সবাই চায় তার ফেসবুক একাউন্টের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। এজন্য বড় বড় অদ্ভুত সব পাসওয়ার্ড দেয় কেউ কেউ। কিন্তু যতই কঠিন লগইন ডিটেইলস সেট করুন না কেন, প্রযুক্তিগতভাবেই আপনার ফেসবুকসহ ইমেইল এড্রেস ও অন্যান্য পাসওয়ার্ডও বেহাত হওয়ার
ঝুঁকি আছে । আর এই বিপদের হাত থেকে কিছুটা নিরাপদ রাখতে ফেসবুক, গুগল ও আরও কিছু অনলাইন সেবাদাতা কোম্পানি “ টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন ” সুবিধা চালু করেছে। এটি ব্যবহার করলে প্রতিবার নতুন ডিভাইস/ব্রাউজারে আপনার
কাঙ্ক্ষিত সেবায় (উদাহরণস্বরূপ ফেসবুকে) সাইন ইন করার সময় ইউজারনেম-পাসওয়ার্ড ইনপুট করার পরেও সেখানে আরেকটি পিন কোড দিতে হবে। এই কোডটি মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে আসে। এগুলোকে সিক্যুরিটি কোডও বলা হয়, যা প্রতিবারই সার্ভার থেকে পাঠানো হয়।

টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন একটিভ থাকা যেকোন একাউন্ট হ্যাক করতে চাইলে কমপক্ষে তিনটি বিষয় দখলে থাকতে হবে। সেগুলো হচ্ছে ইউজারনেম, পাসওয়ার্ড এবং যে মোবাইল নাম্বারে সেবাটি রেজিস্ট্রেশন করা আছে/ সিক্যুরিটি কোড। ইউজারনেম-পাসওয়ার্ড নিয়ে নিলেও একই সময়ে আপনার মোবাইল ফোনটি হ্যাকারের হাতে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। তাই ফেসবুকে সাইন-ইন করার সময় সিস্টেম যখন মোবাইলে এসএমএসে আসা পিন চাইবে তখন সেটি তাদের পক্ষে দেয়া সম্ভব হবেনা। আর এই যাত্রা আপনার একাউন্টটিও হ্যাকিংয়ের হাত থেকে রক্ষা পাবে।

লগিন এপ্রুভাল চালু করতে চাইলে প্রথমে আপনার ফেসবুকে সাইনইন করুন।

এরপর ফেসবুক Account Settings > Security সেকশনে থাকা Login Approvals এর Require me to enter a security code each time an unrecognized computer or device tries to access my account এ চেক মার্ক করুন (টিক দিন)।

এবার Next ক্লিক করে মোবাইলে SMS এ প্রাপ্ত কোড লিখে Next চাপুন এবং Save বাটনে ক্লিক করুন।

[আপনার ফেসবুক একাউন্টে আগে থেকে যদি কোন মোবাইল নাম্বার যুক্ত করা না থাকে তাহলে লগইন এপ্রুভাল চালু করতে চাইলে তখন নাম্বার ইনপুট দিতে হবে]

ফিচারটি সফলভাবে চালু হলে এরপর থেকে নতুন কোন ব্রাউজারে লগইন করতে গেলে সিক্যুরিটি কোড চাইবে এবং সেটি এন্টার করার পর ব্রাউজারটি “সেভ” করার অপশন আসবে। অর্থাৎ, আপনার নিজের পিসি বা মোবাইল হলে এর ব্রাউজার ফেসবুক সার্ভারে “সেভ” করে নিতে পারবেন। এতে প্রতিবার লগইন করার সময় এসএমএস কোড দিতে হবেনা। শুধু ইউজারনেম (বা ইমেইল)- পাসওয়ার্ড দিলেই চলবে।

কিন্তু… টু স্টেপ ভেরিফিকেশন (আরেক নাম ‘লগইন এপ্রুভাল) চালু থাকলে এর কিছু ঝুঁকিও আছে। কোন কোন সময় আপনি নিজেই একাউন্টের বাইরে লকড হয়ে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে নিজের একাউন্টে এক্সেস পাবেন না। ব্যাপারটি বেশ বিব্রতকর; কোন কোন ক্ষেত্রে বিপজ্জনকও বটে!

কখনো কখনো ফেসবুক সার্ভার থেকে মোবাইলে সিক্যুরিটি কোডের SMS আসতে দেরি করে। এমনকি কয়েক দিনও লেগে যায়। এসব ক্ষেত্রে একাউন্টে লগইন করাই সম্ভব হয়না। তখন কী করবেন?

‘ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না…!’

এ ধরণের বিরক্তিকর পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে সবসময় কমপক্ষে একটি বিকল্প ব্যবস্থা রাখুন। আপনার পিসির একাধিক ব্রাউজার এবং আপনার
মোবাইলের ব্রাউজার ফেসবুক সার্ভারে আগে থেকেই “সেভ” করে রাখুন। হঠাত পিসি নষ্ট হয়ে গেলে কিংবা অপারেটিং সিস্টেম সেটআপ দেয়ার পর নতুন ব্রাউজার থেকে লগইন করার সময় এসএমএস পিন আসতে দেরি হলে এটা কাজে দেবে। যেহেতু আপনার মোবাইল ফোনের ব্রাউজার
আগে থেকেই এপ্রুভ করা আছে, তাই এটা ব্যবহার করতে আপনার কোন পিন লাগবেনা। আর এখান থেকেই আপনি কম্পিউটারের নতুন ব্রাউজারকেও
ভেরিফাই করতে পারবেন। SMS কোড না আসলেও কোন ব্যাপার না।

এজন্য প্রথমেই পিসির নতুন ব্রাউজারে ফেসবুক ইউজারনেম-পাসওয়ার্ড এন্টার করুন। এখন সিক্যুরিটি কোড চাইবে। মেসেজ আসতে দেরি হলে সরাসরি (আগে থেকে রেজিস্টার্ড) মোবাইল ব্রাউজার থেকেই ফেসবুক হোমপেজ ভিজিট করুন। সেখানে “আনঅথরাইজড লগইন এটেম্পট” সঙ্ক্রান্ত একটি নোটিফিকেশন আসবে। নোটিফিকেশনটি সিলেক্ট করে সেখানে ব্রাউজার ও ওএস ভার্সন মিলিয়ে নিয়ে লগইন সেশনটি এপ্রুভ করে দিন। নতুন ব্রাউজারটি সেভ করে নিতেও ভুলবেন না।

এবার পিসিতে গিয়ে ফেসবুকের পেজটি রিফ্রেশ করুন। দেখবেন আপনি সরাসরি হোমপেজে চলে এসেছেন!

এছাড়া এন্ড্রয়েড স্মার্টফোন বা আইফোন থাকলে কোড জেনারেটর এপ দিয়ে অনলাইনে পিন কোড তৈরি করতে পারেন । অথবা একাউন্ট সেটিংসের লগইন এপ্রুভাল অপশনে গিয়ে ১০টি কোড আগেই জেনে নিয়ে পরে সেগুলো ব্যবহার করা যাবে।

আপনার প্রশ্ন বা মতামত কমেন্টের মাধ্যমে শেয়ার করার আমন্ত্রণ রইল… ধন্যবাদ।

Leave a Reply