তাকদীর (ভাগ্য) এর প্রতি ঈমান রাখা ঈমানের অন্যতম একটি স্তম্ভ। কোন মুসলিমের ঈমান ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণ হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না সে বিশ্বাস করে যে, যা ঘটেছে সেটাই আল্লাহর হুকুম । সুতরাং তা ঘটবেই ঘটবে। আর যা ঘটেনি, সেটা না গোটা আল্লাহর হুকুম। সুতরাং এটা কিছুতেই ঘটতো না বা গড়তে পারে না ।
যেভাবে এ বিশ্বাস পোষণ করতে হবে যে, সবকিছু আল্লাহর (ফয়সালা) ও তাকদীর (ভাগ্য) অনুযায়ী ঘটে তাকে।

যেমন আল্লাহ তাআলা ইরশাদ –
”জেনে রেখো সকল ফয়সালা তাঁরই তিনি দ্রুত হিসাব করি।ʼʼ
(সূরা আনআম আয়াত নং 62)

নিজের জান মালের উপর কিংবা পরিবার-পরিজন এর উপর অথবা অন্য কিছুর উপর যত ধরনের বিপদ আপদ ও ফিতনা-ফাসাদ আপতিত হয়, তা আল্লাহতাআলার হুকুমেই হয় এবং যে সব ঘটনা ঘটে সে সম্পর্কে তিনি জানেন এবং সেটা তিনি লৌহে মাহফুজ লিখে রেখেছেন
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন—

“পৃথিবীতে ও তোমাদের জানের উপর যে বিপদ আসে,সেসব কিতাবে লিপিবদ্ধ রয়েছে যেগুলো সৃষ্টি করার পূর্বেই।”
(সূরা হাদীদ আয়াত নং 22)


মানুষ যেসব মুসিবতের শিকার হয় সেটা তাদের জন্য মঙ্গল জনক হতে পারে কাজা বা তাকদীরের প্রতি মান্যতা প্রকাশ করে ধৈর্য ধারণ করার মাধ্যমে। বস্তুতঃ আল্লাহ তা’আলা তার জন্য যা মুনাসিব গণ্য করেছেন, তা-ই তার ভাগ্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন।সুতরাং আল্লাহ তাআলা ভাগ্য যা লিখেছেন তার প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে আল্লাহ তায়ালার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে হবে এবং তার উপরে ভরসা করতে হবে। তাহলেই এই পরীক্ষা এসে উর্ত্তীন্ন হবে।
এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন–
“আপনি বলুন, আমাদেরকে কোন কিছুই আক্রান্ত করে না কেবল সেটা ছাড়া যা আল্লাহ আমাদের জন্য লিখে রেখেছেন। তিনি আমাদের প্রভু। অতএব, আল্লাহর উপরেই মুমিনদের ভরসা করা উচিত।”
(সূরা তওবাহ, আয়াত নং 51)

বস্তুত বিপদ-আপদ আসে পরীক্ষাস্বরূপ।
ধৈর্য ধারনের মাধ্যমে আল্লাহর ফয়সালা কে মেনে নিতে তার হুকুম অনুযায়ী চলার মাধ্যমে বান্দাকে সেই পরীক্ষায় পাশ করতে হবে।
এভাবে তাকদীরের ঈমানের সাথে ধৈর্যের সম্পর্ক মাথার সাথে যেমন দেহের সম্পর্ক। ওই জন্য ধৈর্য্য একটি মহৎ গুণ। যার প্রতিদান অনেক বেশি। ধৈর্য ধারণ কারীগণ বিনা হিসাবে তাদের প্রতিফল গ্রহণ করবেন।
যেমন আল্লাহ তা’আলা বলেন-
“ধৈর্যশীলদেরকেই তো তাদের পুরষ্কার পূর্ণরূপে দেওয়া হবে বিনা হিসাবে।”
(সূরা যুমার, আয়াত নং 9)


বস্তুত আল্লাহর পথে দাওয়াত দান এক মহান মিশন। যে ব্যক্তি দাওয়াতি কাজে তৎপর তাকে, তাকে নানা রকম কষ্ট ও বিপদ মুসিবত এর শিকার হতে হয়। এ কারণেআল্লাহ তাআলা অন্য নবীগণের ধৈর্যের কথা উল্লেখ পূর্বক রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ধৈর্য ধারণ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আল্লাহ তা’আলা বলেন-
“যেভাবে উসুল- আযম রাসূলগণ ধৈর্যধারণ করেছেন আপনি সেভাবে ধৈর্য ধারণ করুন।।”
(সূরা আরাফ আয়াত নং 35)

