আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই আশাকরি সবাই ভাল আছেন, আপনাদের দোয়ায় আমিও ভালো আছি,

আজকে আবারও নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম আপনাদের মাঝে আমি, আসিফ। 

আজকের পোস্ট, নতুন নিয়মে ঐঘরে বসেই অনলাইনে জমির খাজনা / ভূমি উন্নয়ন কর দেওয়ার নিয়ম, জমির খাজনা কিভাবে দিতে হয় অনলাইনে, জমির খাজনা পরিশোধের নিয়ম।

এখন থেকে ঘরে বসেই, কোনো দালালের সাহায্য ছাড়াই, আপনি সরাসরি গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ করতে পারবেন।

আপনি কি জানেন, অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের পুরো প্রক্রিয়াটি কতটা সহজ? যদি না জানেন, তাহলে একটু ঠান্ডা মাথায় এই ব্লগটি ও ভিডিওটা দেখলে সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।

আপনার সময় এবং পরিশ্রম বাঁচাতে, এবং দালালদের হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে, অনলাইনে জমির খাজনা দেওয়ার এই সহজ প্রক্রিয়াটি আজই শুরু করুন।

জমির খাজনা কি?

জমির খাজনা হলো সরকারকে প্রদত্ত একটি কর বা ফি, যা ভূমির মালিক বা ব্যবহারকারীকে নির্দিষ্ট সময় পরপর (সাধারণত বছরে একবার) পরিশোধ করতে হয় তার জমির মালিকানা ও ব্যবহারের স্বীকৃতিস্বরূপ।

সংক্ষিপ্তভাবে বললে, জমির খাজনা = জমির ওপর সরকারের নির্ধারিত বার্ষিক কর।

✅ অনলাইনে জমির খাজনা দিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র/তথ্যঃ

নিচের এই তথ্যগুলো আপনারা জমির দলিলে বা নাম জারিতে পাবেন।

  1. দাখিলা/খতিয়ান নম্বর (CS/SA/RS/BS)
    – জমির মালিকানার প্রমাণস্বরূপ এই তথ্য ব্যবহার হয়।

  2. জে এল (JL) নম্বর
    – মৌজা ভিত্তিক জমির একটি শনাক্তকারী নম্বর।

  3. মৌজার নাম
    – যেই এলাকাতে জমিটি অবস্থিত, তার নাম।

  4. উপজেলা ও জেলা
    – জমির অবস্থান অনুযায়ী ঠিকানা।

  5. দাগ নম্বর (Dag Number)
    – ভূমি রেকর্ড অনুযায়ী জমির নির্দিষ্ট অংশের নম্বর।

  6. হোল্ডিং নম্বর (যদি থাকে)
    – অনেক এলাকায় হোল্ডিং নম্বরও চাওয়া হয়।

  7. জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) নম্বর
    – মালিকানা যাচাইয়ের জন্য।

  8. মোবাইল নম্বর
    – OTP ভেরিফিকেশন ও খাজনা রসিদ পেতে।

  9. ই-মেইল ঠিকানা (ঐচ্ছিক)
    – রসিদ কপি ও তথ্য পাওয়ার জন্য।

  10. জমির পরিমাণ (শতক/একর)
    – খাজনা নির্ধারণের জন্য প্রয়োজন।

চলুন তাহলে এবার দেখা যাক।

কিভাবে নতুন নিয়মে ঘরে বসেই অনলাইনে জমির খাজনা দিবেন

অনেকে এটা আবার বলে, ভাই কিভাবে অনলাইনে খতিয়ান অ্যাড করব, অনেকে আবার বলে হোল্ডিং তালিকায় কিভাবে এড করব, অনেকে আবার বলে কিভাবে আমার জমির দাখিলা কাটবো, সবকিছু নিয়েই চলুন শুরু করি।

সরকারি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন

প্রথমে যান এই ওয়েবসাইটেঃ

https://land.gov.bd/

ওয়েব সাইটে যাওয়ার পরে আপনারা নিচের মত দেখতে পারবেন, আমি প্রতিটা জিনিসই আপনাদের স্ক্রিনশট দিয়ে দেখানোর চেষ্টা করেছি, আশা করি আপনারা বুঝতে পারবেন, তারপরও যদি বুঝতে সমস্যা হয় আমি ভিডিও আকারে দিয়ে দিয়েছি সব থেকে নিছি, এছাড়াও যদি সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই আপনারা কমেন্ট করবেন।

এখন আপনার নিচের দেখানো অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন বাটনে ক্লিক করুন।

