বেচাকেনা বা ব্রান্ড / প্রোডাক্ট
প্রমোশনের কথা শুনলেই অধিকাংশ
লোক চোখ কপালে তুলত। বেশি না
মাত্র তিন বছর আগে একটি সুপ্রতিষ্ঠিত
গ্রুপ অব কোম্পানীজ এর জি এম কে
ডিজিটাল মার্কেটিং এর প্রস্তাব
দেওয়ায় তিনি অবাক হয়ে প্রশ্ন
করেছিলেন, “এসবে কাজ হয়?”
কিন্তু এখন কি আর সেই দিন আছে, দিন
বদলাইছে না ? ম্যাশেবলের সাম্প্রতিক
গবেষনা মতে অনলাইনে যত সেল হয়
তার ৫০% এর উৎস সোশ্যাল মিডিয়া।
(১)
আপনি স্টার্ট-আপ, কেবল ব্যাবসা শুরু
করেছেন অথবা আপনি টুকুর টুকুর করে
আপনার ব্যাবসা চালিয়ে নিচ্ছেন
কিংবা ভাবছেন শুরু করবেন। আপনার
জন্য কম খরচে সবচেয়ে ভাল রেজাল্ট
পাওয়ার জন্য সেরা উপায় ডিজিটাল
মার্কেটিং।
কিন্তু ভাবছেন আমি তো এইগুলা কিছু
বুঝিনা বা আমার তো কোন বাজেটই
নাই আমি কিভাবে করব?
আমি বলি আগে শুরু করে দেন, হাতে যা
আছে তাই নিয়েই ঝাপিয়ে পড়ুন।
বাংলাদেশে সোশ্যাল মিডিয়া
বলতে এখনো ফেসবুকই শীর্ষে। তাই
শুরুটা ফেসবুক দিয়ে করাই ভালো।
ফেসবুকে প্রায় সবারই বিজনেস পেজ
আছে, যাদের নেই তারাও খুলে নিতে
পারেন সহজেই। কিন্তু ফেসবুক পেজ
ম্যানেজ করতে গিয়ে সবচেয়ে বেশী
বিপদে পড়তে হয় দুইটা জিনিস
নিয়েঃ
০১) কি টিউন দিব?
০২) টিউনে লাইক টিউমেন্ট শেয়ার
বাড়াবো কিভাবে?
দেখুন প্রথমেই একটা জিনিস খুব
ভালভাবে মেনে নিন, ফেসবুকে
বেশীরভাগ মানুষ আসে মূলত বিনোদন,
অবসর যাপন আর বাস্তব জীবন থেকে একটু
দূরে যাওয়ার জন্য। তাই আপনার ব্রান্ড /
প্রতিষ্ঠান কি করছে বা কি সেবা
দিচ্ছে তা নিয়ে তাদের
মাথাব্যাথার কোন কারন নেই, যতক্ষন
না পর্যন্ত সেটা তাদের প্রয়োজন হচ্ছে।
তাদেরকে আকৃষ্ট করে। যে সব টিউনে
তারা লাইক / টিউমেন্ট / শেয়ার করবে
নিজের আগ্রহে।
আসুন দেখে নেই এই ধরনের কিছু টিউন
আইডিয়াঃ
০১) আপনার পন্য অথবা ব্যাবসা সম্পর্কিত
বিভিন্ন ধরনের সমস্যা / চ্যালেঞ্জ /
সুযোগ আপনার ফ্যানদের সাথে শেয়ার
করুন এবং তাদের পরামর্শ চান।
*** আমরা কিন্তু উপদেশ দিতে খুব
ভালবাসি, এইটা মানব স্বভাব
(বাংগালির আরো বেশি।) তাই
আপনার টিউনে টিউমেন্ট আসবে
স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি।
০২) কনটেস্ট আয়োজন করুন।
*** কনটেস্ট কে না ভালবাসে? তবে
একটু ট্রিকি হোন। সবাই নগদ নারায়নে
বিশ্বাসী। যেমন, ১৫০০ টাকা দিয়ে
একটা মোবাইল একজনকে না দিয়ে ১০০
টাকা করে ১৫ জনকে ফ্লেক্সি করে
দিন উপহার হিসেবে। তাতে দুইটা
লাভ হবে ১) কারো মনে কোন সন্দেহ
থাকবে না। ২) অংশগ্রহন বেড়ে যাবে
