২০২১ সালে এসে, আপনি আপনার কনটেন্ট সার্চ ইঞ্জিনের জন্য  সঠিকভাবে অপ্টিমাইজড না করে কখনো গুগলে র্যাংক (rank)  করার কথা ভুলেও চিন্তা করতে পারবেন না৷

অনেক সময় এরকম হয় যে, আপনি অনেক তথ্যবহুল ও সেরা আর্টিকেল লিখেছেন, কিন্তু ভিজিটররা সার্চ ইঞ্জিনে আপনার আর্টিকেলটি খুঁজে পাচ্ছে না৷ কারণ সার্চ ইঞ্জিনের জন্য আপনার কনটেন্টটি সঠিকভাবে অপ্টিমাইজড করেননি৷

অন্য কথায় বলা যায়, আমরা বলতে পারি যে আপনি অনেক বেশি অর্গানিক ভিজিটর আপনার কম্পিটিটরের ওয়েবসাইটে পাঠাচ্ছেন৷

সুতরাং, Seo ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখুন যেটি আপনাকে আপনার কম্পিটিটরের সাথে প্রতিযোগীতা করতে সাহায্য করবে৷

এসইও ফ্রেন্ডলি ব্লগ আর্টিকেল লেখার উপায়

১. কী-ওয়ার্ড রিসার্চ করা

একটি মানসম্মত আর্টিকেল লেখার পূর্বে অবশ্যই কিছু সময় নিয়ে কী-ওয়ার্ড রিসার্চ করে নেওয়া উচিত৷

আপনি যদি  কী-ওয়ার্ড রিসার্চ না করেই আর্টিকেল লিখে পাবলিশ করেন,তবে সেটি কখনো গুগলে র্যাংক (rank) করবে না৷

যখন আপনি কী-ওয়ার্ড রিসার্চ করা আরম্ভ করবেন তখন অনেক কী-ওয়ার্ডই পাবেন,কিন্তু আপনাকে সেগুলোর মধ্যে থেকে সঠিক কী-ওয়ার্ডটি বাছাই করতে হবে৷

সঠিক কী-ওয়ার্ড বাছাই বলতে বুঝানো হয়েছে লং টেইল কী-ওয়ার্ড বাছাই করা যেটি অনেক বেশি নির্দিষ্ট৷ যার ফলে আপনি টার্গেট করা ভিজিটর পাবেন৷

আর সর্বদা শর্ট টেইল কী-ওয়ার্ডগুলো এড়িয়ে যেতে হবে৷ কেননা এইসব কী-ওয়ার্ডগুলোর কম্পিটিটর অনেক বেশি হওয়ায় গুগলে সহজে র্যাংক করা যায় না৷

২. আকর্ষণীয় শিরোনাম বা হেডিং তৈরি করা

আপনার উচিত হবে আপনার কি-ওয়ার্ড প্রধান হেডিংএ ব্যবহার করা৷ এছাড়া আরও কিছু শব্দ যোগ করবেন যেন ব্লগের আর্টিকেল সম্পর্কে বর্ণনামূলক হয়৷

এর ফলে যখন একজন ভিজিটর আপনার আর্টিকেলের হেডিংটি পড়বে তখন আপনার আর্টিকেলটি কোন বিষয়ে লেখা তা ধারণা করতে পারবে৷

আপনি আপনার কী- ওয়ার্ডটি স্টার্টিং হেডিং ব্যবহার করবেন, কারণ গবেষণায় দেখা গেছে এটি সার্চ ইঞ্জিনের প্রথমে আসতে সাহায্য করে৷

৩.সঠিক হেডিং ও সাবহেডিং ব্যবহার করা

সবসময় আপনার মনে রাখতে হবে যে আর্টিকেলের ভেতরে একটি মাত্র H1 হেডিং ব্যবহার করতে হবে এবং যেটি আপনার ব্লগ পোস্টের টাইটেল হওয়া উচিত৷

তারপর আপনি আপনার কনটেস্ট রাইটিং শুরু করবেন H2 ও H3 ব্যবহার করে, আপনার কনটেন্টটি বিভিন্নভাগে ভাগ করে নিবেন৷

সঠিকভাবে হেডিং ব্যবহার করতে পারলে অন পেজ অপটিমাইজেশন এর জন্য অনেক উপকারী হবে৷ ফলে যখন সার্চ ইঞ্জিন ক্রলারস আপনার আর্টিকেলটি ক্রল করবে তখন সহজে বুঝতে পারবে কী আপনি লিখেছেন৷

