আসসালামু আলাইকুম আশাকরি সকলেই ভালো আছেন ।

আজ আপনাদের মাঝে হাজির হলাম গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট নিয়ে ।

আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,(বনী ইসরাঈলের মধ্যে) তিন ব্যক্তি ছাড়া আর কেউই দোলনায় কথা বলেনি।

(১) ঈসা ইবনে মারইয়াম: [মারইয়াম (আঃ)-এর গর্ভে ঈসা (আঃ) অলৌকিক ভাবে জন্মগ্রহণ করলে লোকজন তার ব্যাপারে সন্দিহান হ’ল। তখন মারইয়াম (আঃ)-এর ইঙ্গিতে ঈসা (আঃ) তাঁর মাতার পক্ষ থেকে জবাব দিয়ে বললেন,‘আমি আল্লাহর দাস। তিনি আমাকে কিতাব (ইনজীল) প্রদান করেছেন এবং আমাকে নবী করেছেন’। ‘আমি যেখানেই থাকি, তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন। তিনি আমাকে জোরালো নিদের্শ দিয়েছেন যতদিন জীবিত থাকি,ততদিন ছালাত ও যাকাত আদায় করতে এবং আমার মায়ের অনুগত থাকতে। আল্লাহ আমাকে উদ্ধত ও হতভাগা করেননি’। ‘আমার প্রতি শান্তি যেদিন আমি জনমগ্রহণ করেছি,যেদিন আমি মৃত্যুবরণ করব এবং যেদিন জীবিত পুনরুত্থিত হব’ [মারিয়াম ১৯/২৯-৩৩)]।
(২) ছাহেবে জুরাইজ (জুরাইজের সাথে সংশিলষ্ট একটি বাচচা): জুরাইজ একজন আবেদ বান্দা ছিলেন। তিনি নিজের জন্য একটি ইবাদতগাহ তৈরী করলেন। তিনি সেখানে থাকা অবস্থায় একদিন তার মা সেখানে আসলেন। এ সময় তিনি ছালাতে রত ছিলেন। তার মা বললেন, ‘হে জুরাইজ! তখন তিনি (মনে মনে) বলেন,‘হে প্রভু! একদিকে আমার ছালাত আর অন্যদিকে আমার মা’। জুরাইজ ছালাতেই রত থাকলেন। তার মা চলে গেলেন।পরবর্তী দিন তার মা আসলেন । এবারও তিনি ছালাতে মগ্ন ছিলেন। তার মা তাকে ডাকলেন,‘হে জুরাইজ’! তিনি (মনে মনে) বলেন,‘হে প্রভু! একদিকে আমার ছালাত আর অন্যদিকে আমার মা’। তিনি তার ছালাতেই ব্যস্ত থাকলেন। এভাবে তৃতীয় দিনেও জুরাইজ একই কাজ করলে তার মা বললেন, ‘হে আল্লাহ! একে তুমি যেনাকারী নারীর মুখ না দেখা পর্যন্ত মৃত্যু দিও না’।

