বায়তুল মামুরে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) জিবরাইল (আ.)কে রেখে তিনি ‘রফরফ’ নামক আরেকটি ঐশী বাহনে চড়ে আল্লাহতায়ালার দরবারে হাজির হন। কোনো কোনো বর্ণনায় আছে, মেরাজ রজনীতে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আল্লাহতায়ালার এতটা কাছাকাছি গিয়েছিলেন যে দু’জনের মধ্যখানে মাত্র এক ধনুক পরিমাণ ব্যবধান ছিল। এখানে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর উম্মতের ওপর ৫০ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হলো। পরবর্তী সময়ে পুনঃ পুনঃ আবেদনের প্রেক্ষিতে আল্লাহপাক দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ উম্মতে মুহাম্মদির ওপর ফরজ করেন, যা ইসলামের পাঁচটি রুকনের অন্যতম রুকন বা ভিত্তি। আর এই নামাজই মানুষকে যাবতীয় পাপাচার ও অনাচার থেকে রক্ষা করে সত্যিকারের মানুষ হিসেবে তৈরি করে।
হজরত রাসূলুল্লাহর (সা.) মেরাজ গমনের বিষয়ে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। এ ছাড়া মুফাসসিররাও এ সম্পর্কে ব্যাপক তথ্য-প্রমাণাদি পেশ করেছেন। যদিও মেরাজের ঘটনা নিয়ে বিন্দুমাত্র সংশয়-সন্দেহ নেই। আমাদের সমাজের অনেকেই মেরাজের ঘটনার ক্ষেত্রে কোরআন-হাদিসের রেওয়ায়েতের চেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে মেরাজের বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ। এটা আসলে এক ধরনের হীনম্মন্যতা। কারণ মেরাজ সম্পর্কে কোরআন ও হাদিসের প্রচুর বর্ণনা এসেছে; এটাকে পাশ কাটিয়ে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ নিয়ে মেতে থাকা ঠিক না। তবে হ্যাঁ, বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ হতে পারে কোরআন-হাদিসের সহায়ক।
কারণ কোরআন ও সহিহ হাদিসের অকাট্য তথ্য একজন মুসলমান মানতে বাধ্য। একজন খাঁটি মুসলমানের বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে মেরাজের সত্যতা প্রমাণের অপেক্ষা না করে এ বিষয়ে মনেপ্রাণে বিশ্বাস স্থাপন করার নামই ইমান। তাই হজরত রাসূলুল্লাহর (সা.) মেরাজ গমনের কথা একজন অবিশ্বাসীর মুখে শুনে হজরত আবু বকর (রা.) তৎক্ষণাৎ বিশ্বাস করেছিলেন বলেই হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে ‘সিদ্দিক’ উপাধি দিয়েছিলেন। মেরাজের মাধ্যমে মহানবীকে (সা.) আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা দান করা হয়, যেন মানুষ আল্লাহর নিদর্শন উপলব্ধি করতে পারে এবং স্বচ্ছ ধারণা অর্জন করতে পারে।
5 thoughts on "নামাজ মুমিনদের জন্য মেরাজস্বরূপ"