আসসালামুআলাইকুম

হ্যালো গাইজ,আশা করি সকলে আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে ভালো আছেন। আর ভালো না থাকলে তো ভালো লাগার ওয়েবসাইট TrickBD আছেই। যেখান থেকে আমরা নিত্য নতুন টিপস এবং ট্রিকস পেয়ে যাই।
তো যাই হোক আজকে যে বিষয় নিয়ে আর্টিকেল লিখতে যাচ্ছি, তা আপনারা ইতিমধ্যে উপরিউক্ত টাইটেল দেখেই জেনে গেছেন।

হুম বন্ধুরা আজকে আমি কিভাবে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করবেন সে বিষয়ে লিখতে যাচ্ছি।
বর্তমানে পাসওয়ার্ড আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হয়ে গিয়েছে। আমরা এখন কোন না কোনভাবে স্মার্টফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট দ্বারা বিশ্বের সাথে সম্পৃক্ত। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের আ্যকাউন্ট খুলতে হয়। যেগুলোতে আমরা ব্যবহার করে থাকি বিভিন্ন ধরনের পাসওয়ার্ড। যেমন গুগল আ্যাকাউন্টস, ফেইসবুক আ্যাকাউন্টস, টুইটার আ্যাকাউন্টস ইত্যাদি। এই সমস্ত একাউন্ট তৈরির সময় আমাদেরকে অনেক পাসওয়ার্ড তৈরি করতে হয়। কিন্তু এগুলোতে আমরা শক্তিশালী পাসওয়ার্ড কিভাবে তৈরি করবো?
এটা জানা আমাদের জন্য জরুরী।
কেনোনা এখন আমরা প্রায়ই সোশ্যাল মিডিয়া হ্যাক হওয়ার খবর পেয়ে থাকি। যার একটা বড় কারন হচ্ছে দূর্বল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা। কেনোনা দূর্বল পাসওয়ার্ড হ্যাকাররা অনেক সহজেই হ্যাক করতে পারে। এইজন্য আমাদের শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করা উচিত। যাতে হ্যাকারদের কাছে তা সহজলভ্য মনে না হয়।
একটি বিষয় এই যে বর্তমান সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন ব্যক্তিগত জিনিস আমাদের আ্যাকাউন্ট সিস্টেমে বিদ্যমান থাকে। যদি আমাদের পাসওয়ার্ড দূর্বল থাকে এবং তা যদি হ্যাকারদের কবলে পরে যায় তাহলে এতা আমাদের ক্ষতিসাধন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আমাদের একাউন্ট সিস্টেমকে হ্যাকারদের থেকে সুরক্ষিত রাখতে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা খুবি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এইজন্য কিভাবে আমরা শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করতে পারি?
সে বিষয় নিয়ে আজকে আমার এই আর্টিকেল।

সহজ পাসওয়ার্ড কেমন হয়

বর্তমানে মানুষ ভুলবসত একাউন্ট তৈরির সময় দূর্বল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে থাকে। যার কারনে তার একাউন্ট সহজে হ্যাক হয়ে যেতে পারে। সহজ পাসওয়ার্ড এমন পাসওয়ার্ড হয় যা হ্যাকাররা সহজে হ্যাক করতে পারে। যেমন নিজের পাসওয়ার্ডে নিজের নাম, মোবাইল নাম্বার, নিজের পরিবারের কোন ব্যাক্তির নাম, জন্মের তারিখ, সিরিয়াল নম্বার ইত্যাদি ব্যবহার করে দূর্বল পাসওয়ার্ড তৈরি করা হয়।

শক্তিশালী পাসওয়ার্ড কেমন হয়

একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড এমন পাসওয়ার্ড হয় যা কোন ব্যক্তি সহজে অনুমান করতে পারে না। একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ডে শুধুমাত্র বর্ণমালা বিদ্যমান থাকে না, বরং একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড বর্ণমালা, নাম্বার, বিশেষ চিন্হ ইত্যাদির কম্বিনেশনে তৈরি করা হয়ে থাকে। এবং এতে কিছু ট্রিক্স ব্যবহার করা হয় যাতে পাসওয়ার্ড আরো শক্তিশালী হয় এবং সহজে মনে রাখা সম্ভব।
এ পর্যন্ত তো আপনি দূর্বল পাসওয়ার্ড ও শক্তিশালী পাসওয়ার্ড সম্পর্কে অনেক কিছু জেনেছেন। শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করার জন্য নিজের ব্রেইন কে কাজে লাগানো জরুরী। এখন শক্তিশালী পাসওয়ার্ড কিভাবে তৈরি করবেন সে বিষয়ে জেনে নিন।

