আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ । কেমন আছেন ? আশা করি ভালোই আছেন ।
এটা ট্রিকবিডিতে আমার প্রথম পোস্ট । আমি রিফাত । আজ আমি আপনাদের সাথে সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট অফিসার অর্থাৎ কমিশন্ড অফিসার হওয়ার জন্য যা যা আপনার জানা প্রয়োজন সে সব কিছু বিস্তারিত শেয়ার করবো ।
খুব স্পষ্টভাবে বোঝানোর চেষ্টা করবো মনোযোগ দিয়ে শেষ পর্যন্ত পড়বেন ।
আসলে লেফটেন্যান্ট অফিসার হলো কমিশন প্রাপ্ত প্রথম পদবীর/র্যাঙ্কের অফিসার । এটা অবশ্যই মাথায় রাখবেন । এর মানে আপনি কমিশন প্রাপ্ত হলে অনেক গুলো পদের মধ্যে লেফটেন্যান্ট পদে প্রথম নিয়োগ পাবেন । এটিই(লেফটেন্যান্ট) কমিশন্ড অফিসারের প্রথম পদবী ।
কমিশন প্রাপ্ত অফিসার হতে হলে যা যা লাগবে সব কিছুই পর্যায় ক্রমে এই পোস্টেই বিস্তারিত পেয়ে যাবেন । আগেই জানিয়ে রাখছি সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দেওয়ার সময় তাঁরা যেসব Requirements চায় তা একই পদের জন্য সবসময় একরকম থাকে না ।
এটি পরিবর্তন , পরিবর্ধন , সংশোধন করার ক্ষমতা কতৃপক্ষ রাখে । তাই পরিবর্তন দেখে ঘাবড়ে যাবেন না ।
কমিশন পাওয়ার বিষয়টিই অন্তত জটিল । তবে আপনি যদি সব তথ্য সঠিকভাবে জানেন , বোঝেন , এ ব্যাপারে আপনার ক্লিয়ারিটি থাকে এবং বিভ্রান্ত না হন তবে এটি কঠিন মনে হবার কথা নয় ।
আমি সবসময়ই চেষ্টা করবো আপডেটেড এবং সঠিকটাই আপনাদের সামনে তুলে ধরার । তবে চেষ্টা এবং পরিশ্রমটা আপনাকেই করতে হবে ।
একজন আর্মি অফিসার হবার জন্য ইন্টার সার্ভিসেস সিলেকশন বোর্ডের (ISSB) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে (BMA) প্রায় ৩ বছর ট্রেনিং গ্রহণের পর কমিশন লাভের মাধ্যমে আপনার পক্ষে সম্মানজনক লেফটেন্যান্ট র্যাঙ্ক অর্জন করা সম্ভব।
এ ব্যাপারে ভয় পাওয়ার কারণ নেই । এর জন্য আপনার ইচ্ছা শক্তিই আর যোগ্যতাই এখানে আসল বিষয় ।
তাহলে এখন আমরা জানবো কি কি যোগ্যতা কতৃপক্ষ সাধারণত আবশ্যক করে থাকে ।
• অফিসার হবার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নির্ধারিত যোগ্যতা হলো:
✓ প্রথম শর্ত হচ্ছে প্রার্থীকে জন্মসূত্রে অবশ্যই বাংলাদেশি ও অবিবাহিত হতে হবে।
✓ শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ ন্যূনতম এইচএসসি পাশ হতে হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের যে কোন একটিতে ন্যূনতম জিপিএ ৪.৫ এবং আরেকটিতে জিপিএ ৫ পাওয়া লাগবে। আগামীতে সিজিপিএ সিস্টেম চালু হলে তখন কি প্রয়োজন হবে তা জানিয়ে দেবো ।
[ উল্লেখ্য যে, ২০২০ সালের ৮৫তম লং কোর্সের নিয়োগে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের আবেদন করার সুযোগ থাকছে না। ]
** ইংরেজি মিডিয়ামে পড়াশোনা করে থাকলে ও লেভেলে ৬টি বিষয়ের মধ্যে ৩টিতে ন্যূনতম ‘এ’ গ্রেড এবং ৩টিতে ন্যূনতম ‘বি’ গ্রেড পাওয়া আবশ্যক। এ লেভেলে ২টি বিষয়ের মধ্যে ২টিতেই ন্যূনতম ‘বি’ গ্রেড থাকতে হবে।
✓ বয়সঃ বিএমএ লং কোর্সের জন্য ০১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে ১৭ – ২১ বছর। সশস্ত্র বাহিনীতে কর্মরত প্রার্থীদের ক্ষেত্রে ১৮ – ২৩ বছর।
✓ উচ্চতাঃ ছেলেদের জন্য ন্যূনতম উচ্চতা ১.৬৩ মিটার বা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি। মেয়েদের জন্য উচ্চতা ১.৫৭ মিটার বা ৫ ফুট ২ ইঞ্চি।
[ উচ্চতা নিয়ে যারা দুশ্চিন্তায় আছেন , তাদেরকে আর দুশ্চিন্তা করতে হবে না । আমি ট্রিকবিডিতে উচ্চতা বাড়ানোর প্রাকৃতিক ও কার্যকারী উপায় আপনাদের সাথে শেয়ার করবো । ]
