সুদ দেওয়া, সুদ নেওয়া; ঘুষ দেওয়া, ঘুষ নেওয়া-সবই চরম অন্যায় এবং মারাত্মক কবীরা গুনাহ। সুদ-ঘুষের পয়সা হচ্ছে নিকৃষ্টতম হারাম উপার্জন। সুদ-ঘুষের কারণে অর্থ-ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যায় এবং সমাজ থেকে সুখ-শান্তি এবং কল্যাণ ও মঙ্গল বিলুপ্ত হয়ে যায়।
কুরআন মজীদে আল্লাহ তাআলা শুধু এই একটি গুনাহ-সুদে লিপ্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর তরফ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে-
ﻳﺎ ﺍﻳﻬﺎ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﺁﻣﻨﻮﺍ ﺍﺗﻘﻮﺍ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺫﺭﻭﺍ ﻣﺎ ﺑﻘﻰ ﻣﻦ ﺍﻟﺮﺑﻮﺍ ﺍﻥ ﻛﻨﺘﻢ ﺗﺆﻣﻨﻮﻥ، ﻓﺎﻥ ﻟﻢ ﺗﻔﻌﻠﻮﺍ ﻓﺄﺫﻧﻮﺍ ﺑﺤﺮﺏ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺭﺳﻮﻟﻪ، ﻭﺍﻥ ﺗﺒﺘﻢ ﻓﻠﻚ ﺭﺅﺱ ﺍﻣﻮﻟﻜﻢ ﻻ ﺗﻈﻠﻤﻮﻥ ﻭﻻﺗﻈﻠﻤﻮﻥ. ﻭﺍﻥ ﻛﺎﻥ ﺫﻭ ﻋﺴﺮﺓ ﻓﻨﻈﺮﺓ ﺍﻟﻰ ﻣﻴﺴﺮﺓ ﻭﺍﻥ ﺗﺼﺪﻗﻮﺍ ﺧﻴﺮ ﻟﻜﻢ ﺍﻥ ﻛﻨﺘﻢ ﺗﻌﻠﻤﻮﻥ .
তরজমা : হে মুমিনগণ! তেমারা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যা বকেয়া আছে তা ছেড়ে দাও যদি তোমরা মুমিন হও।
যদি তোমরা না ছাড় তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে যুদ্ধের জন্য প্রস্ত্তত হও। কিন্তু যদি তোমরা তওবা কর তবে তোমাদের মূলধন তোমাদেরই। এতে তোমরা অত্যাচার করবে না এবং অত্যাচারিতও হবে না।-সূরা বাকারা (২) : ২৭৮-২৭৯
বিদায় হজ্বের ঐতিহাসিক ভাষণে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেছেন-
ﻭﺭﺑﺎ ﺍﻟﺠﺎﻫﻠﻴﺔ ﻣﻮﺿﻮﻉ، ﻭﺃﻭﻝ ﺭﺑﺎ ﺃﺿﻊ ﺭﺑﺎﻧﺎ ﺭﺑﺎ ﻋﺒﺎﺱ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻤﻄﻠﺐ، ﻓﺈﻧﻪ ﻣﻮﺿﻮﻉ ﻛﻠﻪ .
অর্থ : জাহেলি যুগের রেবা বিলুপ্ত। প্রথম যে রেবাকে আমি রহিত করছি তা হচ্ছে আববাস ইবনে আবদুল মুত্তালিবের (প্রাপ্ত) রেবা।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১২১৮ (১৪৭); সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ৩০৭৪
আর ঘুষ তো অতি নিকৃষ্ট নাপাক এবং অতি ঘৃণিত বস্ত্ত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন-
ﻟﻌﻨﺔ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﺮﺍﺷﻲ ﻭﺍﻟﻤﺮﺗﺸﻲ .
অর্থাৎ ঘুষদাতা ও ঘুষগ্রহীতা উভয়ের উপর আল্লাহর অভিশাপ। মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৬৭৭৮, ৬৯৮৪; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৫০৭৭; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ২৩১৩
আরো ইরশাদ করেছেন-
ﻟﻌﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﺍﻟﺮﺍﺷﻲ ﻭﺍﻟﻤﺮﺗﺸﻲ ﻭﺍﻟﺮﺍﺋﺶ ﺍﻟﺬﻱ ﻳﻤﺸﻲ ﺑﻴﻨﻬﻤﺎ .
অর্থ : ঘুষদাতা ও ঘুষগ্রহীতা ও ঘুষের লেনদেনে মধ্যস্থতাকারী সকলের উপর আল্লাহ অভিশাপ করেছেন।-আলমুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন, হাকীম আবু আবদিল্লাহ ৪/১০৩
আসুন সবাই সুদ, ঘুষ পরিত্যাগ করার চেষ্ঠা করি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তৌফিক দান করুন। আমীন।
[https://free.facebook.com/Bigowap ]