৯,৯৯৯ টাকায় T612 UNISOC এর মতো বাজেট রেঞ্জের গেমিং প্রসেসর সহ ৫০০০ মিলি অ্যাম্পিয়ারের ব্যাটারি দিয়ে রিয়েলমি নিয়ে আসলো তাদের বাজেট সেগমেন্টের নতুন একটি ফোন REALME C30
প্রায় এক মাস যাবত এই ফোনটি আমি পার্সোনালি ইউজ করছি! long time যেহেতু ইউজ করেছি তাই আজকে এই ফোনটির overal ভালো দিক খারাপ দিক সবকিছুই আপনাদের কাছে তুলে ধরবো।
তার পাশাপাশি এই ফোনটি কাদের জন্য আদর্শ একটি চয়েজ সেটি নিয়েও কথা বলব তো চলুন দেরি না করে শুরু করি।
মোবাইলটির বক্স কনটেন্ট যা যা রয়েছে।
- ইউজার ম্যানুয়ালস
- সিম ট্রে ইজেক্টর
- দশ ওয়াটের চার্জার
- মাইক্রো ইউএসবি চার্জিং কেবল
- এবং REALME C30 মোবাইলটি
পলিকার্বনেটেড বডি ফ্রেম এর উপর ভার্টিক্যাল শেপ এ ডিজাইন থাকাই ডিভাইসটির রিয়ার প্যানেলটি আমার কাছে মনে হয় এই মুহূর্তে ১০ হাজার টাকা প্রাইজ রেঞ্জে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের একটি আউটলুক নিয়ে এসেছে।
সেই সাথে 6.5 inch Display এর থিকনেস হল ৮.৫ মিলিমিটার এবং ওয়েট হলো ১৮২ গ্রাম।
ওভারঅল স্ট্যান্ডার্ড সাইজের এই মোবাইলটি ফ্লাট ডিজাইন হওয়ার কারণে খুব ইজিলি সিঙ্গেল হান্ড্রে কম্পিটেবল ভাবে ইউজ করা যায়।
ফোনটির দুইটি কালারে বাজারে এসেছে- লেক ব্লু এবং ডেনিম ব্ল্যাক।
বাটন এবং পোর্টস।
- রাইট সাইডে রয়েছে ভলিউম বাটন এবং পাওয়ার বাটন এবং লেফট সাইডে রয়েছে সিম কার্ড ট্রে যেখানে দুইটি সিমের পাশাপাশি এক্সটার্নাল মেমোরি কার্ড ব্যবহার করার সুবিধা।
- মোবাইলটির উপরে অংশে কিছু নেই
- মোবাইলটির নিচের অংশে রয়েছে মেইন স্পিকার
- প্রাইমারি মাইক
- ইউএসবি চার্জিং পোর্ট
- ৩.৫ এমএম হেডফোন জ্যাক পোর্ট
এই মোবাইলটিতে কোন প্রকার ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর না থাকলেও ফোনটিতে রয়েছে ফেস আনলক এর সুবিধা! যেটি খুব কমফোর্টেবল ভাবে কাজ করে এবং ফাস্ট কাজ করে।
এছাড়াও মোবাইলটিতে ইম্পরট্যান্ট প্রায় সব ধরনেরই সেন্সর রয়েছে।
স্পিকার পারফরমেন্স।
ফোনটির সাউন্ড এর লাউডনেস একদম ডিসেন্ট ছিল বেজটাও ঠিকঠাক লেগেছে এবং সেই সাথে ১০০% ভলিউম দিয়ে মোবাইলটির স্পিকার থেকে খুব একটা ডিস্ট্রাকশন এর দেখা পায়নি! অভার অল প্রাইস হিসাবে এই ফোনটির স্পিকার পারফরমেন্স ঠিকঠাকই আছে।
অপারেটিং সিস্টেম এন্ড সফটওয়্যার।
মোবাইলটিতে রয়েছে এন্ড্রয়েড ১১ ভার্সন ইউআই হিসেবে রয়েছে realme go edition
মাল্টি টাস্কিং।
মাল্টি টাস্কিং এর কথা বলতে গেলে ওভারল পারফরম্যান্স বেশ ভালই ছিল realme go edition এর মতো লাইট ইউ আই হওয়ার কারণে বেশ হেব্বি এপ্লিকেশন ও ব্রেকগ্রাউন্ডে হ্যান্ডেল করতে পারে এই ডিভাইসটি।
