّتِي بِالْمُشْرِكِينَ وَحَتَّى يَعْبُدُوا الْأَوْثَانَ
আমার উম্মাতের বহু সংখ্যক লোক মুশরেকদের সাথে মিলিত না হওয়া এবং মূর্তি পূজায় লিপ্ত না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত হবেনা।(তিরমিযী, অধ্যায়: কিতাবুল ফিতান, ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন, সহীহুল জামে আস্-সাগীর হাদীছ নং ৭২৮৫)
মোটকথা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর ভবিষ্যৎ বাণী বাস্তবায়িত হয়েছে। এই উম্মাতের বহু সংখ্যক মানুষের অবস্থা এরূপ হয়েছে যে, কোন কোন মাজারে দাফনকৃত ওলীর জন্যে সিজদা পর্যন্ত করা হচ্ছে। কোন কোন ক্ষেত্রে জীবিত পীরের সামনেও মাথানত করে সিজদা করা হচ্ছে। যা প্রকাশ্য শির্কের অন্তর্ভূক্ত। কুরআন ও হাদীছের শিক্ষা ভুলে গিয়ে মুসলিম জাতির অসংখ্য লোক এমনি আরো অগণিত শির্ক করছে যা বর্ণনা করে শেষ করা যাবেনা।

২১) ঘন ঘন বাজার হবেঃ
আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর পূর্বে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
لَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى َيَتَقَارَبَ الْأَسْوَاقُ ততক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত হবেনা যতক্ষণ না ঘন ঘন বাজার হবে।(মুসনাদে আহমাদ, মাউমাউয্ যাওয়ায়েদ ৭/৩২৭)।

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর এই বাণী সত্যে পরিণত হয়েছেমুমিন। পৃথিবীর সকল স্থানে একই সময়ে ঘন ঘন বাজার হবে- নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর বাণী তা প্রমাণ করেনা; বরং কোন দেশে কোন এক সময় তা হলেই নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর বাণী বাস্তবায়িত হয়েছে বলে মনে করতে হবে। আজকের প্রেক্ষাপটে আমরা যদি বাংলাদেশের জেলাসমূহের দিকে দৃষ্টি দেই তাহলে দেখতে পাবো যে সকল অঞ্চলেই ঘন ঘন বাজার তৈরী হয়েছে। এমন কোন রাস্তার মোড় পাওয়া যাবেনা যেখানে বাজার নেই।
কেউ কেউ বলেছেন ঘন ঘন বাজার হবে- একথার অর্থ হলো বর্তমানে আকাশ, স্থল ও জলপথে যাতায়াতের অত্যাধুনিক যানবাহন তৈরী হওয়াতে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত সহজ হয়ে গেছে। তাই বাজার দূরে দূরে হলেও অল্প সময়ে এক বাজার থেকে অন্য বাজারে যাওয়া যায় বিধায় বাজারগুলো খুব কাছাকাছি মনে হয়।
উত্তরে আমরা বলবোঃ হাদীছে বর্ণিত আসল অর্থ গ্রহণ করাই উত্তম। কারণ আমরা বিশ্বাস করি যে সমস্ত এলাকায় এখনও ঘন ঘন বাজার হয়নি সেখানেও কিয়ামত হওয়ার পূর্বে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর বাণী সত্যে পরিণত হবে। কাজেই তাদের ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য নয়।

