আসসালামুয়ালাইকুম
সবাই কেমন আছেন??
তওবার সময়সীমাঃ
তওবা দ্রুত করা উচিত। যখন কেউ তার ভুল বুঝতে পারে সাথে সাথেই তওবা করা উচিত। একটি হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন: ‘নিশ্চয় পাপকারী মুসলিম বান্দা থেকে বামপাশের ফেরেশতা কলম উঠিয়ে রাখে ছয় ঘন্টা পর্যন্ত। বান্দা যদি অনুতপ্ত হয় এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা চায় তাহলে তা মাফ করে দেওয়া হয়, নতুবা একটি গুনাহ লিখা হয়।’(তাবারানী, বায়হাকী, ইমাম আলবানী হাদীসটিকে হাসান বলে অভিহিত করেছেন)
তাওবার একটি শর্ত হল, তাওবা করতে হবে মৃত্যুর আলামত প্রকাশের পূর্বে। মৃত্যুর আলামত প্রকাশ পেতে শুরু করলে তাওবা কবুল হবে না। যেমন আল্লাহ তায়ালা বলেন: ‘তাদের জন্য তাওবা নেই, যারা ঐ পর্যন্ত পাপ করতে থাকে, যখন তাদের কারো নিকট মৃত্যু উপস্থিত হয়। তখন বলে, নিশ্চয়ই আমি এখন তওবা করলাম।’ (সূরা আন-নিসা, ১৮) এ সম্পর্কিত একটি হাদীসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাঁর বান্দার তওবা মৃত্যুকালীন কষ্ট শুরু হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কবুল করে থাকেন।’ (তিরমিযী)
সুস্থ জীবন তওবার উপযুক্ত সময়। জীবন থেকে নিরাশ হওয়ার পর তওবার উপযুক্ত সময় আর থাকে না। এমনিভাবে পাপ করার সামর্থ থাকাকালীন সময়টা হল তওবার উপযুক্ত সময়। পাপ করার ক্ষমতা লোপ পেয়ে গেলে তওবা করা যথোপযুক্ত নয়। তবুও সর্বাবস্থায়ই তওবা করা উচিত।
তওবার আরেকটি শর্ত হলো কিয়ামতের লক্ষণ প্রকাশিত হওয়ার পূর্বেই তওবা করতে হবে। পশ্চিমাকাশে সূর্য উদয় হওয়ার পর তওবার দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ রাতে তাঁর কুদরতী হাত প্রসারিত করে রাখেন। যেন দিনে যে ব্যক্তি নাফরমানী করেছে সে যেন রাতে তাঁর নিকট তওবা করতে পারে। এমনিভাবে আল্লাহ দিনে তার কুদরতী হাত প্রসারিত করে দেন যেন রাত্রে যদি কোন ব্যক্তি পাপকাজ করে থাকে সে যেন দিনে তাঁর নিকট তওবা করতে পারে। আর এ অবস্থা পশ্চিমাকাশে সূর্য উদয় হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।(মুসলিম)
ভাল মৃত্যুর আলামত সমৃহ
==================
১. “যে ব্যক্তির সর্বশেষ কথা হবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ তিনি জান্নাতে প্রবেশ করবেন।” [আবু দাউদ, ৩১১৬]
২. “মুমিন কপালের ঘাম নিয়ে মৃত্যুবরণ করলে।” [আহমাদ (২২৫১৩), তিরমিযি (৯৮০), নাসায়ি (১৮২৮)
৩. “যে ব্যক্তি জুমার দিনে বা রাতে মৃত্যুবরণ করেন আল্লাহ তাকে কবরের আযাব থেকে নাজাত দেন।” [আহমাদ (৬৫৪৬), তিরমিযি (১০৭৪)
৪. “যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয় সে শহিদ [মুসলিম, ১৯১৫]
৫. “পাঁচ ধরনের মৃত্যু শাহাদাত হিসেবে গণ্য। প্লেগ রোগে মৃত্যু, পেটের পীড়ায় মৃত্যু, পানিতে ডুবে মৃত্যু, কোন কিছু ধ্বসে পড়ে মৃত্যু এবং আল্লাহর রাস্তায় শহিদ হওয়া।” বুখারি (২৮২৯), মুসলিম (১৯১৫)]
৫.“যে নারী জুমা (বাচ্চা) নিয়ে মারা যায় তিনি শহিদ।”। আবু দাউদ (৩১১১) “যে নারী তার গর্ভস্থিত সন্তানের কারণে মারা যায় তিনি শহিদ। সে নারীকে তার সন্তান সুরার (নাভিরজ্জু) ধরে টেনে জান্নাতে নিয়ে যাবে।” ‘জানায়িয’(৩৯)
৬. “একদিন, একরাত পাহারা দেয়া একমাস দিনে রোজা রাখা ও রাতে নামায পড়ার চেয়ে উত্তম। আর যদি পাহারারত অবস্থায় সে ব্যক্তি মারা যায় তাহলে তার জীবদ্দশায় সে যে আমলগুলো করত সেগুলোর সওয়াব তার জন্য চলমান থাকবে, তার রিযিকও চলমান থাকবে এবং কবরের ফিতনা থেকে সে মুক্ত থাকবে।” [মুসলিম (১৯১৩)]
৭. “যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলল এবং এ অবস্থায় তার মৃত্যু হলো সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। যে ব্যক্তি কোন একটি সদকা করল এবং এ অবস্থায় তার মৃত্যু হলো সেও জান্নাতে প্রবেশ করবে।” [মুসনাদে আহমাদ (২২৮১৩)
আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।