নতুনদের জন্য কম্পিউটার শিক্ষাঃ
কম্পিউটার হলো বিজ্ঞানের বিষ্ময়কর একটি আবিস্কার। টেকনোলোজির এই যুগে কম্পিউটার নাম শুনেনি এমন লোক খোঁজে পাওয়া যাবে না। প্রায় সব শ্রেণী-পেশার মানুষই কম্পিউটারের সাথে পরিচিত। কিন্তু অনেক মানুষ আছে যারা কম্পিউটারের ব্যবহারই জানে না। তাদের জন্যই এই আর্টিকেলটি তৈরি করা হয়েছে।

আপনি যদি কম্পিউটার শিখতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তবে আপনার জন্য আর্টিকেলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি বেশ কয়েকটি আর্টিকেলের মাধ্যমে ”কম্পিউটার শিক্ষা’’ সিরিজটি শেষ করবো। আজকের আর্টিকেলটিই কম্পিউটার শিক্ষার প্রথম পর্ব। যাইহোক, চলুন কম্পিউটারের আদ্যোপান্ত জেনে নেওয়া যাক।

প্রযুক্তির এই যুগে বাংলাদেশের মানুষ তুলনামূলক ভাবে কম্পিউটার শিক্ষায় অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে। এর কারণ হলো দরিদ্রতা ও আর্থিক অসচ্চলতা। তাছাড়া, সমাজে কম্পিউটার ব্যবহার নিয়ে একটি ভ্রান্ত ধারণার ছাড়াছড়ি রয়েছে, অনেকেই মনে করে কম্পিউটার মানেই গান শোনা, মুভি দেখা, গেম খেলা ইত্যাদি।

কিন্তু কম্পিউটার যে শুধুমাত্র গান শোনা, মুভি দেখা বা গেম খেলার কাজেই সীমাবদ্ধ নয়, তা অনেকেই মানতে চায় না। কিন্তু এই সবকিছুর পরও বাংলাদেশের সচেতন জনগোষ্ঠী কম্পিউটার শিক্ষার প্রতি তুমুলভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। ফলে প্রযুক্তির উত্থানের পাশাপাশি একটি বিশাল তরুণ সমাজ কম্পিউটার ভিত্তিক ক্যারিয়ার গঠন করে ভ্রান্ত ধারণার মুখে কালি মেখে দিয়েছে।

কম্পিউটার শিক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে লক্ষ লক্ষ ফ্রিল্যান্সার। যারা প্রতি বছর মিলিয়ন মিলিয়ন বৈদেশিক মুদ্রা বাংলাদেশে নিয়ে আসছে। এটা সত্যিই আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।

যাইহোক, ’নতুনদের জন্য কম্পিউটার শিক্ষা গাইড’ কোর্সের এই পর্বে কম্পিউটার সম্পর্কে চলুন বেসিক কিছু বিষয় জেনে নেওয়া যাক।

কম্পিউটার কি?

Compute শব্দটি গ্রিক শব্দ। Compute শব্দ থেকেই Computer শব্দটির উৎপত্তি। Compute শব্দের অর্থ গণনা করা আর Computer শব্দের অর্থ গণনাকারী যন্ত্র। কম্পিউটার আবিস্কারের মূল উদ্দেশ্য ছিল সহজেই কোনকিছু গণনা করা। কিন্তু যুগের চাহিদা এবং বিভিন্ন মানুষের সাধনায় কম্পিউটার হয়ে উঠে বিষ্ময়কর এক যন্ত্র। বর্তমানে যার ব্যবহার সারাবিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে গেছে।

কম্পিউটার এমন একটি ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র যা মানুষের দেওয়া তথ্য ও নির্দেশনাবলীর ভিত্তিতে নির্ভুলভাবে কাজ করতে সক্ষম। কম্পিউটারের জনক বা আবিস্কারক হলো চার্লস ব্যাবেজ এবং ড. হাওয়ার্ড এইচ আইকেন। আবিস্কারের সময় কম্পিউটার যদিও এতো বেশি সমৃদ্ধশীল ছিল না, সময়ের আবর্তনে এবং বর্তমান টেকনোলোজি ব্যবহারে কম্পিউটার এখন অত্যাধুনিক আপডেট ও শক্তিশালী।

আপনি কম্পিউটার কেন শিখবেন?