৪. ইমেজ ব্যবহার করা

যখনই ব্লগের জন্য আর্টিকেল লিখবেন সেই কনটেন্টে ইমেজ ব্যবহার করতে ভুলবেন না৷

কারণ, ইমেজ আর্টিকেলকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তোলে৷ একটা লম্বা প্যারাগ্রাফে একটি ইমেজ ব্যবহার করতে পারেন৷

উল্লেখ্য,  ইমেজ ব্যবহার করার সময় ইমেজের Alt ট্যাগ দিতে ভুলবেন না৷

ইমেজের Alt ট্যাগে প্রাসঙ্গিক আরও কী ওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত৷ কেননা, এটি  সার্চ ইঞ্জিনে ইমেজ র্যাংক করতে সাহায্য করবে৷

৫. সঠিক পারমালিংক তৈরি করা 

আপনি পারমালিংকে প্রাসঙ্গিক কী ওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারেন৷ এটি পাঠক ও সার্চ ইঞ্জিনকে সাহায্য করবে আপনি কী বিষয়ে আপনার ব্লগ আর্টিকেলটি লিখেছেন৷

আপনি যদি দীর্ঘদিন ব্লগিং করতে চান, তবে সাল বা বছর (যেমন ২০২১) ব্যবহার করা বন্ধ করুন৷

কারণ ২০২১ সাল শেষ হওয়ার পর কেউ আর ২০২১ লিখে সার্চ করবে না৷ তখন মানুষ ২০২২ লিখে সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ দিবে৷

পরে আপনাকে আপনার পারমালিংক পরিবর্তন করতে হবে, এতে করে সার্চ ইঞ্জিন র্যাংকিং প্রভাবিত করবে৷ আর পরিবর্তন করা পারমালিংকটি 404 error দেখাবে৷

এই কারণে রাতারাতি আপনার র্যাংক করা আর্টিকেলটি সার্চ ইঞ্জিন থেকে উধাও হয়ে যাবে৷

সুতরাং পারমালিংকে সাল ব্যবহার এড়িয়ে চলুন৷

তবে হ্যাঁ,  আপনি যদি trendy blogger হন, তবে সাল ব্যবহার করতে পারেন৷ কারণ এগুলো শুধু একবছরের জন্যই সার্চ করা হয়৷

৬. বিস্তারিত পোস্ট লিখুন

যখনই কোনো ব্লগ আর্টিকেল লিখতে বসবেন,আর্টিকেলটি ঐ বিষয়ে সকল তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করবেন৷

যাতে করে ভিজিটররা আর্টিকেলটি পড়ে কোনো সন্দেহ পোষণ না করে, কমপক্ষে কিছু জ্ঞান আহরণ করতে পারে ঐ আর্টিকেল থেকে৷

৭. ইউনিক আর্টিকেল লেখা

সর্বদা কপিমুক্ত ইউনিক পোস্ট লেখার চেষ্টা করবেন৷

ইউনিক বলতে বুঝাচ্ছি,  এমন আর্টিকেল লিখতে হবে যেটা আর কোথাও নেই৷

এই কারণে,  আপনাকে নিজে নিজে কনটেন্ট লিখতে হবে, একদম কপি করা যাবে না তখন এটি ইউনিক বলে গণ্য হবে৷

৮. আর্টিকেলের দৈর্ঘ্য অপ্টিমাইজড করা

সবসময় আর্টিকেলটি ৮০০ এর অধিক শব্দে লেখার প্রচেষ্টা চালাবেন৷ কারণ গুগল বড় আর্টিকেল খুব পছন্দ করে৷ এছাড়া বড় আর্টিকেল খুব তথ্যবহুল হয়ে থাকে৷

আর্টিকেল লেখার সময় কী ওয়ার্ড ডেনসিটি ১-১.১৫% রাখবেন যেটা Seo এর জন্য আদর্শ পরিমাপ৷

আরও পড়ুনঃ আহনাফ আদিল নামের অর্থ কি

 

৯. পোস্টে ইন্টারলিংক তৈরি করা

ইন্টারলিংকিং Seo এর জন্য সেরা ও কার্যকরী একটি কৌশল৷ এটির ফলে ব্যবহার অভিজ্ঞতা বাড়ে এবং সার্চ ইঞ্জিন ক্রলার কার্যকরভাবে আপনার ওয়েবসাইটটি ক্রল করতে পারে৷

