আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

আজ নয় কাল করব এই Procrastination অর্থাৎ
গড়িমসি করা থেকে বেরিয়ে আসুন।


আজকে আমরা সোনালী নামের এক কলেজ ছাত্রীর কথা শুনব । সোনালী ভীষণ ভালো Student ছিল। কিন্তু সব কাজেরই গড়িমসি করা মানে প্রক্রাস্টিনেশন তার একটি বদঅভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। সে বেশিরভাগ সময় তার যাবতী কাজ আর পড়াশোনার অ্যাসাইনমেন্ট এর কাজ শেষ মুহূর্তে কমপ্লিট করার জন্য তুলে রাখলো । আর পরে সেই পড়াশোনার চাপ সামলাতে না পেরে পেনশনের ভুক্ত । একদিন কি হল দু সপ্তাহের এর মধ্যেই সোনালীকে একটা বড় প্রোজেক্ট কমপ্লিট করতে হতো । আর সে নিজেকে প্রমিস করলো যে করেই হোক সে তাড়াতাড়ি কাজটা শুরু করবে।
সে যাই হোক যত দিন এগলো সোনালী ডিস্টার্ব ফিল করতে শুরু করল। সে ঘন্টার পর ঘন্টা সোশ্যাল মিডিয়াতে নেটফ্লিক্স দেখে আর বন্ধুদের মেসেজ করে কাটিয়ে দিতে লাগল । এভাবে দেখতে দেখতে জমা দেওয়ার দিন শেষ হতে মাত্র একদিন বাকি ছিল কিন্ত সোনালী তখনও প্রজেক্ট শুরু করতে পারেনি । সে পুরো রাত জেগে প্রজেক্টে কাজ করলো । কফি খেয়ে রাত জেগে থাকলো আর সময় মতো কাজ শেষ করার জন্য নিজেকে যতটা সম্ভব পুস করলো । প্রজেক্ট এর কাজ শেষ করে সে এতটাই টায়ার্ড হয়ে গিয়েছিল যে বেশিক্ষণ চোখ খুলে রাখতেই ওর পক্ষে সম্ভব হচ্ছিল না । পরের দিন সোনালীর ওর প্রজেক্ট প্রেজেন্ট করল কিন্তু সে জানতো এটা তার বেস্ট ওয়ার্ক নয়। প্রচুর মিসটেক হয়েছিল আর প্রজেক্টটা তার স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী মোটেই আপলোড হয়নি । সোনালী ভীষণ হতাশ হয়ে পড়ল কিন্তু প্রক্রাস্টিনেশনের সাইকেল কিভাবে ব্রেক করতে হয় সেটা ওর জানা ছিলনা ।

কয়েক সপ্তাহ পরেই সোনালীর কাছে আরেকটা প্রজেক্ট এর সুযোগ এলো কিন্তু এবার একটা দিফেরেন্ট অ্যাপ্রচ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল । ও একটা সিডিওল ঠিক করলো আর প্রতিদিন একটু একটু করে সেটা নিয়ে কাজ শুরু করল। এবার আর সে নিজেকে ডিস্টাক হতে দিল না। আর সেই সঙ্গে কাজের ফাঁকে ফাঁকে ব্রেক নিতে আর কাজের জন্য নিজেকে রিওয়ার্ড নিতে ভুলল না । ডেডলাইনের সময় যত কাছে এগিয়ে এলো সোনালী ততোই কনফিডেন্টলি অর নিজের মধ্যে আত্নবিশ্বাস অর্জন করছিল। কারণ এবার সে টাইম আর এফোর্ড লাগিয়ে একাজটা করেছিল। আর সে এটাও জানত যে তার প্রজেক্ট বেস্ট হতে চলেছে। যখন সে নিজের প্রজেক্ট সবার সামনে প্রেজেন্ট করল তখন তার প্রফেসররা ক্লাসমেটদের কাছ থেকে অনেক প্রশংসা পেল ।

