দামে কম মানে ভালো Samsung Galaxy A24

Samsung এবার তাদের প্রত্যেকটা ফোনেই S23 এর ডিজাইন টাই কপি করছে। A সিরিজের প্রায় সব মডেলের ফোন গুলোতে প্রায় একই ডিজাইন, কালারস, পোর্টস, বাটন আওন কিছুই সেম। এই ফোনটা পুরাটাই A34 মডেলের মতো দেখতে।

২০২৩ সালে এসে এই ওয়াটার ড্রপ নচ দেখলে কার ভাল্লাগে ভাই বলেন। ডানে বামে উপর নিচে সব জায়গায় অনেক মোটা বেজেল। পেছোনটা প্লাসটিক বিল্ড। ফোনটা হাতে নিলে অনেক হালকা লাগে। একই সাথে চিপও ফিল হয়। সব রকম পোর্টস এবং বাটন ফোনটিতে পেয়ে যাবেন। 3.5mm হেডফোন জ্যাক আছে, ডেডিকেটেড SD Card স্লট আছে এবং সেকেন্ডারি নয়েজ ক্যামসেলেশন মাইক । এটা কিন্তু এখানে এসে একটা বোনাস ফিচার। আর এটাতে সাইড মাউন্টেইন ফিংগারপ্রিন্ট সেন্সর দেওয়া আছে। যেটা মোটামুটি ফাস্ট তবে মাঝে মাঝে একটু মিস রিডও হয়। আর এনিমেশনটার জন্য মনে হয় একটু স্লো স্লো

ডিসপ্লের এখানে ওয়াটার ড্রোপ নচটা ২০২৩ এ এসে একদমই মানা যায় না। অনেকেই আছে যারা এই নচ দেখে এই ফোনটা নাও নিতে পারে।

এবারের A24 এর সব কালারই গ্লোসি ফিনিশিং দেওয়া। তাছাড়াও বডিতে প্রচুর ফিংগারপ্রিন্ট এর ছাপ পড়ে যায় বডিতে। তবে মুছে নিলে তারপর আবার আগের মতো হয়ে যায়। বেজেলটা মোটা হলেও এর ডিসপ্লেটা কিন্তু বেস ভালো। ৬.৫ ইঞ্চি সুপার AMOLED ডিসপ্লে এবং ডিসপ্লের রেজুলেশন হচ্ছে 1080 x 2340 pixels. তাছাড়াও এটাতে 90 Hz এর রিফ্রেশরেট দেওয়া আছে। 90Hz দেওয়া থাকলেও স্ক্রোল করার সময় গিয়ে মনে হয় না এই ডিসপ্লেটা 90Hz পুশ করতে পারছিলো। Samsung এর Super AMOLED ডিসপ্লে নিয়ে আর নতুন করে কিছু বনাই নাই। সবাই জানে তাদের ডিসপ্লে গুলো কী রকম পারফরম্যান্স দেই। তাছাড়াও এটাতে Always on display দেওয়া তো আছেই। আর এর ব্রাইটনেস ইনডোর এবং আউটডোর দুটোতেই বেশ ভালো ভাবেই কাজ করে। সরাসরি সূর্যের আলোতেও তেমন সমস্যা দেখা যায় না।

এই ফোনের প্রোসেসর হিসেবে ব্যাবহার করা হয়েছে Helio G99 6nm এর প্রসেসর। এই প্রসেসরটা ২০-২৫ টাকা ফোনের মধ্যে বেশ কমন একটি প্রসেসর।মোটামুটি লেবেলের একটি প্রসেসর। এখানে UI হিসেবে দেওয়া আছে One UI 5.1 এই UI টা বেশ ভালোই পারফরম্যান্স দিচ্ছে। তাছাড়াও এটাকে সবার থেকে উপরে রাখা যায়। ডে টু ডে ব্যাবহারে ভালো ভাবেই ব্যাবহার করা যাচ্ছিলো। কোনো ল্যাগ বা আটকে যাওয়া এই রকম কোনো সমস্যা দেখা যায় নি। মাল্টিটাসকিং এর বেশ ভালো পারফরম্যান্স দিয়েছে ফোনটি। একসাথে বেশ কয়েকটি আ্যাপ ওপেন রেখেও কাজ করা যাচ্ছিলো। আর এটার আ্যাপ ওপেন এবং ক্লোজ টাইম ঠিকই ছিলো।

