নিজের লক্ষ্যে পৌছান মাত্র ৫ টা ধাপে [ ইন্টারন্যাশনাল বেস্ট সেলার বুক থেকে ]

হরহামেশাই আমরা নিজের লক্ষ্য নিয়ে কথা বলি। কিন্তু, লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে গিয়ে বাধা আসে, ঠিক মতো টাইম ম্যানেজমেন্ট করতে না পারা, ধৈর্যে না কোলানো, লেগে থাকার মানষিকতা না থাকা ইত্যাদি ইত্যাদি।
তবে, এসব সমস্যার মুলে আছে আরেকটা বড় সমস্যা আর সেটা হচ্ছে আমরা ঠিক মতো লক্ষ্য ঠিক করতে পারি না। আমি বড় একজন ব্যবসায়ী হবো, বড় একজন লেখক হবো, বড় একজন ডাক্তার হবো কিংবা বড়ো একজন বিজ্ঞানী হবো এধরণের লক্ষ্য আমরা ঠিক করি।
কিন্তু, লক্ষ্য যদি একবারেই এতো বড়ো সেট করে ফেলি তবে কখনোই সেটা অর্জন সম্ভব না। কিন্তু, অল্প কিছু স্টেপ ফলো করেই নিজের লক্ষ্যকে সহজ করে ফেলা যায়। তাহলে, সেই স্টেপ গুলো দেখতে পড়ে ফেলুন এখনই এই লেখাটি।।

Image Source: inc.com

লক্ষ্য কী ??

ওকে, অবাক করার ব্যাপার হলেও সত্য যে আমরা এখনো লক্ষ্য ঠিক করতে পারি না কারন আমরা জানিই না লক্ষ্য কী।
লক্ষ্য শুধু কিছু হতে হবে এটাই না বরং আজকে বিকেলের মধ্যে আমি পদার্থ বিজ্ঞানের ৭ম অধ্যায় শেষ করবো এটাও একটা লক্ষ্য। এবং এই লক্ষ্যটাই হচ্ছে সঠিক। কারন এরকম ছোট ছোট লক্ষ্যই আপনার বড় লক্ষ্যে পৌছে দেবে।
তাই, এখনও যদি এটা ভাবেন যে শুধু বড় কিছু হবো ২০ বছর পরে এটা লক্ষ্য তাহলে ভুল হবে কারন লক্ষ্য যেকোনো কিছুই হতে পারে তবে সেটার জন্য পরিশ্রম করতে হবে।
এবারে, চলুন দেখে নেই লক্ষ্য কিভাবে সেট করে এগোতে হয়। তবে, এখানে অবশ্যই ছোট ছোট লক্ষ্য বা গোল এর কথা বলা হচ্ছে যেগুলো ৩-৬ দিনের মধ্যেই অর্জন করা যাবে।

স্টেপ – ১ । নির্ভুল ভাবে লক্ষ্য বাছাই করুন।

আপনার লক্ষ্য হতে হবে নির্ভুল এবং যথাযথ। লক্ষ্য ঠিক করার আগে নিচের বৈশিষ্ঠ্য গুলো দেখে নিন।

  1. লক্ষ্য হতে হবে অর্জনযোগ্য। ১ ঘন্টার মধ্যে আমি ২ টা অধ্যায় শেষ করব এমন হলে হবে না। কারন, যেটা ঠিক করবেন সেটা অবশ্যই অর্জনযোগ্য হতে হবে। যদি না আপনি সুপার ম্যান হন।
  2. লক্ষ্য ঠিক করার আগে প্রস্তুতি নিতে হবে যেন ঐ লক্ষ্যটা অর্জনের সবকিছু হাতের কাছে থাকে।
  3. এমন লক্ষ্য ঠিক করবেন সেটা যেন ৬ দিনের আগে অর্জন সম্ভব হয়। তবে ভালো হয় যদি এমন লক্ষ্য ঠিক করেন যেটা ঐ দিনেই শেষ করতে পারবেন। এমন লক্ষ্যের সফলতার হার খুব বেশি।

ওকে, আপনার লক্ষ্য গুলো যদি এই নীতিগুলো মেনে চলে তবে সেটা সঠিক হয়েছে। এখন সময় নেক্সট স্টেপ এর।