সেই দিন থেকে সোনালী বুঝতে পারল যে প্রক্রাস্টিনেশন এর বদভ্যাস তার কাজেকে আটকে রেখেছে ও বুঝতে পারল যে কোন বড় কাজ কে ছোট ছোট ধাপে ভাগ করে রিয়েলিস্টিক গোল সেট করে আর নিজের গোলে ফোকাশ থাকলে সেই খারাপ অভ্যাস কাটিয়ে উঠতে পারবে আর নিজের গোলস এচিপ করতে পারবে । এর পর থেকে সোনালী আর কখনো প্রক্রাস্টিনেট করল না । আর পরে গিয়ে সে কলেজের কারিয়ারে প্রচুর সফলতা অর্জন করল। প্রক্রাস্টিনেশন একটা কমন বিহেবিহান যে কোন বয়সের সমাজের বা যে কোন স্তরের বা পেশার মানুষকে প্রভাবিত করে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কোন কাজ পিছিয়ে দেওয়া হোক বা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করা হোক ।

প্রক্রাস্টিনেশন আমাদের প্রডাক্টিভিটি সাকসেসকে নেগেটিভলি ইফেক্ট পরতে পারে । তাই আজকের আর্টিকেলে আমার প্রক্রাস্টিনেশন Scienceটাকে বুঝবো আর এর পিছনে কারণ গুলো সম্পর্কে জানব । আর প্রক্রাস্টিনেশন কি করে ওভারকাম করা যায় সেই স্ট্রাটিজি গুলো জেনে নিব।

তো প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক প্রক্রাস্টিনেশন কি..?
প্রক্রাস্টিনেশন হলো একটা বদভ্যাস যার ধরুন আমরা একটা কাজ করব বা সিদ্ধান্ত নিতে সেটা করতে গরিমসি করতে থাকি। কাজটা সম্পূর্ণ না করার পর নেগেটিভ কি কি ঘটতে হতে পারে সেটা জানা সত্ত্বেও। এটা একটা কমপ্লেক্স বিহেবিহার এটার সাথে অনেক কারণ জড়িত থাকে । প্রক্রাস্টিনেশন অনেক রকমের হতে পারে ।যেমনঃ
১. শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত কোনো কাজ না করা।
২. Unpleasant বা কঠিন কাজ এড়িয়ে চলা।
৩. কাজ না করে Distracted হয়ে যাওয়া ।

৪. সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হওয়া ।
৫. এক্সেসাইজ বা হেল্থ চেকআপ এর মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো স্থগিত রাখা।

এবার চলুন জেনে নিই প্রক্রাস্টিনেশন এর পিছনে সাইন্সটা কি…? প্রক্রাস্টিনেশন নিয়ে বহু বছর ধরে অনেক রিসার্চ চালিয়ে সায়েন্টিস্টরা বিভিন্ন কারণ চিহ্নিত করেছেন। যে কেন মানুষদের মধ্যে প্রক্রাস্টিনেশন লক্ষ্য করা যায়।যেমনঃ
১. Fear Of Failure
আপনি কঠিন কাজ গুলো বারবার এড়িয়ে যান কারণ আপনার ভয় হয় যে সেই কাজটা করতে গিয়ে হয়তো আপনি ব্যর্থ হবেন বা ভুল করে বসবেন । এই ভয় এতটাই আপনাকে পেয়ে বসতে পারে যে কাজটা হয়তো আপনি কোনদিন আপনি শুরুই করতে পারবেনা ।
২. Lack Of Motivation
আপনার কোন কাজ কমপ্লিট করতে গিয়ে হয়তো মোটিভেশন এর অভাব দেখা দিতে পারে । বিশেষ করে যদি কাজটা তেমন ইন্টরেস্টিং বা রিওয়াডিং না হয় ।
৩. Poor Time Management
টাউম ম্যানেজমেন্ট স্কিলস এর অভাব থাকায় কোনো কাজ সময়ে কমপ্লিট করতে না পারলে নানা সমস্যা হয়। কোন কাজ সম্পন্ন করতে যেটুকু সময় দরকার তা না দিলে আপনি কোনদিন কাজটা ভালো ভাবে শেষ করতে পারবেন না ।
৪. Perfectionism
আপনি সবকিছু পারফেক্টলি করতে চান এই কারণেই কোনো কাজ করার জন্য পারফেক্ট টাইম বা কন্ডিশনের জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকেন। এভাবেই আপনি প্রক্রাস্টিনেশন শিকার হন ।
৫. Distractions
আপনি সোশ্যাল মিডিয়ায়, ইমেইল এবং অন্যান্য জিনিসের প্রতি ডিস্টাক্টড হয়ে যান । যা আপনাকে হয়তো আনন্দ দেয়।

