বাংলাদেশের মানুষের বিশেষ করে শিশুদের কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হওয়া খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। কৃমি খুবই ক্ষুদ্র আকৃতির একধরণের পরজীবি যা মানুষের পাশাপাশি গরু ছাগলের মতো গৃহপালিত পশুর অন্ত্রে বাসা বাঁধে বা সহজ করে বললে পেটে বাসা বাঁধে এবং সেখান থেকে পুষ্টি সংগ্রহ করে তারা তাদের বংশ বিস্তার করে থাকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক হিসেব অনুযায়ী বাংলাদেশে একবিংশ শতাব্দীর এর শুরুর দিকেও প্রায় ৮০ শতাংশ শিশু কোনো না-কোনোভাবে কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হতো। কিন্তু এখন কথা হচ্ছে এই কৃমি কিভাবে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে।

কৃমি পরিবেশ থেকে কিভাবে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে?

কৃমি সংক্রমনের প্রধান কারণ হচ্ছে দূষিত পানি পান করা, পঁচা খাবার খাওয়া, হাত ঠিকমতো পরিষ্কার না করা, মা হাত ঠিকমতো পরিষ্কার না করে বাচ্চাদের খাবার দিয়ে থাকে, বাচ্চাদের মল-মুত্র পরিষ্কার করে সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার না করা এইরকম বিভিন্নধরনের কারণে কৃমি হয়ে থাকে। শিশুদের ক্ষেত্রে কৃমি সংক্রমণের মাত্রা বেশি, কারণ তারা পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি রক্ষা বা মেনে চলতে পারে না। আর আরেকটা কারণ হচ্ছে শিশুরা সবকিছুই মুখে দেয়। তাছাড়া কিছু কিছু সময় খালি পায়ে মাটিতে হাঁটার ফলে কিছু কৃমি আছে যেগুলো পায়ের তালু ভেদ করে শরীরে প্রবেশ করে থাকে। এইরকম বিভিন্ন কারণে একজন মানুষ কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে।

কৃমিতে আক্রান্ত হলে কী কী উপসর্গ দেখা যায়?
একজন ব্যাক্তি যদি কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে এইরকম বেশকিছু উপসর্গ লক্ষ করা যায়। সেগুলো হলে অরুচি, ক্ষুধামন্দা, পেটে ব্যাথা হতে পারে, ভমি হতে পারে, ভমি ভমি ভাব হতে পারে, না খেতে পারার কারণে ওজন কমে যেতে পারে, কিংবা ওজন বাড়ছে না একটা নির্দিষ্ট ওজনেই রয়ে যাচ্ছে এবং ডায়রিয়া হতে পারে। আর এগুলোই সাধারণত উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়।

বাংলাদেশে ২০০৫ সাল থেকে প্রতি বছর কৃমি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি পালন করে আসছে৷ এই কার্যক্রমের অধীনে বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়ে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি জায়গায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক সকল স্কুল প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কৃমিনাশক ঔষধ খাওয়ানো হয়ে আসছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে বাংলাদেশে কৃমি দ্বারা শিশু আক্রান্তের হার ১০ শতাংশেরও কম।

কৃমিতে আক্রান্ত হলে করণীয় কী?

কেউ যদি কৃমিতে আক্রন্ত হয়ে থাকে তবে তাকে ডিওয়ার্মিং করতে হবে অথবা কৃমিনাশক ঔষধ সেবন করতে হবে। বর্তমানে এখন অনেক ধরণের কৃমিনাশক ঔষধ পাওয়া যায়, সেগুলো ডক্টরের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করতে হবে।

কৃমি সংক্রমণ প্রতিরোধ করবেন কিভাবে?

বিশেষজ্ঞদের মতে কৃমিতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা গ্রহণের চেয়ে আগে থেকে কৃমি প্রতিরোধ করাই কৃমি থেকে বাঁচার সর্বোৎকৃষ্ট উপায়। যেসব কারণে আমরা কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকি যেগুলো আমরা উপরে তুলে ধরেছিলাম। সেগুলো হলে বিশুদ্ধ পানি পান করা, বিশুদ্ধ খাবার খাওয়া, স্যানিটারি টয়লেট ব্যবহার করা, সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা। আর এই বিষয়গুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কৃমি সংক্রমণ রোধ করার।
আশা করি কৃমি থেকে কিভাবে বাঁচবেন, কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হলে সেটা কিভাবে বুঝবেন এবং এর জন্য কিভাবে চিকিৎসা নিবেন পুরো বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। তো এখন থেকে একটু সচেতন থাকলেই কিন্তু কৃমি উপদ্রব থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেন।

আপনাদের সুবিধার্থে আমি আমার টিপস এন্ড ট্রিকসগুলি ভিডিও আকারে শেয়ার করার জন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করেছি। আশা করি চ্যানেলটি Subscribe করবেন।

সৌজন্যে : বাংলাদেশের জনপ্রিয় এবং বর্তমান সময়ের বাংলা ভাষায় সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ক টিউটোরিয়াল সাইট – www.TutorialBD71.blogspot.com নিত্যনতুন বিভিন্ন বিষয়ে টিউটোরিয়াল পেতে সাইটটিতে সবসময় ভিজিট করুন।

Leave a Reply