২২) আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা হবেঃ
আত্মীয় স্বজনদের সাথে ভাল ব্যবহার করার উপর ইসলাম ধর্ম বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে। যারা এ সম্পর্ক নষ্ট করবে তারা জান্নাতে প্রবেশ থেকে বঞ্চিত হবে। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
فَهَلْ عَسَيْتُمْ إِنْ تَوَلَّيْتُمْ أَنْ تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ وَتُقَطِّعُوا أَرْحَامَكُمْ أُوْلَئِكَ الَّذِينَ لَعَنَهُمْ اللَّهُ فَأَصَمَّهُمْ وَأَعْمَى أَبْصَارَهُمْ
ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে সম্ভবতঃ তোমরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং তোমাদের আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে। আল্লাহ এদেরকেই করেন অভিশপ্ত আর করেন বধির ও দৃষ্টিশক্তিহীন। (সূরা মুহাম্মাদঃ ২২-২৩) নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আত্মীয়তার সম্পর্ক ঠিক রাখতে উৎসাহ দিয়েছেন এবং তা ছিন্ন করা থেকে সাবধান করেছেন। তিনি বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা মাখলূকাত সৃষ্টি শেষ করলে রক্ত সম্পর্কীয় আত্মীয়তার বন্ধন উঠে দাঁড়ালো এবং আল্লাহর দরবারে আরজ করে বললোঃ হে আল্লাহ! আপনার কাছে আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা হতে আশ্রয় চাই। আল্লাহ বললেনঃ ঠিক আছে; যে ব্যক্তি তোমার সাথে সম্পর্ক মিলিত রাখবে আমিও তার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখবো। আর যে ব্যক্তি তোমার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করবে আমিও তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করব। এতে কি তুমি সন্তুষ্ট নও? জবাবে আত্মীয়তার বন্ধন বললঃ হ্যাঁ, আমি সন্তুষ্ট আছি।(মুসলিম, অধ্যায়: কিতাবুল বিরনরি ওয়াস্ সিলাহ)|
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেনঃ
لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعُ رَحِمٍ
আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবেনামুমিন।(মুসলিম, অধ্যায়: কিতাবুল আদাব)। তিনি আরো বলেনঃ
مَنْ سَرَّهُ أَنْ يُبْسَطَ عَلَيْهِ رِزْقُهُ أَوْ يُنْسَأَ فِي أَثَرِهِ فَلْيَصِلْ رَحِمَهُ
যে ব্যক্তি চায় তার রিজিক বৃদ্ধি হোক এবং বয়স বৃদ্ধি হোক সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে।(বুখারী, অধ্যায়: কিতাবুল আদাব)।
আখেরী যামানায় কিয়ামতের পূর্বে ইসলামের এই সুন্দর নিদর্শনটির প্রতি অবহেলা করা হবে। লোকেরা কারণে অকারণে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করবে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
وَلَا تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَظْهَرَ الْفُحْشُ وَقَطِيعَةُ الرَّحِمِ
অশ্লীল কর্ম বিস্তার এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক নষ্ট না করা পর্যন্ত কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবেনা।(মুসনাদে আহমাদ, আহমাদ শাকের সহীহ বলেছেন)|
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর বাণী সত্যে পরিণত হয়েছে। এমন কোন ইসলামী সমাজ পাওয়া যাবেনা যেখানে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা হচ্ছেনা। মাসের পর মাস, বছরের পর বছর চলে যায়, অথচ লোকেরা তাদের আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ-খবর রাখেনা। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় একই গ্রাম কিংবা শহরে বসবাস করা সত্ত্বেও একে অপরের বাড়ীতে যাতায়াত করেনা। বিশেষ করে ধনীরা তাদের অসহায় আত্মীয়দের পরিচয় পর্যন্ত ভুলে যায়। কোন কোন ক্ষেত্রে হঠাৎ দেখা হয়ে গেলে চিনেও না চেনার ভান করে থাকে। (আল্লাহুল মুস্তাআন)

