বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম,

আশুরার দিন কে ঘিরে ১ টা ঘটনা ই ঠিক ও দলিল, সনদ, প্রমান পাওয়া যায়, বাকি যা কথা আছে সমাজে তাঁর কোনটার ই ভিত্তি নাই, ঘটনা ঘটেছে সত্য কিন্তু তা আশুরার দিনের সাথে জুড়ে আশুরারা মর্যাদা বেশি করার মত মিথ্যাচার কখনোও কাম্য নয়।  আমি এই পোস্ট কে ২ ভাগে  ভাগ করেছি। ১. সত্য ও ২. মিথ্যা।   প্রথমে সত্য টা বলে পরে কিছু প্রচলিত কথা বলবো;  খেয়াল করে দেখবেন সাএগুলোর কোন দলিল কেউ বলেনা, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগের কোন ঘটনার উল্লেখ অবশ্যই হাদিসে থাকবে। তা পাওয়া না গেলে নিজে নিজে কি বলা যায়?



আশুরার আমলঃ
আয়েশা রা: হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রমজান মাসের রোজা ফরজ করার আগে মুসলমানেরা আশুরার দিন রোজা রাখত। আর এ দিন কাবাঘরের গিলাফ পরানো হতো। যখন রমজানের রোজা ফরজ করা হলো তখন রাসূল সা: এ ঘোষণা দিলেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি ইচ্ছা করে এ দিনের রোজা রাখার সে রোজা রাখবে। আর যে রোজা পরিহার করতে চায় সে তা পরিহার করবে (বুখারি-১৫১৫, ১৭৯৪)  [ দলিল আছে] 

এ দিনের মর্যাদা উপলব্ধি করে ইহুদি সমাজও এ দিনকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ করত এবং বিশেষভাবে এ দিনের রোজাব্রত পালন করত। রাসূল সা: থেকে প্রসিদ্ধ সাহাবি ইবনে আব্বাস রা: বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, নবী সা: যখন মদিনায় আগমন করেন তখন তিনি ইহুদিদের দেখতে পেলেন তারা আশুরার দিবসে সিয়াম পালন করছে, তাদের জিজ্ঞেস করা হলো; এ দিনের রোজা সম্পর্কে তারা বলল- এ দিন আল্লাহ তায়ালা মূসা আ: ও বনি ইসরাইলকে ফেরাউন ও তার সম্প্রদায়ের ওপর বিজয় দান করেছেন, তাই আমরা এ দিনের সম্মান ও মহত্ত্বের জন্য রোজা পালন করি। তাদের প্রতিউত্তরে রাসূল সা: এরশাদ করলেন- আমরা তোমাদের চেয়ে মূসার উত্তম অনুসারী, অতঃপর তিনি এ দিনের রোজা রাখতে সাহাবিদের নির্দেশ দেন (বুখারি-৩৭২৭)।  [ দলিল আছে]

আশুরার দিনে রোজা রাখার বিশেষ ফজিলত হচ্ছে, রাসূল সা:কে এ দিনের রোজা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘এ দিনের রোজা পালন গত এক বছরের গুনাহগুলোর কাফফারাস্বরূপ’ (সহি মুসলিম-১১৬২)। [ দলিল আছে]

ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত অপর এক হাদিসে এসেছে, আশুরার দিবসের রোজা প্রসঙ্গে তাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার জানা নেই রাসূল সা: এ দিন ছাড়া অন্য কোনো দিন ফজিলতের উদ্দেশ্যে রোজা পালন করতেন। আর এ মাস অর্থাৎ রমজান ছাড়া অন্য কোনো মাসে তিনি রোজা পালন করতেন।’

সহি মুসলিমের অপর বর্ণনায় এসেছে, রাসূল সা: এরশাদ করেছেন, ‘আশুরার দিবসের রোজা পালনে আমি গত বছরের গুনাহের কাফফারা হিসেবে আশা পোষণ করি’ (সহি মুসলিম-২৮০৩)। [ দলিল আছে]


হাদিসে ‘আশুরা’ দিবসে রোজা পালনের বিশেষ ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘রমজানের রোজার পরে আল্লাহর নিকট মহররম মাসের রোজা ফজিলতের দিক দিয়ে শ্রেষ্ঠতম’ (সহি মুসলিম : ১/৩৮৮ পৃ:)। মহানবী সা: আরো বলেন, ‘আমি আল্লাহর দরবারে আশা রাখি যেন ‘আশুরা’র রোজা আল্লাহর নিকট পূর্ববর্তী বছরের গুনাহের কাফফারাস্বরূপ গণ্য হয়’ (তিরমিজি-১৩২, ইবনে মাজাহ-১২৪, সহি বুখারির ১২৫১ : আশুরার দিনে রোজা পরিচ্ছেদে ১৮৭৪ থেকে ১৮৮১ পর্যন্ত আটটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে)।  [ দলিল আছে]