✓ ওজনঃ ছেলেদের ক্ষেত্রে ৫৪ কেজি বা ১২০ পাউন্ড। মেয়েদের ক্ষেত্রে এটি ৪৭ কেজি বা ১০৪ পাউন্ড।
✓ বুকঃ ছেলেদের বুক স্বাভাবিক অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি ও প্রসারিত অবস্থায় ৩২ ইঞ্চি হতে হবে। আর মেয়েদের ক্ষেত্রে তা ২৮ ইঞ্চি ও প্রসারিত অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি।
[ এটি নিয়েও আপনার দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই আশা করি ]
এছাড়াও আমরা আগেও জেনেছি কমিশন প্রাপ্ত হতে গেলে ইন্টার সার্ভিস সিলেকশ বোর্ডে বা ISSB তে আপনাকে উত্তীর্ণ হতে হবে । এখন আসুন তার জন্য কি কি প্রয়োজন হবে সেটি দেখে নেওয়া যাক ।
✓ উপস্থিত বুদ্ধি;
✓ আত্মবিশ্বাস;
✓ ইংরেজিতে দক্ষতা;
✓ নেতৃত্বগুণ।
[ উল্লেখ্য যে, সেনাবাহিনীতে শারীরিক দক্ষতা, সুস্থতা ও সামর্থ্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আপনার শারীরিক সামর্থ্য ভালো না হলে প্রশিক্ষণের সময় টিকে থাকা কঠিন হয়ে যাবে। ]
• ISSB এর জন্য প্রস্তুতি নিতে আপনার যেগুলো জানা প্রয়োজন হবে সেগুলো হচ্ছে –
• প্রিলিমিনারী লিখিত পরীক্ষা;
• লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে ১৫-২০
• মিনিটের একটি ছোট মৌখিক পরীক্ষা;
• মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে আইএসএসবির (ISSB) চূড়ান্ত পরীক্ষা;
আইএসএসবির (ISSB) চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারীতে প্রায় ৩ বছরের প্রশিক্ষণ।
** কষ্টসাধ্য ও দুঃসহ প্রশিক্ষণ সফলভাবে শেষ করতে পারলে ৩ বছরের মাথায় আপনি কমিশনপ্রাপ্ত হয়ে একজন লেফটেন্যান্ট হবার গৌরব অর্জন করতে পারবেন। তবে দুশ্চিন্তার কিছু নেই আমি তো আছি !! আপনার পাশে ।
ISSB নিয়ে সম্পূর্ণ বিস্তারিত এখন এই মুহূর্তে লেখা সম্ভব হচ্ছে না । তবে ট্রিকবিটিতে আমি সেনাবাহিনীতে যোগদানের প্রস্তুতি মূলক পোস্ট এবং ISSB তে প্রস্তুতি মূলক সকল ধরনের পোস্ট দেব খুব শিঘ্রই ইনশাআল্লাহ !
যেতে যেতে আরো কিছু তথ্য দিয়ে যাই
• একজন আর্মি অফিসারের ক্যারিয়ার কেমন হতে পারে –
লেফটেন্যান্ট থেকে পরবর্তী পদবী ক্যাপ্টেন হবার জন্য ৩টি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। এক্ষেত্রে সময় লাগে প্রায় দুই থেকে আড়াই বছরের মতো।
ক্যাপ্টেন থেকে মেজর পদে উন্নীত হতে সময় লাগে প্রায় ৩ বছরের মতো। এরপরের পদোন্নতিগুলোর নির্দিষ্ট কোন সময়কাল নেই। সেগুলো যোগ্যতা ও অবস্থাসাপেক্ষ হয়। পদগুলো হলো –
১.লেফটেন্যান্ট কর্নেল
২.কর্নেল
৩.ব্রিগেডিয়ার জেনারেল
৪.মেজর জেনারেল
৬.জেনারেল
৭.ফিল্ড মার্শাল
[ উল্লেখ্য যে, ফিল্ড মার্শাল যেকোন সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ পদ হলেও আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত এ পদে কেউ নিয়োগ পাননি। ]
আগামী পোস্টে আরো বিস্তারিত ও আরো টপিকস নিয়ে কথা বলবো এবং আপনাদের কোনো প্রশ্ন থাকলে সব একসাথে একই পোস্টে সুন্দর করে তুলে ধরতে চেষ্টা করবো । এটি আমার প্রথম পোস্ট ছিল । কোনো ভুল ক্রুটি থাকলে ক্ষমা করে দিবেন । আর আপনার অনুপ্রেরণা পাইলে সামনে আরো মানসম্মত পোস্ট এবং কন্টেন্ট উপহার দিবো ।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ শেষ পর্যন্ত পড়ার জন্য । কেমন লেগেছে জানাবেন ।
ফেসবুকে আমি Rifatআমার ইমেইল
প্রথমে প্রাথমিক শারিরীক পরীক্ষা হয় সেটায় পাশ করলে হবে মৌখিক।এরপর হয় রিটেন।রিটেনে পাশ করলে ISSB তে ডাকবে।৪ দিন ব্যাপী issb পাশ করলে ১০ সপ্তাহ ভাটিয়ারীতে ট্রেনিং হবে।এরপর BMA তে ৩ বছর পড়াশুনা+ট্রেনিং এরপরই কমিশন পাওয়া সম্ভব
(
ধন্যবাদ