আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

একজন নেককার স্ত্রীর ১০টি সেরা গুণ!

এই পৃথিবীতে একজন পুরুষ মানুষের জন্য সর্বোত্তম সম্পদ হচ্ছে নেককার স্ত্রী। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন →পুরো দুনিয়া ভোগের সামগ্রী আর সবচেয়ে উপভোগ্য সম্পদ হলো নেককার স্ত্রী বা পূর্ণবতী নারী। (মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ ৩৫১২)

ইসলামের স্বামী এবং স্ত্রী উভয়কেই দিয়েছে ভিন্ন ভিন্ন মর্যাদা। হযরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত নবী সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন →তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তি সর্বোত্তম যে তার স্ত্রীর নিকট উত্তম আর আমি তোমাদের মধ্যে আমার স্ত্রীর নিকট সর্বোত্তম ব্যক্তি।( তিরমিজি হাদিস নাম্বার ৩৮৯৫)

একজন স্ত্রী স্বামীর কাছে কিভাবে উত্তম স্ত্রী হতে পারবেন তার জন্য আজকে আমরা দশটি ইসলামিক টিপস নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ। আশা করি আপনারা সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়বেন।

১. দাম্পত্য জীবনে সুখী হওয়ার জন্য সর্বপ্রথম কাজ হলো আল্লাহর কাছে দোয়া করা। স্ত্রী প্রথম কর্তব্য হলো দোয়া করা। আসলে আমাদের জীবনে সকল ভালো বিষয়গুলো হচ্ছে মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে। সুতরাং আল্লাহকে আমাদের ভুলে গেলে চলবেনা। আল্লাহই পারেন আমাদের দুনিয়ার বৈবাহিক জীবনে সফলতা দান করতে। এজন্য একজন স্ত্রীকে অবশই আল্লাহর কাছে এভাবে দোয়া করতে হবে। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের বিবাহিত জীবনকে উত্তমরূপে জীবন যাপন করার তৌফিক দান করুন এবং আমাদেরকে জান্নাত দান করুন। কেননা রাসূল (সাঃ) বলেছেন →দোয়াই ইবাদত। ( তিরমিজি হাদিস নাম্বারঃ ৩৩৭০)

অবশ্য ইবাদত একটি ব্যাপক অর্থবোধক শব্দ।দোয়া যে ইবাদত তাতে কোন সন্দেহ নেই।দোয়া সম্পর্কে রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম আরো বলেন →আল্লাহর নিকট বান্দার দোয়া অপেক্ষা অধিক মূল্যবান জিনিস আর কিছু নেই। (তিরমিজি হাদিস নাম্বারঃ ৩২৯২)

২. স্বামীর কথা শোনা এবং তার আনুগত্য করা স্ত্রীর কর্তব্য হচ্ছে স্বামীর আনুগত্য করা। কেননা স্বামীই হচ্ছে ঘরের কর্তা সুতরাং তাকে তার প্রাপ্য সম্মান ও অধিকার দেওয়া হচ্ছে একজন আদর্শ স্ত্রীর কর্তব্য। রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন→ যদি আমি কাউকে কারো জন্য সিজদা করতে আদেশ করতাম তাহলে নারীকে আদেশ করতাম সে যেন তার স্বামীকে সিজদা করে।( মিশকাতুল মাসাবীহ হাদিস নাম্বারঃ ৩২৫৫)

৩. স্বামীকে সবসময় খুশি রাখার চেষ্টা করা স্বামীকে সবসময় খুশি রাখা। হাদিসের ভাষ্য হলো শ্রেষ্ঠ স্ত্রীর সেই যার প্রতি তার স্বামী দৃষ্টিপাত করলে স্বামীর মনে আনন্দের উদ্রেক করে। স্বামী কোন আদেশ করলে তা পালন করে এবং তার জীবন ও সম্পদের অপছন্দনীয় বিরুদ্ধাচরণ না করে সেই শ্রেষ্ঠ স্ত্রী।( সিলসিলাতুলস সহিহ হাদিস নাম্বার ১৮৩৮)

আমাদের মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম তিনি আরো বলেন→ কোন নারী যদি এমন অবস্থায় মারা যায় তার স্বামী তার উপর সন্তুষ্ট তাহলে সে জান্নাতে যাবে এবং স্ত্রীর জন্য নেককার স্বামী তার জান্নাত অথবা জাহান্নামই। (নাসাঈ তাবারানী,আদাবুয যিফাফ ২৮৫ পৃঃ) সুতরাং একজন আদর্শ স্ত্রী সব সময় কামনা হবে স্বামীকে সন্তুষ্ট রাখা।

৪. ঝগড়া এবং সব ধরনের রাগারাগি করা থেকে বিরত থাকা কারণ ছোট একটি রাগারাগি হতে পারে স্বামী স্ত্রীর মাঝে দ্বন্দ্বের কারণ। হয়তো স্ত্রীর কোন দোষ নেই, এমনকি স্ত্রীর কোন দোষ করেনি। তবুও স্ত্রীর উচিত হবে রাগারাগি সময় ঝগড়ার সময় ক্ষমা চেয়ে পরিস্থিতি অনুকূলে নিয়ে আসা। নিজেদের মাঝে কোন বিষয়ে প্রতিবাদ না করা। কেননা প্রতিবাদ করলেই মূলত দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।

