আসসালামু আলাইকুম । আশা করি সকলে ভালো আছেন । আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় অনেক ভালো আছি । যাই হোক আমি বেশি কথা বাড়াতে চাই না সরাসরি পোস্টের কথাতে চলে আসতে চায় ।
অনেকেই হয়তো পোস্টের টপিক দেখেই বুঝে ফেলেছেন যে আজ আমি কোন বিষয় নিয়ে লিখতে যাচ্ছি । আজ আমি আপনাদের সাথে মৃত্যুর পরবতী জীবন নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি । তবে আজকে আমার দ্বিতীয় পাঠ । আশা করি সকলে আমার আজকের পোস্ট পড়বেন । ভালো লাগলে লাইক এবং কমেন্ট করবেন ।
আগের পাঠে আমি মৃত্যুর পরবতী জীবনের ৫টি স্তর নিয়ে আলোচনা করেছিলাম । এগুলো হলো মৃত্যু,কবর, কিয়ামত,হাশর এবং মিযান । আজকে আমি ২টি স্তর নিয়ে আলোচনা করব । একটি হলো সিরাত এবং অপরটি হলো শাফাআত ।
সিরাত:-
সিরাত এর শাব্দিক অথ হলো পথ,রাস্তা,পুল,সেতু ইত্যাদি । অনেকে একে পুলসিরাতও বলে । ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় সিরাত হলো হাশরের ময়দান থেকে জান্নাত অথবা জাহান্নামের উপর দিয়ে চলমান একটি সেতু । আখিরাতে সকল ব্যাক্তিকেই এই সেতু পার করতে হবে । নেক আমলকারী বান্দাগণ এই সিরাত বা সেতু পার করে জান্নাতে প্রবেশ করবে । যে সিরাত পার করতে পারবে না তারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে । জাহান্নামীদের জন্য সিরাত হবে চুলের মতো সূক্ষ এবং তরবারি থেকে ধারালো যা কোন ব্যাক্তি তা পার করতে পারবে না ।
জান্নাতিগণ সিরাতের উপর দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবেন । নেককারদের আমল অনুসারে পুলসিরাত প্রশস্ত হবে । যার আমল সব থেকে বেশি তার পুলসিরাত অনেক বড় হবে । আর যাদের আমল কম তাদের পুলসিরাত তুলনামূলকভাবে ছোট হবে । আর ঈমানদারদের আমল অনুযায়ী সিরাত অতিক্রম করবে । কেউ বিদ্যুতের গতিতে,কেউ ঝড়ের গতিতে,কেউ ঘোড়ার গতিতে,কেউ দৌড়ের গতিতে,কেউ হেঁটে হেঁটে অথবা হামাগুড়ি দিয়ে পুলসিরাত পার হবেন । এটা হবে তাদের আমল অনুযায়ী । যাদের আমল বেশি হবে তারা সব থেকে দ্রুত পার হবে । যারা বিদ্যুতের গতিতে পার হবে তার মধ্যে একদল লোক হচ্ছে যারা মসজিদে জামাআতের সাথে নামায আদায় করে ।
আরও পড়ুন :-
Mimi oliviana
শাফাআত :-
শাফাআত শব্দের অথ হলো সুপারিশ করা বা অনুরোধ করা । ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় ক্ষমার জন্য আল্লাহর নিকট নবি রাসুল ও নেক বান্দাগণের সুপারিশ করাকে বলে শাফাআত । কিয়ামতের দিন বিচার শেষে আল্লাহ তায়ালা নেক বান্দাদের জান্নাত ও পাপীদের জাহান্নামে জাওয়ার ঘোষণা দিবেন । এসময় নবি রাসুল ও পুন্যবান বান্দাগণ আল্লাহর কাছে শাফাআত করবেন । ফলে অনেক পাপীকে মাফ করা হবে এবং অনেক পুন্যবান ব্যাক্তিদের মযাদা বৃদ্ধি করা হবে ।
কিয়ামতের দিন যখন সূয মাথার কাছে থাকবে তখন সবাই আদম (আ),নূহ(আ),ইবরাহিম(আ),মুসা (আ),ঈসা (আ) এর নিকট উপস্থিত হয়ে হিসাব নিকাশ শুরু করার জন্য আল্লাহর নিকট শাফাআত করতে বলবে । কিন্তু সবাই পারবে না বলে জানাবে । অবশেষে সকল আমাদের নবি করিম (স) এর নিকট উপস্থিত হবে । তখন তিনি সুপারিশ করবেন ।
আবার পাপীদের ক্ষমা ও পুন্যবানদের মযাদা বৃদ্ধির জন্য শাফাআত করা হবে । নবি-রাসুল,ফেরেশতা,হাফিজ, আলেম এবং শহিদরাও এ শাফাআতের সুযোগ পাবে । তবে হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে যে পবিত্র কুরান মজিদ এবং রোযাও শাফাতের সুযোগ পাবে ।
তো আজ এতটুই ছিল । সবাই আমরা শাফাআত এবং সিরাতে বিশ্বাস করব । শাফাআত একটি নিয়ামত । তাই সবাই আমরা বেশি বেশি নেক আমল করার চেষ্টা করব । সবাইকে জানাই ধন্যবাদ ।
2 thoughts on "মৃত্যুর পরবতী জীবনের কয়েকটি স্তর (পাঠ ২)"