আসসালামু আলাইকুম! আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো Surface/Deep/Dark Web নিয়ে। ডার্ক ওয়েবে কি পাওয়া যায়, কিভাবে প্রবেশ করতে হয় বিস্তারিত থাকছে এই একই পোস্ট-এ। সাধারণত ওয়েব বলতে ‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব‘কেই বোঝানো হয়। অর্থাৎ ইন্টারনেটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সমস্ত এইচটিএমএল পেজ’ই হচ্ছে ওয়েব। ইন্টারনেট আর ওয়েব এক নয়। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা বিশ্বের যেকোনো স্থানের তথ্য খুব সহজেই পেতে পারি। ইন্টারনেট বিশ্বের সমস্ত সার্ভারগুলিকে একসাথে কানেক্ট করে। এ সকল সার্ভার থেকে আমরা ওয়েব ব্রাউজার এর মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য পেয়ে থাকি। ইন্টারনেটের মাধ্যমেই আমরা এক দেশ হতে অন্য দেশে বিভিন্ন তথ্য আদান-প্রদান করতে পারি। Surface -ওয়েবের আরও কয়েকটি নাম আছে যেমন Visible ওয়েব, Indexed ওয়েব এবং Indexable ওয়েব। অর্থাৎ সহজ ভাষায় সার্ফেস ওয়েব বলতে বোঝায় ইন্টারনেটের যে অংশটুকু আমরা দেখতে পাই বা ব্যবহার করি, যে অংশটুকুর তথ্য সকল সার্চ ইন্জিন তাদের সার্ভারে ইন্ডেক্স করতে পারে এবং ইন্টারনেটের যে অংশটুকু সবাই অ্যাক্সেস করতে পারে বা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে সেটাই হচ্ছে Surface ওয়েব। আমরা বেশির ভাগ সময়ই ইন্টারনেটের সার্ফেস ওয়েব’ই ব্যবহার করে থাকি। এই সার্ফেস ওয়েব তৈরি হয়েছে কোটি কোটি ওয়েব পেজের মাধ্যমে। এ সকল ওয়েবপেজ বিভিন্ন সার্ভারে রাখা আছে এবং সার্চ ইন্জিনগুলি এ সকল সার্ভারে খুব সহজেই অ্যাক্সেস করতে পারে। আমরা যখন ব্রাউজারে কোনো ইউআরএল লিখে এন্টার করি তখন ব্রাউজার সেই ইউআরএল’এর সার্ভারে রিকোয়েস্ট সেন্ড করে এবং সার্ভার থেকে সেই রিকোয়েস্ট গ্রহণ করে কাঙ্খিত ওয়েবপেজটি আমাদের দেখার অনুমতি দেয়। আমরা যখনই কোনো কিছু লিখে গুগল অথবা অন্য কোনো সার্চ ইন্জিনে সার্চ দেই তখন সাথে সাথে আমাদের সামনে অসংখ্য ওয়েবসাইটের লিংক চলে আসে। এগুলো সবই হচ্ছে সার্ফেস ওয়েবের অংশ। এই সার্ফেস ওয়েব হচ্ছে ইন্টারনেটের 4% অর্থাৎ আমরা যে এত্ত এত্ত তথ্য দেখতে পারি সেগুলো ইন্টারনেটের মোট তথ্যের 4% মাত্র। বাকি 96% তথ্য আমরা দেখতে পাই না বা এগুলো কোনো সার্চ ইন্জিন ইনডেক্স করতে পারে না।
আজকের এই পোস্ট-এ আপনাকে স্বাগতম। আশা করছি পুরো পোস্ট-টি মনোযোগ এবং ধৈর্য সহকারে পড়বেন।
তো কেমন আছেন সবাই?
আশা করছি আল্লাহর অশেষ রহমতে সবাই অনেক ভালোই আছেন।
তাই মনোযোগ দিয়ে প্রথম থেকে পড়তে থাকুন। আশা করছি নতুন কিছু অবশ্যই জানতে/শিখতে পারবেন।
বেশি কথা না বাড়িয়ে চলুন মূল আলোচনায় যাওয়া যাকঃWeb কি?