এমন পরিস্থিতি সূচনাতেই যদি স্ত্রী ক্ষমা চায় এবং বলে আসো আমরা মিলে যায়। তাহলে কখনো স্বামী-স্ত্রীর মাঝে দ্বন্দ্ব হবে না। তবে হ্যাঁ স্বামী যদি পরকীয়ার মত কোন জঘন্য কাজ করে বসে তাহলে তার জন্য ঠান্ডা মাথায় বসে আলোচনা করা যেতে পারে। তবে তার জন্য কোনো ভাবেই ঝগড়া রাগারাগি করা যাবে না। ঠান্ডা মাথায় বিষয়গুলো সমাধান করতে হবে। তাছাড়া (নেককার) স্বামীর কোনো যৌক্তিক আদেশ অমান্য করলে সেই স্ত্রীর নামাজ কবুল হয় না।

রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেনঃ যে স্ত্রী তার স্বামীর(নেককার) অবাধ্য আচরণ করেছে, সে তার বাধ্য না হওয়া পর্যন্ত সেই স্ত্রীর নামাজ কবুল হয় না। (আস- সিলসিলাতুল সহিহাহ হাদিস নাম্বারঃ ২৮৮)

৫. স্বামীকে তার ভালো কাজের জন্য ধন্যবাদ জানানো একজন আদর্শ স্ত্রী যখন স্বামীকে তার ভালো কাজের জন্য ধন্যবাদ জানাবে তখন স্বামী খুশি হবেন। এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। আমাদের সমাজের যে সকল নারীরা এমন করেন না তাদের বৈবাহিক জীবন খুব একটা ভালো হয় না।

৬. স্বামীর সাথে আড্ডা দেওয়া এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ পুরুষদের স্বাভাবিক স্বভাব হচ্ছে তারা হৃদয়গ্রাহী ও হাস্যোজ্জ্বল নারীদের পছন্দ করে। আমাদের নবী সাল্লাহু সাল্লাম একটি হাদিসে বলেছেন→ হে জাবের! তুমি এমন নারীকে বিবাহ করো যে তোমাকে আনন্দ দেবে এবং তুমিও তাকে আনন্দ দেবে।

৭. নিজে সর্বদা হাস্যোজ্জ্বল থাকুন অনেক আগে থেকেই নারীরা ঘরে গয়না পরতো ও সাজ-সজ্জা করে থাকতো। পবিত্র কুরআনে এসেছে →তোমার কাছে যেই ধরনের গয়না আছে তুমি তা পরো এবং সুন্দর সুন্দর পোশাক পরিধান করো তোমার স্বামীর জন্য।(প্রসঙ্গিক সূত্রঃ সূরা আরাফ আয়াত ২৬, সূরা ২৪/আন নূর আয়াত ৩১,বুখারী ৯১, ফতাওয়া ইবনে উষাইমীন ২/৮২৫) সুতরাং একজন আদর্শ নারীর কর্তব্য হবে এই আদর্শকে অনুসরণ করা।

৮. জান্নাতি নারীর বৈশিষ্ট্যগুলি পর্যালোচনা করুন এবং তাদের অনুকরণ করার চেষ্টা করুন কেননা কুরআন ও হাদীসে জান্নাতি নারীদের যে বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করা হয়েছে সে বৈশিষ্ট্যগুলো ধারণ করার চেষ্টা করুন।

৯. স্বামী কাজ থেকে ফিরলে তার যত্ন নিন ধরুন আপনার স্বামী এখন অফিস শেষে বাসায় ফিরবে সুতরাং আপনি আপনাদের বাসাটাকে সুন্দরভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে ভালোভাবে গুছিয়ে রাখুন। নিজেও ভালো কাপড় পরিধান করুন এবং সন্তানদেরও ভালো কাপড় পরিধান করান। এমনটাই একজন পুরুষের কাম্য। আর এর মাধ্যমেই মূলত স্বামী-স্ত্রী বৈবাহিক জীবনে সুখ-শান্তি বৃদ্ধি পায়।

১০. স্বামী হৃদয় জয় করার জন্য আপনি সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন আল্লাহ আপনাকে সকল প্রকার সৌন্দর্য দান করেছেন। আপনি আপনার এ সকল সৌন্দর্যকে ব্যবহার করে আপনার স্বামী হৃদয়কে জয় করুন। সবশেষে রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম পুরুষদের যেমন নেককার নারী গ্রহণ করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন।

তেমনি নারীদেরকেও আদর্শ নারীর সকল গুণাবলী অর্জনের প্রতি উৎসাহ দিয়েছেন। যাতে তারা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় ও নেককার নারী হিসেবে গণ্য হতে পারে। আল্লাহ পৃথিবীর সব মুমিন নারীকে নেককার সন্তান, নেককার স্ত্রী ও নেককার মা হওয়ার তৌফিক দান করুন আমীন।

আশা করি সবাই সবকিছু বুঝতে পেরেছেন। কোথাও সমস্যা হলে কমেন্ট করে জানাবেন অথবা ফেসবুকে জানাতে পারেন ফেসবুকে আমি

Leave a Reply