আসসালামু আলাইকুম সবাই কেমন আছেন…..? আশা করি সবাই ভালো আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভালোই আছি ।আসলে কেউ ভালো না থাকলে TrickBD তে ভিজিট করেনা ।তাই আপনাকে TrickBD তে আসার জন্য ধন্যবাদ ।ভালো কিছু জানতে সবাই TrickBD এর সাথেই থাকুন ।

ফেসবুকে যে ৫টি বিষয় শেয়ার করা মারত্মক ক্ষতিকর

ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সাথে বৃদ্ধি পাচ্ছে ফেসবুকে আসক্তির সংখ্যা। ফেসবুকের এই আসক্তির ক্ষতিকর প্রভাব পরছে ব্যক্তি এবং সামাজিক জীবন। অসংখ্য বিশৃঙ্খলা এবং হতাশার জন্ম দিচ্ছে এই ফেসবুক। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে ১০০০ হাজার লোকের উপর একটা জরিপ করা হয় জরিপে দেখা যায় ৪১ শতাংশ লোক দাবি করে যে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো তাদের বিষণ্ণতা, দুশ্চিন্তা, বিমর্ষতা বৃদ্ধি করেছে। [১]

যাই হোক আজকের বিষয় মূলত ফেসবুকে যেসব বিষয় শেয়ার করা যাবে না তা নিয়ে। নিউজ ফিড ফেসবুকের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। ফেসবুক ব্যবহারকারীর ৮০ শতাংশ লোক তাদের দিনের অধিকাংশ সময় এই নিউজ ফিডে নষ্ট করে। আর এর মধ্যে অনেকে আছে যারা নিউজ ফিডে নিজের অনেক কিছু শেয়ার করে। আজকের এই লেখায় মূলত এরকম ৫ টি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে যে ৫টি তথ্য ফেসবুকে শেয়ার করা ক্ষতিকর।

ফেসবুকে শেয়ার

১. খাবারের ছবি শেয়ার

খাবারের ছবি কম বেশী সবাই শেয়ার করে থাকে। হঠাৎ রেস্টুরেন্টে গেল কিংবা কোন ভাল খাবার খেল তখনই ছবি তুলে ফেসবুকে শেয়ার। ব্যাপারটা আপনার কাছে ভাল মনে হলেও, এই ধরণের কাজ করা কখনই ভাল নয়।

প্রথমত বুঝা যাচ্ছে আপনি সচারচর এরকম ভাল খাবার খান না আজকে প্রথমবারের মতো খেলেন আর শেয়ার করে দেখিয়ে দিলেন আমি ভাল রেস্টুরেন্টে খাচ্ছি। আপনি নিজেকে জাহির করতে চাচ্ছেন! এটা এক ধরণের অহংকার আপনার মনের মধ্যে সৃষ্টি করে।

আর ইসলামে প্রতিবেশীর অধিকারের  কথা বলতে গিয়ে বলেছেন আপনি যখন তরকারী রান্না করবেন তখন তরকারীতে ঝোল যেন বৃদ্ধি করে দেন যাতে করে প্রতিবেশীকে তার কিছু অংশ দেয়া যায়। [২] আর আমরা কি করছি! কাউকে তো খাবারে শরীক করছি না উল্টো খাবারের ছবি শেয়ার করছি!

২. যাচাই-বাছাই ছাড়া কোন নিউজ বা তথ্য শেয়ার

ফেসবুক গুজবের কারখানা বলা চলে। যদিও অনেক সঠিক তথ্য এবং খবর প্রচার হয় ফেসবুকে তাই ফেসবুকে কোন কিছু শেয়ার করার আগে অবশ্যই সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে নেয়া জরুরি। অন্যথায় মিথ্যা তথ্য প্রচার করে গুনাহগার হয়ে যাবেন। সেটা হোক ইসলামিক কিংবা সাধারণ কোন বিষয়। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনেও বলেছেন সঠিক কথা বলতে। [৩]

রাসূল (সা.) বলেছেন, যাচাই করা ছাড়া কোন তথ্য বা খবর বর্ণনা করা মিথ্যাবাদী হওয়ার শামিল। [৪]

তাই ফেসবুক থেকে কোন তথ্য পেলে তা অবশ্যই যাচাই বাছাই করে শেয়ার করবেন। আপনার একটি মিথ্যা তথ্য শেয়ার করার দ্বারা ঝগড়া এমনকি সহিংসতা দেখা দিতে পারে।

৩. অযথা অন্যের সমালোচনা

রাসূল সা: বলেছেন যদি কোন ব্যক্তি কোনো মুসলমান ব্যক্তির দোষ গোপন রাখে তবে আল্লাহ তায়ালা দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ গোপন রাখবেন। [৫] কিন্তু আমরা ফেসবুকে অধিকাংশ সময়ে মানুষের দোষ ত্রুটি বর্ণনায় অধিক সময় নষ্ট করি। অন্যের সমালোচনা শেয়ার করাটাকেই অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।

এর দ্বারা নিজের যেমন গুনাহ হচ্ছে তেমনি শত্রুতাও সৃষ্টি হচ্ছে। আমাদের স্মরণ রাখা জরুরি ইসলামে সমালোচনা নয় ব্যক্তিকে সংশোধন, শুধরে দেয়া কিংবা দ্বীনের পথে দাওয়াত দেয়াকে পছন্দ করে। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেন,

