আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।
প্যান্ট পরার সময় একটি ভুল করলে কেয়ামতের দিন অল্লাহর অনুগ্রহ পাবেন না
বর্তমানে অনেক বিষয়ে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) এর বাণী এবং সমাজের বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো। রাসূল (সাঃ) বলেছেন → ছেলেদের পরিধেয় কাপড় থাকবে টাকনুর উপরে আর মেয়েদের পায়ের পাতা পর্যন্ত। কিন্তু এখন হচ্ছে টা কি..? ছেলেদের কাপড় থাকে পায়ের পাতা পর্যন্ত। আর মেয়েদের টাকনুর উপর। আমরা সবাই উল্টো পথের পথিক।
আমরা যুবক যারা আছি তাঁরা প্যান্ট, টাউজার বা লুঙ্গি ব্যবহার করি বলতে গেলে সবার কাপড় আমাদের টাকনুর নিচেই ঝুলে থাকে। এমনকি জিন্সের প্যান্টটি ভাঁজ গোড়ালির নিচেও ঢুকে যায়। যারা ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করছি তাঁদের মধ্যেও অনেকেই এই বিষয়টা নিয়ে সিরিয়াস নই।
যখন নামাজ পড়ি, প্যান্ট গুটিয়ে রাখি বা লুঙ্গি টাকনুর উপরে উঠিয়ে রাখি। অন্য সময় আবার আগের মতো। যদিও কাপড় গুটিয়ে নামাজ সম্পূর্ণ নিষেধ। অর্থাৎ নামাজে এবং নামাজের বাহিরে ছেলেদের জন্য সব সময় কাপড় থাকবে পায়ের টাকনুর উপরে।
চলুন এই বিষয়ে রাসূলে পাক (সাঃ) কি বলেছেন → বুখারী শরীফের ৫৭৮৭ নাম্বার হাদিসে বলা হয়েছে, ছেলেদের পরিধেয় বস্ত্রের যে অংশ পায়ের গোড়ালির নিচে থাকবে, সে অংশ জাহান্নামে যাবে।বিচারের মাঠে আল্লাহ তায়ালা এই ব্যক্তির দিকে তাকাবেন না। আল্লাহর দয়া ও রহমত দিয়ে ঐ ব্যক্তিকে তাঁর গুনাহ থেকে পবিত্র করবেন না।
যে ব্যক্তি অহংকার বসত পরিদেয় বস্ত্র ঝুলিয়ে পরিধান করে । অনুরূপ হাদিস বর্ণিত মুসলিম শরীফেও দেখে নিতে পারেন। ( হাদিস নাম্বার ৫৩৪৬ এবং ৫৩৫৬)
তো এই হাদিস গুলো শুনে অনেকেই বলতে শুনি ভাই! আমি তো অহংকার বসত কাপড় ঝুলিয়ে পরছিনা অতঃপর তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলে, তো তাহলে কেনো আপনি প্যান্ট কেটে নিচ্ছেন না..? তখন তাঁদের বেশিরভাগ উত্তর হয়ঃ ভাই! টাকনুর উপর প্যান্ট পড়লে কেমন যেন খালি খালি লাগে, বন্ধুবান্ধব নানান কথা বলে৷
হ্যাঁ এইযে কেমন কেমন লাগে এটাই আপনার অহংকার। আবার অনেকে বলে, দূর ভাই, ঐটুকু জায়গা জাহান্নামে দিলে ক্ষতি কি..? ওহ তাই না..? চলুন তাহলে এই বিষয়টা বুঝার চেষ্টা করি। বিষয়টা এমন না যে টাকনু থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত কেটে শুধু ঐ অংশ টুকু দেওয়া হবে জাহান্নামে ।
আর আপনি জান্নাতে বসে হাওয়া বাতাস খাবেন। আবার অনেকেই বলে আরে ভাই জাহান্নামে গেলেও কিছু সময় পর ঠিকই আবার জান্নাতে চলে আসবো! এতো ভাবার কি আছে..? তাদের ভাব খানা এমন যেন জাহান্নাম আমাদের মামার বাড়ি। যখন ইচ্ছে গেলাম আবার যখন ইচ্ছে মামার বাড়ির মোয়া মুড়ি খেয়ে চলে আসলাম।
জাহান্নামের আগুন কি আমাদের ১ মিনিট সয্য করার ক্ষমতা আছে? যাইহোক এই বিষয়টার জন্যই আমাদের যদি জাহান্নামে মধ্যে সবথেকে কম শাস্তির দেওয়া হয়, তাহলে আপনার অবস্থা কি হবে একবার ভেবে দেখেছেন..?
