আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

আজকে আমি আপনাদের মাঝে কোরআনে আলো এ পর্বে রোগীর অযু ও সালাত সম্পর্কে জানতে চলে আসলাম ।

রোগীর অযু ও সালাত

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

অত্র পুস্তিকাটিতে রোগীর অযু ও সালাত আদায় করার নিয়ম বলা হয়েছে। পুস্তিকাটি আয়তনে ছোট হলেও প্রায়শই মানুষের প্রয়োজন হয় বিধায় এর মূল্য অনেক।

রোগীর অযু ও সালাত

সকল প্রশংসা আল্লাহ তা‘আলা জন্য, আমরা তার প্রশংসা করি, তার নিকট সাহায্য চাই এবং তার নিকট ইস্তেগফার ও তাওবা করি। আল্লাহর নিকট পানাহ চাই আমাদের নফস ও আমলের অনিষ্ট থেকে, আল্লাহ যাকে হিদায়াত করেন তার কোনো পথভ্রষ্টকারী নেই এবং যাকে তিনি গোমরাহ করেন তার কোনো হিদায়াতকারী নেই। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি এক, তার কোনো শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। আল্লাহ তাআলা সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন তার ওপর ও তার পরিবারের ওপর এবং তার সকল সাহাবী ও অনুসারীর ওপর, যারা তাদের অনুসরণ করে ইহসানের সাথে।

অতঃপর, রোগীর অযু ও সালাতের ক্ষেত্রে করণীয় সম্পর্কে অত্র পুস্তিকা। রোগীর কতক বিধান রয়েছে যা তার সাথেই খাস। কারণ, সে যে অবস্থা অতিক্রম করে শরী‘আত সে মোতাবেক তাকে বিধান দিয়েছে। বস্তুত আল্লাহ সহজ, সরল ও একনিষ্ঠ দীন দিয়ে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রেরণ করেছেন। তিনি বলেন, “দীনের ব্যাপারে তিনি তোমাদের ওপর কোনো কঠোরতা আরোপ করেন নি”। [সূরা আল-হাজ, আয়াত: ৭৮]

অপর আয়াতে বলেন: “আল্লাহ তোমাদের সহজ চান এবং কঠিন চান না”। [সূরা আল-বাকারাগ, আয়াত: ১৮৫]

অপর আয়াতে বলেন: “অতএব, তোমরা যথাসাধ্য আল্লাহকে ভয় কর এবং শ্রবণ কর এবং আনুগত্য কর”। [সূরা আত-তাগাবুন, আয়াত: ১৬]

ইমাম বুখারী রহ. আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “নিশ্চয় দীন সহজ”।[1]

ইবন হিব্বান আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আমি যখন তোমাদেরকে কোনো নির্দেশ করি, তোমরা তা সম্পাদন কর যতটুকু তোমাদের পক্ষে সম্ভব হয়”।[2]

এসব নীতিমালা থেকে আল্লাহ তা‘আলা রোগীর ওপর তার রোগ হিসেবে ইবাদতকে হালকা করেছেন, যেন তারা কোনো কষ্ট ও কাঠিন্যতা ছাড়াই তার ইবাদত আঞ্জাম দিতে সক্ষম হয়। অতএব, সকল প্রশংসা বিশ্বজগতের প্রতিপালক রাব্বুল আলামীনের জন্য।

রোগীর অযু

১. সালাতের পূর্বে রোগীর জন্য ফরয হচ্ছে পানি দ্বারা পবিত্রতা হাসিল করা। অতএব, ছোট নাপাকের জন্য অযু এবং বড় নাপাকের জন্য সে গোসল করবে।

২. যদি অপারগতা থাকে বা রোগ বৃদ্ধির ভয় হয় বা সুস্থতা বিলম্ব হবে আশঙ্কা করে, তাহলে তায়াম্মুম করবে।

৩. তায়াম্মুম করার নিয়ম: পবিত্র মাটিতে দু’হাত একবার মারবে, অতঃপর উভয় হাত দিয়ে প্রথমে চেহারা তারপর দুই কব্জি একটি দ্বারা অপরটি মাসেহ করবে। রোগী যদি নিজে তায়াম্মুম করতে সক্ষম না হয় অন্য কেউ তাকে তায়াম্মুম করিয়ে দিবে। যেমন, অপর ব্যক্তি নিজের দুই হাত পবিত্র মাটিতে মেরে তা দিয়ে রোগীর চেহারা ও দুই হাত মাসেহ করবে, যেমন রোগী নিজে অযু করতে সক্ষম না হলে অপর ব্যক্তি তাকে অযু করিয়ে দেয়।

