আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
প্রিয় ভাই ও বোনেরা আশা করছি আল্লাহর রহমতে আপনারা সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছি এবং সুস্থ আছি আলহামদুলিল্লাহ।
আজকে আমি আলোচনা করব যে ৭টি কাজের কারণে মানুষ গরীব থাকে অর্থাৎ যে ৭ টি কাজের জন্য ধন সম্পদ আসবে না।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দুজন বিশিষ্ট সাহাবী আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু এবং হযরত ওসমান গনি রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
আমরা এই দুইজন সাহাবী সম্পর্কে সবাই জানি। তারা ছিলেন অত্যাধিক পরিমাণে সম্পদের মালিক। তারা হালাল রোজগারের মাধ্যমে আয় করায় তাদের সম্পদের কমতি ছিল না। আর তাদের এই অটেল সম্পত্তি তারা ইসলামের জন্য অকাতরে দান করেছেন।
আজকে পৃথিবীতে অনেক দ্বীনদার ও ঈমানদার মুসলিম আছেন যারা চান রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ধনী সাহাবীদের মত সম্পদশালী হতে এবং চান সেই সকল অর্থ-সম্পত্তি ইসলামের জন্য অকাতরে দান করবেন এবং ব্যয় করবেন।
কিন্তু আমাদের মনের অজান্তেই ৭টি অভ্যাস রয়েছে যার কারণে দরিদ্রতা আমাদের পিছু ছাড়ে না যাদের টাকা-পয়সা নাই যারা হতদরিদ্র তাদের অনেক কষ্ট। আর এই অভাবের কারনেই মানুষের কষ্ট আসে। তাই তাদের কথা চিন্তা করে আজ আমি আপনাদের কাছে এমন একটি পোস্ট নিয়ে এসেছি যা পড়ার মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন আপনার অজান্তেই মারাত্মক একটি ভুল যার কারণে আপনি সম্পদশালী হতে পারছেন না বা দরিদ্রতা আপনার পিছু ছাড়ছে না।
আমরা যদি এই বিষয়গুলির কাছ থেকে দূরে থাকতে পারি তাহলে অভাব ও দরিদ্রতা আমাদের থেকে দূরে পালাবে ইনশাল্লাহ।
কে না চায় ধনী হতে? প্রচুর সম্পদের মালিক হতে? সবাই কম বেশি চায় ধনী হতে। তাই চলুন আজকের পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে জেনে নেই যে ৭ টি কাজ ছেড়ে দিলে অভাব-অনটন দরিদ্রতা আপনার পিছু ছেড়ে দিবে এবং আপনি সম্পদশালী হয়ে উঠবেন যদি আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস থাকে এবং কঠোর পরিশ্রমী হোন।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও দরিদ্রতা থেকে আল্লাহর কাছে মুক্তি চেয়ে দোয়া করেছেন কারণ তিনি জানতেন যে দরিদ্রতা অনেক সময় আমাদের ঈমানকে নষ্ট করে দিতে পারে।
যে সকল কাজ আমাদের দারিদ্রতার কারণ তার প্রথম নাম্বারটি হলো:
১। যারা তাড়াহুড়ো করে নামাজ আদায় করে:
তাদের এই কারণেই দরিদ্রতা আসে তাই তাড়াহুড়া করে নামাজ আদায় করা ছেড়ে দিতে হবে। নামাজের সময় আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে আপনি কার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন এবং কার এবাদত করছেন। অবশ্যই আপনার মনে রাখতে হবে আপনি যে কাজের জন্য তাড়াহুড়ো করে নামাজ পড়ছেন সেই কাজটাকি নামাজের চেয়েও অধিক মূল্যবান?
