প্রায় বছর খানেক বিরতির পর আমাদের স্টুডিওতে চলে এসেছে সিম্ফনির একটি স্মার্ট ফোন, ভেরি স্টাইলিশ গর্জিয়াস লুকের এবং এই ফোনটি নিয়ে বাজেট স্মার্টফোন ইউজারদের মধ্যে এক ধরনের হাইপো তৈরি হয়েছে।
হ্যাঁ বলছিলাম symphony z30 এর কথা ফোনটা আমি প্রায় সপ্তাহখানেক ধরে ইউজ করছি ভালো-মন্দ অনেককিছুই লক্ষ্য করলাম। এবং সেসব কথাই আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে।
শুরুতেই চলুন জেনে নেয়া যাক এর বক্সে কি কি থাকছে,Z30 এর বক্সটি একদম সিম্পল এবং একই সাথে অনেক স্লিম ফোনটার রেয়ার সাইডে ফোনটি সম্পর্কে যাবতীয় ইনফরমেশন পেয়ে যাবেন।
তো বক্সের ভিতরে থাকছে সিম্ফোনি জেড থার্টি স্মার্টফোনটি একটি ১০ ওয়াট এর চার্জার মাইক্রো ইউএসবি চার্জিং কেবল , একটি ইয়ারফোন, ওয়ারেন্টি পেপার, এবং একটি ব্যাক কভার।
পোস্টের শুরুতে বলেছিলাম ফোনটির লুকের দিক থেকে বেশ আই ক্যাচি রেয়ার পার্ট টি খুবই সায়নী, যা দেখতে বেশ ভালো লাগে।এটা দেখতে অনেকটাই গ্লাসের মত কিন্তু আমার এক্সপিরিয়েন্স এ মনে হয়েছে এটা প্লাস্টিক বা ডিফারেন্ট কোন মেটেরিয়াল।
তো মেটেরিয়াল যেটাই হোক এই ব্যাকপাট এর কারণে ফোনটা দেখতে বেশ প্রিমিয়াম লেগেছে আমার কাছে।
এর ফেম হিসেবে থাকছে প্লাস্টিক উপর থেকে নিচের দিকে একটা কালার দেখা যায় যেটা অনেকের কাছে ভালো লাগতে পারে,
এবার দেখে নেয়া যাক এর ইন এন্ড আউট এর ক্ষেত্রে কি কি থাকছে।
এর রিয়ারে থাকছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার পজিশন ওকে আনলক রকেট গতিতে হয়ে যাচ্ছিল, ফিঙ্গারপ্রিন্ট এর পাশাপাশি ফেস আনলক এর মত ফিচারও পাচ্ছেন যা দিনের আলোতে বেশ ভালই কাজ করে।
তবে এটি কিছুটা স্লো মনে হয়েছে আমার কাছে !
ফোনটির নিচের দিকে থাকছে মাইক্রো ইউএসবি চার্জিং পোর্ট মাইক্রোফোন এবং স্পিকার এটার সাউন্ড কোয়ালিটি খুব বেশি লাউড না তবে ইনডোর ইউজের জন্য ঠিক আছে।
টপে থাকছে একটি 3.5 এমএম হেডফোন জ্যাক এবং তার পাশেই থাকতে সেকেন্ডারি নয়েজ ক্যান্সলেশন মাইক্রোফোন যা দেখে আমি রীতিমত টাশকি খেয়ে গেছি। কারণ বাজেট ফোনে সেকেন্ডারি মাইক্রোফোন খুব একটা দেখতে পাওয়া যায় না।
এর ডানদিকে থাকছে পাওয়ার বাটন ভলিয়ম রকার্স এবং বামদিকে থাকছে ট্রিপল সিম কার্ড ট্রে এবং একটি ডেডিকেটেড গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট বাটন যেটা প্রেস করলেই গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট চালু হয়ে যায়।
আর এই ফোনে এখনো নোটিফিকেশন এলইডি থাকছে সো এই ব্যাপারটা বেশ ভালো লাগলো!