বনী ইসরাঈলের মধ্যে জুরাইজ ও তার ইবাদতের কথা আলোচিত হ’তে লাগল। এক ব্যভিচারী নারী ছিল। সে উলেলখযোগ্য রূপ-সৌন্দযের্র অধিকারিণী ছিল। সে বলল,তোমরা যদি চাও, আমি তাকে (জুরাইজ) বিভ্রান্ত করতে পারি। সে তাকে ফুসলাতে লাগল,কিন্তু তিনি সেদিকে ভ্রূক্ষেপ করলেন না। অতঃপর সে তার ইবাদতগাহের কাছাকাছি এলাকায় এক রাখালের কাছে আসল। সে নিজের উপর তাকে অধিকার দিল এবং উভয়ে ব্যভিচারে লিপ্ত হ’ল। এতে সে গর্ভবতী হ’ল। সে বাচচা প্রসব করে বলল, এটা জুরাইজের সন্তান। বনী ইসরাঈল (ক্ষিপ্ত হয়ে) তার কাছে এসে তাকে ইবাদতগাহ থেকে বের করে আনল,তার ইবাদতগাহ ধূলিসাৎ করে দিল এবং তাকে মারধর করতে লাগল। জুরাইজ বললেন,তোমাদের কি হয়েছে? তারা বলল,তুমি এই নষ্টা মহিলার সাথে যেনা করেছ। ফলে একটি শিশু ভূমিষ্ঠ হয়েছে। তিনি বললেন,শিশুটি কোথায়?তারা শিশুটিকে নিয়ে আসল। জুরাইজ বললেন,আমাকে একটু সুযোগ দাও ছালাত আদায় করে নেই। তিনি ছালাত আদায় করলেন। ছালাত শেষ করে তিনি শিশুটির কাছে এসে তার পেটে খোঁচা মেরে জিজ্ঞেস করলেন,‘এই শিশু! তোমার পিতা কে’? সে বলল,‘আমার পিতা অমুক রাখাল’। উপস্থিত লোকেরা তখন জুরাইজের নিকটে এসে তাকে চুম্বন করতে লাগল এবং তার শরীরে হাত বুলাতে লাগল। আর তারা বলল,এখন আমরা তোমার ইবাদতগাহটি সোনা দিয়ে তেরী করে দিচিছ। তিনি বললেন,দরকার নেই,বরং পূর্বের মত মাটি দিয়েই তৈরী করে দাও। অতঃপর তারা তাই করল।
(৩) একটি শিশু তার মায়ের দুধ পান করছিল। এমন সময় একটি লোকদ্রুতগামী ও উন্নত মানের একটি পশুতে সওয়ার হয়ে সেখান দিয়ে যাচিছল। তার পোষাক-পরিচছদ ছিল উন্নত। শিশুটির মা বলল,‘হে আল্লাহ! আমার ছেলেটিকে এই ব্যক্তির মত যোগ্য কর’। শিশুটি দুধ পান ছেড়ে দিয়ে লোকটির দিকে এগিয়ে এসে তাকে দেখতে লাগল। অতঃপর বলল,‘হে আল্লাহ! আমাকে এই ব্যক্তির মত কর না’। অতঃপর ফিরে এসে পুনরায় মায়ের দুধ পান করতে লাগল। (বর্ণনাকারী বলেন) আমি যেন এখনও দেখছি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) শিশুটির দুধ পানের চিত্র তুলে ধরছেন এবং নিজের তর্জনী মুখে দিয়ে চুষছেন। তিনি বলেন,লোকেরা একটি বাঁদিকে মারতে মারতে নিয়ে যাচিছল। আর বলছিল, তুমি যেনা করেছ এবং চুরি করেছ। মেয়ে লোকটি বলছিল,‘আল্লাহ আমার জন্য যথেষ্ট এবং তিনিই আমার উত্তম অভিভাবক’। শিশুটির মা বলল, ‘হে আল্লাহ! তুমি আমার সন্তানকে এই নষ্টা নারীর মত কর না’। শিশুটি দুধ পান ছেড়ে দিয়ে মেয়েটির দিকে তাকাল,অতঃপর বলল,‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে এই নারীর মত কর’ এ সময় মা ও শিশুটির মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়ে গেল। মা বলল,হায়দুর্ভাগা! একটি সুশ্রী লোক চলে যাওয়ার সময় আমি বললাম,হে আল্লাহ! আমার সন্তানকে এরূপ যোগ্য করে দাও’। তুমি প্রত্যুত্তরে বললে,‘হে আল্লাহ্‌! আমাকে এর মত কর না’। আবার এই ক্রীতদাসীকে লোকেরা মারধর করতে করতে নিয়ে যাচেছ এবং বলছে,তুমি যেনা করেছ এবং চুরি করেছ। আমি বললাম,‘হে আল্লাহ! আমার সন্তানকে এরূপ কর না’। আর তুমি বললে,‘হে আল্লাহ! তুমি আমাকে এরূপ কর’। শিশুটি এবার জবাব দিল,প্রথম ব্যক্তি ছিল সৈরাচারী যালেম।সেজন্যই আমি বললাম,‘হে আল্লাহ! আমাকে এ ব্যক্তির মত কর না। আর এই মহিলাটিকে তারা বলল,তুমি যেনা করেছ। প্রকৃতপক্ষে সে যেনা করেনি। তারা বলছিল,তুমি চুরি করেছ। আসলে সে চুরি করেনি। এজন্যই আমি বললাম,‘হে আল্লাহ! আমাকে এই মেয়ে লোকটির মত কর’
(বুখারী হা/৩৪৩৬ ‘নবীদের কাহিনী’ অধ্যায়, অনুচেছদ-৪৮, হা/২৪৮২ ‘মাযালিম’ অধ্যায়, অনুচেছদ-৩৫; মুসলিম হা/২৫৫০ ‘সদ্ব্যবহার ও শিষ্টাচার’ অধ্যায়, অনুচেছদ-২) ।
শিক্ষা
১. আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা থাকলে কেউ পদস্খলন ঘটাতে পারবে না।

