আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালোই আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালই আছি। আবারও হাজির হলাম আপনাদের সামনে নতুন কিছু নিয়ে । এবার আসুন শুরু করি…
অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে অনেকেই কাস্টম রম ব্যবহার করে থাকেন। কাস্টম রম নিয়ে আমি আমার আগের ব্লগ বা টিউটোরিয়ালগুলোতে লিখেছি তবে এক কথায় যদি কাস্টম রমের সংজ্ঞা দিতে হয় তবে বলা যায়, ‘কাস্টম রম হচ্ছে অ্যান্ড্রয়েড এর মূল অপারেটিং সিস্টেমের একটি থার্ড-পার্টি ভার্শন।’ যেমন ধরুনঃ CyanogenMod। যাই হোক, আপনাদের মাঝে যারা কাস্টম রম নিয়ে ঘাটাঘাটি করেছেন বা এ সম্পর্কে কিছুটা হলেও জানেন তারা নিশ্চয়ই ‘কাস্টম রমের’ পাশাপাশি ‘কাস্টম রিকভারী’ নামও শুনেছেন। আজকের ব্লগে আমরা এই ‘কাস্টম রিকভারী’ নিয়েই জানব।
প্রতিটি অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসেই একটি ডিফল্ট রিকভারী প্রি-ইন্সটল্ড থাকে, একে বলা হয়ে ‘স্টক রিকভারী’। এই রিকভারী সফটওয়্যারটি ডিভাইসের তথ্য ব্যাক-আপ, রিস্টোর, অপারেটিং সিস্টেম হালনাগাদ করা এবং অন্যান্য ডায়াগনস্টিক কাজ করতে সক্ষম। অন্যদিকে, এসব কাজ করার পাশাপাশি ‘কাস্টম রমের’ সাহায্যে করা যায় অন্যান্য অ্যাডভান্স লেভেলের কাজ।
স্টক রিকভারী
প্রতিটি নতুন অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস যখন আপনি বাজার থেকে কিনে আনেন তখন এতে গুগলের রিকভারী সফটওয়্যার প্রি-ইন্সটল্ড অবস্থায় থাকে, যাকে আমরা ‘স্টক রিকভারী’ নামেও জানি। আপনি সহজেই আপনার ডিভাইসের জন্য নির্দিষ্ট ফিসিক্যাল হার্ডওয়্যার বাটন কম্বিনেশন চেপে আপনার ডিভাইসের রিকভারী স্ক্রিনে বুট করতে পারবেন।
রিকভারী মেন্যু মূলত আপনার ডিভাইসটিকে রিকভার করার জন্য নানা রকম উবিধা দিয়ে থাকে, যেমনঃ ধরুন, আপনি ইচ্ছে করলে রিকভারী মেন্যু থেকেই আপনার ডিভাইসটিকে ফ্যক্টরী রিসেট করতে পারবেন। এছাড়াও, OTA এর মাধ্যমে ডাউনলোড করা অপারেটিং সিস্টেমের বিভিন্ন আপডেটও আপনি রিকভারীর মাধ্যমে ফ্ল্যাশ করতে পারবেন আপনার ডিভাইসটিতে। আপনি যদি একটি নতুন রম ফ্ল্যশ দিতে চান বা বর্তমান রমটিই রি-ফ্ল্যাশ করতে চান তবে এক্ষেত্রে রিকভার মেন্যুটিই সবচাইতে কাজে লাগবে আপনার।
‘স্টক রিকবারী’টি কাজের হলেও এটি মিনিমাল সুবিধা প্রদান করে থাকে। এর কার্যক্ষমতা নির্দিষ্ট সিস্টেমের মধ্যে এবং নির্দিষ্ট সিস্টেমের জন্যেই সীমাবদ্ধ। যেমন ধরুন, ডিফল্ট রিকভারীর মাধ্যমে আপনি আপনার ডিভাইসের প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানটির সরবারহ করা OTA আপডেটই শুধু ফ্ল্যাশ করতে পারবেন, অন্যান্য রম বা রমের আপডেট এই স্টক রিকভারী সমর্থন করেনা।
কাস্টম রিকভারী
কাস্টম রম যেমন স্টক রমের একটি থার্ড-পার্টি ভার্শন, ঠিক তেমনি ভাবেই কাস্টম রিকভারীও বলতে গেলে স্টক রিকভারীর একটি থার্ড-পার্টি ভার্শন। কাস্টম রিকভারী ব্যবহার করতে হলে আপনাকে প্রথমে যে কোন একটি কাস্টম রিকভারী আপনার ডিভাইসে ফ্ল্যাশ করে নিতে হবে যা আপনার স্টক রিকভারীকে রিপ্লেস করবে এবং এরপর আপনি তা ব্যবহার করতে পারবেন।