৪. দেয়ালের উপর তায়াম্মুম করা বৈধ, অনুরূপ তায়াম্মুম করা বৈধ পবিত্র বস্তুর উপর যদি তার উপর ধুলো-বালি থাকে, দেয়াল যদি মাটি জাতীয় বস্তু ব্যতীত অন্য কোনো বস্তু দ্বারা প্লাস্টার করা হয়, যেমন রঙের বার্নিশ, তার উপর তায়াম্মুম করা শুদ্ধ হবে না, তবে তার উপর ধুলো-বালি থাকলে তায়াম্মুম শুদ্ধ হবে।

৫. যদি দেয়াল বা দেয়াল ব্যতীত ধুলো-বালি বিশিষ্ট কোনো বস্তু না পাওয়া যায়, তাহলে রোমালের উপর বা কোনো পাত্রে ধুলো রেখে তার উপর তায়াম্মুম করবে।

৬. সালাতের জন্য যখন তায়াম্মুম করবে এবং পরবর্তী সালাত পর্যন্ত পবিত্র অবস্থায় থাকবে, তখন পরবর্তী সালাত পূর্বের তায়াম্মুম দ্বারা পড়া বৈধ, পুনরায় তায়াম্মুম করা জরুরি নয়। কারণ, সে পবিত্র, তায়াম্মুম ভঙ্গ হওয়ার কোনো কারণ সংঘটিত হয় নি।

৭. রোগীর শরীর থেকে নাপাক দূর করা জরুরি, যদি সে নাপাক দূর করতে সক্ষম না হয় তবে নাপাক অবস্থাতেই সালাত পড়বে এবং তা পুনরায় পড়তে হবে না।

৮. রোগীর নাপাক কাপড় পাক করা অথবা নাপাক কাপড় খুলে পবিত্র কাপড় পরিধান করা জরুরি, যদি পরিবর্তন করতে সক্ষম না হয় নাপাক কাপড়সহ সালাত পড়বে, পুনরায় তা পড়তে হবে না।

৯. পাক বিছানার উপর রোগীর সালাত আদায় করা জরুরি, যদি বিছানা পাক না হয় পাক করে নিবে অথবা পাক বিছানা দিয়ে পাল্টে নিবে অথবা নাপাক বিছানার উপর পবিত্র বিছানা বিছিয়ে নিবে, আর যদি কোনোটাই সক্ষম না হয় নাপাক বিছানার উপর সালাত পড়বে, এ অবস্থাতেও পুনরায় তা পড়তে হবে না।

রোগীর সালাত

১. রোগীর জন্যও দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা ফরয, তবে যদি সোজা দাঁড়ানো সম্ভব না হয় তাহলে বাঁকা হয়ে বা ঝুঁকে দাঁড়ানো অবস্থায় সালাত আদায় করবে অথবা দেয়াল বা খুঁটি বা লাঠির উপর ভর করে সালাত আদায় করবে।

২. দাঁড়িয়ে সালাত আদায়ে সক্ষম না হলে বসে আদায় করবে, উত্তম হচ্ছে দাঁড়ানো ও রুকুর সময় চারজানু হয়ে বসবে এবং সেজদার সময় পা বিছিয়ে পায়ের গোছার উপর বসবে, (যেভাবে আমরা তাশাহ্‌হুদ পড়ার সময় বসি)।

৩. রোগী যদি বসে সালাত আদায় করতে সক্ষম না হয়, এক পার্শ্বে কাত হয়ে কেবলার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করবে, তবে বাম পার্শ্ব অপেক্ষা ডান পার্শ্বে কাত হওয়া উত্তম, যদি কেবলামুখী হওয়া সম্ভব না হয় যে দিকে সম্ভব মুখ করে সালাত আদায় করবে, পুনরায় তা পড়তে হবে না।