স্টেপ – ২ । কাগজে লিখে ফেলুন আপনার লক্ষ্য।

এখানে নোটিশ করুন আমি কাগজে বলেছি তাই অবশ্যই কাগজে লিখবেন। প্রথমে একটা পেজে উপরে লিখবেন আপনার লক্ষ্যের নাম। এবং এই লক্ষ্য শেষ করতে হলে কি কি করতে হবে সেটার একটা লিস্ট করে নিন।
যেমন “লক্ষ্য যদি হয় বীজগণিত এর একটা অধ্যায় শেষ করা, তবে ওই অধ্যায় শেষ করতে কি কি করতে হবে সেটাও লিখে ফেলুন লিস্ট আকারে।
যেমন
১। প্রথমে টেক্সট বুক রিডিং পড়তে হবে।
২। উদাহরণ গুলো না দেখে করার চেষ্টা করতে হবে।
৩। অনুশীলনী করতে হবে।
এরকম ছোট ছোট করে ভাগ করে লিস্ট করুন।

স্টেপ – ৩ । আপনার লক্ষ্যের অবশ্যই একটা স্টার্ট টাইম এবং ডেডলাইন থাকতে হবে।

লক্ষ্যের যদি কোনো সময়সীমা না থাকে তবে সেটা অর্জন করা যায় না। যেমন আপনি যদি এরকম ডেডলাইন করেন যে, “বাংলা বই এর ৫টা গল্প আমি আজকে রাত ৭ঃ০০ – ১১ঃ০০ এর মধ্যে শেষ করব” তাহলে সেটা অর্জন সহজ হয়ে যায়। এবং অবশ্যই ঐ কাগজে এই স্টার্ট টাইম এবং ডেড লাইন লিখে রাখবেন।

স্টেপ – ৪ । একটা বিস্তারিত প্ল্যান তৈরি করুন।

এখন একটা প্ল্যান তৈরি করুন। যেমন এই লক্ষ্য অর্জনে কত টুকু সময় ব্যয় করতে হবে। ঐ লিস্টের প্রতিটা আইটেম এর জন্য সময় বরাদ্দ করুন। কোন কোন বই থেকে পড়বেন সেটাও ঠিক করুন।
পড়ার সময় ডিস্ট্রাকশন মানে মোবাইল, কম্পিউটার, বা এমন কিছু যা আপনার মনোযোগ নষ্ট করে এমন কিছু ঘরের বাইরে রাখুন এবং নিজেকে ডিস্ট্রাকশন থেকে মুক্ত করে নিতে কি কি করতে হবে সেটার প্ল্যান করুন। এবং হ্যা, এখন পর্যন্ত যা যা বলা হয়েছে সবকিছু লিখবেন।

স্টেপ-৫। এখনই কিছু না কিছু করুন।

এখনই কিছু করুন। দেড়ি করবেন না। আপনি যদি এখন লক্ষ্য সেট করেন যে রাতে এই লক্ষ্যের স্টার্ট টাইম শুরু হবে তাই রাতেই শুরু করব তাহলে মস্ত বড় ভুল হবে।
সবকিছু প্ল্যান বানানো শেষ হলে এখনই একটা কাজ করে ফেলুন। কিছু না হোক অন্তত লক্ষ্যের ১% হলেও এখন শেষ করুন। নাহলে পরে বিপদে পড়বেন।


ওকে, ৫ টা স্টেপ তো বলে দিলাম এখন সঠিক ভাবে কাজে লাগানোর দায়িত্ব আপনার।
এই স্টেপ গুলো আমি শিখেছি “Brian Tracy এর লেখা Eat That Frog বই থেকে।” এই বইটা আন্তর্জাতিক বেস্ট সেলার। যদি মনে হয় আপনিও এগুলো শিখবেন তবে বইটা ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
তবে, আমি ইনশাল্লাহ এখন থেকে এই বই এর প্রত্যেক চ্যাপ্টারে দেয়া টিপস গুলো এভাবে লিখে শেয়ার করব। এই লেখাটা ১ম অধ্যায় এর উপর।


** আমি নিজে এই স্টেপ ফলো করে গতকাল একটা খুব গুরত্তপুর্ন কাজ শেষ করেছি।** এই বইটার অথর আমি না তাই বিজ্ঞাপন বা প্রোমট করার কোনো মানে নেই। উপকার হবে ভেবেই শেয়ার করা এই লেখাটি।।


আজকের মতো এই লেখাটি এখানেই শেষ। আগামীতে ইনশাল্লাহ দেখা হবে এরকমই কিছু ইফেক্টিভ উপায় নিয়ে। সেই পর্যন্ত সুস্থ থাকুন, বই পড়ুন!! কোনো মতামত থাকলে জানিয়ে দিন কমেন্ট বক্সে।


যদি এই লেখাটি ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করে জানার সুযোগ করে দিন আপনার বন্ধুদেরও।


পড়তে আপনাকে হবেই, হয় বই নাহয় পিছিয়ে

আরো ভালো আর্টিকেল পেতে চলে যান এই লিংক এ www.thebanglatech.xyz

Leave a Reply