আসসালামু আলাইকুম,
সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভাল।
আজকে আলোচনা হবে “ইসলামি কিছু প্রশ্ন ও উত্তর যা দৈনন্দিন জীবনে আমাদের জানা অত্যাবশ্যক” নিয়ে।।
তো চলুন শুরু করা যাক।

১| প্রশ্নঃ বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির অগ্রগতি হওয়ার কারণে মোবাইল রেকর্ডার ইত্যাদির প্রচলন বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই যে কোনো জায়গায় মোবাইল রেকর্ডার ইত্যাদি থেকে কুরআনের তিলাওয়াত শোনা যায়। জানার বিষয় হল, মোবাইল, টেপ রেকর্ডার ইত্যাদি থেকে সিজদার আয়াত শুনলে কি সিজদা ওয়াজিব হবে?
উত্তরঃ মোবাইল, রেকর্ডার, সিডি ইত্যাদি থেকে সিজদার আয়াত শুনলে সিজদা ওয়াজিব হবে না। কেননা তিলাওয়াতের সিজদা ওয়াজিব হওয়ার জন্য বুঝমান, সুস্থমস্তিষ্কসম্পন্ন ব্যক্তি থেকে সরাসরি সিজদার আয়াত শ্রবণ করা শর্ত। তবে রেকর্ড থেকে সিজদার আয়াত শুনলেও সিজদা করে নেওয়া উত্তম।

-শরহুল মুনইয়াহ ৫০০; আলবাহরুর রায়েক ২/১২০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/১৮৪; রদ্দুল মুহতার ২/১০৮; জাওয়াহিরুল ফিকহ ৭/৪৫৬

২| প্রশ্ন
আমার মোবাইল মেমোরিতে পুরো কুরআন মজীদ ডাউনলোড করা আছে। আমি বিভিন্ন সময় তা বের করে তিলাওয়াত শুনি। এই মোবাইল নিয়ে টয়লেটে যাওয়া যাবে কি?

উত্তর
কুরআন মজীদের আয়াত বা আল্লাহ তাআলার নাম দৃশ্যমান থাকলে তা নিয়ে টয়লেটে যাওয়া নিষিদ্ধ। তাই কুরআনের আয়াত বা কোনো যিকির মোবাইলের স্ক্রীনে দৃশ্যমান অবস্থায় থাকলে তা নিয়ে প্রবেশ করা যাবে না। অবশ্য যদি স্ক্রীনে না থাকে বরং শুধু মেমোরি কার্ডে বা মোবাইল মেমোরিতে থাকে তবে ঐ মোবাইল নিয়ে কেউ টয়লেটে গেলে অসুবিধা হবে না।
-শরহুল মুনইয়াহ ৬০; ফাতহুল কাদীর ১/১৫০; আদ্দুররুল মুখতার ১/১৭৮

৩| প্রশ্নঃ
অনেক মানুষকে দেখি, নামাযের মধ্যে কল আসলে পকেট থেকে মোবাইল বের করে আগে দেখে নেয় কার কল আসল তারপর মোবাইল বন্ধ করে। এটা কি ঠিক? এটা কি আমলে কাছীর বলে গণ্য হবে?
উত্তরঃ
মোবাইল ফোন দেখে দেখে এক হাত দ্বারা বন্ধ করলে নামায নষ্ট হবে না। কেননা এটা আমলে কাছীরের অন্তর্ভুক্ত নয়। তবে কার কল আসল এটা ইচ্ছাকৃত দেখার কারণে নামায মাকরূহ হবে। কেননা নামায অবস্থায় কোনো লেখা দেখা এবং বোঝার চেষ্টা করা মাকরূহ। তাই এ থেকে বিরত থাকা জরুরি। কল আসামাত্রই মোবাইলটি এক হাত দিয়ে দ্রুত বন্ধ করে দিবে। বন্ধ করার জন্য বাটন দেখার প্রয়োজন হলে দেখতে পারবে।

প্রকাশ থাকে যে, মোবাইল ব্যবহারকারীদের কর্তব্য হল, মসজিদে প্রবেশের পূর্বেই অথবা অন্ততপক্ষে নামাযে দাঁড়ানোর পূর্বে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেওয়া। কেননা নামাযের মধ্যে মোবাইল বেজে উঠলে অন্য নামাযীদেরও ব্যাঘাত ঘটে। তাই যথাসময়ে ফোন বন্ধ করার প্রতি যত্নবান হতে হবে।

-আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৫৯; শরহুল মুনইয়াহ, পৃষ্ঠা : ৪৪৭; আদ্দুররুল মুখতার ১/৬৩৪, ৬২৪

৪| প্রশ্নঃ
কুরআন মাজীদের কোনো সূরা বা আয়াত মোবাইল সেট বা আই-প্যাডের স্ক্রিনে লেখা থাকলে তা অযু ব্যতীত স্পর্শ করা যাবে কি?