৪. যদি এক পার্শ্বে কাত হয়ে সালাত আদায় করা সম্ভব না হয়, দু’পা কিবলামুখী করে চিত হয়ে সালাত আদায় করবে। মাথা সামান্য উঁচিয়ে রাখা উত্তম যেন কেবলার দিকে মুখ থাকে, যদি সেভাবে সম্ভব না হয় কিবলার দিকে পা রেখে যেভাবে সম্ভব সালাত পড়বে, পুনরায় তা পড়তে হবে না।

৫. রোগীর রুকু ও সাজদাহ করা ফরয, যদি সম্ভব না হয় রুকু ও সাজদাহ’র সময় মাথা দিয়ে ইশারা করবে, সাজদাহ’র সময় রুকু অপেক্ষা বেশি ঝুঁকবে। আর যদি রুকু করা সম্ভব হয় সাজদাহ করা সম্ভব না হয়, তাহলে রুকুর সময় রুকু করবে এবং সাজদাহ’র সময় ইশারা করবে। যদি সাজদাহ করা সম্ভব হয়, রুকু করা সম্ভব না হয়, তাহলে সাজদাহ’র সময় সাজদাহ করবে আর রুকুর সময় ইশারা করবে।

৬. যদি রুকু ও সাজদাহ’র সময় মাথা দিয়ে ইশারা করা সম্ভব না হয়, দু’চোখের পাতা দিয়ে ইশারা করবে, রুকুর জন্য কম বন্ধ করবে সাজদাহ’র জন্য তার চেয়ে বেশি বন্ধ করবে। হাতের অঙ্গুলি দ্বারা ইশারা করা, যেমন কতক রোগী করেন শুদ্ধ নয়, কিতাব ও সুন্নায় আমার জানা মতে তার কোনো ভিত্তি নেই, তার পক্ষে কোনো আলেমের বাণী আছে বলেও জানি না।

৭. যদি মাথা ও চোখ দিয়ে ইশারা করা সম্ভব না হয় অন্তর দ্বারা সালাত পড়বে। অন্তরে রুকু, সাজদাহ ও কিয়ামের নিয়ত করবে। কারণ, প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য তাই রয়েছে যা সে নিয়ত করে।

৮. উপরের বর্ণনার আলোকে রোগীর প্রত্যেক সালাত সময় মত পড়া ফরয, সময় থেকে দেরী করা বৈধ নয়।

৯. যদি প্রত্যেক সালাত নির্দিষ্ট সময় পড়া কঠিন হয়, তাহলে রোগীর জন্য বৈধ জোহর ও আসর এবং মাগরিব ও এশা একত্র পড়া। আসর সালাতকে এগিয়ে এনে বা জোহর সালাতকে পিছিয়ে নিয়ে যেভাবে ইচ্ছা জমা করার অনুমতি রয়েছে, যেমন জোহরের সময় জোহর ও আসর বা আসরের সময় আসর ও জোহর একত্র পড়া, অনুরূপ মাগরিবের সময় মাগরিব ও এশা বা এশার সময় এশা ও মাগরিব জমা করা।

ফজর সালাতকে তার পূর্বের বা পরের সালাতের সাথে জমা করা বৈধ নয়। কারণ, ফজরের সময় তার পূর্বাপর সালাত থেকে পৃথক… আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “সূর্য হেলে পড়ার সময় থেকে রাতের অন্ধকার পর্যন্ত সালাত কায়েম কর এবং ফজরের কুরআন। নিশ্চয় ফজরের কুরআন (ফিরিশতাদের) উপস্থিতির সময়”। [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ৭৮]

[1] সহীহ বুখারী, হাদীস নং ৩৯।
[2] ইবন হিব্বান হাদীস নং ৩৭০৪।

আলহামদুলিল্লাহ। আশা করি সকলের ভালো লেগেছে।

আমাদের ফেসবুক group এ জয়েন হতে পারেন এখানে প্রতিদিন ইসলামিক সম্পর্কে পোষ্ট করা হয় কোরআনের আলো

??পোষ্টি কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাবেন। এবং লাইক দিবেন ??


2 thoughts on "??[কোরআনের আলো পর্ব ৬১]রোগীর অযু ও সালাত সম্পর্কে জানতে পারবো ??"

    1. MD Shakib Hasan Contributor Post Creator says:

Leave a Reply