২. কোন হক্বপন্থী ব্যক্তির বিরুদ্ধে যতই ষড়যন্ত্র করা হোক না কেন, তা

একদিন সত্যরূপে প্রকাশিত হবেই এবং ষড়যন্ত্রকারীরা লজ্জিত হবে।

৩. আমরা যাকে ভাল মনে করি,প্রকৃতপক্ষে সে ভাল নাও হ’তে পারে।

পক্ষান্তরে যাকে খারাপ মনে করি,প্রকৃতপক্ষে সে খারাপ নাও হ’তে পারে।

৪. সর্বদা পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে হবে।

সূত্র :কুরআনের আলো।

আজ আর নয়। কোন ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখুন । আল্লাহ্ হাফেজ।

23 thoughts on "জেনে নিন দোলনায় কথা বলা তিন শিশু"

    1. MD Esmail Author Post Creator says:
      Tnx bro.
  1. Shadin Contributor says:
    সুন্দর।
    ভাল লাগল।
    1. MD Esmail Author Post Creator says:
      Tnx bro.
  2. Sharif Contributor says:
    মিসিং:
    1, হজরত ইউসুফ আ: এর পক্ষে julaikhar বিরোদ্ধে এক বাচ্চার সাক্ষী।
    2, সূরা বুরুজে বর্ণিত ঘটনার মধ্যে একটি শিশু বাচ্চার কথা।
    1. MD Esmail Author Post Creator says:
      ভাই এখানে কোন মিস নাই।
  3. mdriaz.rs Contributor says:
    ভাই আপনার সালাত বানান টা ঠিক করেন। ,,,
    1. MD Esmail Author Post Creator says:
      Tnx bro.
    1. MD Esmail Author Post Creator says:
      Tnx bro.
    1. MD Esmail Author Post Creator says:
      Tnx bro .
  4. A M Contributor says:
    সুন্দর পোস্ট –
    1. MD Esmail Author Post Creator says:
      Tnx bro.
    1. MD Esmail Author Post Creator says:
      Tnx bro.
    1. MD Esmail Author Post Creator says:
      Tnx bro .
  5. Shadin Contributor says:
    আপনার ক্যাটাগরি ঠিক নেই।
    আপনি Hadith & Quran ক্যাটাগরিতে দিছেন।
    যার কারণে পোস্টটা non-profit.
    দিতে হবে Islamic Stories ক্যাটাগরিতে।
    1. MD Esmail Author Post Creator says:
      এখন ক্যাটাগরি ঠিক করেছি এখন হবে?
    2. Shadin Contributor says:
      হবে।

Leave a Reply