এই ক্যাটাগরির প্রাসঙ্গিক পোস্টের সাথে অন্য পোস্টের ইন্টারলিংক করুন৷ ফলশ্রুতিতে ভিজিটর আরও বেশি তথ্য খুঁজে পাবে৷

ইন্টারলিংকিং করার সময় কী ওয়ার্ড ও আংকর টেক্সট ব্যবহার করতে চেষ্টা করবেন৷

১০. Seo প্লাগিং ব্যবহার করা 

আপনি যদি  ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগিং শুরু করেন, তবে অবশ্যই  Yoast plugin seo প্লাগিংটি ব্যবহার করতে পারেন৷

এটি আপনাকে Seo ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখতে সাজেশনস দিয়ে সাহায্য করবে৷ প্রায় ৭০-৮০% অন পেজ অপটিমাইজেশন Seo করে থাকে এই প্লাগিংটি৷

এছাড়া এটি আপনার আর্টিকেল স্ক্যান করে, কী ওয়ার্ড গুলো সঠিকভাবে বসানো হয়েছে কি না চেক দিবে বা ইমেজে Alt ট্যাগ আছে কি না এসব জানাবে৷

অধিকন্তু,  আপনাকে মেটা ডেসক্রিপশন তৈরি করে দিবে যেটি সার্চ রেজাল্টে দেখাতে সাহায্য করবে৷

১১. আর্টিকেল পাবলিশ করার আগে পড়ে নেওয়া

কনটেন্ট পাবলিশ করার পূর্বে অবশ্যই একবার হলেও পড়ে নিবেন৷

পড়ার ফলে যেকোনো ভুল (যেমন :উচ্চারণজনিত ভুল, ব্যাকরণগত ভুল প্রভৃতি?  ধরতে পারবেন৷

ভুল ধরার কারণে সেগুলো আবার পুনঃসংস্কার করতে পারবেন৷

যখন আপনি আর্টিকেলটি পড়ে নিশ্চিত হবেন যে কোনো ধরনের ভুল নেই ঠিক তখনই আর্টিকেলটি পাবলিশ করে দিবেন৷

এই হলো “কিভাবে Seo ফ্রেন্ডলি ব্লগ আর্টিকেল লিখবেন”, এখন মাত্র আর দুটি ধাপ রয়েছে৷

১২. সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম (যেমন: ফেসবুক, টুইটার প্রভৃতি) আপনার ব্লগে ভিজিটর পাঠিয়ে সহায়তা করে থাকে৷

এজন্য আপনাকে আপনার ব্লগ রিলেটেড কিছু ফেসবুক গ্রুপে জয়েন হতে হবে৷ যখনই একটি কনটেন্ট পাবলিশ করবেন এখানে শেয়ার করতে ভুলবেন না৷

অনেক লোক এই সব গ্রুপে সক্রিয় থাকে৷ ফলশ্রুতিতে আপনার আর্টিকেলটি সবার মাঝে ভাইরাল হতে পারে৷

ভিজিটর বাড়ানোর জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে৷

আপনি আপনার ব্লগের নামে ফেসবুক পেজ খুলে সেখানে পোস্ট করতে পারেন৷

১৩. কনটেন্ট আপডেট করা

সার্চ ইঞ্জিন একদম সতেজ ও হালনাগাদ করা আর্টিকেল খুব পছন্দ করে৷

সুতরাং ধারাবাহিক আপনার আর্টিকেলগুলো আরও তথ্যবহুল করে নিয়মিত আপডেট দিবেন৷ সুতরাং আপনার আর্টিকেলগুলোকে সময় উপযোগী করে তুলতে পুরনো আর্টিকেলটিকে হালনাগাদ করতে পারেন৷

শেষ কথা

তো এই ছিল “ কিভাবে Seo ফ্রেন্ডলি ব্লগ আর্টিকেল লিখবেন”৷ আশা করি, এটি আপনাকে খুব ভালো ফল দিবে৷ এই সম্পর্কিত আরও প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট সেকশনে জানাতে পারেন৷

সৌজন্য আমার ব্লগ : আহনাফ মুনতাসির নামের অর্থ কি
সময় থাকলে এখনি একবার ঘুরে আসতে পারেন!

ধন্যবাদ

Leave a Reply