পেছনে এবং সম্মুখে প্রত্যেক পর নিন্দাকারীর জন্য দুর্ভোগ ও ধ্বংস। [৬]

এছাড়া অন্যের সমালোচনা বা গীবত করার অধিকাংশ বিষয় থাকে অনুমান নির্ভর। গীবত করা আর মৃত ভাইয়ের মাংস খাওয়া সমান কাজ। অপর দিকে অনুমান নির্ভর কথা বলা প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেন,

‘তোমরা অনুমান ও ধারণা করে কথা বলা থেকে বেঁচে থাকো। কেননা অনুমান করে কথা বলা সবচেয়ে বড় মিথ্যা।’ [৭]

৪. শো অফ

শো অফ কথাটি বর্তমানে বেশ প্রচলিত। ফেসবুক বর্তমানে শো অফ করার অন্যতম হাতিয়ার হয়ে গেছে। নতুন আইফোন কিনে মিরর সেলফি তুলে তা ফেসবুকে শেয়ার করা, দামি গাড়ি কিংবা দামি ব্রান্ডের জিনিস কিনে তা ফেসবুকে শেয়ার করে নিজেকে জাহির করাটা আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। অথচ আমরা একবারের জন্যেও চিন্তা করি না এইগুলো অহংকারের বহি:প্রকাশ। অহংকার হলো কাফেরদের চরিত্র। আল্লাহ তায়লা বলেন,

বরং যারা কাফের, তারা অহংকার ও বিরোধিতায় লিপ্ত।  [৮]

অপরদিকে রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমান থাকবে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে না। আর যে ব্যক্তির অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ অহংকার থাকবে সেও জান্নাতে প্রবেশ করবে না। সহীহ মুসলিম: ১৬৮;

আপনার শো অফ করা অন্যের জন্য কষ্টকরও হতে পারে। ফেসবুকে অধিকাংশ মানুষের হতাশার অন্যতম কারণ তার আছে আমার কেন নেই এই নিয়ে। [৯]

৫. হতাশা ও দুর্বলতা প্রকাশ

শো অফ করা এবং শেয়ার করা যেমন ক্ষতিকর তেমনি নিজের দুর্বলতা এবং হতাশা ফেসবুকে শেয়ার করাটাও ক্ষতিকর। অতিরিক্ত ফেসবুক ব্যবহারের ফলে এমনিতেই আপনি হতাশা আর বিষণ্ণতার মধ্যে থাকেন। এর মধ্যে আবার নিজের হতাশা আর ব্যর্থতা শেয়ার করার দ্বারা পরিমাণ বৃদ্ধি করা ছাড়া আর কোন লাভ হয় না। [১০] ফেসবুকে আপনার হতাশার কথা শেয়ার না করে ধৈর্য ধারণ করুন। আল্লাহ তায়লা বলেন,

তবে যারা ধৈর্যধারণ করেছে এবং সৎকর্ম করেছে তাদের জন্য ক্ষমা ও বড় প্রতিদান রয়েছে। [১১]

আর নিয়মিত তওবা করুন। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

‘‘আল্লাহ তা‘আলা স্বীয় বান্দার তওবা করার জন্য ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা বেশী আনন্দিত হন, যে তার উট জঙ্গলে হারিয়ে ফেলার পর পুনরায় ফিরে পায়।’’ [১২]

শেষ কথা

উপরে উল্লেখিত বিষয় ছাড়াও বর্তমান সময়ে অনেকে ফেসবুকে নারীদের ছবি শেয়ার করা সহ আরও অনেক ধরণের ইসলাম বিরোধী কাজ করে থাকে। এর দ্বারা প্রতিনিয়ত গুনাহগারের খাতায় নিজের নাম লেখানো ছাড়া আর কোন লাভ হচ্ছে না। আর এসব বিষয় সকল স্যোশাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

সূত্র:

১. independent.co.uk

২. সহীহ মুসলিম,হাদিস ২৬২৫

৩. সুরা আহযাব : ৭০

৪. মুসলিম : ১/১০৭

৫. বুখারী : ২/৮৬২ হা.২৩১০

৬. সুরা হুমাযাহ, আয়াত : ০১

৭. বুখারী, হাদিস নং: ২২৮৭

৮. ছোয়াদ ২

৯. newyorker.com

১০. independent.co.uk

১১. হুদ ১১

১২. বুখারী ৬৩০৯, মুসলিম ২৭৪৭, আহমাদ ১২৮১৫

দ্বীনি কথা শেয়ার করে আপনিও ইসলাম প্রচারে অংশগ্রহণ করুন।

সূত্র:  islamientertainment.com

9 thoughts on "ফেসবুকে যে ৫টি বিষয় শেয়ার করা মারত্মক ক্ষতিকর। না দেখলে মিস করবেন"

  1. TusHar Author says:
    সুন্দর পোস্ট ???
    1. MD Shakib Hasan Contributor Post Creator says:
      Thanks
  2. EagleEye98 Contributor says:
    ভালো লাগলো
    1. MD Shakib Hasan Contributor Post Creator says:
      Thanks
  3. Sharif Contributor says:
    good post
  4. RANehal Contributor says:
    Feamanillah, khub sundor post
    1. MD Shakib Hasan Contributor Post Creator says:
      Thanks
  5. Astonnoor Subscriber says:
    Nice Post Bro. Keep Up The Good Work ? Love You ♥️
    1. MD Shakib Hasan Contributor Post Creator says:
      Thanks

Leave a Reply