আসসালামুআলাইকুম ভিউয়ার্স
আশা করছি আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আপনারা সবাই ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি এবং সুস্থ আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আমি আপনাদের সাথে আলোচনা করব কেন আল্লাহতালার কাছে চাওয়ার পরও কিছু কিছু মানুষের দোয়া কবুল হয় না। এ বিষয়ে অনেকেই আমার কাছে জানতে চেয়েছেন তাই আজকে এই বিষয় নিয়ে পোস্ট করা।
তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
আমরা দোয়া করি আল্লাহ তাআলার কাছে। আমরা সকলেই জানি দোয়া হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত।
আমাদের সমস্যার কথা আমাদের পরিত্রাণের কথা আমাদের নাজাতের কথা আমরা আল্লাহতালার কাছে বলি।
আমরা সব সময় আল্লাহতালার কাছে নানা রকম সমস্যার কথা তুলে ধরি কিন্তু দেখা যায় অনেক সময় আমরা সেই সমস্যা হতে পরিত্রান হতে পারি না।
কেন আমাদের দোয়া কবুল হচ্ছে না? আল্লাহ তাআলা কেন আমার দোয়া কবুল করছে না। তাহলে কি আমার দোয়া চাওয়া ঠিকমত হচ্ছে না? এইসকল বিষয় আমাদের অনেকের মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায়।
তাই তাদের জন্য আমার আজকের এই পোস্টটি করছি। আজকের আলোচনার মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন কিভাবে বা কেন আপনার দোয়া আল্লাহ তায়ালার দরবারে কবুল হচ্ছে না বা আল্লাহতালা আপনার দোয়া কবুল করছে না।
নিচে কতিপয় তার কিছু কারণ উল্লেখ করে দেওয়া হল:
প্রথমে আমাদের জানতে হবে দোয়া করার শর্ত কি।
কিভাবে দোয়া করতে হবে এবং দোয়া করার আদব টা কি। এই সবকিছু জেনে সঠিকভাবে আল্লাহতালার কাছে কোন কিছু চাইলে আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির দোয়া কবুল করবেন ইনশাল্লাহ।
দোয়ার মধ্যে পাপের কিছু না থাকা:
হাদিসের মধ্যে বর্ণিত হয়েছে যে, বান্দার দোয়া ততক্ষণ পর্যন্ত কবুল করা হয় যতক্ষণ না বান্দা কোন পাপ নিয়ে অথবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা নিয়ে দোয়া করে।
আপনারা সকলেই আশা করছি বুঝতে পেরেছেন আপনি যদি কোন পাপ কাজ বিষয়ে বা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার বিষয়ে আল্লাহতালার কাছে দোয়া করেন তাহলে সেই দোয়া আল্লাহ তায়ালার দরবারে কোনদিনও কবুল হবে না আপনি যতই চান না কেন আল্লাহতালার কাছে।
দোয়াতে মনোযোগ থাকা:
দোয়া কালে দোয়া কারীর মনোযোগ থাকবে এবং যার কাছে প্রার্থনা করা হচ্ছে তার মহত্ব ও বড়ত্ব অন্তরে জাগ্রত থাকবে।
নবী করিম হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমরা জেনে রাখ আল্লাহ তায়ালা উদাসীন অন্তরের দোয়া কবুল করেন না”। (সুনানে তিরমিজি ৩৪৮৯)
আপনি আল্লাহতালার কাছে কোন কিছু চাইছেন কিন্তু আপনার মন সেখানে নেই আপনার মন আছে আপনার সন্তানের দিকে আপনার পরিবারের কাজকর্মের দিকে আপনার ব্যবসার দিকে এইরকম মন নিয়ে আল্লাহতালার কাছে কোন কিছু চাইলে সেই দোয়া আল্লাহ তায়ালা কবুল করেন না।
আপনাকে অবশ্যই পরিষ্কার মন নিয়ে মনোযোগ সহকারে আল্লাহতালার কাছে কোন কিছু চাইতে হবে তাহলেই আল্লাহতালার ইচ্ছায় আপনার দোয়া কবুল করবে।
খাদ্য পবিত্র বা হালাল হওয়া:
আপনি যে খাবার খাচ্ছেন বা পোশাক করছেন সেটা যদি হারাম হয় সেই হারাম পোশাক বা খাবার নিয়ে আল্লাহতালা আপনার দোয়া কবুল করবেন না।
আল্লাহ তা’আলা বলেন, “আল্লাহ তো কেবল মুত্তাকীদের থেকেই কবুল করেন” (সূরা মায়েদা আয়াত ২৭)।
এ কারণে যে ব্যক্তির পানাহার ও পরিধেয় হারাম ওই ব্যক্তি যদি আল্লাহতালার কাছে কিছু চায় তাহলে আল্লাহতালা ওই ব্যক্তির দোয়া কখনোই কবুল করবেন না।
এ বিষয়ে হাদিস শরীফে উল্লেখ হয়েছে যে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উল্লেখ করেছেন এমন এক ব্যক্তির কথা যিনি দীর্ঘ সফর করেছেন মাথার চুল উস্কোখুস্কো রয়েছে, তিনি আসমানের দিকে হাত তুলে বলেন, ইয়া রব! ইয়া রব!
কিন্তু তার পরিধেয় ও পানাহার হারাম। সে হারামে পরিপুষ্ট হয়েছে তাহলে তার দোয়া কিভাবে কবুল হবে? (সহীহ মুসলিম ১০১৫)
আপনি যে ইনকাম করছেন আপনি কি একবারও ভেবে দেখেছেন আপনার ইনকাম করা উপার্জিত টাকা টি হারাম নাকি হালাল?
একবার নিজের বিবেক কে প্রশ্ন করে দেখুন আপনি আসলে কোন পথে চলছেন যদি আপনি খারাপ পথে চলে হারাম খেয়ে আল্লাহতালার কাছে কোন কিছু চান তাহলে আপনি জেনে রাখুন আল্লাহ তাআলা আপনার দোয়া কোনদিনও কবুল করবে না।
আশা করছি যাদের দোয়া কবুল হয় না তারা বুঝতে পেরেছেন কেন আপনার দোয়া কবুল হয় না।
তাছাড়া আপনি যদি সৎ মানুষ হয়ে থাকেন হালাল খান হালাল পথে চলেন কিন্তু তারপরও আল্লাহতালার দরবারে দোয়া কবুল হচ্ছে না এক্ষেত্রে আল্লাহতালা আপনার ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছেন।
সৎ পথে চলে দোয়া করতে থাকলে আল্লাহ তাআলা একদিন না একদিন দোয়া অবশ্যই কবুল করেন আর আপনার অন্তরে অবশ্যই এই বিশ্বাস রাখতে হবে।
আশা করছি পোস্টটি আপনাদের ভাল লেগেছে ভাল লাগলে আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন যাতে আপনি যেমন উপকৃত বলেন তারাও যাতে উপকৃত হতে পারে।
One thought on "আল্লাহ তায়ালার কাছে চাওয়ার পরেও কেন কিছু কিছু মানুষের দোয়া কবুল হচ্ছে না – তার বিস্তারিত কারণ!"