জাহান্নামিদের মধ্যে সব থেকে কম শাস্তি দেওয়া হবে নবীজির চাচা আবু তালিব কে। তাঁর পায়ে আগুনের জুতা পরানো হবে, শুধু এতেই তাঁর মাথার মগজ টগবগ করে গলে গলে পড়তে থাকবে। আল্লাহ আকবার। ভাবুন সয্য করতে পারবেন তো এই ভয়ানক শাস্তি…? আবার অনেক বোকা মানুষ বলে থাকে, কালেমা যেহেতু পড়েছি, দু,চারদিন জাহান্নামের শাস্তি দিয়ে আল্লাহ তো জান্নাতে দিবেনই৷
অনেক সহীহ হাদিস দ্বারা প্রমানিত যে, জাহান্নাম গভীরতা হবে ৭০ বছরের পথ।সেই পথ কি মানুষ হাঁটার গতি নাকি ঘোড়া প্লেন রকেট কিংবা আলোর গতিতে..?
হযরত আবু হুরাইরাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন → আমরা রাসূল (সাঃ) এর সাথে উপবিষ্ট ছিলাম। তিনি হটাৎ একটি বিকট আওয়াজ শুনতে পেলেন। তখন নবী করীম (সাঃ) বললেন → তোমরা কি জান এটা কিসের আওয়াজ..? বর্ণনাকারী বলেন আমরা বললাম আল্লাহ ও তার রাসূলই অধিক জ্ঞাত।
তিনি বললেন এ একটি পাথর যা সত্তর বছর আগে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়েছিল । তারপর তা কেবল নিম্নে পতিত হতে হতে এখন সেটা তার তলদেশে গিয়ে পৌছেছে। (সহীহ মুসলিম ; অধ্যায় ৫৩ (হাদিস একাডেমি) হাদিস নাম্বার ৭০৬০( ইসলামিক ফাউন্ডেশন) ৬৯০৪,ইসলামিক সেন্টার ৬৯৬১)
আচ্ছা ধরেই নিলাম ৭০ বছর পায়ে হাঁটার দুরত্বের সমান। তো যেখানে জাহান্নামের তলদেশে যেতেই সময় লাগবে ৭০ বছর! সেখানে এটা ভাবেন কি করে যে দু চারদিন জাহান্নামে শাস্তি ভোগ করার পর জান্নাতে চলে যাবেন .? দুইটা হাদিস বলেই আজকের আর্টিকেল শেষ করবো।
কেউ নিজের আমল নিয়ে জান্নাতে যেতে পারবেনা যদি আল্লাহর দয়া রহমত অনূগ্রহ এবং করুণা না থাকে! (বুখারী হাদিস নাম্বার ৫৬৭৩)
আল্লাহ তায়ালা তাঁর ১০০ ভাগ দয়া রহমত ও অনুগ্রহের মধ্যে একটি ভাগ রহমত সকল সৃষ্টি কুলের মধ্যে বন্টন করে দিয়েছেন। আর বাকী ৯৯ টি রহমত নিজের কাছেই রেখে দিয়েছেন । যাতে রাব্বুল আলামীন বিচারের মাঠে বান্দার জন্য রহমত পূর্ণ করতে পারেন। ( সহীহ ইবনে মাজাহ হাদিস নাম্বার ৪২৯৩)
প্রিয় ভাই ও বোনেরা এই দুটি হাদিস থেকে দুটি বিষয় স্পষ্ট। আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহ ছাড়া কেউই জান্নাতে যেতে পারবে না। আর আল্লাহ ৯৯ ভাগ দয়া করুনা তিনি নিজের কাছেই রেখেছেন কঠিন বিচার দিবসে আমাদের ক্ষমা করে দেওয়া জন্য। একটু ভাবুন! টাকনুর নিচে প্যান্ট পরার কারণে যদি আল্লাহ আমাদের দিকে না তাকান দৃষ্টিইনা দেন!
তাহলে কি আমরা আমরা আল্লাহর অনুগ্রহ পাবো?আল্লাহ কি আমাদের মাপ করবেন? আমাদের পক্ষে কি জান্নাতে যাওয়া সম্ভব হবে? নিজেকে নিয়ে একটু ভাবুন খুব ছোট্ট একটা বিষয়। চাইলেই আমরা আল্লাহর দয়া আর অনুগ্রহ নিয়ে জান্নাত যেতে পারি ইনশাআল্লাহ।
আশা করি সবাই সবকিছু বুঝতে পেরেছেন। কোথাও সমস্যা হলে কমেন্ট করে জানাবেন অথবা ফেসবুকে জানাতে পারেন ফেসবুকে আমি