তো পার্ট এন্ড বাটন এর ক্ষেত্রে এটি মোটামুটি সবকিছুই থাকছে, এবার কথা বলা যাক এর ডিসপ্লে নিয়ে।
এর ডিসপ্লেটি বেশ বড় সড় সাইজের আকারে যা ৬.৫২ ইঞ্চির বড়োসড়ো ডিসপ্লে যারা পছন্দ করেন তাদের জন্য আনন্দের খবর! তবে যারা ডিসপ্লের ক্লিয়ারিটি কে অনেক গুরুত্ব দিয়ে থাকেন তাদের জন্য কিছুটা খারাপ খবর হতে পারে। এটি ইন সেল এইচডি প্লাস প্যানেল তাই সার্ফনেচ অতটা বেটার না! তবে রিয়েলিটি হচ্ছে বাজেট ফোনে এর থেকে হাই রেজুলেশনের ডিসপ্লে কেউ আসলে দেয় না।
এর পিক্সেল ডেনসিটি ২৬৯ এবং রেজুলেশন 720×1600 তো সার্ফ নেচের এই ব্যাপারটা ছাড়া এই ডিসপ্লেটি অনেক ভালোই ছিল!
এর ডিসপ্লের উপরের দিকে একটি ছোট্ট কিউট নস থাকছে কিন্তু এর লোআর চীন অনেকটাই বেশি ছিল যা ২০২০ তে কিছুটা বেমানান! আরেকটি বিষয় হলো ডিরেক্ট সানলাইট এ ডিসপ্লের ব্রাইটনেস আমার কাছে কিছুটা কম মনে হয়েছে।
এবার এই ফোনের পারফরম্যান্স নিয়ে কথা বলা যাক!
রেম হিসাবে থাকছে ৩ গিগাবাইট এবং রম হিসেবে থাকছে ৩২ গিগাবাইট ৬৪ হলে অবশ্যই বেটার হতো কিন্তু বাজেট বিবেচনা এটাই মেনে নিতে হচ্ছে।
তবে এতে আলাদা এইচডি কার্ড ব্যবহার করে ষ্টোরেজ ১২৮ গিগাবাইট পর্যন্ত বাড়িয়ে নিতে পারবেন।
প্রসেসর এর ক্ষেত্রে ফোনটির মধ্যে থাকছে মিডিয়াটেক হেলিও A22 যেটি একটি অক্টাকোর প্রসেসর! এবং এর ক্লক স্পিড ম্যাক্সিমাম ১.৮ গিগাহার্জ,
জিপিইউ হিসেবে এর সঙ্গে থাকছে PowerVR GE8320 এবং এই সাপটি একদমই এন্ট্রি লেভেলের।
রেগুলার ইউজে আমার এক্সপেরিয়েন্স এ এই ফোনটি বেশ ভালো পারফর্ম করছে এতে অ্যান্ড্রয়েড ১০ থাকছে এবং এর ইউ আই অনেকটাই স্টক এন্ড্রয়েডের মত! তাই অ্যাপ ওপেনিং টুকটাক মাল্টিটাস্কিং এ আমি কোন ইস্যু পাইনি।
তবে একটা বিষয় খেয়াল রাখতে হবে এর স্টোরেজ যতটা ফাঁকা থাকবে ততটা পারফরম্যান্স ভালো পাবেন।
গেমিং এর ক্ষেত্রে এতে আমি বেশ কয়েকটি বড় গেম প্লে করেছিলাম লাইক মিডিয়াম গ্রাফিক্স এ সেটিংসে পাবজি প্লে করেছি যা বেশ ভালই পারফর্ম করেছে! সেকন্ডলি ট্রাই করেছি কল অফ ডিউটি এই গেমটি মোটামুটি লো বাজেটে ফোনেও প্লে করা যায় এবং কল অফ ডিউটি প্লে ইং মাস্ট বেটার।
