আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।
রাসূল (সাঃ) এর ২টি পরামর্শ মানলে চোখের নিচের কালো দাগ দূর হয়
চোখের নিচে কালো দাগ যাকে স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ডার্ক সার্কেল। এই সামান্য একটু কালো দাগের কারণে একটি সুন্দর মানুষকে অসুন্দর দেখায়।আবার চোখের নিচের এই সামান্য দাগটুকু না থাকলে একটি কালো মানুষকে ও সুন্দর দেখায়।
ইদানীং আমাদের জীবনযাপনের ধরনটা এ রকম যে আমাদের চোখের চাপটা অনেক বেশি। আমরা ল্যাপটক,কম্পিউটার বা মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকি অনেকক্ষণ। অনেকক্ষণ এগুলো দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের নিচে কালো দাগ হতে পারে।
আবার ঘুমের অভাবে বা মানসিক চাপ থেকে ও চোখের নিচের কালো দাগ হতে পারে। সারা বিশ্বজুড়ে প্রায় ৮৫% শতাংশ মানুষ এই ডার্ক সার্কেলের সমস্যা ভুগছেন। ডাক্তাররা বলছেন চোখের নিচের এই কালো দাগ মোটেও ভালো বিষয় নয়।
আপনাদের অনেকেই এই সমস্যা থেকে নিস্তার পাওয়ার জন্য বিভিন্ন রকম ক্রিম প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকেন। অনেকে হাজার হাজার টাকা ওষুধ খেয়ে থাকেন, আবার অনেকেই বিভিন্ন রকম খাবার খেয়ে থাকেন।
কিন্তু ইসলাম তথা রাসূল (সাঃ) আজ থেকে প্রায় সাড়ে চোদ্দশ বছর আগে, এই সমস্যা থেকে মুক্তির পাওয়ার জন্য ছোট্ট ২টি পরামর্শ বা টিপস বলে গেছেন।
সে দুটি পরামর্শ মেনে চললে আপনার সমস্যা অবশ্যই অবশ্যই দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। তো প্রিয় পাঠক আপনার চোখের নিচেও কি কালো দাগ রয়েছে? যদি থাকে তো অবশ্যই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
প্রিয় পাঠক আধুনিক ডার্ক সার্কেল বা চোখের নিচে কালো দাগ হওয়ার বেশি কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কারণ খুঁজে পেয়েছেন। তার প্রথম দুটি উল্লেখযোগ্য কারণ হলোঃ ঘুমের স্বল্পতা এবং পানি শূন্যতা। এবং দর্শক আপনি জানলে অবাক হবেন, আশ্চর্য হবেন।
যে আধুনিক ওই ডাক্তাররা চোখের নিচের কালো দাগ দূরী করণের জন্য ক্রিম ওষুধ এবং কয়েকটি পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন। কিন্তু তারা আশ্চর্য হয়েছেন এটা দেখে যেঃ ক্রিম এবং ওষুধ এই কালো দাগ দূর করতে যতটা না সহায়ক তার চাইতেও বেশি সহায়ক রাসূল (সাঃ) এর এই দুটি পরামর্শ।
প্রিয় পাঠক, ঘুম হলো আল্লাহ তায়ালা একটি মহা নিয়ামত। এর জন্য সবচেয়ে উপযোগী সময় নির্ধারণ করা হয়েছে রাতকে। কেননা সারাদিন কর্মব্যস্ততার পর মানুষের একটু বিশ্রামের প্রয়োজন হয়। তাই আল্লাহ তায়ালা রাতকে বানিয়েছেন বিশ্রামের উপযোগী করে।
মহান আল্লাহ বলেন → আমি তোমাদের বিশ্রামের জন্য নিদ্রা দিয়েছি, তোমাদের রাত্রিকে করেছি আবরণ সরূপ, আর দিনকে বানিয়েছি তোমাদের কাজের জন্য। ( সূরা নাবা আয়াত ৯-১১)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন →আর তিনি রাতকে মানুষের প্রশান্তির উপায় হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। (সূরা আনআম আয়াত ৯৬)
আর হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রা.) আনহার সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন → আমি রাসূল (সাঃ) কে কখনো এশার আগে ঘুমোতে দেখেনি এবং এশার পর গল্পগুজব করতে দেখেনি। এশার পর হয়তো জিকিরে মশগুল থাকতেন, নচেৎ তিনি ঘুমিয়ে পড়তেন, এর দ্বারা সব অপ্রয়োজনীয় কাজ থেকে মুক্ত থাকা যায়।
অর্থাৎ রাসূল (সাঃ) এশার আগে ঘুমোতে নিষেধ করেছেন।আল তিনি এশার পর না ঘুমিয়ে গল্পগুজব করা পছন্দ করতেন না। ( সহিহ বুখারী ৫৯৯)
হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রা.) তিনি আরো বলেনঃ ৩ ধরনের মানুষের জন্য রাত জাগার অনুমতি রয়েছে। ১. বিয়ের রাতে নবদম্পতি। ২. মুসাফিরের জন্য। ৩. নফল নামাজ আদায়কারী জন্য ( মুসনাদে আবি ইয়ালা হাদিস নাম্বার ৪৮৭৯)
অন্য হাদিসে এসেছেঃ মহানবী (সাঃ) এশার নামাজের পর গল্পগুজব ও গভীর রাত পর্যন্ত অযথা জেগে থাকা অপছন্দ করতেন। তবে দ্বীনি শিক্ষা দিতে তিনি কখনো কখনো রাত জাগতেন। মুসলমানদের সম্পর্কে কল্যাণকর পরামর্শের জন্য অনেক সময় রাতে তিনি আবু বকর (রা.) এর বাসায় যেতেন। ( তাহাবি শরিফ হাদিস নাম্বার ৭২০৩)