তারপর, নাগরিক/ সংস্থা বাটনে ক্লিক করুন

তারপর আপনাদের এখানে একটা এখন একাউন্ট তৈরি করতে হবে, নিচের দেখানো অনুযায়ী একাউন্ট তৈরি করুন।

তারপর একাউন্ট তৈরী করা হলে, Nid দিয়ে Profile verification করুন। যদি Logout হয়ে যায়, তাহলে আবার Log In করুন।

তারপর নিচের মতো

তারপর নিচের মতো

তারপর নিচের মতো

এখন আপনার দলিলটা বের করে রাখুন,  নিচের দেখানো অনুযায়ী ক্লিক করুন

তারপর

নিচে আপনার দলিল অনুযায়ী সব তথ্য পূরণ করুন

তারপর, প্রথমে আপনাদের অনুমোদন থাকবে না, ১ সপ্তাহের মধ্যে দেখবেন,  নিচের মতো অনুমোদন দেখাচ্ছে, ওরও যদি অনুমোদন না হয়, আপনার নিকটস্থ ইউনিয়ন অফিসে কল দিয়ে বলবেন অনুমোদন করে দেওয়ার জন্য, অনলাইনে সার্চ দিলেই সকল ইউনিয়নের অফিসের মোবাইল নাম্বার পাওয়া যায়, যদি খুঁজে পেতে সমস্যা হয় কমেন্ট করবেন।

নিচের মতো যান

তারপর দেখবেন, সৃজিত থাকবে, অনুমোদন হলে, পরিশোধিত লেখা থাকবে।

নিচে দেখুন আপনার সব তথ্য দেখতে পাবেন, দেখতে পারবেন আপনার কত টাকা কর বকেয়া আছে, এবং কোন জমিতে কত টাকা কর দিতে হবে, ছাড়াও যদি কর্ম বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে চান তাহলে ক্যালকুলেশন বিস্তারিত অপশন এ ক্লিক করতে পারেন।

আমি অলরেডি পেমেন্ট করে দিয়েছি এজন্য আমাকে আবার অগ্রিম পেমেন্ট দেখাচ্ছে, আপনাদেরকে একটু শুধু পেমেন্ট দেখাবে।

 

তারপর বিকাশ বা অন্যান্য পেমেন্ট অপশন সিলেক্ট করে আপনারা পেমেন্ট করতে পারবেন।

তারপর ক্লিক করুন

তারপর বিবরণ অপশনে ক্লিক করুন

 

নিচের মতো এটা দেখতে পারবেন, ক্লিক করলে প্রিন্ট করতে পারবেন, অনেকে বলে ভাই আমার জমির দাখিলা টা কেটে দিন, তাদেরকে আপনি এভাবে জমির দাখিলা বের করে দিতে পারবেন।

 

আপনি চাইলে পেমেন্ট অপশন এ ক্লিক করে পেমেন্টের আরো বিস্তারিত দেখতে পারবেন।

বাংলাদেশে জমির খাজনা মওকুফ – ২০২৫ সালের সর্বশেষ নিয়ম

বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার কৃষকদের স্বার্থরক্ষায় ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফের নীতিমালা বাস্তবায়ন করেছে। ২০২৩ সালের ভূমি উন্নয়ন কর আইন অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষিজ জমির খাজনা সম্পূর্ণ মওকুফ করা হয়।

অর্থাৎঃ

  • ২৫ বিঘা বা তার কম কৃষিজ জমির মালিকদের কোনো খাজনা দিতে হয় না

  • ২৫ বিঘার বেশি হলে শুধুমাত্র অতিরিক্ত অংশের জন্য খাজনা দিতে হবে

  • এই নিয়ম সারা দেশে প্রযোজ্য, তবে পার্বত্য জেলা (খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, বান্দরবান) এর জন্য ভিন্ন নিয়ম প্রযোজ্য হতে পারে।

এটি একটি ‍সরকারি উদ্যোগ, যা কৃষকদের আর্থিক সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবস্থাপনাকে আরও সহজ ও আধুনিক করতে সহায়তা করছে।

 

যদি আপনাদের বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে নিচের ভিডিওটি দেখতে পারেন।

করি আপনারা আজকের পোস্টে, কিভাবে ঘরে বসেই আপনারা জমির খাজনা দিবেন তা বুঝতে পেরেছেন, এরপরও যদি আপনাদের বুঝতে সমস্যা হয় তাহলে কমেন্ট করতে ভুলবেন না।

সৌজন্য:-
MrBlogit.Com

সবাইকে ধন্যবাদ, আপনার একটি সুন্দর মন্তব্য পরবর্তী পোস্ট লিখতে অনুপ্রেরণা যোগায়। আজকের মতো এখানেই বিদায় নিলাম, হাজির হবো আরও নিত্য নতুন টিপস নিয়ে আমি আসিফ। আল্লাহ হাফেজ, আসসালামু আলাইকুম?











