লোকমুখে প্রচলিত ও নানা ধরনের ভিত্তিহীন উক্তি (ওরফে জাল হাদিস)-পর্ব ১

জাল হাদিসের প্রথম পর্বে সবাইকে জানাই আমার পক্ষ থেকে সালাম, আসসালামু আলাইকুম । জনসাধারণের মাঝে প্রচলিত অনেক কথা এখন মানুষে হাদিস বানিয়ে বসেছে । এগুলোকে জাল হাদিস হিসেবে অ্যাখ্যায়িত করেছে কুরআন হাদিস রিসার্চ সেন্টার । আজকের আর্টিকেলে ৫টি জাল হাদিস নিয়ে বিষদ আলোচনা করা হবে । তো চলুন শুরু করা যাক ।

জাল হাদিস ১ ::

{হযরত মোহাম্মদ (সঃ) বলেছেন, রাত্রির এক ঘন্টা পরিমাণ দ্বীনী এলেম শিক্ষা করা সমস্ত রাত্রি জাগরিত থাকিয়া ইবাদত করার চেয়েও উত্তম}— এই কথাটি কোন হাদিস গ্রন্থেই রাসুল (সঃ) এর বাণী হিসেবে সংকলিত হয় নি । ইমাম দারিমী তার সুনান গ্রন্থে অত্যন্ত দুর্বল ও বিচ্ছিন্ন সনদে সাহাবী ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর বাণী হিসেবে সংকলন করা হয়েছে । অর্থাৎ এটি রাসুল (সঃ) এর উক্তি নহে । রাসুল (সঃ) এর অর্থে যা কিছু বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ রুপে জাল ও বানোয়াট ।

জাল হাদিস ২ ::

ইলম শিক্ষার জন্য বা ভালো কাজে পথ চলার জন্য খালি পায়ে গেলে সওয়াব বেশি হয় — বলে কিছু কথা প্রচলিত আছে । এগুলো কোন হাদিসের অন্তর্ভুক্ত নয় । এগুলো সম্পূর্ণ বানোয়াট ও জাল হাদিস ।

জাল হাদিস ৩ ::

আল্লামা ইবনু হাজার আসকালানী, সুয়ূতী, মুল্লা আলী কারী প্রমুখ মুহাদ্দিস উল্লেখ করেন যে, ইলমুল বাতিন বা বাতিনী ইলমকে যাহেরি ইলম থেকে পৃথক বা গোপন কোন বিষয় হিসেবে বর্ণনা করে যেসকল হাদিস প্রচলিত তা সম্পুর্ণরূপে বানোয়াট ও জাল হাদিস ।

জাল হাদিস ৪ ::

“যদি কোন ব্যক্তি ইলম শিক্ষা করে, তবে তা পূর্ববর্তী পাপের জন্য ক্ষতিপূরণ হয়ে দাঁড়াবে” ___ ইমাম তিরমিযি ছাড়াও দাড়িমি,তাবারাণি প্রমুখ মুহাদ্দিস হাদিসটি সংকলন করেছেন । সকলেই অন্ধ আবু দাউদ নুফাই ইবনুল হারিসের মাধ্যমে হাদিসটি সংকলন করেছেন । তিনি ১৫০ হিজরির দিকে ইন্তিকাল করেছেন । সমসাময়িক ও পরবর্তীকালের প্রখ্যাত মুহাদ্দিসগণ তুলনামুলক পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে দেখান যে এই ব্যক্তি হাদিসের নামে মিথ্যা কথা বলতেন ।

হাদিসটি উল্লেখ করার পর ইমাম তিরমিযি মন্তব্য করেন যে, “হাদিসটির সনদ অত্যন্ত দূর্বল । আবু দাউদ দূর্বল । আব্দুল্লাহ ইবনু শাখবারাহ ও তাঁর পিতার বিশেষ কোন বিবরণ পাওয়া যায় না এ সম্পর্কে। এই অন্ধ আবু দাউদের ব্যাপারে অন্যান্য আলেমগণ একই মন্তব্য পেষণ করেছেন । ইমাম তিরমিযি হাদিসটির সনদ দুর্বল বলেই ক্ষান্ত হয়েছেন ।

আমরা জানি, দুর্বল হাদিস এক প্রকার জাল হাদিস । যেহেতু এই হাদিসটির বর্ণনাকারী মিথ্যা হাদিস বর্ণনাতে অভিযোগপ্রাপ্ত । তাই কোন কোন মুহাদ্দিস এই হাদিসকে জাল হাদিস বলেছেন ।

সুতরাং ইলম শিক্ষা কোন পাপের ক্ষতিপূরণ হতে পারে না । স্বয়ং আল্লাহই এ ব্যাপারে ভালো জানেন ।

আজ এখান থেকেই বিদায় নিচ্ছি । সবাইকে ধন্যবাদ ।

2 thoughts on "লোকমুখে প্রচলিত কয়েকটি জাল হাদিস (পর্ব ১)"

  1. 242admin Contributor says:
    ভাই আর্টিকেল টি ছোট হলেও খুব সুন্দর হয়েছে।
  2. S M Sakib Contributor says:
    waiting for part 2

Leave a Reply