অর্থাৎ বিশেষ কোনো কাজে আপনি রাত জগতে পারবেন কিন্তু তা যেন নিয়মিত কখনো না হয়। তাহলে প্রিয় পাঠক আমরা কোরআন এবং হাদিস থেকে জানতে পারলাম যে, রাত্রি হলো আরামের জন্য বিশ্রামের জন্য।
রাসূল (সাঃ) বিনা প্রয়োজনে রাত্রী জাগরণ করতেন না। এবং ৩ ধরনের মানুষের জন্য বিশেষ ক্ষেত্রে রাত্রী জাগরণ করার অনুমতি রয়েছে। তাহলে কোনো ব্যক্তি যদি কোরআন ও হাদিসের সূত্রের উপর আমল করে, রাত্রিতে পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমায়, তাহলে ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তাঁর চোখের নিচের কালো দাগ দূর হয়ে যাবে।
কারণ আগেই বলেছি যে বর্তমান চিকিৎসা বিজ্ঞানরা বলেছেনঃ চোখের নিচের কালো দাগের মুল কারণে হলোঃ বেশি বেশি রাত্রী জাগরণ করা! তাইতো বেশি বেশি রাত্রী জাগরণ ইসলামের একটি অপচন্দনীয় বিষয়। আর পানি পান করার সম্পর্কে আমরা জানতে পারি, যে রাসূল (সাঃ) অধিক মাত্রায় খাবার খেয়ে খুদা মেটাতেন না।
বরং তিনি খুদার এক তৃতীয়াংশ মেটাতেন খাবার খেয়ে এক তৃতীয়াংশ পানি পান করে, এবং এক তৃতীয়াংশ নিজের জন্য অর্থাৎ নিজে যাতে সুস্থভাবে চলাফেরা করতে পারেন, তাঁর জন্য এক তৃতীয়াংশ খালি রেখে দিতেন।
হযরত মিকদাম ইবন মাদিকারাব (রা.) বলেন, আমি রাসূল (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, পেটের চেয়ে মন্দ কোনো পাত্র মানুষ ভরাট করে না।পিঠের দাঁড়া সোজা রাখার মতো কয়েক লোকমা খাবারই আদম সন্তানের জন্য যথেষ্ট। আর বেশি খাবার ছাড়া যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে পেটের এক তৃতীয়াংশ খাবার জন্য, এক তৃতীয়াংশ পানির জন্য আর বাকি তৃতীয়াংশ শ্বাস প্রশ্বাসের জন্য রাখবে। (তিরমিজি হাদিস নাম্বার ২৩৮৩)
রাসূল (সাঃ) যখনই অযু করতেন, তখনই তিনি অযুর বেঁচে যাওয়া পানি থেকে কিছু পানি পান করতেন। আর আমরা সকলেই জানি রাসূল (সাঃ) কখনোই বিনা অযুতে থাকতেন না। এর ফলে তিনি দিনে কয়েকবার অযু করতেন এবং পানি পান করতেন। অর্থাৎ অযুর শেষে পাত্রের অবশিষ্ট পানি থেকে এক আঁজলা পান করার কথা হাদিসে রয়েছে। (এটি বুখারী শরিফ ৫৬১৬,তিরমিজি, সুনান ৪৪-৪৫,নাসাঈ,সুনান হাদিস নাম্বার ৯৩)
আজ বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞান মানুষের সুস্থতার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করতে বলে থাকেন, যেমন একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন ৩ লিটার পরিমান পানি পান করা উত্তম। অথচ রাসূল (সাঃ) প্রায় সাড়ে ১৪০০ বছর আগে এই নিয়ম মেনে চলতেন। সুতরাং আমরা গর্বের সাথে বলতে পারি,যে ইসলামের প্রত্যেকটি বিধান মানুষের জন্য অতি কল্যাণকর।
এবং ইসলাম বিজ্ঞানের চেয়ে অনেক আগে। সুতরাং পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমানো এবং পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান আপনার ডার্ক সার্কেল বা চোখের কালো দাগ দূরে করতে পারে। এছাড়া ৫ ওয়াক্ত নামাজ সময় মতো পড়লে মানুষের চেহারা সুন্দর থাকে। সুপ্রিয় পাঠক এছাড়াও আপনারা শসা টুকরা সার্কেল আকারে কেটে বিসমিল্লাহ পড়ে তাতে ফুঁক দিয়ে তা প্রতিদিন কিছু সময় চোখ বন্ধ করে চোখের উপর দিবেন।
এবং মনে মনে আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখবেন যে, আল্লাহ আপনাকে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ দিবেন ইনশাআল্লাহ। বিশেষকরে সকালে ঘুম থেকে উঠার পর এবং রাতে ঘুমানোর আগে এটি করা উত্তম।
প্রিয় ভাই ও বোনেরা লাইক কমেন্ট শেয়ার করে ইসলামি দাওয়াতে আপনিও অংশগ্রহণ করুন।প্রিয় বন্ধুরা জানার স্বার্থে দাওয়াতি কাজের স্বার্থে আর্টিকেলটি অবশ্যই শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন।হতে পারে আপনার একটি শেয়ার বহু মানুষ উপকৃত হবে ইনশাআল্লাহ।
4 thoughts on "রাসূল (সাঃ) এর ২টি পরামর্শ মানলে চোখের নিচের কালো দাগ দূর হয়।বেঁচে থাকালে জীবনে অনেক কাজে লাগেবে। সবাই জেনে নিন।"