আশুরার দিনে যেহেতু ইহুদিরাও রোজা রাখে তাই তাদের সাথে পার্থক্য রাখার জন্য রাসূলুল্লাহ সা: বললেন, ‘তোমরা আশুরার দিনে রোজা রাখো এবং এর আগে এক দিন অথবা পরে এক দিন রোজা রেখে ইহুদিদের বিরুদ্ধাচরণ করো।’ [ দলিল আছে, উল্লেখ করা হইনি] 



কিন্তু নিচের ঘটনা গুলোর কোন দলিল কোথাও পাওয়া যায়না,  প্রশ্ন আসবে তাহলে কিভাবে প্রচলিত হলো, ইতিহাস যখন লেখা হয় তখন শিয়া বাদশাহ রা ছিলেন বেশি, আর শিয়া দের মত, আকিদা সম্পর্কে কম বেশি প্রায় সকলেই জানেন তাই লিখার দরকার মনে করছিনা। তাদের দরবারে বসে ইতিহাস লেখা হতো, তাঁরা মিথ্যা লিখতো,লেখা বড় করছিনা।  



মানবজাতির আদি পিতা হজরত আদম আ:-কে প্রতিনিধি হিসেবে সৃষ্টি, জান্নাতে অবস্থান, পৃথিবীতে প্রেরণ ও তাওবা কবুল সবই আশুরার তারিখে সংঘটিত হয়। ২. হজরত নূহ আ: সাড়ে ৯০০ বছর তাওহিদের দাওয়াত দেয়ার পরও যখন পথভ্রষ্ট জাতি আল্লাহ পাকের বিধান মানতে অস্বীকৃতি জানায় তখন তাদের প্রতি নেমে আসে আল্লাহর গজব মহাপ্লাবন। এই মহাপ্লাবনের ধ্বংসলীলা থেকে রক্ষা পায় তারা যারা আল্লাহ ও নবীর প্রতি বিশ্বাসী হয়ে নূহ আ:-এর নৌকায় আরোহণ করে। ওই নৌকা ৪০ দিন পর জুদি পাহাড়ের পাদদেশে মাটি স্পর্শ করে ঐতিহাসিক আশুরার দিন। ৩. এ দিনেই হজরত ইব্রাহিম আ:-এর জন্ম, ‘খলিলুল্লাহ’ উপাধিতে ভূষিত ও নমরুদের অগ্নি থেকে রক্ষা পান। ৪. হজরত ইদ্রিস আ:-কে বিশেষ মর্যাদায় চতুর্থ আসমানে উঠিয়ে নেয়া হয় আশুরার দিনে। ৫. সুদীর্ঘ ৪০ বছর পর হজরত ইউসুফ আ:-এর সাথে তার পিতা ইয়াকুব আ:-এর সাক্ষাৎ যে দিন হয় সে দিনটি ছিল আশুরার দিন। ৬. নবী আইয়ুব আ: দীর্ঘ ১৮ বছর কুষ্ঠরোগ ভোগ করার পর আরোগ্য লাভ করেছিলেন আশুরার দিন। ৭. ইউনূস আ: ৪০ দিন মাছের পেটে থাকার পর মুক্তি লাভ করেন আশুরার দিন। ৮. ঘটনাক্রমে হজরত সুলায়মান আ: সাময়িক রাজত্ব হারা হন। আল্লাহ তায়ালা তাঁকে আবারো রাজত্ব ফিরিয়ে দেন আশুরার দিনে। ৯. আল্লাহ তায়ালা হজরত মূসা আ: ও তাঁর অনুসারী বনি ইসরাইলদেরকে ফেরাউনের অত্যাচার থেকে মুক্ত করে পানির মধ্যে রাস্তা তৈরি করে দিয়ে পার করে দেন এবং ফেরাউনকে তার দলবলসহ সাগরে ডুবিয়ে মারেন আশুরার দিন। মূসা আ: তুর পাহাড়ে আল্লাহর সাথে কথা বলেছিলেন আশুরার দিনে। ১০. এ দিনে হজরত ঈসা আ:-এর জন্ম হয় এবং ইহুদিরা তাঁকে হত্যার ষড়যন্ত্র করলে আল্লাহ তায়ালা তাঁকে ফেরেশতা কর্তৃক সশরীরে আসমানে উঠিয়ে নেন এ দিনেই। ১১. আশুরার দিবসেই মহানবী সা:-এর পূর্ববর্তী ও পরবর্তী ত্র“টিবিচ্যুতি ক্ষমা করে দেয়া হয়। ১২. পবিত্র কাবা শরিফে সর্বপ্রথম গিলাফ দ্বারা আবৃত করা হয়েছিল আশুরার দিন। [ দলিল  নাই কোনটার]

এ পৃথিবীর অস্তিত্বের সাথেও আশুরার দিনের গভীর সম্পর্ক বিদ্যমান। আশুরার দিনেই আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করেছেন আকাশমালা, মর্তজগৎ, পর্বতরাজি, লওহ-কলম ও ফেরেশতাদের। আশুরার দিনে আল্লাহ তায়ালা নিজ আরশে আজিমে অধিষ্ঠিত হন। আকাশ থেকে প্রথম বৃষ্টিপাত হয় এ দিনেই। শুধু সৃষ্টির সাথেই নয়, বরং লয়ের সাথেও রয়েছে এ দিনের সম্পর্ক। রাসূলুল্লাহ সা:-এর ভবিষ্যদ্বাণী হচ্ছে, কিয়ামত সংঘটিত হবে মহররম মাসের ১০ তারিখ জুমার দিন। এভাবে পৃথিবীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এ দিনের সম্পর্ক।

