খ্যাতি ব্যাপারটাকে ইসলামে ভালোভাবে দেখা হয়নি।
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন, দুটো ক্ষুধার্ত নেকড়েকে একটা ভেড়ার পালে ছেড়ে দিলে যতটা না ক্ষতি করে মানুষের দ্বীনকে তারচে বেশি ক্ষতি করে সম্পদের লোভ আর খ্যাতির মোহ। সাহাবারা ব্যাপারটা বুঝতেন।
সা’দ বিন আবি ওয়াক্কাস রাদিয়াল্লাহি তা’আলা আনহুকে একবার তাঁর ছেলে বলেছিল, আপনি উট-বকরি নিয়ে আছেন আর এদিকে তো মানুষ ক্ষমতার দ্বন্দ্বে অস্থির।
সা’দ তার ছেলের বুকে ধাক্কা মেরে বলেছিলেন, চুপ থাক। আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, “আল্লাহ তাঁর সেই বান্দাকে ভালোবাসেন যে ধার্মিক, স্বনির্ভর আর মানুষের চোখের আড়ালে থাকে।”
ইমাম নববী এই হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, মানুষের চোখের আড়াল মানে যে অপরিচিত এবং নিজের ইবাদাত ও কাজের দিকে বেশি মনোযোগী। মানুষকে প্রশংসা করবেন না। তাকে তাঁর ভালো কাজের জন্য ধন্যবাদ দিন, তাঁর জন্য দু’আ করুন। ব্যাস। এর বেশি কিছু না। কারো সামনে প্রশংসা করাকে রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন যেন তাকে জবাই করা হলো। কেন এত বড় কথা? এত ভয়াবহ তুলনা? কারণ মানুষকে প্রশংসা করলে সে খুশি হয়।
সে আরো প্রশংসা পেতে চায়। আস্তে আস্তে সে আল্লাহকে খুশি করার বদলে সেগুলো করতে শুরু করে যাতে মানুষ খুশি হয়। আল্লাহকে খুশি করার কাজগুলোতেও ঢুকে যায় মানুষকে খুশি করার প্রচ্ছন্ন প্রয়াস। ইবরাহীম আন-নাখাই এবং হাসান আল বাসরী বলেছেন, আল্লাহ যদি কোনো মানুষকে রক্ষা না করেন তবে তার জন্য এটাই ভয়ংকর পরীক্ষা যে তাকে আলাদা চোখে দেখা হবে, হোক সেটা দ্বীন বা দুনিয়ার ব্যাপারে। খ্যাতি, যশ, সুনাম, প্রশংসা থেকে দৌড়ে পালান ভাইয়েরা। আল্লাহ আমাদের গোপন পাপগুলো থেকে আমাদের পরিশুদ্ধ করুন। খ্যাতির মোহ থেকে হিফাজাত করুন। দুনিয়াতে এমনভাবে চলো যেন তুমি অপরিচিত, এক মুসাফিরের মতো যে কিনা তার সফর শেষের অপেক্ষায় সদা বিভোর। এইতো কবরের বাসিন্দা হওয়ার সময় এল বলে!! ….
4 thoughts on "সম্পদের লোভ আর খ্যাতির মোহ থেকে দৌড়ে পালান"