পবিত্র কোরআনে কারিম আল্লাহতায়ালার
কালাম। অতএব যে আল্লাহ ও কিয়ামত
দিবসের ওপর ইমান রাখে, তার ওপর
কোরআনে কারিমের প্রতি সম্মান
প্রদর্শন করা ও অপমান থেকে তা রক্ষা
করা অবশ্য কর্তব্য। কোনো
কোরআনের কপি যদি, পুরনো হয়,
ছিড়ে যায় ও তার পৃষ্ঠাগুলো ব্যবহার
অনুপযোগী হয়, তাহলে এমন জায়গায়
রাখা যাবে না, যেখানে ওইসব পাতার
অমর্যাদা হয়, ময়লা-আবর্জনায় পতিত হয়,
মানুষ বা জীব-জন্তু দ্বারা পিষ্ট হয়।

প্রথমেই বলি হাত থেকে পড়ে
গেলে যা করবেন-

আমাদের সমাজে প্রচলন রয়েছে
যে, কারো হাত থেকে ভুলে বা অন্য
কোনোভাবে কোরআনে কারিম
পড়ে গেলে, কোরআনের ওজন
পরিমাণ চাল দান করে দিতে হয়। আসলে
এর কোনো শরয়ি ভিত্তি নেই। কারো
হাত থেকে কোরআন পড়ে গেলে
এ জন্য সে অনুতপ্ত হবে, ভবিষ্যতে
যেন অার কোরআন না পড়ে সে জন্য
সতর্ক থাকবে।

এভাবে শুধু পবিত্র কোরআনে কারিম
নয়, হাদিস গ্রন্থ থেকে শুরু করে,
কায়দা, আমপাড়া এমনকি ইসলামি বই-পুস্তক
যেখানে কোরআনের আয়াত লিপিবদ্ধ
আছে সেসবেরও একই হুকুম। এদিকে

লক্ষ্য রেখেই ইসলামি স্কলাররা বলেন,
যত্রতত্র বিশেষ করে পোস্টার
হ্যাণ্ডবিলে কোরআনের আয়াত বা
হাদিসের উদ্ধৃতি না লেখা। কারণ, এসবের
সংরক্ষণ হয় না।

পুরনো কোরআন যদি বাঁধাই করে পাঠ
উপযোগী করা সম্ভব হয়, তাহলে
পরিত্যক্ত না রেখে ব্যবহার করা
শ্রেয়। অনুরূপভাবে প্রকাশক বা কারো
অবহেলা ও ভুলের কারণে
কোরআনে কারিমে যদি ভুল ছাপা হয়,
আর সংশোধন করা সম্ভব হয়, তাহলে
সংশোধন করে পাঠ উপযোগী করা
জরুরি।

তবে পুরনো বা ভুলছাপার কোরআন যদি
একেবারেই পাঠ উপযোগী করা সম্ভব
না হয়, তাহলে অসম্মান ও বিকৃতি থেকে
সুরক্ষার জন্য কোরআনের ওই
কপিগুলো নিরাপদ স্থানে দাফন করা জরুরি।

নিরাপদ স্থান বলতে ওই স্থানকে বুঝায়,
যেখানে মানুষ চলাচল করে না,
ভবিষ্যতে অপমানের সম্মুখিন হওয়ার
সম্ভাবনা নেই।

পুরনো ও ব্যবহার অনুপযুক্ত কোরআন
সুরক্ষার আরেকটি পদ্ধতি হচ্ছে তা
পুড়িয়ে দেয়া। হজরত উসমান (রা.)
কোরাইশি হরফের কোরআন রেখে
অবশিষ্ট কোরআনের কপিগুলো
পোড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন
মর্মে একটি বর্ণনা ইমাম বোখারি (রহ.)
উল্লেখ করেছেন।

তবে পুরনো কোরআনের কপি
পোড়ানোর ক্ষেত্রে আলেমরা

বলেন, এসব ভালো করে পুড়ে ছাই
করা জরুরি, কারণ অনেক সময়
পোড়ানোর পরও হরফ অবশিষ্ট থাকে।

পুরনো কোরআন দাফন করা অপেক্ষা
পোড়ানো উত্তম। কারণ, দাফনের পর
কখনো ওপর থেকে মাটি সরে
গেলে দাফনকৃত কোরআনের
অসম্মান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই
পোড়ানো ও পোড়ানোর পর
ছাইগুলো দাফন করা অধিক শ্রেয়।

অনেকে ব্যবহার অনুপযুক্ত
কোরআনের কপি পানিতে ফেলে
দেন। এটা ঠিক না। কারণ, পানিতে ভাসমান
অবস্তায় এসব কোরআনের কপি যে
কোনো ময়লা-আবর্জনা কিংবা নাপাক
স্থানে গিয়ে ঠেকতে পারে। তাই এ
পদ্ধতি সঠিক নয়। তবে হ্যাঁ, একান্তই যদি
পানিতে ভাসিয়ে দিতে হয়, তাহলে
প্রবহমান নদীতে ভারী কোনো কিছু বেঁধে তার পর ফেলতে হবে।

3 thoughts on "কোরআন হাত থেকে পড়ে গেলে কিংবা পুরনো হলে যা করবেন"

  1. rupok12 Contributor says:
    ভালো লিখেছেন, মানুষের এ নিয়ে জানা উচিৎ। চালিয়ে যান, trickbd তে কাউকে তো প্রয়োজন ইসলামিক পোস্ট করার জন্য
    1. Hridoy ahmed Contributor Post Creator says:
      ধন্যবা।।
    2. Md.Shariar Abedin Nion Contributor says:
      Jazakamullah Khairan

Leave a Reply