আশুরার দিনটি যে কারণে বিশ্ব মুসলিমের কাছে অত্যন্ত স্মরণীয়, শিক্ষণীয় ও হৃদয়বিদারক তা হলো কারবালার ঘটনা। হজরত মুয়াবিয়া রা: ইন্তেকালের পর মদিনাবাসীর মতামত না নিয়েই ইয়াজিদ ইসলামী রাষ্ট্রনীতির বরখেলাফ করে দামেস্কের মসনদে আসীন হন। যে নীতি-আদর্শ মহানবী সা: প্রতিষ্ঠা করে গেছেন এবং খোলাফায়ে রাশেদিন যে নীতির আলোকে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন ইয়াজিদের দ্বারা সে নীতি-আদর্শ পরিবর্তিত হওয়ায় হজরত হুসাইন রা: তা রক্ষার জন্য সোচ্চার হলেন। অবশেষে রাসূলুল্লাহ সা:-এর দৌহিত্র হজরত হুসাইন রা: অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করে সত্যের জন্য সংগ্রাম করে কারবালার প্রান্তরে সপরিবারে শাহাদতবরণ করে সর্বোচ্চ ত্যাগের অতুলনীয় আদর্শ রেখে গেছেন। [ দলিল  নাই কোনটার]



এ সব ই ভিত্তিহীন, যে সব ই আশুরার দিনে হয়েছে, আর কোন দিন নাই, আর আমরা তা দলিল না খুঁজে, ভিত্তি না দেখে আমরাও তাই বলে বেড়াচ্ছি।  । মনে রাখবেন – ঘটনা গুলো ঘটেছে এটা ঠিক আছে, কিন্তু আশুরার দিনে হয়েছে এমন মিথ্যা বলে আশুরার গুরুত্ব বুঝানোর মত ভুয়া প্রচার ইসলামী শিক্ষার বিপরীত আর ইসলামে মিথ্যা কথা মহা   গুনাহ।



কেউ কস্ট পেলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।  আমি চেয়েছি আল্লাহ আমাকে যে টুকু জানার ও বুঝার সূযোগ দিয়েছেন, তা  অপরকে জানাতে। যাতে মিথ্যার পাথিওর বয়ে না বেড়াতে হয় আমাদের। আপনারা কোন আলেম দের কাছে তথ্য গুলো নিশ্চিত হতে পারেন,। 

 Click to Download a book on ashurah [ফ্রম গুগল ড্রাইভ]

* ভালো করে বুঝার জন্য দেখুন এই ভিডিও – Click to see

22 thoughts on "আশুরা নিয়ে প্রচলিত ১ টা কথা ঠিক ও বাকি হাজার কথা ভুল — (সবাই দেখে নিন)"

    1. Md Khalid Author Post Creator says:
      thank you. please share this.
  1. Manikislam Contributor says:
    কিভাবে লাল কালিদিয়ে লিখা লিখলেন?
    1. Jisanmahmud1k98 Contributor says:
      <font style=”color:red”> Your text </font>
    2. Md Khalid Author Post Creator says:
      apnio r8. thank u
      Jisanmahmud1k98
    3. Md Khalid Author Post Creator says:
      lal e noy, blue, green o korchi…… lekhar time a desktop version kore nile apnio korte parben. font color change. thank you.
    4. Manikislam Contributor says:
      vai, apni ki bb code use koresen?
    5. Md Khalid Author Post Creator says:
      ডেক্সটপ ভার্সন আ গেলে এমনিতেই এ লেখা যায়, বিবিকোড লাগেনা। তাই কস্ট হয়না
    6. Manikislam Contributor says:
      thanks vai
  2. Rayin Contributor says:
    ভালো লাগল ভাই। ভুল ধারণা গুলো ভাঙল।
    1. Md Khalid Author Post Creator says:
      thank you brother…………. ami ekta video link diyechi seshe. aj add korechi.
    1. Md Khalid Author Post Creator says:
      thank you……………..
      TOUHID
    1. Md Khalid Author Post Creator says:
      hmmmmmmmmmmmmmmmmmmmm
  3. Sabbir Hossain Author says:
    MD. Khalid ভাই এতদিন কেন পোস্ট করলেন না। আমি নতুন।
    1. Md Khalid Author Post Creator says:
      ashole time kom pai vaiya. dite cehyechilam………. than kyou vai….. last a ekta video link dilam ajke….. time paile dekhben.
  4. Sabbir Hossain Author says:
    জাযাকাল্লাহ খায়ের।
  5. antuali102 Contributor says:
    জাযাকাল্লাহ খায়ের।
    1. Md Khalid Author Post Creator says:
      ameen, same to u.
  6. ROMAN REIGNS Author says:
    জাযাকাল্লাহ খাইরান।
    1. Md Khalid Author Post Creator says:
      ameen, thank you roman

Leave a Reply