২৩) লোকেরা কালো রং দিয়ে চুল-দাড়ি রঙ্গাবেঃ
সাদা চুল-দাড়ি মেহদী বা অন্য রং দিয়ে পরিবর্তন করা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সুন্নাত। তিনি সাদা চুলকে কালো রং বাদ দিয়ে অন্য রং দিয়ে পরিবর্তন করতে আদেশ দিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
(إِنَّ الْيَهُودَ وَالنَّصَارَى لَا يَصْبُغُونَ فَخَالِفُوهُمْ)
ইয়াহুদী ও নাসারারা চুল ও দাড়িতে খেযাব লাগায় না। সুতরাং তোমরা খেযাব লাগিয়ে তাদের বিপরীত কর।(বুখারী, অধ্যায়: আহাদীছুল আম্বীয়া)।
কিন্তু কিয়ামতের পূর্বে লোকেরা এ আদেশ অমান্য করে কালো রং দিয়ে খেজাব (কলপ) লাগাবে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
يَكُونُ قَوْمٌ يَخْضِبُونَ فِي آخِرِ الزَّمَانِ بِالسَّوَادِ كَحَوَاصِلِ الْحَمَامِ لَا يَرِيحُونَ رَائِحَةَ الْجَنَّةِ
আখেরী যামানায় একদল লোকের আগমণ হবে যারা সাদা চুল-দাড়ি কালো রং দিয়ে পরিবর্তন করবে। তারা জান্নাতের গন্ধও পাবেনা।(আবূ দাউদ, অধ্যায়: কিতাবুত তারাজ্জুল, আলবানী র: হাদীছটিকে সহীহ বলেছেন, গায়াতুল মুরাম, পৃষ্ঠা-৮৩।

হাদীছের ভাষ্য বাস্তবে পরিণত হয়েছে। পুরুষদের মাঝে দাড়ি ও মাথার চুল কালো রং দিয়ে পরিবর্তন করার প্রবণতা ব্যাপকভাবে দেখা দিয়েছে।

২৪) কৃপণতা বৃদ্ধি পাবেঃ
কৃপণতা একটি নিকৃষ্ট অভ্যাস। আল্লাহ যাকে এই বদ অভ্যাস থেকে হেফাযত করবেন সে অবশ্যই সফলকাম হবে। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
وَمَنْ يُوقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُوْلَئِكَ هُمْ الْمُفْلِحُونَ
যারা কার্পণ্য হতে নিজেদেরকে মুক্ত করেছে তারাই সফলকামমুমিন। (সূরা হাশরঃ ৯) ইসলাম ধর্ম সম্পদশীল লোকদেরকে আল্লাহর পথে ও ভাল কাজে সম্পদ খরচ করতে আদেশ করেছে এবং কৃপণতা করতে নিষেধ করেছে। কিন্তু কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে এই উম্মাতের ধনী লোকেরা দরিদ্র, অভাবী এবং ইয়াতীমদের জন্য খরচ করা থেকে বিরত থাকবে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ কৃপণতা বৃদ্ধি পাওয়া কিয়ামতের অন্যতম আলামত।(ফাতহুল বারী ১৩.১৫)
অনেক পূর্বেই এই আলামতটি দেখা দিয়েছে। বর্তমানেও মুসলিম সমাজে এক শ্রেণীর লোক প্রচুর সম্পদের অধিকারী। অভাবী ও দরিদ্র লোকেরা অনাহারে-অর্ধাহারে তাদের চোখের সামনেই দিনাতিপাত করছে। অথচ খুব অল্প সংখ্যক সম্পদশালী লোকই এদিকে ভ্রুক্ষেপ করে থাকে।

২৫) ব্যবসা-বাণিজ্য ছড়িয়ে পড়বেঃ
কিয়ামতের অন্যতম আলামত হচ্ছে মানুষের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ছড়িয়ে পড়বে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
بَيْنَ يَدَيِ السَّاعَةِ تَسْلِيمُ الْخَاصَّةِ وَتَفْشُو التِّجَارَةُ حَتَّى تُعِينَ الْمَرْأَةُ زَوْجَهَا عَلَى التِّجَارَةِ
কিয়ামতের পূর্বে কেবল পরিচিত লোকদেরকেই সালাম দেয়া হবে।
ব্যবসা-বাণিজ্য ছড়িয়ে পড়বে। এমনকি স্ত্রীলোকেরা তাদের স্বামীদেরকে ব্যবসায়িক কাজে সহযোগিতা করবে।(মুসনাদে আহমাদ, আহমাদ শাকের র: হাদীছটিকে সহীহ বলেছেন)
বর্তমানকালে এই আলামতটি প্রকাশিত হয়েছে। শহরে, গ্রামে-গঞ্জে এবং রাস্তার দ্বারে দ্বারে ব্যাপকভাবে দোকাপাট বৃদ্ধি পেয়েছে। মহিলারাও এতে পিছিয়ে নেই। তারাও স্বামীদের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্যে অংশ নিচ্ছে। ধন-সম্পদ উপার্জন ও সঞ্চয়ে একে অপরের সাথে প্রতিযোগীতায় লিপ্ত রয়েছে।