বহুগুন।
০৩) পোল ভোটের আয়োজন করুন।
*** আমরা যখন অনলাইনে যাই তখন কেমন
যেন অলস হয়ে যাই। কিছু লিখে বলার
বদলে যদি একটা ক্লিক করে কাজ করে
ফেলতে পারি তাহলে কিন্তু সেইটা
বেশি ভালো। পোল ভোটের জন্য
ফেসবুকে অনেক গুলো এপ আছে। (যদি
খুজে না পান তাহলে আমাকে নক
দিয়েন।)
০৪) অবশ্যই পোল ভোটের রেজাল্ট
আপনার পেজের ফ্যানদের সাথে
শেয়ার করুন এবং তাদের মতামত /
প্রতিক্রিয়া জানতে চান
০৫) উৎসাহমূলক বানী, ছবি, ঘটনা শেয়ার
করুন।
*** আমরা মানুষ, প্রতিদিন নানা ঘটনায়
একটু একটু করে ভেঙ্গে পরি, একটু উৎসাহ,
একটু সাহস আমাদের আবার নতুন করে
উদ্দীপনা যোগায়। সাধারনত এই ধরনের
টিউন গুলো কেউ এড়িয়ে যায় না,
শেয়ার করে টাইমলাইনে রেখে
দিতে চায়, বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে
তাদের কেও উৎসাহ দিতে চায়। তাই
এই ধরনের টিউন ভাইরালিটি পায়
তুলনামূলকভাবে বেশি।
০৬) শুন্যস্থান পূরন করতে দিন।
রেখে ফ্যানদের বলুন ইচ্ছেমত যে কোন
শব্দ দিয়ে তা পূরন করতে। এই শুন্যস্থান
পূরনের কাজে আমরা সবাই কম বেশি
মজা পাই, তাই টিউমেন্ট ও আসে অনেক
বেশি।
০৭) বিশেষজ্ঞ্ব মতামত তুলে ধরুন।
*** আপনার পন্য বা সেবার
ব্যবহারকারীদের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন
বিষয় সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ্বদের মতামত
তুলে ধরুন আপনার পেজে। যেমন আপনার
পন্য যদি হয় ফ্যাশন সম্পর্কিত তাহলে
বিউটি টিপস, ত্বকের পরিচর্যা,
ঋতুকেন্দিক সাজ নিয়ে
বিশেষজ্ঞ্বদের মতামত তুলে ধরতে
পারেন।
০৮) তুলে ধরুন আপনার প্রতিষ্ঠানের
অদেখা দিক।
*** শুধুই পন্য বা সেবা বিক্রি না করে
আপনার ক্রেতাকে বানিয়ে ফেলুন
আপনার ব্যাবসায় পরিবারেরই একজন।
অফিসে ধুমিয়ে কাজ করেছেন বা
টীমমেটরা মিলে পার্টি দিচ্ছেন
কিংবা কোন পন্যের প্রডাকশনের ছবি
… এরকম ভিতরের বিষয়গুলো (যেগুলো
আপনার প্রাইভেসি নষ্ট করবে না)
শেয়ার করতে পারেন আপনার পেজে।
০৯) চ্যালেঞ্জ দিন, চ্যালেঞ্জ নিন।
*** আমরা প্রায় সবাই চ্যালেঞ্জ পছন্দ
করি। ভালবাসি উত্তেজনা, মেতে
উঠতে চাই প্রতিযোগিতায়। তাহলে
আপনাই বা এই সুযোগ হাতছাড়া করবেন
কেন? একের পর এক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিন
আপনার পেজে। আপনার টার্গেট
অডিয়েন্স বুঝে ধাধা, অংক, ভিডিও /
গ্রাফিক্যাল ট্রিক ইত্যাদির সমাধান
খুজতে আমন্ত্রন জানাতে পারেন
আপনার পেজে।
2 thoughts on "ফেসবুক পেজকে জনপ্রিয় করার উপায়"