নতুন কোনো স্মার্টফোন কেনার আগে
স্মার্টফোনটির ব্যাটারি লাইফ অর্থাৎ চার্জকতক্ষণ থাকবে, সেটা অন্যতম একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে ওঠে স্মার্টফোনটি কেনার
ক্ষেত্রে। বেশিরভাগ স্মার্টফোনই প্রতিদিন চার্জ
দেওয়ার প্রয়োজন পরে। সারাদিন ব্যবহারের পর অনেকে রাতের বেলা চার্জ দেয়। কিন্তু বাসা থেকে অফিস যাওয়ার পথে যদি বেশ কিছুক্ষণ স্মার্টফোনটিতে ভিডিও দেখা হয়, ক্রমাগত গান শোনা হয়, ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়, তাহলে
কিছু স্মার্টফোনে দেখা যায় দিনের প্রয়োজনীয় মুহূর্তে খুব দ্রুত চার্জ শেষ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে
যদি আপনি সঙ্গে পাওয়ার ব্যাংক রাখেন,
তাহলে হয়তো প্রয়োজনীয় মুহূর্তে স্মার্টফোনের চার্জ হয়ে যাওয়ার বিরক্তিকর মুহূর্তে উদ্ধার
পাবেন।
স্মার্টফোনের ব্যাটারির চার্জ কতক্ষণ স্থায়ী হয়?
এই প্রশ্নের সবচেয়ে ভালো উত্তর হচ্ছে, আপনার স্মার্টফোনটির ব্যাটারির সামগ্রিক ক্ষমতা কত অর্থাৎ যেটাকে এমএএইচ (মিলি অ্যাম্পিয়ার
পাওয়ার) রেট বলা হয়।
★কেননা উচ্চতর এমএএইচ রেটিং, বড় ব্যাটারি সমৃদ্ধ স্মার্টফোনের ব্যাটারি চার্জ বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়। তবে এটিই যে একমাত্র কারণ তা কিন্তু নয়। এর পাশাপাশি ফোনটির স্ক্রিন ব্রাইটনেস, রেজ্যুলেশন সহ আরো কিছু বড় ভূমিকা পালন করে থাকে ব্যাটারির চার্জের স্থায়ীত্বের ক্ষেত্রে।
★প্রযুক্তি গবেষণা বিষয়ক যুক্তরাজ্যের ওয়েবসাইট ‘এক্সপার্ট রিভিউস’, বর্তমান
সময়ের বাজারের সেরা বেশ কয়েকটি স্মার্টফোনের ব্যাটারির চার্জের স্থায়ীত্ব নিয়ে সম্প্রতি একটি পরীক্ষা করেছে। এ পরীক্ষায় একই নির্দিষ্ট জায়গায় সেরা সব স্মার্টফোনগুলোর ব্যাটারি চার্জের স্কোর নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে
আপনি জানতে পারবেন যে, এর মধ্যে থেকে আপনার ব্যবহৃত স্মার্টফোনটি বাকি অন্যান্য স্মার্টগুলোর তুলনায় ব্যাটারি সক্ষমতায় কতটা এগিয়ে রয়েছে। কিংবা কোন স্মার্টফোনগুলো ব্যাটারি সহ্য ক্ষমতায়
★স্মার্টফোনের ব্যাটারি চার্জের স্থায়ীত্বের পরীক্ষাটি যেভাবে করা হয়েছে সেরা স্মার্টফোনগুলোর ব্যাটারি চার্জের স্থায়ীত্ব
পরীক্ষা করা জন্য, ভিডিও প্লেব্যাক পরীক্ষা করা হয়েছে। স্পাইডারম্যান ২ সিনেমা থেকে
কিছু দৃশ্য নিয়ে এইচ.২৬৪ ফরম্যাটে একটি
ভিডিও তৈরি করা হয়েছে। এরপর ভিডিও চালানো হয়েছে এবং হেডফোন থেকে বের হওয়া শব্দ রেকর্ড করা হয়েছে, যার মাধ্যমে জানা গেছে যে, ব্যাটারি শেষ হওয়ার