একটি কাস্টম রিকভারী থেকেও আপনি সে সব সুবিধা পাবেন যা আপনি স্টক রিকভারী থেকে পেতেন, তবে অবশ্যই কাস্টম রিকভারীতে পাবেন বেশ কিছু বর্ধিত ফিচার। যেমন ধরুন, কাস্টম রিকভারীর মাধ্যমে আপনি সহজেই আপনার ডিভাইসের ফুল ব্যাক-আপ করতে পারবেন এবং তা রিস্টোর করতে পারবেন। কাস্টম রিকভারীর মাধ্যমে আপনি আপনার মেমরী কার্ড পার্টিশনের মাধ্যমে সোয়াপ, ext4 ইত্যাদি পার্টিশন ক্রিয়েট করতে পারবেন। এছাড়াও, কাস্টম রিকভারীর মাধ্যমেই আপনি আপনার ডিভাইসে কাস্টম রম ইন্সটল করতে পারবেন।
জনপ্রিয় কাস্টম রিকভারী সমূহঃ
কাস্টম রিকভারীর জগতে ‘ClockworkMod Recovery (CWM)’ এবং ‘Team Win Recovery Project (TWRP)’ খুবই জনপ্রিয়। চলুন, এই দুটি কাস্টম রিকভারী সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেয়া যাক।
CWM:
CWM রিকভারীর মাধ্যমে আপনি সহজেই NANDroid ব্যাক-আপ ক্রিয়েট এবং রিস্টোর করতে পারবেন। একটি অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের সমগ্র ফাইল সিস্টেমকে ব্যাক-আপ করার পদ্ধতিকে বলা হয় NANDroid ব্যাক-আপ।
CWM-এ আপনি পাবেন একটি রম ম্যানেজার যাতে একটি ফাইল ব্রাউসার বিল্ট-ইন অবস্থায় থাকে। এছাড়াও এর মাধ্যমে আপনি কাস্টম রমের ইন্সটলেশনের জন্য নানা রকম সুবিধা পাবেন। বেশির ভাগ CWM রিকভারীর ইন্টারফেস নন-গ্র্যাফিকাল এবং এতে টাচ অপশনের বদলে আপনাকে ফিসিক্যাল বাটন ব্যবহার করতে হতে পারে।
TWRP:
TWRP রিকভারীটির গ্র্যাফিকাল ইউজার ইন্টারফেস CWM এর চাইতে উন্নত এবং এর ইউজার ইন্টারফেসটি টাচ-বেসড হওয়ায় আপনি সহজেই এটি অপারেট করতে পারবেন। অন্যান্য রিকভারীর সুবিধাতো আপনি এটিতে পাবেনই এবং তার সাথে থাকছে বিভিন্ন রকম থিম ব্যবহারের সুবিধাও। CWM এর চাইতে এর সবচাইতে ভালো দিকটিই হচ্ছে এর টাচ-বেসড ইন্টারফেস।
দুটি কাস্টম রমই চমৎকার তবে অনেক ক্ষেত্রে অনেক ডিভাইসে দুটিই সমর্থিত হয়না।
কখন এবং কেনই বা ব্যাবহার করবেন এই কাস্টম রিকভারী?
এই কাস্টম রিকভারী আপনার সবচাইতে বশি কাজে লাগবে যদি আপনি অ্যান্ড্রয়েড গিক হন এবং যদি আপনি কাস্টম রম ইন্সটল করতে চান। তবে এই কাস্টম রিকভারীও কিন্তু ইন্সটল করতে হবে খুবই সতর্কতার সাথে কেননা কাস্টম রিকভারী ইন্সটল করার জন্য আপনাকে আপনার ডিভাইসের বুটলোডার আনলক করে নিতে হবে।
যাই হোক, মূল কারণ হচ্ছে আপনি যদি আপনার রম বা কাস্টম রম নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে চান অথবা আপনি শক্তিশালী কোন ব্যাক-আপ সিস্টেম চান তবে আপনাকে সহায়তা করবে এই কাস্টম রিকভারী।
শেষ কথাঃ
মোট কথা, আপনি যদি অ্যাডভান্স লেভেলের ব্যবহারকারী হন এবং আপনার ডিভাইসে কাস্টম রম এবং অন্যান্য ভাবে কাস্টোমাইজেশনের স্বাদ পেতে চান তবে কাস্টম রিকভারী আপনার জন্য আবশ্যক। তবে, রিকভারী পরিবর্তনের ফলেই কিন্তু আপনি আপনার ডিভাইসের ইন্টারফেসে সামান্যতমও পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন না। এটা আমাদের কম্পিউটারের বায়োস মেন্যুর মতই।
সবশেষে .. আমার লিখা ও উত্তর কোন ভুল থাকলে ধরিয়ে দিবেন । আমিও ভুল করবো এটাই স্বাভাবিক । তাই কোন প্রকার বাঝে মন্তব্য না করে সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দিন ।
আমার Channel Subscribe করতে এখানে ক্লিক করুনঃ Islam & Tech
ফেসবুকে আমি ঃ Habibur Rahman
15 thoughts on "আসুন আপনার এন্ড্রইড ফোনের কাস্টম রিকভারী এর বৃত্তান্ত জেনে নেই !"