Surface ওয়েব কি?
Surface – ওয়েবের কিছু উদাহরণ হচ্ছেঃ
অর্থাৎ আমরা যেগুলো দেখতে বা ব্রাউজ করতে পারি, যেগুলো সার্চ ইন্জিন ইনডেক্স করতে পারে ঐগুলো সার্ফেস ওয়েবের অংশ।
Deep ওয়েব কি?
আমরা যারা টেকনোলজি বিষয়ে টুকটাক জ্ঞান রাখি তাদের সবাই ‘ডিপ ওয়েব‘এর নাম শুনেছি নিশ্চয়ই। অথবা অনেকেই আছেন যারা হয়তো এই শব্দটি কোথাও না কোথাও দেখেছেন বা শুনেছেন। ডিপ ওয়েব কি? এই প্রশ্নটি’র উত্তর হয়তো অনেকেরই জানা কিন্তু যারা জানেন না তাদের উদ্দেশ্যে বলি, Deep ওয়েব হচ্ছে ইন্টারনেটের এমন একটি জায়গা যেখানে থাকা তথ্যগুলো কোনো সার্চ ইন্জিন ইনডেক্স করতে পারে না অর্থাৎ ডিপ ওয়েবে থাকা তথ্যগুলো সবাই অ্যাক্সেস করতে পারে না।
ইন্টারনেটের 96% তথ্যই ডিপ ওয়েবে রয়েছে! অর্থাৎ এ 96% তথ্যের অ্যাক্সেস সবাই নিতে পারে না। একটি উদাহরণ দিলে হয়তো আপনারা বিষয়টা সহজভাবে বুঝতে পারবেন। আমরা প্রায় সবাই Google Drive – সম্পর্কে জানি। এটা গুগলের ক্লাউড স্টোরেজ যা গুগল আমাদের ফ্রী’তে ব্যবহার করতে দেয়। এখানে আমরা আমাদের বিভিন্ন তথ্য বা ফাইল আপলোড করে রাখতে পারি। আমাদের আপলোড করা এ তথ্য বা ফাইলগুলো’র অ্যাক্সেস শুধুমাত্র আমাদের কাছেই থাকে। এ তথ্যগুলো কখনোই একটি সার্চ ইন্জিন ইনডেক্স করতে পারে না। আমাদের আপলোড করা তথ্য বা ফাইলগুলো অন্য কেউ সার্চ করে কখনোই খুঁজে পাবে না। এটাই হচ্ছে Deep Web অর্থাৎ এখানে তথ্যের অ্যাক্সেস শুধু মাত্র এর মালিকের কাছেই থাকে এবং অন্য কেউ এর অ্যাক্সেস করতে পারে না। আশা করছি এবারে ডিপ ওয়েব কি সেটা বুঝতে পেরেছেন।
Deep – ওয়েবের আরও কিছু উদাহরণ হচ্ছেঃ
- Subscription only information.
- Academic database.
- Scientific reports.
- Government reports.
- Medical records.
- Legal documents.
- Financial records.
- Organization specific information and many more.
উপরের সকল প্রতিষ্ঠান বা ওয়েবসাইটের তথ্যগুলো ডিপ ওয়েবের অংশ। অর্থাৎ এই ইনফরমেশনগুলো কোনো সার্চ ইন্জিন ইনডেক্স করতে পারে না এবং এগুলো পাবলিকলি ভিজিবল না। যে কেউ এসব তথ্যের অ্যাক্সেস নিতে পারে না।
Dark Web কি?