চিপসেট।
T612 UNISOC এর প্রসেসরের পাশাপাশি র্যাম হ্যান্ডেলিংটা যথেষ্ট ভালোভাবে করার কারণে আমরা অনেকগুলো অ্যাপ ও ব্যাকগ্রাউন্ড রান করা যাচ্ছিল খুবই ইজিলি।
তবে একটি কথা আপনাদেরকে বলতে চাই আপনারা ট্রাই করবেন বেশি অ্যাপ ব্যাকগ্রাউন্ডে না রাখার জন্য! কারণ লো বাজেট ডিভাইসের মতো অনেক সময় ডিভাইসটি স্লো হয়ে যায়।
ডিসপ্লে।
এই ডিভাইসটিতে ছিল ৬.৫ ইঞ্চি সাইজের আইপিএস এলসিডি প্যানেলের ডিসপ্লে এবং এই ডিসপ্লে রেজুলেশন হলো ১৬০০ বাই ৭২০ পিক্সেল! ডিসপ্লের পিক্সেল ডেন্সিটি হলো ২৭০ পিপিআই।
আউটডোরে লাইট কন্ডিশনে কমফোর্টেবল ভাবে ইউজ করতে পারলেও বেশি আলোতে অর্থাৎ সানলাইট কন্ডিশনে মাঝে মাঝে একটু প্রবলেম হবে।
তবে ম্যাক্সিমাম সময়ে আপনি এ ধরনের প্রবলেম শেষ করবেন না আমি ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলতে গিয়েও লো ব্রাইটনেস জনিত কোন প্রবলেম ফেস করিনি।
ডিসপ্লে ঠিক উপরের সেন্টারে রয়েছে ওয়াটার ড্রপ সেলফি ক্যামেরা! আরো রয়েছে ওয়াইফাই এল থ্রি সাপোর্ট।
রিয়ার ক্যামেরা।
এই ফোনের রিয়ার ক্যামেরায় ছিল টু অ্যাপাচারের ৮ মেগাপিক্সেলের এআই ক্যামেরার।
রিয়ার ক্যামেরার এই ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলার সময় অবজেক্ট মোটামুটি ভালোভাবে ফোকাস করা যাচ্ছিল ছবির ডিটেলস প্রাইস অনুযায়ী বেশ ভালোভাবে ধরে রাখতে পারে।
তবে কিছু কিছু ছবি কালার ওভার বুস্ট করে ফেলেছিল ওভার অল আউট ডোরে সানলাইট কন্ডিশনে বেশ ভালো ছবিই উঠে।
ছবির স্যাম্পল।
ইভেন পোট্রেট মুডে বেশ ভালোই ডায়নামিক রেঞ্জ ধরে রাখতে পারছিল এইচডিটেকশনেও ৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা হিসেবে চমৎকার ছিলো।
সেই সাথে ইন ডোরে ছবি তুললেও আমাদের কাছে বেশ ভালো লেগেছে তার স্যাম্পল দেয়া হলো।
ভিডিও রেকর্ডিং।
ফ্রন্ট ক্যামেরা।
ব্যাটারি ব্যাকআপ।
প্রসেসর এবং জিপিও।
র্যাম এবং ইন্টারনাল স্টোরেজ।
অফিসিয়াল প্রাইজ বাংলাদেশ মার্কেটে।
- রেড স্পিড- ৩১১ এমবিপিএস
- রাইট স্পিড- ৫৪ এমবিপিএস
হিটিং ইস্যু।
হিটিং এর কথা যদি বলতে যাই রিয়েল মি সি৩০ ডিভাইসটি খুব একটা গরম হয় না, যখন আপনি একটু বেশি হাই গ্রাফিক্স সেটিং গেম খেলবেন বা একটু বেশি ধরে যদি গেম খেলেন তাহলে ফোনটা একটু গরম হয়ে যায়।
নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটি।
প্রথমে জেনে নিই ফোনটির মন্দ দিকগুলি।
- এই ডিভাইসটিতে যে চার্জিং পোর্ট টি সেটি হলো মাইক্রো ইউএসডি চার্জিং পোর্ট অবশ্যই অবশ্যই রাইট নাও বর্তমান যুগ হিসাবে টাইপ সি চার্জিং পোর্ট এই ফোনটিতে মাস্ট বি থাকা উচিত ছিল।
