‘ট্রাফিক আইন মেনে চলুন’-এ কথা কয়টি আমাদের দেশে বিভিন্ন জায়গায় বহুল ব্যবহৃত এবং আমাদের কাছে বহুল শ্রুত। সারাদেশে যেভাবে মোটরগাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। মোটরগাড়ি চালানোর আইনকানুন না জানা কিংবা আইনকানুনকে তোয়াক্কা না করার প্রবণতাই এসব দুর্ঘটনার মূল কারণ। পৃথিবীর অন্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও রয়েছে মোটরগাড়ির জন্য প্রযোজ্য বিশেষ আইন। যা অমান্য করলে আপনার বিরুদ্ধে জরিমানা কিংবা মামলা হতে পারে। অতএব, রাস্তায় গাড়ি নিয়ে নামার আগে জানতে হবে এর সাথে সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধিসমূহ।
ধারা-১৩৭ : এ ধারা মোতাবেক যদি কোনো ব্যক্তি ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালায়, গাড়িতে মেটালিক নম্বর প্লেট ব্যবহার করে, ট্যাক্স টোকেনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়, নম্বর প্লেট অস্পষ্ট, বাম্পার দ্বারা নম্বর প্লেট আবৃত থাকে এবং রং পার্কিং করে, তাহলে উক্ত ধারা মোতাবেক ড্রাইভার বা মালিকের ২০০ টাকা জরিমানা হবে।
ধারা-১৩৯ : এ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো গাড়িতে হাইড্রোলিক হর্ন সংযোজিত পাওয়া গেলে উক্ত ধারা মোতাবেক ১০০ টাকা জরিমানা করা হবে।
ধারা-১৪০ : এ ধারায় বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ স্থানে হর্ন বাজাইলে, ট্রাফিক নির্দেশাবলি অমান্য করিলে, বাঁধা সৃষ্টি ও তথ্য প্রদানে অস্বীকৃতি জানাইলে, ট্রাফিক সংকেত অমান্য করিলে, ওয়ান-ওয়ে অমান্য করিলে, নিষিদ্ধ ইউটার্ন করিলে, নিষিদ্ধ সময়ে যানবাহন চলাচল করিলে উক্ত ধারা মোতাবেক ২৫০ টাকা জরিমানা করা হবে।
ধারা-১৪২ : এ ধারায় বলা হয়েছে, আইনানুগ সর্ব্বোচ্চ গতিসীমা লঙ্ঘন করিলে জরিমানা হবে ৩০০ টাকা।
ধারা-১৪৬ : এ ধারায় বলা হয়েছে, দুর্ঘটনা সংক্রান্ত অপরাধ করিলে জরিমানা হবে ৫০০ টাকা।
ধারা-১৪৯ : এ ধারায় বলা হয়েছে, যানবাহনের হেড লাইট, ব্যাক লাইট, ইন্ডিকেটর, ব্রেক লাইট, লুকিং গ্লাস, পেছনে দেখার আয়না, ওয়াইপার না থাকিলে বা ত্র“টিযুক্ত থাকিলে, যানবাহলে আনসেইফ লোডিং থাকিলে, মটর সাইকেলে দুইজনের অধিক আরোহণ করিলে, চালকের পাশে বা ছাদে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করিলে, হেলমেট ব্যবহার না করিলে জরিমানা হবে ৩০০ টাকা।
ধারা-১৫০ : যানবাহন হইতে স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর এমন ধোঁয়া বাহির হইলে জরিমানা হবে ২০০ টাকা।
ধারা-১৫১ : অস্বচ্ছ, রঙিন, কালো গ্লাস ব্যবহার করিলে, ট্রিনটেড পেপার ব্যবহার করিলে, ফিটনেস সার্টিফিকেটের সহিত গাড়ির রঙের মিল না থাকিলে, গাড়ির টায়ার পরিবর্তন করিলে, সরকার নির্ধারিত রং ব্যতীত অন্যকোনো রং ব্যবহার করিলে, বিআরটি-এর অনুমতি ছাড়া গাড়ির রং পরিবর্তন করিলে ও মালিকানা পরিবর্তন না করিলে জরিমানা হবে ১,২৫০ টাকা।
ধারা-১৫৩ : এ ধারায় বলা হয়েছে, লাইসেন্স ব্যতীত কিংবা প্রবিধান লঙ্ঘন পূর্বক গাড়িতে এজেন্ট বা ক্যানভাসার নিয়োজিত থাকিলে জরিমানা হবে ১৫০ টাকা।
ধারা-১৫৪ : যানবাহনের ওজন, মালসহ ওজন নির্ধারিত ওজনের চেয়ে অতিরিক্ত থাকিলে জরিমানা হবে ৫০০ টাকা।
ধারা-১৫৫ : এ ধারায় বলা হয়েছে, ইন্স্যুরেন্স সার্টিফিকেট না থাকিলে, ইন্স্যুরেন্স সার্টিফিকেটে মেয়াদ শেষ হইলে জরিমানা হবে ৫০০ টাকা।
ধারা-১৫৬ : মোটরযান কিংবা আইনানুগ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত সংশ্লিষ্ট মোটরগাড়ি চালাইয়া বাহিরে নিয়া গেলে জরিমানা হবে ৫০০ টাকা।
ধারা-১৫৭ : এ ধারায় বলা হয়েছে, গাড়ি দাঁড় করাইয়া অন্যান্য যানবাহন চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করিলে, নষ্ট গাড়ি মেরামত করত অন্য যানবাহন চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি করিলে, যাত্রী উঠানামা করাইয়া রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিলে, রং পার্কিং করিয়া রাস্তায়/ফুটপাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করিলে জরিমানা হবে ২৫০/-টাকা।
ধারা-১৫৮ : এ ধারায় বলা হয়েছে, গাড়ির স্পিড গভর্নর সিল না থাকিলে, সিএনজি চালিত অটোরিকশা এবং ট্যাক্সিক্যাবের মিটার সেলের উপর অন্যায় হস্তক্ষেপ করিলে অর্থাৎ ঘষামাজা ও টেম্পারিং করিলে জরিমানা হবে ২৫০ টাকা।
তাছাড়া লেন অমান্য অথবা লালবাতির সংকেত অমান্য করিলে ৫০০ টাকা জরিমানা ছাড়াও ধারা-১৩৭, ১৩৯, ১৫০ ব্যতীত অন্যান্য সকল ধারা মোতাবেক দায়িত্ব পালনকারী হলুদ জ্যাকেট পরিধেয় সার্জেন্টগণ কর্তৃক দায়েরকৃত মামলার ক্ষেত্রে জরিমানার পরিমাণ উপরে বর্ণিত ধারায় প্রত্যেকটিতে দ্বিগুণহারে বৃদ্ধি পাবে।
One thought on "আইন জানুন আইন মানুন পর্ব ৩১:জেনে নিন অতিগুরুত্বপূর্ণ কিছু ট্রাফিক আইন"