এই ফোনটাকে হাই লেভেলের গেমিং এর জন্য না নেওয়াই ভালো। Helio G99 গেমিং এর জন্য খুব একটা ভালো প্রসেসর না। তবে মাঝে মধ্যে ইচ্ছা হলে খেলতে পারেন। কোনো সমস্যা হবে না। এটাতে PUBG “Smooth & Untra” মুডে খেলতে পারবেন। অনেক সময় ধরে খেলার পর ফোনটা বেশ ভালোই গরম হয় তখন গেমের ফ্রেম অনেকটাই নেমে যায়।

এটা তিনটা ভেরিয়েন্টে রিলিজ হয়েছে ৪ জিবি ৬ জিবি এবং ৮ জিবি। আর প্রতিটি ভেরিয়েন্ট এর সাথে ১২৮ জিবি করে স্টরেজ দেওয়া আছে। তবে বাংলাদেশে এই মূহুর্তে ৮ জিবির ভেরিয়েন্টটা আন-অফিশিয়াল ভাবে পাওয়া যাচ্ছে।

এবার ক্যামেরার দিকে আসা যাক। ব্যাক প্যানেলে ৩ টা ক্যামেরা দেখা যায়। মেইন ক্যামেরা হচ্ছে ৫০ মেগা-পিক্সেল এবং এটার সাথে OIS আছে, ৫ মেগা-পিক্সেল এর আল্ট্রাওয়াইড সেন্সর এবং ২ মেগা-পিক্সেল এর ম্যাক্রো সেন্সর দেওয়া আছে। এর মেইন ক্যামেরা দিয়ে ভালো মতোই ছবি তোলা যায়। ইমেজগুলো হালকা ওয়ার্ম মনে হয় এবং কালার কিছুটা বুস্টেড হয়ে যায়। ইমেজটা গুলোতে প্রায় মোটামোটি লেভেলের ডিটেইলস আছে। খুব বেশি ডিটেইলস এটা বলা যাবে না। ইমেজ গুলো জুম করলে পিক্সেল বের হয়ে যায়। তবে পিকচার গুলো চলার মতো। তবে এই দামের অন্যান্য ফোনের সাথে কম্পেয়ার করলে এর ক্যামেরা তাদের থেকে ভালো আছে। তবে লো লাইটে ছবি কিছুটা সফট হয়ে যায়। তবে যদি নাইট মুড দিয়ে পিকচার উঠানো হয় তাহলে আবার ঠিকঠাক ছবি ওঠে। তবে এটার শাটার স্পিড কিছুটা স্লো এই আরকি। আর ফন্ট ক্যামেরা ১৩ মেগাপিক্সেল এর। আর সামনের ক্যামেরা মোটামুটি ভালো কোয়ালিটির ছবি তোলে। মোটামোটি সব ডিটেইলসই ধরে রাখতে পারে।

আর ভিডিও রেকর্ড করার জন্য আপনি সর্বোচ্চ 1080 30FPS এ ভিডিও রেকর্ড করতে পারবেন।

এই ফোনে 5000 Mah এর একটি ব্যাটারি ব্যাবহার করা হয়েছে। আর দুঃখের বিষয় এর বক্সে কোনো চার্জার দেওয়া নাই। তবে ব্যাটারি ব্যাকাপ ভালো পাওয়া যায়। Always on display চালু রেখেও একদিন ১ দিন ভালো ভাবেই ব্যাবহার করা যাচ্ছিলো।

A24 আসলে কী ভালো না খারাও? এই বাজেটের মধ্যে বাজারে অনেক অনেক স্মার্টফোন পাওয়া যায়। সবাই সবার জায়গা থেকে ভালো পারফরম্যান্স দেওয়ার চেষ্টা করে।
এর ভালো দিকগুলো হচ্ছে এটার একটা ভালো ব্রান্ড ভ্যালু আছে, এর UI অন্য সব স্টক UI থেকে অনেক ভালো, এটাতে Super AMOLED ডিসপ্লে পাবেন এবং ক্যামেরা এই বাজের অন্য ফোন গুলোর থেকে এগিয়ে আছে।
আর এটার খারাপ দিক গুলো হচ্ছে ডিসপ্লেতে একটা ওয়াটার ড্রপ নচ, বড় বড় বেজেল, ডিসপ্লে Super AMOLED হওয়ার কারনে গ্রিন লাইন পড়লেও পড়তে পারে আবার এটার সাথে কোনো চার্জার দেওয়া নাই।

এই হলো Samsung Galaxy A24 এর রিভিউ।
আল্লাহ হাফেজ।

Leave a Reply