কম্পিউটার শিক্ষা হলো সময়োপযোগী একটি স্কিল। এই স্কিলের উপর অনলাইন – অফলাইন উভয় জগতেই কাজের চাহিদা রয়েছে। শুধু চাহিদাই নয়, বাংলাদেশের যে কোনো চাকরির বেতনের থেকেও কম্পিউটার স্কিল ওয়ালা সফল ফ্রিল্যান্সাদের বেতন অনেক বেশী।

শুধু তাই নয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির এই যুগে নিজেকে কম্পিউটার শিক্ষায় প্রতিষ্ঠিত করতে না পারলে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে বেরিয়ে আসা অনেক কঠিন। আমরা সকলেই জানি, বাংলাদেশে কর্ম সংস্থানের অভাবে প্রায় অধিকাংশ মানুষ বেকারত্বের বোঝা বহন করে চলে। এই বোঝা থেকে বের হয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে কম্পিউটার শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই।

কম্পিউটার আপনি এজন্যই শিখবেন, কম্পিউটার হলো প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় আবিস্কার এবং এটি কর্ম সংস্থান তৈরি করতে সক্ষম। শুধু তাই নয়, কম্পিউটার এজন্যই শেখা প্রয়োজন, কোন কোম্পানি বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠোনে চাকরি নেবার ক্ষেত্রে অনেকের কম্পিউটারের বেসিক নলেজ না থাকার কারণে চাকরি হয় না। তাই নিজেকে দক্ষ হিসেবে গড়তে হলে কম্পিউটার স্বাক্ষর ছাড়া বিকল্প কোনো ওয়ে নেই।

সমাজের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকেই কম্পিউটার শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। বিশেষ করে শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদেরকে। তারা যদি কম্পিউটার শিক্ষার প্রতি জোর দেয়, তবে আগামীর বাংলাদেশ সম্পূর্ণ বেকারত্ব মুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হবে ইনশাআল্লাহ।

কম্পিউটার শিখে কি কি করা যায়?

কম্পিউটার মূলত দুইটি বিষয়ের সমন্বয়ে গঠিত। ১. হার্ডওয়্যার, ২. সফওয়্যার। হার্ডওয়্যারের মাধ্যমে কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ গঠিত এবং সফটওয়্যার হলো কম্পিউটার ফাংশন, অর্থাৎ, যেটা ফাংশন দ্বারা কাজ করা হয়। আপনাকে আমি প্রথমেই হার্ডওয়্যার নিয়ে গবেষণা করার কথা বলবো না, আবার সফটওয়্যার তৈরির কথা বলবো না। কারণ, এগুলো নতুনদের কাজ নয়।

আর্টিকেলটি যেহেতু “নতুনদের জন্য কম্পিউটার শিক্ষা” বিষয়ক, তাই আপনাকে আমি সফটওয়্যারের কাজ শেখার কথা বলছি। কম্পিউটার দিয়ে কি কি করা যায় এই প্রশ্নের পাল্টা প্রশ্নে আমি বলব, আচ্ছা বলুন তো “কম্পিউটার দিয়ে কি করা যায় না”!? অর্থাৎ, সবই করা যায়।

কম্পিউটার শিখে ব্যবসা, চাকরি, ফ্রিল্যান্সিং করার পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনের প্রায় সব ধরণের কাজ সম্পাদন করতে পারবেন। এমনকি কম্পিউটার শিক্ষার মাধ্যমে নিজেকে একজন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা হিসেবে প্রমাণ করতেও পারবেন।

শেষ কথাঃ

টেকনোলোজির প্রতিটা কাজেই ব্যবহৃত হয় কম্পিউটার। বরং এভাবে বলা যায় যে কম্পিউটার ছাড়া বর্তমান সমাজের মানুষ চলতে পারবে না! একটি বই তৈরিতেও কম্পিউটারের প্রয়োজন হয়। টেকনোলোজি এখন কম্পিউটারের উপর নির্ভরশীল। কম্পিউটারের সাহায্যে যে কোনো কাজ খুব সহজ ভাবেই করা যায়।

গবেষকরা মনে করেন, আগামী কয়েক বছরের মাধ্যমে কম্পিউটারের ব্যবহার এমন ভাবেই ছড়িয়ে যাবে যে, মানুষ দৈনন্দিন জীবনের প্রায় সব কাজ কম্পিউটারের সাহায্যে করবে। উন্নত দেশগুলোতে এখনই দেখা যায় ভারী সব কাজ রোবটের সাহায্যে সম্পাদন করা হয়। আর রোবটকে কন্ট্রোল করা হয় কম্পিউটার দিয়ে। আজ আমাদের দেশেও দেখা যায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কল-কারখানা, অফিস, আদালত কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণাধীন। এভাবে যত দিন পার হচ্ছে ততই কম্পিউটারের ব্যবহার বাড়ছে। তাই মনে করি যে সবাইকেই কম্পিউটার সম্পর্কে জানা সময়ের দাবি।

দ্বিতীয় পর্বে থাকছে আরো বিস্তারিত। নিয়মিত trickbd তে চোখ রাখুন।

4 thoughts on "নতুনদের জন্য কম্পিউটার শিক্ষা গাইড ।। Computer education guide for beginners"

  1. NAZIRUL ISLAM NAKIB Contributor says:
    আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
  2. Levi Author says:
    অসাধারণ।

Leave a Reply