আগ পর্যন্ত কতটা সময় ধরে ভিডিও চলেছে।
★এক্ষেত্রে ফোনগুলোকে এয়ারপ্লেন মোডে ব্যবহার করা হয়েছে, অটোমেটিক ব্রাইটনেস
ও স্লিপ সেটিংস বন্ধ রাখা হয়েছে এবং স্ক্রিন ব্রাইটনেস ১৭০cd/m2-তে সেট করা হয়েছে। যেহেতু ফোনগুলোকে এয়ারপ্লেন মোডে ব্যবহার করা হয়েছে এবং সকল ধরনের ওয়্যারলেস ফিচার বন্ধ রাখা হয়েছে, তাই স্বাভাবিকভাবে
ফোনগুলোর ব্যাটারি লাইফ বেশি বেড়ে ছিল।
তার মানে হচ্ছে, এ পরীক্ষায় ভিডিও বারবার চালানো গেছে।
★ ওয়্যারলেস ফিচার চালু না রাখার কারণ
হচ্ছে, এর তরঙ্গশক্তি আসা-যাওয়া
করতে থাকে, যা ফোনকে ক্রমাগত
চাপ দিতে থাকে ব্যাটারি ক্ষমতার পরিমাণ
সমন্বয় করতে, যা পরবর্তনশীল
ফলাফল ঘটাতে পারে। যা হোক শেষ
কথা হচ্ছে, আপনার স্মার্টফোনটিকে কীভাবে ব্যবহার করছেন, কোথায় বসবাস করছেন,
কোন মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার
করছেন, সবকিছুই স্মার্টফোনের
ব্যাটারি লাইফকে ভূমিকা রাখে।
এ পরীক্ষার লক্ষ্য ছিল, এটা দেখানো যে, কোন ফোনটিতে সবচেয়ে বেশিবার ভিডিও
রিপিট করা গেছে, সঙ্গে এটা অনুমান করা যে,
সত্যিকার জগতে ছোট ব্যাটারির
স্মার্টফোনগুলোর তুলনায় বড়
ব্যাটারির স্মার্টফোনগুলোর
পারফরম্যান্স। নিচের তালিকা থেকে আপনি দেখে
নিতে পারবেন যে, সেরা
স্মার্টফোনগুলোর ব্যাটারি লাইফে
একটা বড় ধরনের অমিল রয়েছে।
প্রায় ১০ ঘণ্টার ব্যবধান। যা হোক, পরীক্ষায় দেখা গেছে, স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৭ স্মার্টফোন
ব্যাটারির চার্জের স্থায়ীত্বে সেরা,
১৭ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট পর্যন্ত এর চার্জ
লাইফে সেরা হচ্ছে আইফোন ৬এস
প্লাস, চার্জ থাকে ১৪ ঘণ্টা ৫৮ মিনিট।
উইন্ডোজ অপারেটিংয়ে ব্যাটারি
লাইফে সেরা হচ্ছে মাইক্রোসফট লুমিয়া ৯৫০এক্সএল, চার্জ থাকে ১৩ ঘণ্টা ২ মিনিট।
★ দেখে নিন ব্যাটারির চার্জের
স্থায়ীত্বের সেরা কিছু স্মার্টফোনগুলোর মধ্যে
কোন স্মার্টফোনটিতে কতক্ষণ চার্জ
থাকে। (নীল রঙের স্মার্টফোনগুলো অ্যান্ডয়েড
অপারেটিং সিস্টেমের, লাল
রঙেরগুলো আইওএস অপারেটিং
সিস্টেম চালিত এবং সবুজ রঙের গুলো
উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম চালিত।)
★১. স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৭ (১৭ ঘণ্টা ৪৮
মিনিট)
২. স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৫ নিও (১৬ ঘণ্টা
২৬ মিনিট)
৩. স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৬ এজ (১৫ ঘণ্টা
