আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। বর্তমান এই সময়ে ব্লগিং করে অনলাইনে আয় করা খুবই জনপ্রিয় এবং বিশ্বস্ত একটি উপায়। আপনারা যে কেউ চাইলেই ব্লগিং করে অনলাইন থেকে আয় করতে পারেন। ব্লগিং করে বর্তমান সময়ে নিজের ক্যারিয়ার কে বেছে নিয়েছে হাজার হাজার লোক।

কারণ ব্লগিং করে লক্ষাধিক টাকার উপরে অনলাইন থেকে আয় করা সম্ভব। তাই আপনিও চাইলে আপনার অবসর সময়েে ব্লগিং করে অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারেন। আজকের এই ছোট্ট আর্টিকেল থেকে আমরা, অনলাইনে ব্লগিং করে কিভাবে আয় করা যায় এ বিষয়টা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ব্লগিং করে অনলাইন থেকে কিভাবে ইনকাম করবেন?

ব্লগিং করে আয় : বর্তমান সময়ে আপনারা খুব সহজেই ব্লগিং করে অনলাইন থেকে আয় করতে পারেন। ব্লগিং করার জন্য আপনাকে একটি প্ল্যাটফর্ম খুলতে হবে। এরপর এ প্লাটফর্মে আপনাকে আর্টিকেল পাবলিশ করতে হবে। তবে আর্টিকেলগুলো ইউনিক এবং নিজের লেখা হতে হবে সম্পূর্ণ।

ব্লগিং কি: ব্লগিং হলো আপনার আর্টিকেল লেখা অথবা পোস্ট করা। এই আর্টিকেল আপনাকে প্রকাশ করতে হবে আপনার তৈরি করা প্লাটফর্মে। আর এই প্লাটফর্ম হল একটি ওয়েবসাইট। অর্থাৎ আপনার ওয়েবসাইটে আপনি নিজেই ইউনিক আর্টিকেল লিখে ব্লগিং করতে হবে। আশা করি ব্লগিং সম্পর্কে একটু হলেও ধারণা চলে এসেছে।

ব্লগিং করে ইনকাম : বর্তমান সময়ে ব্লগিং করে আয় করার জন্য আপনাকে বড় কোন কোম্পানির সাথে যুক্ত হতে হবে। সবচেয়ে জনপ্রিয় দুটি কোম্পানির নাম হল ওয়ার্ডপ্রেস এবং ব্লগার।আপনি যদি ব্লগিং করতে চান তাহলে আপনাকে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে সর্বপ্রথম।

ওয়েবসাইটটি তৈরি করার পর আপনার কাজ হলো এই ওয়েবসাইটে আর্টিকেল লেখা। আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী ক্যাটাগরিতে আপনি ইউনিক আর্টিকেল পাবলিশ করতে পারেন।যেহেতু প্লাটফরমটি সম্পূর্ণ আপনার নিজের এবং আপনি নিজেই ব্লগিং করতে চাচ্ছেন, তাই ইচ্ছা অনুযায়ী ক্যাটাগরি তৈরি করে আপনি আর্টিকেল লিখতে পারেন।

ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য যা যা প্রয়োজন

একটি কমপ্লিট ওয়েবসাইট তৈরি করতে তিনটা জিনিসের খুবই প্রয়োজন।এককথায় এর তিনটি জিনিস ছাড়া ওয়েবসাইট তৈরি করা অসম্ভব এর মত।

এক নম্বরে একটি থিম দরকার ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য।

দুই নম্বরে একটি হোস্টিং দরকার ওয়েবসাইট এর জন্য।

তিন নম্বরে একটি ডোমেইন দরকার ওয়েবসাইটের জন্য।

থিম কি এবং এর কাজ কি: একটি ওয়েবসাইটে থিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস। আপনার ওয়েবসাইট এর সৌন্দর্য, সাজাতে, মানুষকে মুগ্ধ করতে পারে থিম। আর এই সিম দিয়ে আপনার ওয়েবসাইটটি প্রফেশনাল ভাবে সাজাতে হবে। থিম ছাড়া আপনার ওয়েবসাইট সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাওয়া খুবই মুশকিল। তাই একটি ওয়েবসাইটের জন্য থিম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যা আপনার ওয়েবসাইটে নিয়ে আসবে দারুণ চমৎকার সৌন্দর্য।

হোস্টিং কি এবং এর কাজ কি: হোস্টিং হল একটা স্থান বা জায়গা। ধরুন আপনি ব্লগিং করবেন, এই ব্লগিং করার জন্য সর্বপ্রথম আপনার একটি জায়গা প্রয়োজন হবে। তারপর সে জায়গাটি সংরক্ষণ করার জন্য একটা জিনিস প্রয়োজন হবে । যেমন আপনি ওয়েব সাইটে বিভিন্ন ভিডিও, ছবি এবং আর্টিকেল পাবলিশ করবেন।