উত্তরঃ
মোবাইলে বা আই-প্যাডের স্ক্রিনে কুরআনের সূরা বা আয়াত দৃশ্যমান থাকলে আয়াতের উপর অযু ছাড়া স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে স্ক্রিনের যে অংশে আয়াত লেখা থাকবে না সে অংশে হাত লাগাতে পারবে।

-রদ্দুল মুহতার ১/১৭৩; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী পৃ. ৭৭

৫| এক দোকানে চোরাই মোবাইল, মেমোরি কার্ড, চার্জার ইত্যাদি স্বল্প মূল্যে বিক্রি করা হয়। মানুষ জেনে-শুনেই স্বল্প মূল্যে উপরোক্ত পণ্যগুলো ক্রয়ের জন্য সেখানে যায়। এখন প্রশ্ন হল, জেনেশুনে চোরাই মোবাইল বা অন্য কোনো পণ্য ক্রয় করা যাবে কি?
উত্তরঃ
চোরাই মাল ক্রয়-বিক্রয় করা সম্পূর্ণ হারাম। কারণ, বিক্রেতা এ মালের মালিক নয়। অথচ ক্রয়-বিক্রয়ের প্রধান শর্ত হলো, বিক্রেতা পণ্যের/সম্পদের মালিক হওয়া। কারো কোনো জিনিস চুরি করা বা আত্মসাৎ করা মহাপাপ। এ পাপে লিপ্ত ব্যক্তির তাৎক্ষণিক ফরয হলো খাঁটি দিলে তওবা করা এবং চুরিকৃত জিনিসটি মালিককে ফেরত দেওয়া। তা না করে এটিকে বিক্রি করে দেওয়া চুরি এবং আত্মসাতের মতো অপরাধকে আরো প্রতিষ্ঠিত করার নামান্তর। যা স্বতন্ত্র কবীরা গুনাহ। আর যে ব্যক্তি জেনে-শুনে তা ক্রয় করল সেও এ কবীরা গুনাহে শরিক হলো। উপরন্তু এ ক্রয়-বিক্রয় যেহেতু ভুয়া তাই না ক্রেতা এ পণ্যের মালিক হবে না বিক্রেতা মূল্যের মালিক হবে। এদের উভয়ের উপর ফরয,পণ্য মূল মালিককে ফেরৎ দেওয়া।

-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ২২৪৯৬; বাদায়েউস সানায়ে ৬/৩৭৪, ৩৪০; আলবাহরুর রায়েক ৫/২৫৯; আদ্দুররুল মুখতার ৪/১১০

অন্যায় জুলুম নিয়ে আমাদের একটি নতুন গজল।

আমাদের চ্যানেলঃ TipTop BD
তো আশা করি পোস্ট ভাল লেগেছে?
একটা লাইক তো পেতেই পারি। প্লিজ লাইক কমেন্ট করবেন। ধন্যবাদ

9 thoughts on "মোবাইল সম্পর্কে ইসলামি কিছু প্রশ্ন ও উত্তর যা দৈনন্দিন জীবনে আমাদের জানা অত্যাবশ্যক"

    1. Hridoy Mini Expert Author Post Creator says:
      thanks
  1. Nazmul_Hasan Contributor says:
    সুন্দর পোস্ট।জাজাকাল্লাহ খায়রান।
    1. Hridoy Mini Expert Author Post Creator says:
      thanks
  2. Rmtomal Contributor says:
    ভাই বলি কি ধর্ম সব জায়গায় দয়া করে নিয়ে আসবেন না
    1. Hridoy Mini Expert Author Post Creator says:
      ধর্ম সব জায়গায় আনবো না মানে আমরা তো ধর্মের জন্যই বেঁচে আছি। আর সেই ধর্ম হচ্ছে ইসলাম।
      তাছাড়া এখানে ক্যাটাগরি দেওয়া আছে ইসলামিক পোস্ট করার জন্য।
    2. SP Khalad Contributor says:
      কেন ভাই আপনার এতো চুলকানি কেনো?
      ও খারাপ কাজ ও করবেন আবার ধর্মের কথা দেখলে বলবেন এইসব এ ধর্ম আনবেন না??
  3. Sakib Contributor says:
    @Rmtomal apnar valo na lagle ignore koren mia, faul comment koren ken?
  4. A M Contributor says:
    সুন্দর.
    তবে কম হয়ে গেছে, আরো কয়েকটি প্রশ্ন যোগ করে তারপর পোস্ট করলে ভালো হতো 🙂

Leave a Reply