আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।
২টি কারণে মানুষের পতন হয়
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সাল্লাম মানুষের পতনের দুটি কারণ উল্লেখ করেছিলেন ।আজকে এই আর্টিকেলে আমরা সেই দুটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। যে দুটি বিষয়ে কোনো মানুষের মধ্যে থাকলে তার পতন অনিবার্য। আজকের গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি আপনার জন্য কল্যাণ নিয়ে আসতে পারে।
জীবনে চলার পথকে সুন্দর ও অর্থবহ করে তুলতে সবর, সহনশীলতা, পরিশ্রম,কষ্ট ও বীরত্বপূর্ণ জীবনযাপন মুমিনের জীবনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হওয়া প্রয়োজন। সুখ-দুঃখ আনন্দ মুসিবত সবসময়ই মুমিনের জীবন যাপনে অভ্যস্ত হবে। মুমিন মুসলমান কখনো আরামপ্রিয়, পরিশ্রমবিমুখ, কোমলতা প্রিয়, অলস, সুখপ্রত্যাশী, অমনোযোগী ও দুনিয়া পূজারী হতে পারে না। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম তাঁর প্রিয় সাহাবী হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুরকে ইয়েমেনের গভর্নর করে পাঠানোর সময় এই মর্মে নসিহত করেছিলেন যে ‘ হে মুয়াজ’ আরাম প্রিয়তা থেকে বিরত থাকবে। কেননা এটি মানুষকে সফল হতে দেয় না। (মিসকাত)
রাসূল করীম সাল্লাহু সাল্লাম আরো বলেছেনঃ অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ তালাশ করো, নিজের হাতের পরিশ্রমে উপার্জিত জীবিকার চেয়ে উত্তম আহার আর কেউ কখনো গ্রহণ করেনি। (সহিহ বুখারি হাদিস নাম্বারঃ ২০৭২)
অর্থাৎ এই হাদীসের দ্বারাও আল্লাহর রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম আমাদেরকে অলসতা পরিহার করতে বলেছেন। ইমাম আবু দাউদ রহমতুল্লাহি তার বিখ্যাত গ্রন্থ আবু দাউদে( হজরত আবু উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনায়) উল্লেখ করেন -সাদসিধে জীবনযাপনকে ঈমানের নিদর্শন বলেছেন বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম। যারাই আরাম প্রিয়তার দিকে ঝুঁকে পড়েছে, শুধুমাত্র দুনিয়ার প্রতি আসক্ত হয়েছেন তাদের অনিবার্য ধ্বংসের ব্যাপারে সতর্কবার্তাও তুলে ধরেছেন প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম।
হাদীসে এসেছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে সম্বোধন করে বললেন – আমার উম্মতের উপর ঐ সময় খুবই কাছাকাছি, যখন অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর লোকেরা তাদের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়বে, যেভাবে ক্ষুধার্ত লোকেরা খাবার গ্রহণে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তখন এক সাহাবী জিজ্ঞেস করলেন – হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সংখ্যা কি এতই কম হবে যে, আমাদের ধ্বংসের জন্য অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর লোকেরা একত্রিত হয়ে আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে…?
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম তখন বললেন → না, সে সময় তোমরা সংখ্যায় কম হবেনা বরং সেই সময়ে তোমাদের সংখ্যা অনেক বেশি হবে। কিন্তু তোমরা বন্যায় ভাসমান খড়কুটোর মতো হালকা হবে। তোমাদের শত্রুদের অন্তর থেকে তোমাদের প্রভাব দূর হবে আর হীনমন্যতা ও কাপুরুষতা তোমাদেরকে ঘিরে ধরবে। তখন এক সাহাবী জানতে চাইলেন ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেন এই হীনমন্যতা আসবে…?