#1 পাসওয়ার্ডের সাইজ লম্বা রাখা

শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করার সর্বপ্রথম নিয়ম এই যে পাসওয়ার্ডের সাইজ লম্বা রাখা। কেনোনা পাসওয়ার্ড যত কম অক্ষরের হবে ততো তা অন্যের জন্য অনুমান করা সহজ হবে। এবং কম অক্ষরের পাসওয়ার্ডকে হ্যাকার খুব সহজে ব্রাট ফোর্স আ্যটাকের মাধ্যমে বের করে ফেলতে পারে। যারফলে আপনার একাউন্ট বা সিস্টেমকে সুরক্ষা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য হতে পারে।

এই জন্য আমাদের যতটা সম্ভব লম্বা পাসওয়ার্ড তৈরির চেষ্টা করতে হবে। লম্বা পাসওয়ার্ড বানানোর উদ্দেশ্য এই না যে একটা পাসওয়ার্ড আপনি 40 থেকে 50 অক্ষরের বানিয়ে ফেলবেন। বলার উদ্দেশ্যে এই যে পাসওয়ার্ড 5 থেকে 6 অক্ষর না হওয়া উচিত। বরং পাসওয়ার্ড কমপক্ষে 15 থেকে 20 অক্ষরের মধ্যে হওয়া উচিত।
যাতে তা অন্যের অনুমান করা যথেষ্ট কষ্টসাধ্য হয়।

#2 বর্ণমালা এবং নাম্বার উভয়ই ব্যবহার করা

আমাদের পাসওয়ার্ড তৈরি করার সময় শুধুমাত্র বর্ণমালা বা শব্দ ব্যবহার করা উচিত নয় এবং আমাদের কোন সিস্টেম বা একাউন্টের পাসওয়ার্ড তৈরির সময় শুধু নাম্বার ব্যবহার করাও উচিত নয়। বরং আমাদের পাসওয়ার্ড তৈরি করার সময় বর্ণমালা এবং নাম্বার উভয়ই ব্যবহার করা উচিত। আমাদের সিস্টেমের পাসওয়ার্ড শক্তিশালী করার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

গুগলের মতো কোম্পানি পাসওয়ার্ড তৈরি করার সময় বর্ণমালা এবং নাম্বার উভয়ই ব্যবহার করতে বলে। এইজন্য পাসওয়ার্ড তৈরি করার সময় আমাদেরকে এই বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে।

#3 বিশেষ চিন্হ ব্যবহার করা

বিশেষ চিন্হ হলো ঐ সমস্ত ক্যারেকটার বা চিন্হ যা বিশেষ কার্য সম্পাদনের জন্য ব্যবহার করা হয়। যেমন: %,&,@,#,*,(),!,:,& ইত্যাদি।
এই বিশেষ ক্যারেকটারগুলো আমাদের পাসওয়ার্ডে ব্যবহার করা উচিত।

কেনোনা এর দ্বারা আমাদের পাসওয়ার্ড অনেক শক্তিশালী হয়ে যায়। বিভিন্ন প্রকারের বিশেষ চিন্হ রয়েছে। আপনি যখন এই বিশেষ চিন্হসমূহ দ্বারা পাসওয়ার্ড তৈরি করবেন তখন তা সাভাবিকভাবে অনুমান করা সহজলভ্য হবে না।এইজন্য আপনার একাউন্ট বা সিস্টেমকে হ্যাকারদের থেকে সুরক্ষিত রাখতে এটি একটি বিশেষ পদ্ধতি যা আপনার পাসওয়ার্ডকে দ্বিগুণ শক্তিশালী করবে।

#4 সামান্য পাসওয়ার্ড না বানানো

অনেক মানুষ নিজের পাসওয়ার্ড তৈরি করার সময় নিজের মাথা খাটায় না। সহজ পাসওয়ার্ড তৈরি করে ফেলে। যেমন নিজের জন্ম সাল, পরিবারের কোন বিশেষ ব্যাক্তির নাম, মোবাইল নাম্বার ইত্যাদি দিয়ে পাসওয়ার্ড তৈরি করে নেয় যা সবচেয়ে বড় ভুল। এই সমস্ত পাসওয়ার্ডকে মানুষ সহজে অনূমান করে নিতে পারে। এই সমস্ত পাসওয়ার্ডকে সামান্য পাসওয়ার্ড বলে।যার ব্যবহার সাধারণত ভুলবশত লোকজন করে থাকে।