এই আপনার ছবি ভিডিও আর্টিকেল সংরক্ষণ করার জন্য যে জিনিসের প্রয়োজন সেটা হল হোস্টিং। এই হোস্টিং ছাড়া আপনার ওয়েবসাইট থেকে আর্নিং করা অসম্ভব।তাই একটি ওয়েবসাইটের জন্য হোস্টিং এর প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। আশাকরি বুঝতে পেরেছেন হোস্টিং এর কাজ কি এবং হোস্টিং আপনার কি করবে।

ডোমেইন কি এবং এর কাজ কি: ডোমেন হলো আপনার নাম না ভাই আপনার ওয়েবসাইটের নাম। কিছু মনে করবেন না একটু মজা করছিলাম! আসলে আপনার ওয়েবসাইটের নাম ইউনিক না হলে কেমন হয় বলেনতো!। আপনি ধরুন ওয়ার্ডপ্রেসে যুক্ত হয়ে একটি প্লাটফর্ম তৈরি করেছেন। তখন আপনার ওয়েবসাইটের অথবা ডোমেইনের নাম হবে ধরুন, trickbd. wordpress.com ।

এটাই হলো আপনার ডোমেইন এর নাম। এখন আপনি বলুন তো আপনার ডোমেইন এর নাম এত বড় হলে মানাবে কি? আপনার ওয়েবসাইটটি নাম যদি হতো trickbd.com তাহলে কেমন হতো? নিশ্চয়ই আপনার ডোমেইন এর নাম আপনি পছন্দ করতেন অথবা অন্য কেউ পছন্দ করত এককথায় ইউনিক হত। এবং খুব সহজেই যে কেউ আপনার ওয়েবসাইটের নাম মনে রাখতে পারতো এবং খুব সহজেই সেখানে চলে আসতো।

এখন আপনার এই ওয়েবসাইটটি এভাবে পরিবর্তন করবে ডোমেইন। অনলাইনে এদেরকে মাস্টার ডোমেন বলা হয় যেমন, .com
.net .org .xyz .info .in ইত্যাদি।

ব্লগিং করে অনলাইন থেকে ইনকাম করবেন যেভাবে?

এখন আপনি ব্লগিং করে অনলাইন থেকে কিভাবে আয় করবেন সেটা ভাবছেন তাই না! আমি একেবারে সংক্ষিপ্ত আকারে এ সম্পর্কে একটু নলেজ দিয়ে দিব। যার ফলে ব্লগিং করে আয় করা সম্পর্কে বিস্তারিত নলেজ আপনার ভিতর চলে আসবে! ‌ তার জন্য আমরা একটি উদাহরণ যে সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব।

ধরুন আপনি একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছেন। এই প্ল্যাটফর্মে এখন আপনাকে আর্টিকেল লেখালেখি করতে হবে। এর জন্য আপনি এ আর্টিকেলে বিভিন্ন ধরনের আর্টিকেল পাবলিশ করলেন।নির্দিষ্ট পরিমাণ কিছু সংখ্যক আর্টিকেল লেখা হয়ে গেলে। আপনি গুগল এডসেন্সে আপনার ওয়েবসাইটটি এপ্লাই করতে পারেন আর্নিং এর জন্য।

গুগোল অ্যাডসেন্স আপনার ওয়েবসাইটটি রিভিউ করবে এবং তাদের নিয়ম কানুন অনুযায়ী আপনার ওয়েবসাইটটি থাকলে আপনাকে অ্যাপ্রুভ করে দিবে। তারপর আপনার ওয়েবসাইট এ বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন দেখতে পারবেন। এই বিজ্ঞাপন দ্বারা আপনার ইনকাম আসতেই থাকবে। যত লোক আপনার ওয়েব সাইটের বিজ্ঞাপন গুলো দেখবে ততো আপনার ইনকাম আসবে।

বিজ্ঞাপন দ্বারা এখন যে ইনকাম আসছে সেগুলো সব গুগোল অ্যাডসেন্সে জমা হবে। জমা হতে হতে যখন আপনার একাউন্টে 10 ডলার হবে তখন, গুগল থেকে আপনার অ্যাড্রেসের একটি চিঠি পাঠানো হবে। এবং এই সিটিতে একটি কোর্ট থাকবে যেটা গুগোল অ্যাডসেন্সে সাবমিট করতে হবে। গুগোল অ্যাডসেন্সে কোড সাবমিট করলে আপনার এড্রেসটি ভেরিফাই হয়ে যাবে গুগোল অ্যাডসেন্সে।