ফেম ড্রপ খুব একটা ছিল না ওভারঅল এতে বেটার গেমিং এক্সপেরিয়েন্স পেয়েছি। অন্যদিকে ফ্রী ফায়ার এ ফ্রেম ড্রপ একদমই ছিলনা তবে এই গেমটি প্লে করার সময় ডিসপ্লে তে খুব একটা রেস্পন্সিভ ছিলনা,
তবে অভেরাল আমি বলব জেড থার্টি গেমিং কোন ডিভাইস না হলেও বাজেট বিবেচনায় এর গেমিং পারফর্মেন্স ছিল অস্থির! হিটিং এর ব্যাপারে বলা যায় দু-একটা পাবজি ম্যাচ খেলার পরেও এতে খুব একটা হিট আমি পাইনি।
বাট কন্টিনিয়াসলি প্লে করলে এক পর্যায়ে ফোনটি অবশ্যই কিছুটা হিট হয়ে যাবে এবং পারফরম্যান্স ও ড্রপ করবে। তবে রেগুলার ইউজের ক্ষেত্রে এই ফোনের হিটিং ইস্যুর কোন ব্যাপারই ছিল না।
যেমন সেন্সরের ক্ষেত্রে সিম্ফোনি আমাকে বরাবরই হতাশ করেছে এবারও তার ব্যতিক্রম কিছু না, এতে মস্ট এসেনশিয়াল একটি সেন্সর মানে জায়রোস্কোপ সেন্সর থাকছে না। তাই এটি কোন ধরনের কম্পাস ব্যবহার করতে পারবেন না!
তবে এতে প্রক্সিমিটি এবং লাইট সেনসর থাকছে। built-in এফএম রেডিও পাচ্ছেন সো জারা রেডিও শুনতে পছন্দ করেন তাদের জন্য প্লাস পয়েন্ট।
এর কল কোয়ালিটি বেশ ভালো ছিল ভোল্টি সাপোর্ট এতে এয়ার পিস মোটামুটি লাউড ছিল এবং কল রেকর্ডিং এর ও অপশন থাকছে।
এই স্মার্টফোনের ইম্প্রেসিভ একটি ব্যাপার ছিল এর বিগ ব্যাটারি এতে ৫০০০ মিলি এম্পিয়ার এর ব্যাটারী থাকছেতাই যেকোনো ধরনের ইউজারই ফোনটি থেকে একদিনের বেশি ব্যাকআপ পাবেন।
তবে এর সাথে থাকা চার্জারটি ১০ ওয়ার্ডের তাই ফোনটি ফুল চার্জ হতে প্রায় ৩ ঘন্টার মতো লেগে যাচ্ছিল আমার মনে হয় বিগ বেটারি দিলে ফাস্ট চার্জিং এর ব্যাপারটা ও মাথায় রাখা উচিত।
এবার লাস্ট সেগমেন্টে মানে ক্যামেরা নিয়ে কথা বলছি!
সিম্ফোনি z৩০ তে ইন টোটাল চারটি ক্যামেরা থাকছে রিয়ার এ ক্যামেরা হিসেবে থাকছে ১৩ মেগা পিক্সেলের এবং তার সাথে থাকছে ৫ মেগা পিক্সেলের আল্ট্রা হোয়াইট এবং ২ মেগাপিক্সেল ডিপ সেন্সর!
এক কথায় বলব এই ফোনটির ক্যামেরায় যা রেজাল্ট দিয়েছে যা আমার এক্সপেক্টেশন এর থেকেও কিছুটা বেটার ছিল এটলিস্ট ডেলাইট ছবিগুলোর ক্ষেত্রে,
ডেলাইট এ তোলা ছবির কালার অলমোস্ট ন্যাচারাল ডিটেল ডিসেন্ট এবং সার্ফনেচ ও বেটার ছিল। তবে এই ক্যামেরায় উইকনেস হচ্ছে ডাইনামিক রেঞ্জ যদিও এতে এইচডিআর অপশন থাকছে কিন্তু সেটা খুব একটা হেল্প ফুল ছিল না!