এইজন্য পাসওয়ার্ড তৈরি করার সময় ভুলবশত সামান্য পাসওয়ার্ড তৈরি না করা উচিত।

#5 কিছু ট্রিকস ব্যবহার করা

নিজের পাসওয়ার্ডকে শক্তিশালী বানানোর জন্য নিজের নির্ধারিত কিছু ট্রিকস কে ব্যবহার করা উচিত। যাতে করে নিজের পাসওয়ার্ড মনে রাখা সহজ হয়। মজবুত পাসওয়ার্ড তৈরি করার জন্য এমন কিছু ট্রিকস কাজে লাগাতে হবে যা অন্য কেউ অনুমান করতে পারবে না।
যেমন কোন জায়গায় নাম বা শব্দ বসবে,নাম্বার কোন জায়গায় হবে, কোন জায়গায় কেপিটেল লেটার হবে এবং কোন শব্দ লওয়ার কেস লেটারে লিখতে হবে। আপনি নিজের আশেপাশের কোন জিনিসের নাম এতে যুক্ত করতে পারেন। বলার উদ্দেশ্যে এই যাতে আপনি নিজে থেকে বানানে ট্রিকসকে কাজপ লাগাতে পারেন।

#6 বাক্য ব্যবহার করা

নিজের পাসওয়ার্ডকে শক্তিশালী এবং আরো সুরক্ষিত করতে বিভিন্ন বাক্য ব্যবহার করতে পারেন। বাক্যটা এলোমেলোভাবেন সাজাবেন। অর্থাৎ ছোট হাতের অক্ষর এবং বরে হাতের অক্ষর কমবিনেশন করবেন। বাক্যের মধ্যে নাম্বার এবং বিশেষ চিন্হ ব্যবহার করবেন। যে বাক্য ব্যবহার করবেন তাতে কিছু পরিবর্তন পরিবর্ধন করার চেষ্টা করবেন।নতুন কিছু সংযোজন করবেন। এতে আপনার পাসওয়ার্ড অনেক বেশি শক্তিশালী হবে।

#7 পাসওয়ার্ড ম্যনেজার ব্যবহার করা

পাসওয়ার্ড সেট করার ক্ষেত্রে অনেক সময় ভুল হয়ে যায়। কোন শব্দ ছুটে যায় বা অন্য কোন ত্রুটি হয়। এগুলো থেকে রক্ষা পেতে পাওয়ার্ড ম্যনেজার বয়বহার করা উচিত। যা প্রথমবার পাসওয়ার্ড সেভ করে রাখে। যা আমরা চাইলে পরবর্তীতে দেখতে পারি।
যখন আমাদের প্রয়োজনীয় সাইটে লগিন করার প্রয়োজন হয় তখন আমরা এক ক্লিকেই পাসওয়ার্ড দিয়ে লগিন করতে পারি। গুগলের নিজস্ব পাসওয়ার্ড ম্যনেজার রয়েছে। যা আপনারা ফ্রীতে ব্যবহার করতে পারেন।

#8 সকল সোশ্যাল মিডিয়ার পাসওয়ার্ড এক না রাখা

আমরা অনেক সময় বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া যেমন ফেইসবুক, টুইটার, ওয়াটসআপ, ইন্সটাগ্রাম, ইউটিউব ইত্যাদির পাসওয়ার্ড এক রাখি।যা আমাদের অনেক বর একটি ভুল। কেননা যদি আমাদের একটা পাসওয়ার্ড হ্যাক হয়ে যায় তাহলে সমস্ত একাউন্টের পাসওয়ার্ড হ্যাক হয়ে যাবে।তাই আমাদের কখনো এটা করা উচিত না।
আমাদের প্রত্যেকটি একাউন্ট বা সিস্টেমের পাসওয়ার্ড আলাদা আলাদা রাখতে হবে।এবং এই পাসওয়ার্ডসমূহ মনে রাখার জন্য নিজেই কিছু ট্রিকস খাটাতে হবে।এ বিষয়ে আমাদেরকে সতর্ক থাকতে হবে।

#9 টু স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু রাখা

আমাদের একাউন্ট বা সিস্টেমের পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত রাখতে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন খুবি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেনোনা যদি আমাদের একাউন্টে টু স্টেপ ভেরিফিকেশন চালু থাকে তাহলে কেউ আমাদের একাউন্টে ঢোকার চেষ্টা করলে তা আমরা জানতে পারবো এবং তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারবো। তাই আমাদের একাউন্টকে যদি অধিক সুরক্ষিত রাখতে চাই। আমাদের একাউন্ট যদি হ্যাক হওয়ার ভয় থাকে।তাহলে আমাদের অবশ্যই এই টুলসটি ব্যবহার করা উচিত। এতে আমাদের একাউন্ট অনেকগুণ বেশি সুরক্ষিত থাকবে।

One thought on "কিভাবে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করবো? শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করার 9 টি টিপস"

Leave a Reply