সহজ ভাষায় ডার্ক ওয়েব হচ্ছে ইন্টারনেটের অন্ধকার জগত। অন্যভাবে ডার্ক ওয়েব হচ্ছে ইন্টারনেটের এমন একটি অংশ যেখানে সাধারন ব্রাউজার দিয়ে প্রবেশ করা যায় না, এখানে প্রবেশ করতে হলে আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু মাধ্যম অনুসরণ করতে হয়। এটি সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের থেকে লুকায়িত একটি নেটওয়ার্ক। লুকায়িত এই ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করতে হলে প্রয়োজন নির্দিষ্ট সফটওয়্যার, কনফিগারেশন বা অনুমোদনের।
ডার্ক ওয়েব হচ্ছে ডিপ ওয়েবের একটি অংশ। ডার্ক ওয়েবে সাধারণ সার্চ ইন্জিন প্রবেশ করতে পারে না। অনেকেই ভুল করে “ডিপ ওয়েব” শব্দটি ডার্ক ওয়েবকে বোঝাতে ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু এই দুইটি আলাদা দুইটি জিনিস। ডার্ক ওয়েবে নির্দিষ্ট শর্তে সবাই ঢুকতে পারলেও “ডিপ ওয়েব” – এ সাধারণ মানুষ ঢুকতে পারে না।
ডার্ক ওয়েবে রয়েছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ফ্রেন্ড টু ফ্রেন্ড, পিয়ার টু পিয়ার নেটওয়ার্ক। তাছাড়া আছে Free Net, I2P ও Tor – এর মতো বড়ো বড়ো নেটওয়ার্ক। এসব নেটওয়ার্ক পরিচালিত হয় সাধারণ প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের মাধ্যমে। এসব নেটওয়ার্কগুলো হচ্ছে এনক্রিপটেড বা অ্যানোনিমাস নেটওয়ার্ক।
আমরা সাধারণত যে ইন্টারনেট ব্যবহার করি এগুলো হাই লেভেলের এনক্রিপশন ব্যবহার করে না। এজন্য ডার্ক ওয়েব ব্যবহারকারীরা আমাদের সাধারণ ইন্টারনেটকে “ক্লিয়ারনেট” নামে ডেকে থাকেন।
কিন্তু ডার্ক ওয়েব নেটওয়ার্ক Tor তাদের ব্যবহারকারীদের ডার্ক নেটে অ্যানোনিমাস রাখার উপর বেশি গুরুত্ব প্রদান করে। টর একাধিক স্তর বিশিষ্ট এনক্রিপশন সিস্টেম ব্যবহার করে যার ফলে ডার্ক নেট ব্যবহারকারীদের পরিচয় বা তাদের অবস্থান শনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব।
অন্যদিকে I2P নেটওয়ার্ক অজ্ঞাত পরিচয়ে ডার্ক ওয়েবে ওয়েবসাইট হোস্টিং এর সুবিধা প্রদান করে।অর্থাৎ আপনি যখন ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করবেন তখন আপনি হাই লেভেলের এনক্রিপশন সিস্টেমের মধ্যে থাকবেন। আপনার অরিজিনাল আইপি অ্যাড্রেস একাধিক লেয়ারে এনক্রিপ্ট হয়ে যাবে যা ডিক্রিপ্ট করা প্রায় অসম্ভব। তাই ডার্ক নেটে ব্যবহারকারীদের মধ্যকার যোগাযোগ বা কথোপকথন বা ফাইল আদান-প্রদান অত্যন্ত নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তার সাথে সম্পন্ন হয়ে থাকে।
আমাদের সার্ফেস ওয়েবে যে ডোমেইনগুলো দেখতে পাওয়া যায় এগুলো থেকে ডার্ক ওয়েবের ডোমেইনগুলো আলাদা। ডার্ক ওয়েবে ডোমেইনগুলো বেশিরভাগই .onion হয়ে থাকে।তাছাড়া ডার্ক ওয়েবে সাইটের ইউআরএল গুলোও আলাদা হয়ে থাকে। এগুলো সার্ফেস ওয়েবের মতো রিডঅ্যাবল হয় না।
Dark Web এ কি আছে?