৩৩ মিনিট)
৪. মটোরোলা মটো এক্স ফোর্স
(১৫ ঘণ্টা ১২ মিনিট)
৫. আইফোন ৬এস প্লাস (১৪ ঘণ্টা ৫৮
মিনিট)
৬. এলজি জি৪ সি (১৪ ঘণ্টা ৪৩ মিনিট)
৭. এলজি লিওন (১৪ ঘণ্টা ১ মিনিট)
৮. স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৬ (১৩ ঘণ্টা ৩৭
মিনিট)
৯. মটোরোলা মটো ই সেকেন্ড
জেনারেশন (১৩ ঘণ্টা ৩০ মিনিট)
১০. স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৬ এজ প্লাস (১৩
ঘণ্টা ২৩ মিনিট)
১১. সনি এক্সপেরিয়া জেড৫ কমপ্যাক্ট
(১৩ ঘণ্টা ২১ মিনিট)
১২. মটোরোলা মটো এক্স প্লে
(১৩ ঘণ্টা ৮ মিনিট)
১৩. ওয়ান প্লাস এক্স (১৩ ঘণ্টা ৬ মিনিট)
১৪. মাইক্রোসফট লুমিয়া ৯৫০এক্স এল
(১৩ ঘণ্টা ২ মিনিট)
১৫. স্যামসাং গ্যালাক্সি নোট৫ (১২ ঘণ্টা
৪৩ মিনিট)
১৬. এলজি জি৪ (১১ ঘণ্টা ৫৮ মিনিট)
১৭. গুগল নেক্সাস ৬পি (১১ ঘণ্টা ৫৮
মিনিট)
১৮. হুয়াউয়ে মেইট ৮ (১১ ঘণ্টা ৪৫
মিনিট)
১৯. মাইক্রোসফট লুমিয়া ৬৫০ (১১ ঘণ্টা
৩৬ মিনিট)
২০. সনি এক্সপেরিয়া জেড৫ (১১ ঘণ্টা
২৯ মিনিট)
২১. এলজি জি ফ্লেক্স ২ (১১ ঘণ্টা ২৫
মিনিট)
২২. এইচটিডি ডিজায়ার ৫১০ (১১ ঘণ্টা ২৪
২৩. এলজি স্পিরিট (১১ ঘণ্টা ২০ মিনিট)
২৪. আইফোন ৬এস (১১ ঘণ্টা ১৮
মিনিট)
২৫. ওয়ানপ্লাস টু (১১ ঘণ্টা ১৩ মিনিট)
২৬. মটোরোলা মটো জি থার্ড
জেনারেশন (১১ ঘণ্টা ১২ মিনিট)
২৭. ব্ল্যাকবেরি প্রিভ (১১ ঘণ্টা ১১
মিনিট)
২৮. ইই হারিয়ার মিনি (১০ ঘণ্টা ৫৩ মিনিট)
২৯. ভোডাফোন স্মার্ট আল্ট্রা ৬ (১০
ঘণ্টা ৫১ মিনিট)
৩০. ইই হারিয়ার (১০ ঘণ্টা ৪০ মিনিট)
৩১. অনার ৫এক্স (৬১৬)(১০ ঘণ্টা ৩৭
মিনিট)
৩২. হুয়াউয়ে মেইট এস (১০ ঘণ্টা ৩৩
মিনিট)
৩৩. ভোডাফোন স্মার্ট স্পিড ৬ (১০
ঘণ্টা ২৪ মিনিট)
৩৪. গুগল নেক্সাস ৫ এক্স (১০ ঘণ্টা
১৪ মিনিট)
৩৫. এইচটিসি ডিজায়ার ৬২৬ (১০ ঘণ্টা ৭
মিনিট)
৩৬. এইচটিসি ওয়ান এ৯ (১০ ঘণ্টা ২ মিনিট)
৩৭. মাইক্রোসফট লুমিয়া ৯৫০ (১০ ঘণ্টা
১ মিনিট)
৩৮. এইচটিসি ডিজায়ার ৬২০ (৯ ঘণ্টা ৪২
মিনিট)
৩৯. সনি এক্সপেরিয়া জে৫ প্রিমিয়াম (৯
ঘণ্টা ৩৮ মিনিট)
৪০. এইচটিসি ডিজায়ার ৫৩০ (৯ ঘণ্টা ২০
মিনিট)
৪১. এইচটিসি ডিজায়ার ৮২০ (৯ ঘণ্টা ১৮
মিনিট)
৪২. এইচটিসি ওয়ান এম৯ (৯ ঘণ্টা ১৩
মিনিট)
★৪৩. উইলিফক্স সুইফ (৮ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট)
৪৪. সনি এক্সপেরিয়া এম৫ (৮ ঘণ্টা ৫৫
মিনিট)
★৪৫. মটোরোলা মটো এক্স স্টাইল
(৮ ঘণ্টা ৫৪ মিনিট)
বিঃদ্রঃ সমস্যা থেকে লাঘব পাবার জন্য মোবাইলে রুট ব্যাবহার করে অযথা মতবারি করবেন না। তাহলে সমস্যা আরো বাড়বে।