২৬) ভূমিকম্প বৃদ্ধি পাবেঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
لَا تَقُوْم السَّاعَةُ حَتَّى َتَكْثُرَ الزَّلَازِلُ
বেশী বেশী ভূমিকম্প না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত প্রতিষ্ঠিত হবেনামুমিন।(বুখারী, অধ্যায়: কিতাবুল ফিতান)। ইমাম ইবনে হাজার আসকালানী (রঃ) বলেনঃ উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলের অনেক দেশেই বহু ভূমিকম্পের আবির্ভাব হয়েছে। বর্তমানে আমরা প্রায়ই পত্র-পত্রিকা ও প্রচার মাধ্যমে বিভিন্ন দেশে ভূমিকম্পের খবর শুনতে পাই। হতে পারে এগুলোই কিয়ামতের আলামত হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। যদি তা না হয়ে থাকে তাহলে আমরা বলবোঃ এসব ভূমিকম্প কিয়ামতের আলামত হিসেবে প্রকাশিতব্য ভূমিকম্পের প্রাথমিক পর্যায় স্বরূপ| ২০০৫ ইং সালে শ্রীলংকা,
ইন্দোনেশীয়া, থাইল্যান্ড ও ভারতসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশীয়ার কয়েকটি দেশে হয়ে যাওয়া সুনামীর ঘটনা কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার একটি সুস্পষ্ট আলামত।