ডার্ক ওয়েব সাধারণত অবৈধ জিনিসপত্র দিয়ে ভরা। অর্থাৎ এখানে সব অবৈধ জিনিসপত্র ই বেশি পাওয়া যায়। একটা সময় ডার্ক ওয়েবে সবচেয়ে বেশি অনুরোধকৃত বিষয় ছিলো শিশু পর্নোগ্রাফি। অর্থাৎ বেশিরভাগ মানুষ ডার্ক নেটে শিশু পর্নোগ্রাফির খোঁজ করতো।
তাছাড়া ডার্ক নেটে আরো রয়েছে বিভিন্ন হ্যাকিং ফোরাম, অ্যানোনিমাস চ্যাটিং ওয়েবসাইট, হোস্টিং সেবা, পর্নোগ্রাফি, সার্চ ইন্জিন, মাদক ব্যবসা, হ্যাকিং, অস্ত্র ব্যবসা এবং অন্যান্য অবৈধ সেবা। তাছাড়া বিভিন্ন গোপন পলিটিকাল আলাপ-আলোচনা বা তথ্য আদান প্রদান হয়ে থাকে ডার্ক ওয়েবে।
Dark Web এ কি আপনার প্রবেশ করা উচিত?
অনেক আগে যখন প্রথম ডার্ক ওয়েবের কথা শুনি তখনই আমার নিজের মধ্যে কেমন জানি একটা কৌতূহল কাজ করতো। তখন ডার্ক ওয়েবকে সবাই ভয়ংকর একটা জায়গা হিসেবে তুলে ধরতো। অনেকেই বলতো ডার্ক ওয়েবে ঢুকলেই নাকি ডিভাইস হ্যাক হয়ে যায়। আরও অনেক রকম কথা বলতো মানুষ। আমার কৌতুহল তখন আরো বাড়তে থাকলো। আমি খুব করে চাইতাম ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করতে কিন্তু তখন আমার কাছে কোনো অ্যান্ড্রয়েড ফোন ছিলো না।
পরে যখন আমি ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করি তখন এটিকে আমার কাছে সাধারণ ওয়েবের মতোই মনে হয়েছে। লোকে আসলেই একটু বাড়িয়েই বলে। তাই আপনি যদি প্রযুক্তি প্রেমী বা আমার মতো কৌতুহলী হয়ে থাকেন, আপনার যদি নতুন নতুন জিনিস এক্সপ্লোর করতে ভালো লাগে, আপনি যদি কোনোদিনও ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করে না থাকেন তাহলে বলবো, অবশ্যই আপনার একবার হলেও প্রবেশ করা উচিত। আপনি যদি নিজে প্রবেশ না করেন তাহলে অনেক কিছুই জানতে বা বুঝতে পারবেন না।
ভয় নেই, এখানে প্রবেশ করলেই আপনার ডিভাইস হ্যাক হয়ে যাবে না। তবে ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করার আগে অবশ্যই আপনাকে কয়েকটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে।
Dark Web এ প্রবেশ করার কোন বিষয়গুলি আপনাকে মাথায় রাখতে হবে?
প্রথমত আপনাকে একটি ভালো ভিপিএন ব্যবহার করতে হবে। ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করার পর অপরিচিত কোনো সাইট থেকে কোনো অ্যাপ ডাউনলোড/ইনস্টল করতে যাবেন না। অ্যাডাল্ট সাইটগুলোতে প্রবেশ করবেন না। যেসব ওয়েবসাইটে খুনি ভাড়া করতে পাওয়া যায় এসকল ওয়েবসাইট থেকে দূরে থাকবেন। ডার্ক ওয়েবে না জেনে বুঝে কারো সাথে লেনদেন করতে যাবেন না অর্থাৎ কোনো সাইট থেকে পণ্য/সেবা ক্রয় থেকে বিরত থাকবেন। কারণ এখানে বেশির ভাগই স্ক্যাম ওয়েবসাইট।
কিভাবে Dark Web এ প্রবেশ করবেন?
