আশা করি সবাই ভালো আছেন। আল্লাহ তায়ালার রহমতে আমিও ভালো আছি।

আর কিছুদিন পরেই পবিত্র ঈদ উল ফিতর। দীর্ঘ ১ মাস সাওম পালন করার পর মুসলমানরা এই ঈদ উৎযাপন করে। ঈদ উপলক্ষে আপনাদের মাঝে ঈদের সেলামি দেওয়ার একটি প্রথা চালু রয়েছে। তো আজ আমরা দেখবো ঈদের সেলামি দেওয়া বা নেওয়া হালাল নাকি হারাম।

প্রতি বছর আনন্দ, খুশির বার্তা নিয়ে আসে ঈদ। ঈদের এই আনন্দ আল্লাহ তায়ালার বিশেষ দান। বছরে দুবার মুসলিমদের জন্য এই আনন্দ নির্ধারিত। ঈদ এলেই আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে সবার মাঝে। শিশু-কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ সবার মনে বয়ে যায় আনন্দের জোয়ার। ঈদের দিন শিশু কিশোরদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করে ঈদি বা ঈদ সালামি।

বড়দের পক্ষ থেকে পাওয়া ঈদ সেলামি শিশুদের আনন্দ যেন বাড়িয়ে দেয় কয়েক গুণ। ইসলামের দৃষ্টিতে ঈদ সালামি দেওয়ার এই প্রচলনে কোনও আপত্তি বা ধর্মীয় বাধা-নিষেধ নেই। এটি একটি সুস্থ ও সুন্দর সামাজিক রীতি এবং চারিত্রিক সৌন্দর্য। এর মাধ্যমে ছোটদের প্রতি স্নেহ, মমতা ও ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ঈদ সালামির মাধ্যমে ছোটরা আনন্দিত হয়। এতে তাদের ঈদের উৎসব আরও বেড়ে যায়।

ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষকে খুশি করা অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ কাজ। তাছাড়া ইসলামে উপহার লেনদেন করার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। কেননা এতে পারস্পারিক ভালোবাসার বন্ধন সুদৃঢ় হয়।


রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য (কাউকে কিছু) দেয়, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই দেওয়া থেকে বিরত থাকে; আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই যে ভালোবাসে আর আল্লাহর জন্যই যে ঘৃণা করে, সে তার ঈমান পূর্ণ করল।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২৫২১)

আরেকটি হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেন, ‘পরস্পর হাদিয়া দাও, মহব্বত বৃদ্ধি পাবে।’ (আল আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ৫৯৪)

তবে ঈদ সেলামি দেওয়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রাখা দরকার। তা হলো-

১. আমাদের দেশে ঈদ সালামি পাওয়ার জন্য ছোটরা বড়দের পা ছুয়ে সালাম করে। এটি সম্পূর্ণ অনৈসলামিক কালচার। এর সম্প্রসারণ রোধ করা জরুরি। কেউ এমনটি করলে তাকে নিষেধ করতে হবে।

২. সেলামি দেয়ার ক্ষেত্রে ছোট ভাই, বোন ও সন্তানদের কাউকে দেওয়া হবে আর কাউকে বঞ্চিত করা হবে-এমনটি যেন না হয়। কেননা এতে পারস্পারিক হিংসা-বিদ্বেষ ও মনোমালিন্য সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

৩. সবাইকে সমানভাবে উপহার দেয়া জরুরি নয় বরং বয়স ও অবস্থা অনুযায়ী কম-বেশি করা যাবে। যেমন: বড়কে বেশি আর ছোটকে কম, বিবাহিতকে এক রকম অবিবাহিতকে অন্য রকম। এতে কোন আপত্তি নাই।

৪. তারা কীভাবে তা খরচ করছে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখা জরুরি। কেননা অনেক সময় বাচ্চারা হাতে টাকা পেয়ে নানা আজেবাজে ও অনর্থক কাজে ব্যয় করে। অনেকে বাজি ধরা, ক্যাসিনো খেলা, সিনেমা দেখা সহ বিভিন্ন গুনাহের কাজে লিপ্ত হয়। তাই অভিভাবকদের এ বিষয়টি লক্ষ্য রাখা জরুরি।

আজ এ পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পারলে আশে পাশের দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন। তাদের ঈদ আনন্দকে উপভোগ করার সুযোগ করে দিন।

4 thoughts on "ঈদে সেলামি দেওয়া ও নেওয়া হালাল নাকি হারাম? জেনে নিন।"

  1. Md Sajedul Contributor says:
    ঈদ সালামি নিয়ে কেও দ্বিমত পোষণ করেছেন তা জানি না, তবে পোস্ট করার জন্য ধন্যবাদ
  2. tutulkumar00 Contributor says:
    Kisu kisu haram

Leave a Reply