14 thoughts on "নতুন নিয়মে, ঘরে বসেই অনলাইনে জমির খাজনা / ভূমি উন্নয়ন কর দেওয়ার নিয়ম"

  1. Avatar photo Md abir Contributor says:
    ধন্যবাদ, এতো ভালো ভাবে বোঝানোর জন্য! 🥰
    1. Avatar photo Md Asif Khan Author Post Creator says:
      আসসালামু আলাইকুম? প্রিয় মোঃ আবির ভাই, স্বাগতম, এবং পাশে থাকার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ🫡
    2. Avatar photo Md abir Contributor says:
      জমির খাজনা কত টাকা শতক?
    3. Avatar photo Md Asif Khan Author Post Creator says:
      কৃষি জমিঃ
      ২৫ বিঘা (৮.২৫ একর) পর্যন্ত: খাজনা মওকুফ।​
      ২৫ বিঘার বেশি থেকে ১০ একর পর্যন্তঃ প্রতি শতকে ৫০ পয়সা।​
      ১০ একরের বেশিঃ প্রতি শতকে ১ টাকা।​

      🟠 চা, রাবার, ফল বা ফুলের বাগানঃ
      প্রতি শতকে ১ টাকা ১০ পয়সা।​

      🏠 পল্লী এলাকার আবাসিক জমিঃ
      পাকা ভিটির বাড়ির জন্য প্রতি শতকে ৫ টাকা।​

      🏙️ শহর ও পৌর এলাকার জমিঃ
      ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ মহানগরঃ
      আবাসিকঃ প্রতি শতকে ২২ টাকা।
      বাণিজ্যিকঃ প্রতি শতকে ১২৫ টাকা।​
      জেলা সদরঃ
      আবাসিকঃ প্রতি শতকে ৭ টাকা।
      বাণিজ্যিকঃ প্রতি শতকে ২২ টাকা।​
      অন্যান্য পৌর এলাকাঃ
      আবাসিকঃ প্রতি শতকে ৬ টাকা।
      বাণিজ্যিকঃ প্রতি শতকে ১৭ টাকা।​
      পৌরসভা ঘোষিত নয় এমন এলাকাঃ
      আবাসিক (পাকা ভিটি): প্রতি শতকে ৫ টাকা।
      বাণিজ্যিক: প্রতি শতকে ১৫ টাকা।​

      বিঃদ্রঃ আরও নিখুঁত তথ্য পেতে নিকটস্থ ভূমি উন্নয়ন অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন, ধন্যবাদ

  2. Avatar photo Rohan Contributor says:
    আমার মতে শেষে একটা বিশেষ দ্রষ্টব্য দেয়া উচিৎ – সরকার যতই চেষ্টা করুক, সরকারি কাজ সহজে ঘরে বসে কখনই হয়না।
    1. Avatar photo Md Asif Khan Author Post Creator says:
      আসসালামু আলাইকুম? প্রিয় ভাই, আমি এবার নিজেই করেছি, এজন্য আমার অভিজ্ঞতা থেকে পোস্ট শেয়ার করেছি!
    2. kmrashed Contributor says:
      আমি এই প্রজেক্ট কাজ করি , ১০০% ঘরে বসে কাজ করতে পারবেন।
    3. Avatar photo Md Asif Khan Author Post Creator says:
      ধন্যবাদ
  3. Avatar photo MD Shihab Rahman Contributor says:
    Vai সংযুক্তি তে খতিয়ান ও দাখিলা আপলোড করতে বলছে ঐইটা কীভাবে পাবো?
    1. Avatar photo Md Asif Khan Author Post Creator says:
      আপনার দলিলের ছবি তুলে ওখানে আপলোড করে দেন! এছাড়াও ভিডিও দেওলা বুঝতে পারবেন!
  4. Avatar photo Ashraful Author says:
    গুরুত্বপূর্ন পোস্ট
    1. Avatar photo Md Asif Khan Author Post Creator says:
      #Ashraful কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ🥰
  5. Avatar photo mdmamunrahman Contributor says:
    ধন্যবাদ ভাই

    দলিল সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো আপডেট করেন, হয়রানির শিকার ভাই

    1. Avatar photo Md Asif Khan Author Post Creator says:
      আপনাকে স্বাগতম🥰

Leave a Reply