সাধারণত ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করতে হলে প্লে-স্টোর থেকে Orbot অথবা Tor – এর যেকোনো একটি অ্যাপ ইনস্টল করে নিলেই হয়। এখানে Orbot হচ্ছে আপনাকে ডার্ক ওয়েবে প্রবেশের রাস্তা বানিয়ে দেয় এবং আপনি তখন যেকোনো ব্রাউজার দিয়ে ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করতে পারবেন।
আর Tor – হচ্ছে একটি ব্রাউজার এবং ডার্ক ওয়েবে প্রবেশের জন্য এর অন্য কোনো অ্যাপ এর প্রয়োজন হয় না। এই ব্রাউজারের মাধ্যমে আপনারা সেফলি ডার্ক ওয়েব ব্রাউজ করতে পারবেন।
আমি রেকমেন্ড করবো প্রথমে প্লে-স্টোর থেকে Orbot এবং Tor ইনস্টল করবেন। তারপর Orbot অ্যাপ ওপেন করে কানেক্ট করে নিবেন এবং তারপর Tor ব্রাউজার দিয়ে ডার্ক ওয়েবে প্রবেশ করবেন। এতে আপনাদের রিয়েল আইপি অ্যাড্রেস স্ট্রংলি হাইড হয়ে যাবে। আপনাদের সুবিধার্থে কয়েকটি লিংক নিচে দিয়ে দিলাম যেগুলো আপনারা চাইলে এক্সপ্লোর করতে পারেন। Tor দিয়ে অনিয়ন লিংকে প্রবেশ করলে ওয়েবসাইট ওপেন হতে একটু সময় লাগে। তাই লিংকে ক্লিক করার পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করবেন।
Dark Web লিংকঃ
1. Ahmia.fi
এটি হচ্ছে ডার্ক ওয়েবের একটি সার্চ ইন্জিন। আমাদের সার্ফেস ওয়েবে যেমন Google, Bing ইত্যাদি সার্চ ইন্জিন আছে তেমনই এটি হচ্ছে ডার্ক ওয়েবের সার্চ ইন্জিন। এর মাধ্যমে টর নেটওয়ার্কের হিডেন সার্ভিসগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
2. Facebook
ফেসবুকের ডার্ক ওয়েব ভার্সন। যেসব দেশে ফেসবুক নিষিদ্ধ তারা যেন ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে ফেসবুক ব্যবহার করতে পারে এজন্য ফেসবুক ডার্ক ওয়েব ভার্সন বানিয়ে রেখেছে। তাছাড়া আরও কিছু জনপ্রিয় সাইটেরও ডার্ক ওয়েব ভার্সন আছে অর্থাৎ তাদের ওয়েবসাইট ডার্ক ওয়েবে হোস্ট করা আছে।
3. Deep Market
এটি হচ্ছে একটি ডার্ক ওয়েব মার্কেট প্লেস। এখানে কার্ডিং এর জন্য ক্রেডিট কার্ড, 199 ডলারে ফেসবুক/ইনস্টাগ্রামসহ আরও বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটের অ্যাকাউন্ট হ্যাক, 319 ডলারে আইফোন প্রো ম্যাক্স সহ আরও অনেক কিছু কিনতে পাওয়া যায়।
4. DNMX
এই ওয়েব সাইটটি হচ্ছে ডার্ক ওয়েবের ইমেইল সার্ভিস। আমরা যেমন গুগল/ইয়াহু ব্যবহার করি তেমনই ডার্ক ওয়েবে এই জিমেইল ব্যবহার করা হয়। আরও অনেক ইমেইল সার্ভিস আছে ডার্ক ওয়েবে। তবে এটি অনেক জনপ্রিয়। ডার্ক ওয়েবে যখন আপনার কোনো সাইটে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রয়োজন পড়বে তখন এই DNMX থেকে একটি ইমেইল খুলে নিবেন এবং সেটা দিয়ে অন্যান্য সাইটে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। ডার্ক ওয়েবে কখনোই আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করবেন না।
5. TorBay