তারপর আপনি চাইলে আপনার দেশের যেকোন ব্যাংক এড করতে পারেন গুগোল অ্যাডসেন্সে। ইনকাম করতে করতে যখন আপনার গুগোল অ্যাডসেন্সে আর্নিং আসবে 100 ডলার। তখন ওই টাকা অটোমেটিক্যালি আপনার ব্যাংক একাউন্টে তারা পাঠিয়ে দিবে। আর এভাবেই আপনি অনলাইনে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে আয় করতে পারেন।

আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন কিভাবে অনলাইনে ব্লগিং করে আয় করতে হয় সেটা। আপনাকে একটা প্ল্যাটফর্মের যুক্ত হয়ে সেখানে ব্লগিং করে খুব সহজে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে অনলাইনে আয় করতে পারেন। যেটা সবার জন্য উন্মুক্ত তবে আপনার বয়স অথবা আপনার জিমেইল এর বয়স 18 থাকতে হবে। তাহলে যে কেউ চাইলেই ওই জিমেইল দ্বারা ব্লগিং করে অনলাইন থেকে আয় করতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরামর্শ

১ ব্লগিং করতে হলে, আপনার যেকোনো প্ল্যাটফর্মের যুক্ত হয়ে কাজ করতে হবে যেমন: ব্লগার অথবা ওয়ার্ডপ্রেস ইত্যাদি।

২ এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে যুক্ত হওয়ার পর একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে এবং নিয়মিত আর্টিকেল লিখতে হবে।

৩ অন্য কারোর আর্টিকেল কপি পেস্ট করা যাবে না সম্পূর্ণ আর্টিকেল নিজের এবং ইউনিক হতে হবে।

৩ আর্টিকেল কমপক্ষে শুরুর দিকে সর্বনিম্ন 400 শব্দ থেকে শুরু করে যত পর্যন্ত বাড়াতে পারেন ততো ভালো।

৪ ব্লগিং করার জন্য ‌ যে নিয়মিত গাইডলাইন রয়েছে সেগুলো জানতে হবে এবং সম্পূর্ণ মেনেই আপনাকে কাজ করতে হবে।

৫ আর্টিকেলগুলো মানুষের উপকারে আসবে এ ধরনের আর্টিকেল সাবমিট করতে হবে।

৬ মানুষের অপ্রয়োজনীয়’ অশ্লীল খারাপ অথবা সমাজে আঘাত আনে এইধরনের কোনো কিছুই ওয়েবসাইটে রাখা যাবে না।

৭ নিজের ইচ্ছেশক্তি সততা ও টেকনিক খাটিয়ে সব সময় নতুন নতুন প্রয়োজনীয় আর্টিকেল আপনার প্লাটফর্মে পাবলিশ করতে হবে।

৮ নিজের ডেডিকেশন, নিজের ইচ্ছেশক্তি, পরিশ্রমই, সততা, সহ্য, ধৈর্য, নতুনত্ব ইত্যাদি নিয়ে আপনার ওয়েবসাইটে কাজ করতে হবে।

পরিশেষে বন্ধুরা আজকে এয়ারটিকেল থেকে আমরা ব্লগিং করে কিভাবে আয় করা যায় এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করলাম। এবং উপরের যে পরামর্শ গুলো দেওয়া হয়েছে এগুলো মেনে ব্লগিংয়ে আপনাকে অবশ্যই কাজ করতে হবে। তাহলে আপনারা সবাই ব্লগিং করে নিশ্চিত আয় করতে পারবেন।

আর্টিকেল সম্পর্কিত কোনো প্রশ্ন অথবা মতামত থাকলে কমেন্ট এর মাধ্যমে জানাতে একদমই ভুলবেন না। কোথাও ভুল ত্রুটি হলে বাজে কমেন্ট না করে জানিয়ে দিবেন। আর আর্টিকেল মনোযোগ সহকারে না পড়ে কেউ আজে বাজে কমেন্ট করবেন না। আজকের আর্টিকেলটি এ পর্যন্তই। সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন নিরাপদে থাকুন। আজকের আর্টিকেলটি এখানেই শেষ করছি আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।

6 thoughts on "ব্লগিং করে অনলাইন থেকে ইনকাম করবেন যেভাবে (নতুনদের জন্য)"

  1. Blogger+Rakib Subscriber says:
    সুন্দর করে বোঝানোর জন্য ধন্যবাদ।
    1. Md Mahamudul Hasan Contributor Post Creator says:
      Thanks
  2. Jahid hossen Contributor says:
    আমার Blogging website Rank করে না তো, এর জন্য কি করা যায়….
    1. Md Mahamudul Hasan Contributor Post Creator says:
      Comment kore bujano possible na
    1. Md Mahamudul Hasan Contributor Post Creator says:
      Thanks

Leave a Reply