আল্লাহ তায়ালা ঈমানদার বান্দাদের কে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন যে, যদি কোন বিষয়ে তারা পেরেশানিতে পড়ে কিংবা কোনো মুসিবতে নিপতিত হয়, তাহলে তারা যেন ধৈর্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করে; যাতে আল্লাহ তা দূর করে দেন।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা ধৈর্য্য ও নামাযের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথে আছেন।”
(সূরা বাকারা আয়াত নং 153)


বিপদ- মুসিবতের সময় ধৈর্যদানকারী  ও দু’আয় মনোনিবেশকারী বান্দাদের উত্তম প্রতিদানের কথা উল্লেখ করে।
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন- 
“নিশ্চয়ই আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করব ভয় ও কুদার যেকোন বিষয়ের দ্বারা এবং ধন সম্পদ জান ও ফল ফলাদি ধারা। এবং আপনি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দিন যারা এমন যে যখন তাদের নিকট কোন মুসীবত পৌঁছে, তখন তারা বলে -ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন(নিঃসন্দেহে আমরা আল্লাহর এবং অবশ্যই আমরা তার দিকে প্রত্যাবর্তন কারী)। তাদের উপরই তাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে পেগম আর অনুগ্রহ ও রহমত রয়েছে এবং তারাই সুপথপ্রাপ্ত।”
(সূরা বাকারা, আয়াত নং 157)

এভাবে বিপদ মুসিবত এর ধৈর্য ধারণ করা এবং মহান আল্লাহর প্রতি ঈমান ও আস্থা অবিচল রেখে তাকদীরের প্রতি রাজি থাকা ফরজ। যে ব্যক্তি এরূপে ধৈর্য ধারণ করবে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে বিনা হিসেবে পুরস্কার দান করবেন। যে সম্পর্কে পূর্বের আয়াতে বলা হয়েছে।
     বস্তুত মমিন তার সুখ ও দুঃখ উভয় অবস্থায় পুরস্কার পায়। সুখের অবস্থায় পুরস্কার পায় শুকর আদায় করে এবং দুঃখের অবস্থায় পুরস্কার পায় ধৈর্য ধারণ করে।
 সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ-
“মমিনের বিষয়টি বিস্ময়কর। তার বিষয়ে সবটাই মঙ্গল জনক। মমিন ছাড়া অন্য কারো ক্ষেত্রে এমনটি হয় না। যদি মুমিনের খুশির কিছু ঘটে, তখন সে শুকর আদায় করে। এতে যেটা তার জন্য মঙ্গল এর কারন হয়।আর যদি তার দুঃখের কিছু ঘটে তখন সে ধৈর্য ধারণ করে। এতে সেটা তার জন্য কল্যাণ এর বিষয় হয়।।”
(সহিঃ মুসলিম হাদিস নং 2999)


(শায়খ মুহাম্মদ বিন ইবরাহীম আল-তুআইজিরী প্রণীত উসুলুদ দ্বীনিল ইসলামী অবলম্বে)

যেহেতু এটি একটি ইসলামিক পোস্ট যদি কোথাও টাইপিং করতে ভুল হয়ে থাকে আমাকে ক্ষমা করে দেবেন.. সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের নির্দেশ মেনে জীবন গড়ুন এবং আমাদের সাইট ঘুরে আসুন





17 thoughts on "বিপদের সময় ধৈর্য ধারণ করা কি মহান আল্লাহর বাণী।"

    1. Hossain ahmed numan Author Post Creator says:
      সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
  1. Rasel Tips Contributor says:
    ইসলামিক পোষ্ট করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে
    1. Hossain ahmed numan Author Post Creator says:
      আপনাকেও ধন্যবাদ
  2. Rasel Tips Contributor says:
    পোস্ট টা ভালো হইছে
  3. Rasel Tips Contributor says:
    তবে পোস্ট টা যদি আরো বড়ো হতো তাহলে আরো ভালো হতো।।
    কিন্তু এটাও খারাপ হয়নি।। ভালোই হইছে।।
    1. Hossain ahmed numan Author Post Creator says:
      চাইলে আরো বড় করতে পারতাম কিন্তু অধিক বড় পোস্ট কেউ পড়তে চায় না এই অল্প পোস্ট থেকে যদি আমল করেন তাহলে এই পোস্ট করা সার্থক
    1. Hossain ahmed numan Author Post Creator says:
      thanks
    1. Hossain ahmed numan Author Post Creator says:
      Thank you
    1. Hossain ahmed numan Author Post Creator says:
      সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
  4. Jemes Faruk khan Contributor says:
    ভাল পোষ্ট ভাইয়া
    1. Hossain ahmed numan Author Post Creator says:
      ধন্যবাদ আপনাকে

Leave a Reply