Torbay – হচ্ছে ডার্ক ওয়েবের আরেকটি মার্কেট প্লেস যেখানে ক্রেডিট কার্ড, হ্যাকিং সেবা, বিভিন্ন প্রিমিয়াম অ্যাকাউন্টস, আইফোন, কম্পিউটারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ অনেক কম দামে কিনতে পাওয়া যায়।
Hidden Wiki – হচ্ছে এমন ওয়েবসাইট যেখানে ডার্ক ওয়েবে থাকা সকল হিডেন লিংক ইনডেক্স করা থাকে। অর্থাৎ এই ওয়েবসাইটে গেলে আপনারা ডার্ক ওয়েবের বিভিন্ন ওয়েবসাইটের ওয়ার্কিং লিংক পেয়ে যাবেন। এই ওয়েবসাইটটিতে প্রবেশের পর স্ক্রল করে নিচে গেলে আপনারা ক্যাটাগরি পেয়ে যাবেন। ক্যাটাগরি অনুযায়ী ডার্ক ওয়েবের বিভিন্ন লিংক ব্রাউজ করতে পারবেন।
বিঃদ্রঃ যেহেতু লেখাটি আপনাদের শেখানোর উদ্দেশ্যে লেখা তাই ভালোভাবে না জেনে ডার্ক নেট মার্কেট থেকে কোনো কিছু কেনা থেকে বিরত থাকুন। স্ক্যামের স্বীকার হলে আমি অথবা ট্রিকবিডি কতৃপক্ষ এর দ্বার ভার নিবে না।
পরিশেষেঃ
ডার্ক ওয়েব হচ্ছে ইন্টারনেটে লুকায়িত একটি নেটওয়ার্ক। সময়ের সাথে সাথে এর জনপ্রিয়তা ও বাড়ছে। সার্ফেস ওয়েবে আপনার সমস্ত কিছু ট্র্যাক হলেও ডার্ক ওয়েবে সে ভয় নেই। তাই অনেক কনফিডেনসিয়াল আলোচনা ডার্ক ওয়েবেই সেরে থাকেন। ডার্ক ওয়েব নিয়ে এখনো মানুষের মধ্যে রহস্যের শেষ নেই। সার্ফেস ওয়েবের কম সংখ্যক ব্যবহারকারীগণই ডার্ক ওয়েব সম্পর্কে ধারণা রাখেন।
ডার্ক ওয়েব এর কিছু অংশ অনেক মুভিতেও দেখানো হয়েছে।
যেমনঃ হ্যাকিং রিলেটেড টিভি সিরিজ Mr. Robot এর একটি পর্বে ডার্ক ওয়েবের একটি সাইট ঠিক করতে Elliott যিনি সিরিজের প্রধান চরিত্র তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
তাছাড়া জার্মানিতে তৈরি একটি হ্যাকিং/টেক রিলেটেড মুভি যেটা অনেক জনপ্রিয় Who am I – মুভিতে ডার্ক ওয়েবের সিক্রেট চ্যাট রুম ব্যবহার করে কথোপকথন দেখানো হয়।
2016 সালে তৈরিকৃত একটি অনলাইন গেম Welcome to the game যেটি সম্পূর্ণ ডার্ক ওয়েবকে ঘিরে তৈরি করা হয়েছিলো।
আজকে এ পর্যন্তই।
ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। পোস্ট সম্পর্কিত কোনো কিছু জানার থাকলে কমেন্টে জানাবেন অথবা আমাকে ফেসবুকে নক করতে পারেন।
ফ্রি’তে নেটফ্লিক্স ব্যবহার করতে চাইলে জয়েন হতে পারেন টেলিগ্রাম চ্যানেলে। চ্যানেলে ওয়ার্কিং নেটফ্লিক্স কুকি শেয়ার করা হয়।
ট্রিকবিডি’র সাথেই থাকুন।
অনেকেই বলে এগুলো নাকি গুজব।
এনক্রিপশন লেভেল আরেকটু বেড়ে গেলো।
তবে এগুলো এত কম দামে বিক্রি করার কারণ হচ্ছে, হ্যাকার’রা কার্ডিং/হ্যাকিং এর মাধ্যমে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট/ক্রেডিট কার্ড হ্যাক করে। তারপর সেগুলো দিয়ে অনলাইন থেকে তারা প্রডাক্ট অর্ডার করে এবং সেগুলো তারা কম রেটে বিক্রি করে।
নতুনদের কিছুতেই কোনো কিছু ডাউনলোড করা উচিত নয়।
ট্রিকবিডি’র সাথেই থাকুন। ❤️
সার্চ ইন্জিনে করে দেখেন।
কোনো ফাইল ডাউনলোড করা যাবে না।
অস্ত্র/মাদক এসব ওয়েবসাইট থেকে দূরে থাকতে হবে।