- এই মোবাইলটি রিয়ার প্যানেলে ৮ মেগাপিক্সেলের একটি ক্যামেরা দেয়া হয়েছে একচুয়ালি একটি ক্যামেরা নিয়ে আমার খুব বেশি খারাপ কিছু বলার নাই , কারণ অনেক সময় যেটি হয় একটি ক্যামেরা দিয়ে যদি অনেক ভালো ছবি তোলা যায় তাহলে দশটা থেকে লাভ কি? তবে আমার মনে হয় আরেকটি ক্যামেরা অর্থাৎ ডিপ সেন্সর থাকলে ভাল হইত।
- যে বিষয়টি না বললেই নয় এই ডিভাইসটির ২ জিবি র্যাম ৩২ জিবি স্টোরেজ ভেরিয়ান্ট এর পাশাপাশি চার জিবি র্যাম এবং ৬৪ জিবি স্টোরেজ ভেরিয়েন্ট এর একটি অপশন রাখা উচিত ছিল।
- এই মোবাইলটি সাথে যে চার্জারটি রয়েছে সেটি হলো মাত্র ১০ ওয়ার্ডের চার্জার, ৫০০০ মিলি এম্পিয়ারের ব্যাটারী হিসেবে এটলিস্ট ১৮ ওয়ার্ডের চার্জার হলে সবথেকে বিবেচনের পারফেক্ট হতো।
এবার চলুন ফোনটির কি কি ভালো দিক রয়েছে সেটি জেনে নেওয়া যাক।
- এই ফোনটির ডিসপ্লে! ডিসপ্লে বলতে ৬.৫ ইঞ্চির ডিসপ্লে স্ট্যান্ডার্ড একটা ডিসপ্লে তার পাশাপাশি যেহেতু ফোনের বডি শেপটা একটু ফ্ল্যাট টাইপের সো ইজিলি হ্যান্ডগ্রীপ করে লং টাইম ভিডিও দেখতেও খুব ভালো লাগে, সেই সাথে ডিসপ্লের কালার টিউনটাও অনেক ভালো।
- আরেকটি বড় ব্যাপার হলো লং টাইম যত আপনি ভিডিও দেখবেন তাই ব্যাটারি ব্যাকআপের একটা ব্যাপার কিন্তু আছে? এই ফোনটির ব্যাটারি ব্যাকআপ কিন্তু যথেষ্ট ভালো।
- ফোনটি সঙ্গে ১৮ ওয়াটের চার্জার থাকলে ভালো হতো বাট ১০ ওয়াটও একেবারে খারাপ না।
- আরেকটি ব্যাপার যেটা না বললে নাই সেটি হল ফোনটির স্পিকার এর পারফরমেন্স ও কিন্তু যথেষ্ট সন্তুষ্ট জনক মনে হয়েছে ১০ হাজার টাকা প্রাইস অনুযায়ী।
- আর গেমিং পারফরমেন্সের কথা বলতে গেলে এই ফোনটিতে যে প্রসেসর রয়েছে UNISOC T612 প্রসেসর এটা বাজেট সেগমেন্টের বেশ শক্তিশালী একটি প্রসেসর। নরমালি আমরা এই প্রাইস রেঞ্জ এ মিডিয়াটেক জি-৩৫ দেখে থাকি সেই প্রসেসরগুলো অনেক পপুলার হলেও সেসব প্রসেসর এর চাইতে UNISOC T612 বেশি ভালো।
- ফোনটির মধ্যে যে ইউআইডি রয়েছে অ্যান্ড্রয়েড ১১ এর পাশাপাশি realme go edition এর ইউ আই, লাইট ইউ আই সো এতে যে বিষয়টি আছে ভালো একটি optomization পাওয়া যায়।
- আর ফোনটিতে মাত্র ২ গিগাবাইট র্যাম হলেও ফোনটি দিয়ে আমরা বেশ ভালো মাল্টিটাচিং করতে পেরেছি, ইভেন কোন দিক থেকে আপনাদের কাছে মনে হবে না এটা ২ জিবি র্যাম এর ফোন।
আরো পড়ুন:- Realme C30 মোবাইলটি কিনুন মাত্র ২,৯৯৯ টাকায় (শর্ত প্রযোজ্য)
6 thoughts on "Realme C30 Full Review In Bangla | ৯,৯৯৯ টাকার গেমিং ফোন।"