সব সময় মনে রাখবেন আপনি এমন একজনের সামনে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করছেন তিনি এই সমস্ত জাহানের সৃষ্টিকর্তার আমার আপনার সকলের সৃষ্টিকর্তা। তাই নামাজের সময় কখনই তাড়াহুড়া করবেন না ধীরে সুস্থে স্থির ভাবে মনোযোগ সহকারে নামাজ আদায় করবেন।
২। দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করা:
যারা দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করেন তারা আজই তা পরিবর্তন করুন এইটা শয়তান ইবলিশ এর কাজ। এর কারণে দরিদ্রতা আসে।
৩। প্রস্রাবের জায়গায় যারা ওযু করে:
এ জন্য উলামায়ে কিরাম বলে থাকেন বাথরুমে ঢুকে অজু করা নিষেধ। যদি একান্তই করতে হয় তবে প্রস্রাবের জায়গা থেকে দূরে সরে পবিত্র স্থানে দাঁড়িয়ে ওযু করা উচিত।
৪। দাঁড়িয়ে পানি পান করলে দরিদ্রতা কোনোভাবেই ওই ব্যক্তিকে ছাড়ে না:
আপনি যদি সম্পদশালী হতে চান দরিদ্রতা দূর করতে চান আর যদি দাঁড়িয়ে পানি পান করার অভ্যাস থাকে তাহলে অবশ্যই তা পরিবর্তন করুন। আমরা জানি যে আমাদের প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত হচ্ছে বসে ৩ ঢোকে পানি পান করা।
দাঁড়িয়ে পানি পান করা মৃত্যুর কারণ অবধি হতে পারে বর্তমান সাইন্সও আমাদের তাই বলছে। তাই অবশ্যই আপনার উচিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত মেনে বসে পানি পান করা এবং দাঁড়িয়ে পানি পান করা সুন্নত পরিপন্থী কাজ।
৫। যারা ফু দিয়ে মোমবাতি বা এজাতীয় কিছু নিভান:
তারাও দরিদ্রতার সম্মুখীন হন। সুতরাং এটা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৬। যারা দাঁত দিয়ে নখ কাটেন:
আমাদের মত ছোট বড় অনেকেই আছেন যারা সময় পেলেই দাঁত দিয়ে নখ কাটা শুরু করি এটা মোটেও করা যাবে না এমনকি ব্যক্তিগতভাবে এই অভ্যাসটা আমারও ছিল কিন্তু জানার পরে ইনশাল্লাহ আমি দাঁত দিয়ে নখ কাটা ছেড়ে দিয়েছি আলহামদুলিল্লাহ।
যদি অাপনার এই কু অভ্যাস দূর করতে পারেন তাহলে ইনশাল্লাহ দারিদ্রতা আপনার থেকে দূরে সরে যাবে এবং আপনি সম্পদশালী হবেন আর যদি এটা ত্যাগ করতে না পারেন তাহলে দারিদ্রতা আপনার ঘরে আসবেই এটা নিশ্চিত থাকেন।
৭। খাওয়া-দাওয়া করার পরে শেষে পরিহিত বস্ত্র বা কাপড় দিয়ে মুখ সাফ করা:
এটা একেতো একটি অসামাজিক ও নোংরা কাজ এবং রুচিশীল মানুষের কখনোই এই কাজটি করে না এর ফলে যেমন আপনি রোগ জীবাণু বহন করে বেড়ান তেমনি এটাও আপনার পরিবারে দারিদ্রতা আসার মূল কারণ।
রুচিশীল ও পরিষ্কার মানুষেরা কখনোই এই কাজটি করে না কিন্তু যদি আপনার এই বদ অভ্যাস টি থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই পরিবর্তন করুন।
প্রিয় দর্শক ও শ্রোতা এই সাতটি অভ্যাস আমরা যদি পরিত্যাগ করতে পারি তাহলেই ইনশাল্লাহ দরিদ্রতা কখনো আমাদের ছুঁতে পারবে না তাছাড়া সম্পদশালী হওয়ার অন্যতম দিক হচ্ছে আপনার কাছে যে রকম বা যতটুকু টাকা থাকুক না কেন সাধ্য অনুযায়ী আত্মীয়দের খাওয়ানো বা দান-খয়রাত আপনাকে করতে হবে।
রমজানের সময় যাকাত দিলে দান খয়রাত করলে আল্লাহ তাআলা আপনার সম্পদকে বৃদ্ধি করে দিবেন আরো পবিত্র করে দিবেন। যাকাত দেওয়া মানেই যে 100-200 জন মানুষকে দিতে হবে এর কোন মানে নেই। আপনার সাধ্য অনুযায়ী যত মানুষকে পারেন যাকাত দিবেন। যদি আপনার সাধ্য একজন মানুষ হয় তাহলে ওই একজন মানুষকেই যাকাত প্রদান করবেন।
আল্লাহতালা আপনার ওই জায়গাতেই খুশি হবে এবং আপনার সম্পদ বৃদ্ধি করে দিবেন, দরিদ্রতা আপনার থেকে দূরে সরিয়ে নিবে ইনশা’আল্লাহ।
আশা করছি এই পোস্টটি আপনাদের ভাল লেগেছে ভাল লাগলে অবশ্যই আপনাদের বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন যাতে তারাও উপকৃত হতে পারে।
আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
কোন হাদিস এ এগুলো বলা থাকলে. সূত্র দিবেন।
এই রকম সূত্র ছাড়া আজাইরা পোস্টের কারণে আজকের সমাজে কুসংস্কার বেড়ে গেছে।