আসসালামু আলাইকুম । সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছি আমার আজকের আর্টিকেলে ।

পোস্টের টাইটেল দেখে নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন যে আজকের আলোচনা কোন বিষয়ের উপর ।

আজকের আলোচনার বিষয়টি হচ্ছে “সুদ” । আমরা সুদ কথাটি প্রতিনিয়ত ব্যবহার করি । কিন্তু আমরা সুদের সাথে জরিত হয়ে পড়ছি কিনা তা একটুও ভাবার প্রয়োজন বোধ করি না । সুদ যে কীভাবে হয় তাও আমরা অনেকে জানি না । আসুন আমরা সুদ সম্পর্কে একটু বেশি জেনে নিই । সুদ সম্পর্কে বিস্তারিত লিখব বলে এই আর্টিকেলটি কয়েকটি পর্বে বিভক্ত করেছি । আজ প্রথম পর্ব । তো চলুন শুরু করা যাক ।

 

ধন সম্পদের তিনটি হুকুম । এই তিনটি হুকুম হলো : ইনসাফ, অনুগ্রহ ও অন্যায় । ইনসাফ হচ্ছে ব্যবসায়, অনুগ্রহ হচ্ছে দান এবং অন্যায় হচ্ছে সুদ ইত্যাদি ।

হারাম লেনদেনের উসুলঃ

হারাম লেনদেনের মুল নীতিমালা তিনটি ।

১। সুদ
২। জুলুম এবং
৩। ধোঁকা ।

ইনকামের ক্ষেত্রে এই তিনটি বিষয়ের মধ্যে যে কোন একটি বিষয়ে জড়িত থাকলে সেটি শরিয়ত অনুযায়ী হারাম এবং অবৈধ । ব্যবসার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই । ব্যবসায়ী যদি কোন ১টাকার পন্য ৫টাকায় বিক্রি করে এবং বলে এটি সবথেকে ভালো পন্য,তাহলে তার ব্যবসা হালাল হবে না । কারণ ব্যবসায়ী ক্রেতা ধোঁকা দিয়েছেন ।

ব্যবসা ও লেনদেনে আমরা এই তিনটি বিষয় অবশ্যয় খেয়াল রাখব ।

সুদ :- দুই বস্তুর মধ্যকার বিনিময়ে অতিরিক্ত কোন কিছু গ্রহণ করাকেই সুদ বলে । আর সুদখোর ব্যক্তি একটি জিনিজের উপর আরেকটিতে বেশি করে দেয় আর তার অস্ত্র হয় সময় ও দারিদ্রতা ।

সুদের অপকারিতা :-

সুদ কবিরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত । এটি প্রতিটি আসমানী ধর্মে হারাম । কারণ এর কোন উপকারিতা নেই । সবই অপকারিতা । সুদ মানুষের মাঝে শত্রুতার সৃষ্টি করে । গরিবকে আরও গরিব বানায় আর ধনিকে আরও ধনি বানায় । এই প্রথার মাধ্যমে গরিবের কাঙ্খিত সম্পদ ধনিরা গ্রহণ করে । এতে রয়েছে চরম জুলুম । সুদ প্রথার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে দান ও অনুগ্রহশীলতার মৃত্যু ঘটে । যা সমাজে ব্যাপকভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে ।

সুদের সংজ্ঞাকে নানাভাবে অভিহিত করা হয়ে থাকে । সুদের ছোট্ট একটি সংজ্ঞা হলো; সুদ হচ্ছে মানুষের সম্পদ বাতিল পন্থায় গ্রহণ বা খাওয়ার নাম । এতে মানুষের প্রয়োজনীয় আয়, ব্যয় ও শিল্প কাজ অচল হয়ে পড়ে । সুদখোর ব্যক্তির অর্থ সম্পদ কোন পরিশ্রম ছাড়াই বৃদ্ধি পেতে থাকে । ফলে মানুষ তার কাজের প্রতি অনিহা হয়ে পড়ে ।

আমরা মনে করি যে সুদ খেলে হয়তো ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পায় । কেউ যদি এরুপ ধারণা করে থাকেন তাহলে আমি বলব এটি স্বভাবতই ভূল ধারণা । যে যত বেশি সুদ খাবে তার সম্পদ তত হারাতে থাকবে । এর বাস্তব প্রমাণ আমাদের চোখের সামনেই ভাসছে । বিশ্বের বড় বড় ব্যাংকগুলো আজ দেউলিয়া হয়ে গেছে । বাংলাদেশের এরকম একটি ব্যাংকের নাম গ্রামীণব্যাংক । আরও আছে যেমন ব্রাক ব্যাংক । ইসলামি ব্যাংকের লেনদেন বাংলাদেশে অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় এখন বেশি ।

সুদের গোনাহের তেহাত্তরটি স্তর রয়েছে । সর্বাপেক্ষা সহজ স্তরের গোনাহ মায়ের সাথে যেনা করার সমান ।

আল্লাহ আমাদের সকলকে সুদ থেকে বাঁচার তাওফিক দান করুন । পরবর্তী পর্বে থাকছে: সুদের শাস্তি,সুদের প্রকারভেদ ইত্যাদি ।

2 thoughts on "সুদ কী? আমরা সুদের সাথে জরিয়ে পড়ছি না তো? [পাঠ ১]"

Leave a Reply