২৭) ভূমি ধস ও চেহারা বিকৃতির শাস্তি দেখা দিবেঃ
আখেরী যামানায় যখন অশ্লীলতা ও পাপের কাজ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে তখন এই উম্মাতের কিছু লোককে বিভিন্ন প্রকার শাস্তিতে পাকড়াও করা হবে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
يَكُوْنُ فِىْ آخِرِ هذِهِ الأُمَّةِ خَسْفٌ و مَسْخٌ وَقَذْفٌ قَالَتْ: قُلْتُ: يَا رَسُوْلَ اللَّه! أَ نُهْلَكُ وَ فِيْنَا الصَّالِحُوْنَ؟ قَالَ: نَعْمُ, إِذا ظَهَرَ الْخَبَثُ
আখেরী যামানায় এই উম্মাতের কিছু লোককে ভূমিধস, চেহারা পরিবর্তন এবং উপরে উঠিয়ে নিক্ষেপ করে শাস্তি দেয়া হবে। আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মাঝে সৎ লোক থাকতেও কি আমরা ধ্বংস হয়ে যাবো? উত্তরে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ হ্যাঁ, যখন অশ্লীলতা বৃদ্ধি পাবেমুমিন।(তিরমিযী, অধ্যায়: কিতাবলি ফিতান, ইমাম আলবানী সহীহ বলেছেন, সহীহুল জামে আস্ সাগীর হাদীছ নং ৮০১২)।
তিনি আরো বলেনঃ
بَيْنَ يَدَيِ السَّاعَةِ مَسْخٌ وَخَسْفٌ وَقَذْفٌ
কিয়ামতের পূর্বে ভূমিধস, চেহারা পরিবর্তন এবং উপরে উঠিয়ে নিক্ষেপ করার মাধ্যমে শাস্তি দেয়া হবেমুমিন।(ইবনে মাযাহ, অধ্যায়: কিতাবুল ফিতান, সহীহুল জামে আস সাগীর হাদীছ নং-২৮৫৩)।
আমাদের যামানায় এবং আমাদের পূর্ববর্তী যামানায় পূর্ব ও পশ্চিমের বিভিন্ন দেশে অনেক ভূমিধসের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এটি কঠিন আযাবের পূর্ব সংকেত এবং আল্লাহর পক্ষ হতে তাঁর বান্দাদের জন্যে ভীতি প্রদর্শন এবং গুনাহগার ও বিদআতীদের জন্য শাস্তি স্বরূপ| যাতে লোকেরা শিক্ষা গ্রহণ করে ও তাদের প্রভুর দিকে প্রত্যাবর্তন করে এবং এটাও বিশ্বাস করে যে, কিয়ামত অতি নিকটবর্তী।
গান-বাজনাতে মত্ত এবং মদপানকারীদেরকে উপরোক্ত শাস্তি প্রদান করা হবে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ
فِي هَذِهِ الْأُمَّةِ خَسْفٌ وَمَسْخٌ وَقَذْفٌ فَقَالَ رَجُلٌ مِنَ الْمُسْلِمِينَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَمَتَى ذَاكَ قَالَ إِذَا ظَهَرَتِ الْقَيْنَاتُ وَالْمَعَازِفُ وَشُرِبَتِ الْخُمُورُ
এই উম্মাতের মধ্যে ভূমিধসন, চেহারা বিকৃতি এবং উপর থেকে নিক্ষেপ করে ধ্বংস করার শাস্তি আসবে। জনৈক সাহাবী জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহর রাসূল! কখন এরূপ হবে? নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যখন ব্যাপক হারে গায়িকা, বাদ্যযন্ত্র এবং মদ্যপানের প্রসার ঘটবেমুমিন।(তিরমিযী, অধ্যায়: আবওয়াদুল ফিতান। সহীহুল আস সাগীর, হাদীছ নং ৪১১৯)।
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেনঃ æআমার উম্মাতের একদল লোক মদ্যপানে লিপ্ত হবে। তবে মদের নাম পরিবর্তন করে অন্য নামে নামকরণ করবে। তারা বাদ্যযন্ত্র, বাঁশি বাজানো ও গান-বাজনা নিয়ে ব্যস্ত থাকবে। তাদের কতককে মাটির নীচে দাবিয়ে দেয়া হবে এবং অন্য এক দলকে শুকর ও বানরে পরিণত করা হবেমুমিন।
পাপ কাজ ও নাফরমানীতে লিপ্ত হওয়ার কারণে আল্লাহ তাআলা বনী ইসরাঈলের এক শ্রেণীর লোকের চেহারা পরিবর্তন করে শুকর ও বানরে পরিবর্তন করে ধ্বংস করেছিলেন। তবে এই উম্মাতের মাঝে এখনও চেহারা পরিবর্তনের শাস্তি আসেনি। কিয়ামতের পূর্বে মানুষ যখন জেনা-ব্যভিচার, মদ্যপান এবং গান-বাজনাসহ নানা ধরণের পাপের কাজে লিপ্ত হবে তখন এই শাস্তি অবশ্যই আসবে। কারণ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সহীহ হাদীছে এ ব্যাপারে ভবিষ্যৎবাণী করেছেন। তা কিয়ামতের পূর্বে অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে।

আজ এখানেই শেষ করছি আবার next part শেষ পার্ট নিয়ে হাজির হব।ততক্ষণে ভালো থাকুন সুস্হ থাকুন এই বলে শেষ করছি।

♥♥আল্লাহ হাফেজ♥♥

2 thoughts on "[ইসলামিক পোস্ট]কিয়ামতের আলামতসমূহ।৪২ টি আলামত নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা।[part 2]"

  1. . Contributor says:
    ভাই পড়লাম। ভালো লাগলো।
    কিন্তু পড়ে যা দেখলাম, এগুলো তো বর্তমানে ব্যাপকভাবে আমাদের সমাজে চলছে।
    এর মানে কিয়ামতের বেশিদিন নেই।
    আজ ঘুমের মধ্যেও কিয়ামতের স্বপ্ন দেখলাম।
    ১০০% সত্যি!

Leave a Reply