এবার আসা যাক সমাধানে। কিভাবে প্রক্রাস্টিনেশন কাটিয়ে ওঠবেন। প্রক্রাস্টিনেশন কাটিয়ে ওঠা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। এবার কিছু স্ট্র্যাটেজির কথা বলব যে আপনি ট্রাই করে দেখতে পারেন ।
১. Break Tasks Info Smaller Steps
কোন বড় কাজ একবারই করার বদলে কাজটা ছোট ধাপে ভাগ করুন এতে কাজের চাপ কমবে আর কাজ শুরু করা সহজ হবে।
২. Set Smart Gols
জার্মানে Specific, Measurable, Achievable, Relevant, Time-Bound এরকম গোল সেট করলে আপনি আপনার কাজে ফোকাস আর মোটিভেশন পাবেন না ।
৩. Use A Timer
নিদিষ্ট সময়ে কাজ করার জন্য টাইম সেট করুন আর টাইমার বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত কাজ করুন । এভাবে আপনি একমনে কোন ডিস্ট্রাকশন ছাড়া কাজ করতে পারবেন ।
৪. Priotize Tasks
Importance Tasks এজেন্সি অনুসারে নিজের কাজকে priority দিন। এভাবে আপনি গুরুত্বপূর্ণ কাজে ফোকাস করে কম গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোতে কম সময় দিতে পারবেন।
৫. Minimize Distractions
যে Distractions আপনার ফোকাস নষ্ট করতে পারে তা identify করে অভোয়েড করুন। যখন কাজের সময় আপনার ফোনের নোটিফিকেশন বন্ধ রাখুন বা সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলো ব্লক করে রাখুন ।
৬. Practice Self Compassion
আপনি প্রক্রাস্টিনেট করলে নিজেকে ব্লেম করবে না। নিজেকে বোঝান যে প্রক্রাস্টিনেশন নরমাল বিহেভিয়ার যা আপনি সেল্ফ কোম্পেশনের প্রাকটিসের মাধ্যমে কাটিয়ে উঠতে পারবেন । প্রক্রাস্টিনেশন একটা কমপ্লেক্স বিহেভিয়ার যা আমাদের প্রডাক্টিভিটি,ওয়েল্ডিং, আর সাকসেসকে নেগেটিভলি ইফেক্ট পরতে পারে।

যাইহোক প্রক্রাস্টিনেশন এর কারণগুলো বুঝতে আর এটাকে কাটিয়ে উঠতে এই স্ট্রাটেজি গুলো এপ্লাই করে আমরা আমাদের সাকসেসের সেই সম্ভাবনাকে অনেক গুণে বাড়িয়ে তুলতে পারি । আর একটা সুন্দর জীবন কাটাতে পারি সুতরাং পরেরবার আপনি যদি প্রক্রাস্টিনেট করেন তাহলে একটা গভীর নিঃশ্বাস নিন আর মনে মনে বলুন যে প্রক্রাস্টিনেশন কে কাটিয়ে ওঠার ক্ষমতা আপনার আছে। আজকে এ পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবে আল্লাহ হাফেজ।

আপনার ওয়েবসাইটের জন্য আর্টিকেল প্রয়োজন হলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ফেসবুকে আমি

10 thoughts on "আজ নয় কাল করব এই Procrastination অর্থাৎ গড়িমসি করা থেকে বেরিয়ে আসুন।"

  1. Oniichan Contributor says:
    nc post ❤️?
    1. Mr.Problem ツ Author Post Creator says:
      Thank you
    1. Mr.Problem ツ Author Post Creator says:
      Thank you
  2. PKRockzzz Contributor says:
    ナイスポスト
    1. Mr.Problem ツ Author Post Creator says:
      ?
    1. Mr.Problem ツ Author Post Creator says:
      ধন্যবাদ
    1. Mr.Problem ツ Author Post Creator says:
      Thank you

Leave a Reply