তখন নবী সল্লালাহ সালাম বললেন →এই দুটি কারণে এক নাম্বারঃ ঐ সময় দুনিয়ার প্রতি তোমাদের ভালোবাসা বেড়ে যাবে। এবং দ্বিতীয় নাম্বারঃ তোমরা দুনিয়াকে অধিক ভালোবেসে মৃত্যুকে ভয় করতে থাকবে। আখেরাতের জন্য তোমাদের মৃত্যু ভয় থাকবে না। অথচ আখেরাতকে স্বরণ রেখে তোমাদের মৃত্যুকে বেশি বেশি ভয় করা উচিত। ( আল মুস্তাদরিক আলাস সাহিহাইন হাদিস ৮৯৪৯, আবু দাউদ হাদিস ১৫৫২)
প্রিয় পাঠক বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে মুসলমানদের মাঝে এ দুটি বিষয় লক্ষণীয় হারে বেড়ে চলেছে। পরকালের তুলনায় দুনিয়াকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে মানুষ। পক্ষান্তরে পরকালের ভয়ে মৃত্যুকে স্মরণ না করে বরং ইসলামের জীবন যাপনে মৃত্যুর আশঙ্কা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগছে মানুষ। অথচ আল্লাহ তা’আলা বলেন→ তোমরা যেখানে থাকো না কেন মৃত্যু তোমাদের স্পর্শ করবেই।( সূরা নিসা আয়াত ৭৮)
প্রিয় নবী (সাঃ) এর রেখে যাওয়া হাদিসের ভবিষ্যৎবাণী গুলো প্রতিনিয়ত প্রতিফলিত হচ্ছে। যা থেকে বেরিয়ে আসা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের জন্য একান্ত আবশ্যক। তবে মুমিন মুসলমান আবার সঠিক পথ ফিরে পাবে। মুমিন মুসলমানের উচিত হবে, দুনিয়ার ভালোবাসা ও ফেতনা থেকে বিরত থাকা। ইসলামের জীবন যাপনে মৃত্যুর ভয়কে দূরে সরিয়ে দেওয়া। পরকালের কল্যাণেই মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করা এবং আল্লাহর কাছে বেশি বেশি প্রার্থনা করা। বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর দেখানো পথে জীবন পরিচালিত করা।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন →যখন সন্ধ্যায় উপনীত হবে, তখন সকলের জন্য অপেক্ষা করো না, আর যখন তোমার সকাল হয় তখন সন্ধ্যার জন্য অপেক্ষা করো না। অসুস্থ হওয়ার আগেই তোমার সুস্থ থাকে কাজে লাগাও আর তোমার মৃত্যুর জন্য জীবিত অবস্থায় পাথেয় জোগাড় করে নাও। সহিহ বুখারি হাদিস নাম্বারঃ ৬৪১৬)
এবং এই দোয়াটি পড়ো-
” আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন আজাবি জাহান্নাম ওয়া মিন আজাবিল কবরি, ওয়া মিন ফিতনাতিল মাহইয়া ওয়াল মামাতি ওয়া মিন ফিতনাতিল মাসিহিদ দাজ্জাল “ অর্থাৎঃ হে আল্লাহ! আমি জাহান্নামের আজাব ও কবরের আজাব থেকে আশ্রয় চাই। জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে আশ্রয় চাই। আর দাজ্জালের ফিতনা থেকেও আপনার কাছে আশ্রয় কামনা করি।( সহিহ বুখারি হাদিস নাম্বারঃ ৬৩৭৬,৭৯৪ ইসলামিক ফাউন্ডেশন )
আল্লাহ তায়ালা সকল মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ার আসক্তি তথা শুধুমাত্র দুনিয়াবী ভালোবাসা থেকে হেফাজত করুন। পরকালের জবাবদিহিতায় ইসলামের বিধি-বিধান মেনে চলার তৌফিক দান করুন। পরকালের ভয়ের উদ্দেশ্যে এবং নাজাত লাভ বেশি বেশি মৃত্যুর স্মরণ করার তৌফিক দান করুন আমিন।
আপনার ওয়েবসাইটের জন্য আর্টিকেল প্রয়োজন হলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ফেসবুকে আমি
2 thoughts on "যে ২টি কারণে মানুষের পতন হয়। বলেছেন রাসূল (সাঃ) আসুন জেনে নেই"