এতে তোলা পোর্ট্রেট মোড এ তোলা ছবিগুলোও ন্যাচারাল ছিল বুকে এমন অ্যাডজাস্ট করে নিতে পারবেন তবে S ডিটেকশন সবসময় পার্ফেক্ট থাকেনা।
মেন ক্যামেরার মত এর ৫ মেগা পিক্সেলের আল্ট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেলের ছবিও বেশ ভালো ছবি ক্যাপচার করেছে। যাতে ওয়াইড ভিউ ক্যাপচার করা যাচ্ছিল খুবই চমৎকার এবং ওভারঅল আল্ট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা টিও অস্থির ছিল।
অন্যদিকের low-light সিচুয়েশনে এই ফোনে তোলা ছবিগুলো খুব একটা ইম্প্রেসিভ ছিলনা স্পেশালি ডিটেলের ক্ষেত্রে আলো কমে গেলে ডিটেল অনেকটাই কমে যায় সেইসাথে ফোকাস ও সফট হয়ে আসে + লো লাইট শাটার লেগ ও দেখতে পাওয়া যায়।
সো দিনের আলোর ক্ষেত্রে যেমন ক্রিসপি ছবি পাওয়া গেছে এর ক্যামেরায় কিন্তু লো লাইট এর ক্ষেত্রে সেরকমটা থাকছে না।
আর এর ৮ মেগাপিক্সেলে সেলফি ক্যামেরা ছবি কালার এবং সাফনেস এর ক্ষেত্রে বেটার ছিল ফ্রন্ট ক্যামেরায় প্রটেক্ট মুড থাকছে না এবং এই ক্যামেরার ডায়নামিক রেঞ্জ ও খুব একটা বেটার ছিল না।
এবার আজকের পোস্টটি রেপআপ করা যাক symphony z30 এর অফিশিয়াল প্রাইস ৯,৯৯০ টাকা বাজেট ফোন হিসেবে আমি বলব মোটামুটি এই ফোনে সব ফিচারই থাকছে।
বাট মনে রাখবেন এটি একটি বাজেট স্মার্টফোন নট ফর হেভি ইউজারস অর সিরিয়াস গেমারস।
যারা ১,০০০০ টাকা বাজেটের মধ্যে একটি গুড লুকিং ডিভাইজ চান তাদের জন্য এই ফোনটি সাজেস্ট করা একদমই ইজি! এবং এর ক্যামেরা ও এই বাজেটে অস্থির ছিল।
এই ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করার জন্য অনুরোধ করা হলো!
যাইহোক এটা আমার পার্সোনাল অপিনিওন তবে এই ফোনটি নিয়ে আপনি কি ভাবছেন সেটা আমি জানতে চাই! আপনাদের জন্য কমেন্ট সেকশন খোলা সো কমেন্ট করে জানিয়ে দিন সিম্ফোনি z৩০ আপনার কাছে অভার অল কেমন মনে হলো।
আর পোস্টটি ভাল লাগলে বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করতে ভুলবেন না আশা করি, আজকের মত আমি রাতুল এখানেই বিদায় নিচ্ছি সবাই ভালো থাকবেন অনেক ভালো।
*ডেপ সেন্সর (ডিপ নয়)
*বাজেট ১০০০০(১০০০০০ ১ লাখ নয়)
আর সবচেয়ে হাস্যকর হচ্ছে আপনি একজন ইউটিউবারের ভিডিওর সব স্পিচ কপি করে পোস্ট করছেন।আসলে আপনি তো ফোনটা ব্যবহারই করেন নি ????